বেনেডিক্ট কাম্বারব্যাচ
বেনেডিক্ট টিমোথি কার্লটন কাম্বারব্যাচ [২] (ইংরেজি: Benedict Cumberbatch) CBE (জন্ম ১৯ জুলাই ১৯৭৬) একজন ইংরেজ অভিনেতা ও প্রযোজক যিনি চলচ্চিত্র, টেলিভিশন, নাট্যমঞ্চে ও বেতারে অভিনয় করেছেন। তিনি ইংরেজ অভিনেতা টিমোথি কার্লটন ও ওয়ান্ডা ভেনথাম এর পুত্র। ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করে, তিনি লন্ডন সঙ্গীত ও নাট্যকলা একাডেমিতে চিরায়ত অভিনয় প্রশিক্ষনে যোগ দেন ও সেখান থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। ২০০১ সালে তিনি সর্বপ্রথম লন্ডনে রিজেন্ট পার্কস্থ ওপেন এয়ার থিয়েটারে লাভ'স লেবার'স লস্ট, এ মিডসামার নাইট'স ড্রিম ও ২০০২ সালে রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট নাটকের মঞ্চায়নে অভিনয় করেন। ২০০৫ সালে তিনি রিচার্ড আয়ার এর হেডা গ্যাবলার নাটকে জর্জ টেসম্যান চরিত্রে অভিনয় করেন। এরপর রয়েল ন্যাশনাল থিয়েটারেআফটার দ্য ড্যান্স (২০১০) ও ফ্রাঙ্কেনস্টাইন (২০১১) নাটকে অভিনয় করেছেন।
বেনেডিক্ট কাম্বারব্যাচ | |
---|---|
জন্ম | বেনেডিক্ট টিমোথি কার্লটন কাম্বারব্যাচ ১৯ জুলাই ১৯৭৬ হ্যামারস্মিথ, লন্ডন, ইংল্যান্ড |
মাতৃশিক্ষায়তন |
|
পেশা | অভিনেতা, প্রযোজক |
কর্মজীবন | ২০০০- বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | সোফি হান্টার (বি. ২০১৫) |
সন্তান | ২ |
পিতা-মাতা |
|
স্বাক্ষর | |
কাম্বারব্যাচ প্রথমদিকে হার্টবিট (২০০০), সাইলেন্ট উইটনেস (২০০২) এবং ফোরটিসামথিং (২০০৩) ইত্যাদি টেলিভিশন চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আলোচিত হন। এরপর স্টিফেন হকিং এর জীবনী নিয়ে নির্মিত টেলিভিশন চলচ্চিত্র হকিং (২০০৪) এ হকিং এর চরিত্রে অভিনয় করেন। ২০১০ সালে আর্থার কোনান ডয়েল এর উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত শার্লক টেলিভিশন ধারাবাহিকে শার্লক হোমস এর চরিত্রে অভিনয় করেন। এর মাধ্যমে তিনি বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হন। এছাড়াও তিনি টম স্টপার্ড এর উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত প্যারেড'স এন্ড (২০১২) টেলিভিশন ধারাবাহিকে অভিনয় করেন ও দি সিম্পসনস (২০১৩) এনিমেশন ধারাবাহিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও সেভেরাস স্নেপ চরিত্রের জন্য কন্ঠ দেন।
২০০৩ সালে টু কিল আ কিং চলচ্চিত্রের মাধ্যমে কাম্বারব্যাচ প্রথম চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। এরপরে তিনি অ্যাটনমেন্ট (২০০৭), টিঙ্কার টেইলর সোলজার স্পাই (২০১১), ওয়ার হাউজ (২০১১) চলচ্চিত্রে আবির্ভূত হন। তিনি ২০০৬ সালের অ্যাামেজিং গ্রেস চলচ্চিত্রে উইলিয়াম পিট দ্য ইয়ংগার এর ভুমিকায় ও ২০১৩ সালে স্টার ট্রেক ইনটু ডার্কনেস চলচ্চিত্রে "খান" এর ভূমিকায়, টুয়েলভ ইয়ার্স আ স্লেইভ এ "উইলিয়াম প্রিন্স ফোর্ড", দি ফিফথ এস্টেট চলচ্চিত্রে "জুলিয়ান অ্যাস্যাঞ্জ" ও ২০১৪ সালের দি ইমিটেশন গেইম চলচ্চিত্রে "অ্যালান টুরিং" এর ভূমিকায় অভিনয় করেন। এছাড়া, ২০১২ -২০১৪ সালে দ্য হবিট চলচ্চিত্র ত্রয়ীর দুটিতে স্মাগ ও সোউরন চরিত্রের জন্য কন্ঠ দেন।
