নানচিং

পূর্ব চীনের চিয়াংসু প্রদেশের রাজধানী নগরী

নানচিং (), নানকিং নামেও পরিচিত,[১] হচ্ছে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের চিয়াংসু প্রদেশের রাজধানী। জনসংখ্যার ঘনত্বের বিচারে এটা পূর্বাঞ্চলীয় চীনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর (প্রথম হচ্ছে সাংহাই)। এর প্রশাসনিক আয়তন ৬,৬০০ কিমি (২,৫০০ মা) এবং মোট জনসংখ্যা ৮,২৭০,৫০০ জন ২০১৬-এর হিসাব অনুযায়ী.[২] নানচিংয়ের ভেতরের অঞ্চল প্রাচীর দিয়ে ঘেরা, যার আয়তন ৫৫ কিমি (২১ মা), এর সাথে আশপাশের শহর ও অঞ্চল নিয়ে নানচিং মেট্রোপলিটন শহর গড়ে উঠেছে যার আয়তন ৬০,০০০ কিমি (২৩,০০০ মা), যার জনসংখ্যা ৩০ মিলিয়নের উপরে। নানচিং শহর ৩য় শতক থেকে শুরু করে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। ইয়াংজি নদীর তীরে অবস্থিত নানচিংকে 'চীনের প্রাচীনতম চার রাজধানী'র অন্যতম রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।

নানচিং

ইতিহাস

চীনা রাজবংশ

দক্ষিণ সাম্রাজ্যের পাথুরে ভাস্কর্য
উয়ান রাজবংশের নানচিংয়ের মানচিত্র

ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে নানচিং শহরটি একাধিকবার রাজধানী হওয়ার মর্যাদা লাভ করে। ২২৯ খ্রিষ্টাব্দে সর্বপ্রথম নানচিং রাজধানীর মর্যাদা পায়। ২২০ খ্রিষ্টাব্দে চীনে 'সান উউ' বা 'ডং উউ' নামের একটি রাজবংশের শাসন প্রতিষ্ঠা হয় এবং ২৮০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত উক্ত রাজবংশের শাসন অব্যাহত ছিল। এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা সান কুয়ান ২২৯ সালে নানচিংকে তাদের রাজ্যের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন। ২৮০ সালে উক্ত রাজবংশের পতন ঘটলে নানচিং তার রাজধানীর মর্যাদা হারিয়ে ফেলে। ৩১৭ সালে চীনে 'জিন রাজবংশ' নামের একটি রাজবংশ শাসন প্রতিষ্ঠা করলে নানচিং পূনরায় রাজধানীর মর্যাদা ফিরে পায়। এরপর ধারাবাহিকভাবে লুই সং রাজবংশ, কুই রাজবংশ, লিয়াং রাজবংশ ও চেন রাজবংশ নানচিংকে রাজধানী হিসেবে বহাল রাখে। ৫৮৯ সাল পর্যন্ত এসব রাজবংশের শাসন অব্যাহত ছিল এরপরে নানচিং থেকে রাজধানী স্থানান্তরিত হয়। ৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে চীনে 'ট্যাং রাজত্ব' প্রতিষ্ঠিত হলে নানচিং আবার রাজধানীর মর্যাদা ফিরে পায়। ৯৭৬ সাল পর্যন্ত রাজধানীর মর্যাদায় অধিষ্ঠিত ছিল।

১৩৬৮ সালে চীনে 'মিং রাজত্ব' প্রতিষ্ঠিত হলে তারা নানচিংকে তাদের রাজ্যের রাজধানী ঘোষণা করে। টানা ২৭৬ বছর নানচিং রাজধানী হিসেবে অধিষ্ঠিত থাকে। ১৬৪৪ সালে মিং রাজত্বের অবসান ঘটলে নানচিং আবার রাজধানীর মর্যাদা হারায়। ১৮৫১ খ্রিষ্টাব্দে চীনে 'থাইপিং হ্যাভেনলি কিংডম' বা শান্তির স্বর্গরাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। তারাও নানচিংকে তাদের রাজ্যের রাজধানী ঘোষণা করে। এ সময় নানচিংয়ের নাম পরিবর্তন করে 'তিয়াঞ্জিং' রাখা হয়, যার অর্থ 'স্বর্গীয় রাজধানী'। ১৮৬৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তাদের শাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল।

আধুনিক চীন

১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে চীনে জাতীয়তাবাদী সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে সাংবিধানিকভাবে সরকার 'রিপাবলিক অফ চায়না' নাম গ্রহণ করে। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই সরকারের শাসন ব্যবস্থা বহাল ছিল। এই সরকারের আমলে পর্যায়ক্রমে কয়েকটি শহরকে চীনের রাজধানী করা হয়। এর মধ্যে ১৯২৮-১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত নানচিংকে রাজধানীর মর্যাদা প্রদান করা হয়। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে চীন ও জাপানের মধ্যে ভয়াবহ যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধের একপর্যায়ে ১৯৪০ সালে চীনে জাপানের অনুগত একটি পুতুল সরকার গঠিত হয়। সেই সরকারের নাম দেয়া হয় 'রি-অর্গানাইজড ন্যাশনাল গভর্নমেন্ট অফ দ্য রিপাবলিক অফ চায়না'। ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত এই সরকার টিকে ছিল। সেই সরকারও নানচিংকে তাদের রাজধানী হিসেবে মর্যাদা প্রদান করে। এরপর ১৯৪৯ সাল থেকে বেইজিং চীনের রাজধানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