প্রাথমিক জীবন
কাম্বারব্যাচ ১৯৭৬ সালের ১৯ জুলাই লন্ডনের হ্যামারস্মিথ শহরস্থ কুইন চার্লোট'স হসপিটালে জন্মগ্রহণ করেন। [২] তার বাবা অভিনেতা টিমোথি কার্লটন (পুরো নাম টিমোথি কার্লটোন কংডন কাম্বারব্যাচ) [৩] ও মা ওয়ান্ডা ভেনথাম। [৪] তার ছেলেবেলা কাটে রাজসিক কেনসিংটন এবং চেলসি শহরে। ট্রেসি পিকক নামে তার একজন সৎবোন রয়েছে। [৫] তার ঠাকুরদাদা, হেনরি কার্লটন কাম্বারব্যাচ ছিলেন একজন নৌ কর্মকর্তা। তিনি ১ম ও ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় সাবমেরিন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি লন্ডন হাই সোসাইটির একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব হিসেবওে পরিচিত ছিলেন। কাম্বারব্যাচের প্রপিতামহ, হেনরি আরনল্ড কাম্বারব্যাচ CMG, তুরস্ক ও লেবাননে রাণী ভিক্টোরিয়া র রাজকীয় দূত হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। [৬][৭]
কাম্বারব্যাচ আট বছর বয়সে বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি হন। [৮] তিনি পশ্চিম সাসেক্সে অবস্থিত ব্রাম্বলটাই স্কুলে পড়াশুনা করেন। পরবর্তীতে লন্ডনের সবচেয়ে ব্যয়বহুল আর ঐতিহাসিক হ্যারো স্কুলে পড়তে যান। [৯][১০][১১]
হ্যারো স্কুলে পড়াশুনা শেষে কাম্বারব্যাচ কিছু সময় ভারত এর দার্জিলিং এ একটি তিব্বতী বৌদ্ধ আশ্রমে স্বেচ্ছাসেবী ইংরেজি ভাষার শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। [১২] লন্ডন ফিরে এসে তিনি ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলাতে ভর্তি হন। [১৩] সেখান থেকে স্নাতক শেষে তিনি "লন্ডন সঙ্গীত ও নাট্যকলা একাডেমি" তে চিরায়ত অভিনয় প্রশিক্ষনে যোগ দেন ও সেখান থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। [১৪]
পেশাজীবন
থিয়েটার/মঞ্চ
কাম্বারব্যাচের পেশাদার অভিনয় জীবন শুরু হয় মঞ্চ-নাটকের মাধ্যমে। ২০০১ সাল থেকে তিনি বিভিন্ন মঞ্চনাটকে প্রধাণ চরিত্রতে নিয়মিত অভিনয় শুরু করেন। রিজেন্টস পার্ক'স্থ ওপেন এয়ার থিয়েটার, আলমেইদা থিয়েটার, রয়্যাল কোর্ট থিয়েটার কিংবা রয়্যাল ন্যাশনাল থিয়েটারসহ লন্ডনের প্রায় সব নামী-দামী থিয়েটারই তার পদচারণায় মুখর হয়েছে। ২০০৫ সালে তিনি হেডা গ্যাবলার নাটকে জর্জ টেসম্যান চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেতা হিসেবে অলিভিয়ার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন। [১৫][১৬]
২০১০ এর জুনে রয়্যাল ন্যাশনাল থিয়েটারে তিনি থিয়া শ্যারক এর পরিচালনায় টেরেন্স রাটিগান এর আফটার দ্য ড্যান্স নাটকে অভিনয় করেন। [১৭] এ নাটকটি "বেস্ট রিভাইভাল" সহ চারটি অলিভিয়ার পুরস্কার জেতে। [১৮]
একই বছরের ১৪ নভেম্বর, কাম্বারব্যাচ লন্ডনের ওল্ড ভিক্টোরিয়ান থিয়েটারে ড্যানি বয়েল এর দি চিলড্রেন'স মনোলোগাস নাটকে অভিনয় করেন, যেটি একটি চ্যারিটি ইভেন্টে প্রদর্শিত হয়। ড্রামাটিক নীড নামের একটি ব্রিটিশ দাতব্য প্রতিষ্ঠান এই নাটকের প্রযোজনা করে। [১৯]
২০১১ এর ফেব্রুয়ারিতে রয়েল ন্যাশনাল থিয়েটারে কাম্বারব্যাচ, জনি লি মিলার সাথে ভিক্টর ফ্রাঙ্কেনস্টাইন ও সৃষ্টির চরিত্রে অভিনয় করেন। মেরি শ্যালির ফ্রাঙ্কেনস্টাইন উপন্যাস অবলমনে ড্যানি বয়েল এ মঞ্চনাটকের পরিচালনা করেন। [২০][২১] মার্চে, ন্যাশনাল থিয়েটার লাইভ এর উদ্যোগে নাটকটি প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হয়। .[২২] ফ্রাঙ্কেনস্টাইনে অভিনয়ের জন্য তিনি লরেন্স অলিভার পুরস্কার জিতে নেন যা মঞ্চে অভিনয়ের ক্ষেত্রে লন্ডনের সবচেয়ে বড় পুরস্কার। ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের জন্য তিনি ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড পুরস্কার ও ক্রিটিক সার্কেল থিয়েটারও পুরস্কার লাভ করেন। এ তিনটি পুরস্কারের মাধ্যমে তিনি ২০১১ সালের "লন্ডনের মঞ্চ নাটকের মুকুটত্রয়ী" লাভের সম্মাননা অর্জন করেন। [২৩]
টেলিভিশন
কাম্বারব্যাচের ছোট পর্দায় আগমন ঘটে ''হার্টবিট'' (২০০০,২০০৪) নামের একটি টেলিভিশন ধারাবাহিকেে অতিথি চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে। এছাড়া, তার অভিনীত ছোটপর্দায় প্রথমদিকের ধারাবাহিক গুলোর মধ্যে টিপিং দ্য ভেলভেট (২০০২), ক্যামব্রিজ স্পাইস (২০০৩) ও ফোরটিসামথিং (২০০৩) উল্লেখযোগ্য। ২০০৪ সালে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের প্রথম দিককার জীবন নিয়ে নির্মিত টেলিভিশন চলচ্চিত্র “হকিং” এ কাম্বারব্যাচ হকিং এর ভূমিকায় অভিনয় করেন। এটিই তার ছোট পর্দায় প্রথম কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়। “হকিং”য়ে অভিনয়ের পূর্বে নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য বেনেডিক্ট দুবার স্টিফেন হকিংয়ের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এই চলচ্চিত্রের জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে ব্রিটিশ একাডেমী টেলিভিশন অ্যাওয়ার্ড এর জন্য মনোনীত হন ও মন্টে-কার্লো টেলিভিশন চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার জিতে নেন। পরবর্তীতে কিওরিওসিটি নামের একটি টেলিভিশন ধারাবাহিকে প্রথম পর্বে হকিং এর চরিত্রে কন্ঠ দেন। তিনি বিবিসি নির্মিত ডানকার্ক নামের একটি ধারাবাহিকেও অভিনয় করেন লেফটেন্যান্ট জিমি ল্যাংলের ভূমিকায়। [২৪]
২০০৫ এ কাম্বারব্যাচ ইংরেজ ঔপন্যাসিক উইলিয়াম গোল্ডিং এর টু দ্য এন্ডস অফ দ্য আর্থ ত্রয়ী অবলম্বনে একই নামে বিবিসি নির্মিত তিন পর্বের ধারাবাহিকে প্রধান চরিত্র "এডমন্ড ট্যালবট" এর ভূমিকায় অভিনয় করেন। দক্ষিণ আফ্রিকাতে এই ধারাবাহিকের চিত্রগ্রহণের সময় তারা ওই অঞ্চলের একটি গাড়ি অপহরণকারীদের হামলার শিকার হন। কাম্বারব্যাচ ও তার দুজন সহঅভিনেতাকে বন্দুকের মুখে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়। অবশ্য পরে, মাঝরাতে এক বিরানভূমিতে এনে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। [২৫]
২০০৮ এ, কাম্বারব্যাচ দ্য লাস্ট এনিমি নামের আরেকটি বিবিসি টেলিভিশন ধারাবাহিকে মূখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন। এর মাধ্যমে তিনি সেরা অভিনেতা হিসেবে স্যাটেলাইট পুরষ্কারের জন্য মনোনয়ন পান। ২০০৯ সালে মার্পল: মার্ডার ইজ ইজি ধারাবাহিকে অভিনয় করেন। সেবছর তিনি আন্দ্রিয়া লেভির স্মল আইল্যান্ড উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত বিবিসির টেলিভিশন চলচ্চিত্রে বার্নার্ড চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে ব্রিটিশ একাডেমী টেলিভিশন পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন। [২৬]
২০১০ এ, ফরাসী চিত্রকর ভ্যান গগের জীবন নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র “ভ্যান গগ” এ গগের ভূমিকায় অভিনয় করেন। ব্রিটিশ পত্রিকা টেলিগ্রাফ তার অভিনয়ের প্রশংসা করে মন্তব্য করে, "[a] treat ... vividly bringing Van Gogh to impassioned, blue-eyed life." [২৭] একই বছরে, কাম্বারব্যাচ বিবিসি/পিবিএস এর যৌথভাবে নির্মিত টেলিভিশন ধারাবাহিক শার্লক এ শার্লক হোমস এর চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন, যা বিশ্বজুড়ে ব্যপক সমাদৃত হয় ও সমালোচকদের দ্বাড়াও প্রশংসিত হয়। [২৮][২৯][৩০] ২০১২ এর প্রথম দিনে যুক্তরাজ্যে শার্লক এর দ্বিতীয় মৌসুম বের হয় [৩১] ও মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পিবিএস সম্প্রচার করে। [৩২] ২০১৪র জানুয়ারী - ফেব্রুয়ারিতে তিন সপ্তাহ ধরে শার্লকের তৃতীয় মৌসুম সম্প্রচারিত হয়। তৃতীয় মৌসুমের তৃতীয় পর্ব "হিজ লাস্ট ভাউ" এর জন্য কাম্বারব্যাচ Outstanding Lead Actor in a Miniseries or a Movie বিভাগে প্রাইমটাইম এমি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। [৩৩]
২০১২ তে, কাম্বারব্যাচ রেবেকা হলের সাথে বিবিসি ও এইচবিও নির্মিত প্যরেড'স এন্ড মিনিসিরিজে অভিনয় করেন। ফরাসি ঔপন্যাসিক ফোর্ড মাডোক্স ফোর্ড এর প্যারেড'স এন্ড উপন্যাস চতুর্থী অবলম্বনে নির্মিত পাঁচ পর্বের এ ধারাবাহিক পরিচালনা করেন সুজানা হোয়াইট। [৩৪][৩৫] তার অভিনয়ের জন্য কাম্বারব্যাচ দ্বিতীয়বার Best Actor in Miniseries or TV Movie বিভাগে এমি অ্যাওয়ার্ড এর জন্য মনোনয়ন পান। [৩৬]
২০১৪ এর ফেব্রুয়ারিতে, কাম্বারব্যাচ পিবিএস নির্মিত শিশুতোষ ধারাবাহিক সিসেইম স্ট্রীট এ অভিনয় করেন। [৩৭] এপ্রিল, ২০১৪ এ ঘোষণা হয়, দ্য হলো ক্রাউন টেলিভিশন চলচ্চিত্র ধারাবাহিকে উইলিয়াম শেক্সপিয়র এর Richard III উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত টেলিভিশন চলচ্চিত্রে তিনি রাজা রিচার্ড III এর ভূমিকায় অভিনয় করবেন। [৩৮]
চলচ্চিত্র
২০০৩ সালে কাম্বারব্যাচ টু কিল আ কিং ও ২০০৬ সালে স্টার্টার ফর ১০ এ জেমস ম্যাকাভয়ের পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন। একই বছর তিনি অ্যামেজিং গ্রেস চলচ্চিত্রে উইলিয়াম পিট এর ভূমিকায় অভিনয় করেন। এ চলচ্চিত্রটির জন্য কাম্বারব্যাচ সেরা সাফল্যমণ্ডিত ব্রিটিশ অভিনেতা হিসেবে লন্ডন ফিল্ম ক্রিটিক সার্কেল পুরস্কার এর জন্য মনোনীত হন। এরপরে তিনি অ্যাটনমেন্ট (২০০৭) এবং দি আদার বলিন গার্ল (২০০৮) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। অ্যাটনমেন্ট চলচ্চিত্রটি দেখে শার্লকের দুই নির্মাতা (মার্ক গ্যাটিস এবং স্টিভেন মোফাট) কাম্বারব্যাচকে শার্লক হিসেবে নির্বাচিত করেন।
২০০৯ সালে তিনি ডারউইন এর জীবনীমূলক চলচ্চিত্র ক্রিয়েশন এ ডারউইন এর বন্ধু জোসেফ হুকার এর ভূমিকায় অভিনয় করেন। ২০১০ সালে দি হুইসেলব্লোয়ার চলচ্চিত্রে কাজ করেন। ২০১১ সালে তিনি প্রথমবারের মত বড় বাজেটের চলচ্চিত্র জন ল্য কারে এর উপন্যাস থেকে নির্মিত টিঙ্কার টেইলর সোলজার স্পাই এ ন্যতম প্রধাণ চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান। থমাস আলফ্রেডসন চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন। [৩৯] একই বছর স্টিভেন স্পিলবার্গের ওয়ার হাউজ চলচ্চিত্রে মেজর জেমি স্টুয়ার্ট এর ভূমিকায় অভিনয় করেন। [৩৯]
বেতার
কাম্বারব্যাচ বরাবরই বেতারের জন্য কাজ করতে আগ্রহী ছিলেন ও বিবিসির বহুসংখ্যক বেতার নাটকে ভূমিকা রেখেছেন। [৪০] এর মধ্যে ২০০৯ সালে জন মর্টিমার এর নাটক অবলম্বনে রুম্পোল এন্ড দ্য পেঞ্জ বাংলো মার্ডারস তার সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ বেতার উপস্থাপনা। এই নাটকে কাম্বারব্যাচ যুবক রুম্পোল এর ভূমিকায় অভিনয় করেন ও এরপরে মর্টিমারের আরও নয়টি নাটক অবলম্বনে নির্মিত বেতার নাটকের জন্য কাজ করেন। ২০০৮ - ২০১৪ এর মধ্যে তিনি বিবিসি নির্মিত কেবিন প্রেসার নাটকে ক্যাপ্টেন মার্টিন ক্রিফ চরিত্রে অভিনয় করেন। ২০১৩তে "বিবিসি রেডিও ৪" প্রযোজিত নিল গেইমান এর নেভারহয়ার নাটক থেকে নির্মিত বেতার নাটকে এঞ্জেল ইজলিংটন চরিত্রে অভিনয় করেন। একই বছরে তিনি "বিবিসি রেডিও ৩" প্রযোজিত মাইকেল ফ্রেন এর কোপেনহেগেন অবলম্বনে নির্মিত নাটকে তাত্ত্বিক পদার্থবিদ ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ এর ভূমিকায় অভিনয় করেন। [৪১]
নরম্যান্ডি অবতরণ এর ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে, কাম্বারব্যাচ বিবিসি রেডিও ৪ এর জুন ১৯৪৪ এ পঠিত মূল বেতার বার্তাটি পড়ে শোনান। [৪২]
বর্ণনা
চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান
২০১৩ সালের শেষের দিকে কাম্বারব্যাচ, অ্যাডাম অ্যাকল্যাণ্ড, কাহিনীকার ও পরিচালক প্যাট্রিক মনরো, অ্যাকশন কো-অর্ডিনেটর বেন ডিলন ও প্রোডাকশন ম্যানেজার অ্যাডাম সেল্ভস মিলে "সানিমার্চ লিমিটেড" নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। [৪৩] তাদের এ প্রতিষ্ঠানের প্রথম চলচ্চিত্র প্রকল্প হিসেবে ৮৭,০০০ পাউন্ড ব্যয়ে লিটল ফেভার নামে একটি স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। এতে কাম্বারব্যাচ কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন ও প্যাট্রিক মনরো চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন। ৩০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই অ্যাকশন-থ্রিলার চলচ্চিত্রটি ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর আইটিউন্স এ মুক্তি দেয়া হয়। [৪৩][৪৪]
ব্যক্তিগত জীবন
১৯৯৯ সাল থেকে কাম্বারব্যাচ ইংরেজ অভিনেত্রী অলিভিয়া পোলেটের সাথে প্রেম শুরু করেন। ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলাতে পড়ার সময় তার সাথে পরিচয় হয়। এ সম্পর্ক ১২ বছর টিকে। [৪৫] পোলেটের পরে আনা জেমস নামের একজন লন্ডনের শিল্পীর সাথে সম্পর্ক শুরু হয়। [৪৬]
৫ নভেম্বর ২০১৪ তে, যুক্তরাজ্যের দ্য টাইমস পত্রিকার আসন্ন বিবাহ বিভাগে, নাট্যমঞ্চ ও অপেরা পরিচালক সোফি হান্টার এর সাথে কাম্বারব্যাচের বাগদানের খবর প্রকাশিত হয়। [৪৭][৪৮][৪৯][৫০] ২০১৫ র ৭ জানুয়ারী, কাম্বারব্যাচের মুখপাত্র এই দম্পতির আসন্ন সন্তান লাভের সত্যতা নিশ্চিত করেন। [৫১][৫২] ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, এই দম্পত্তি ইংল্যান্ডের প্রাচীন সেইন্ট পিটার ও সেইন্ট পল চার্চে বিয়ে করেন। [৫৩][৫৪][৫৫] ২০১৫ সালের ১৩ জুন ক্যাম্বারব্যাচ দম্পত্তি একটি পুত্র সন্তান লাভ করেন। [৫৬]
কাম্বারব্যাচ বৌদ্ধ ধর্মের দর্শনে বিশ্বাস করেন এবং ধ্যান ও প্রশান্তি চর্চার ব্যাপারে তার আগ্রহ রয়েছে। [৫৭][৫৮]
দানশীলতা ও সামাজিক কর্মকাণ্ড
কাম্বারব্যাচ “The Prince’s Trust” (প্রিন্স চার্লস প্রতিষ্ঠিত দাতব্য সংস্থা) এর একজন মুখপাত্র। [৫৯] ২০০৩ সালে তিনি লন্ডনে আয়োজিত ইরাক যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন। [৬০] ২০১৩ সালে তিনি এককভাবে সরকার কর্তৃক “নাগরিক স্বাধীনতা লঙ্ঘন”এর বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ করেন। [৬১][৬২]
নির্বাচিত চলচ্চিত্র সমূহ
- ফোরটিসামথিং (ধারাবাহিক) (২০০৩)
- হকিং (২০০৪)
- স্টার্টার ফর টেন (২০০৬)
- অ্যাামেজিং গ্রেস (২০০৬)
- অ্যাটনমেন্ট (২০০৭)
- দি আদার বোলিন গার্ল (২০০৮)
- দি লাস্ট এনিমি (ধারাবাহিক) (২০০৮)
- থার্ড স্টার (২০১০)
- শার্লক (২০১০-বর্তমান)
- টিঙ্কার টেইলর সোলজার স্পাই (২০১১)
- রেকারস (২০১১)
- ওয়ার হাউজ (২০১১)
- দি হবিট: অ্যান আনএক্সপেক্টেড জার্নি (২০১২)
- প্যারেড'স এন্ড (ধারাবাহিক) (২০১২)
- স্টার ট্রেক ইনটু ডার্কনেস (২০১৩)
- টুয়েলভ ইয়ার্স আ স্লেইভ (২০১৩)
- দ্য ফিফথ এস্টেট (২০১৩)
- দ্য হবিট: দ্য ডিসোলশন অব স্মাগ (২০১৩)
- অগাস্ট: অসেইজ কাউন্টি (২০১৩)
- দ্য ইমিটেশন গেইম (২০১৪)
- দ্য হবিট: দ্য ব্যাটল অব দ্য ফাইভ আর্মিস (২০১৪)
- Doctor strange
পুরস্কার ও সম্মাননা
চলচ্চিত্র পুরস্কার
বছর | পুরস্কার | বিভাগ | চলচ্চিত্র | ফলাফল | সূত্র |
---|---|---|---|---|---|
২০০৬ | লন্ডন ফিল্ম ক্রিটিকস সার্কেল অ্যাওয়ার্ড | সেরা সাফল্যমণ্ডিত ব্রিটিশ অভিনেতা | অ্যাামেজিং গ্রেস | মনোনীত | |
২০১১ | ব্রিটিশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড | সেরা পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেতা | টিঙ্কার টেইলর সোলজার স্পাই | মনোনীত | |
২০১৩ | ক্রিটিক চয়েজ মুভি অ্যাওয়ার্ড | হটেস্ট চলচ্চিত্র অভিনেতা | পুরস্কারপ্রাপ্ত | ||
সেরা সম্মিলিত অভিনয় | অগাস্ট: অসেইজ কাউন্টি | মনোনীত | |||
১২ ইয়ারস এ স্লেভ | মনোনীত | [৬৩] | |||
ওয়াশিংটন ডি.সি. এরিয়া ফিল্ম ক্রিটিক অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড | পুরস্কারপ্রাপ্ত | [৬৪] | |||
বোস্টন অনলাইন ফিল্ম ক্রিটিক অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড | পুরস্কারপ্রাপ্ত | [৬৫] | |||
ডেট্রয়েট ফিল্ম ক্রিটিক সোসাইটি অ্যাওয়ার্ড | মনোনীত | [৬৬] | |||
স্যান ডিয়েগো ফিল্ম ক্রিটিক সোসাইটি অ্যাওয়ার্ড | মনোনীত | [৬৭] | |||
ফিনিক্স ফিল্ম ক্রিটিক সোসাইটি অ্যাওয়ার্ড | সেরা অভিনয় | মনোনীত | [৬৮] | ||
স্ক্রীন অ্যাক্টর গিল্ড অ্যাওয়ার্ড | সেরা সাফল্যমন্ডিত অভিনয় | মনোনীত | |||
অগাস্ট: অসেইজ কাউন্টি | মনোনীত | [৬৯] | |||
হলিউড ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড | সেরা সম্মিলিত অভিনয় | অগাস্ট: অসেইজ কাউন্টি | পুরস্কারপ্রাপ্ত | [৭০] | |
স্যাটার্ন পুরস্কার | সেরা পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেতা | স্টারট্রেক ইনটু ডার্কনেস | পুরস্কারপ্রাপ্ত | [৭১] | |
২০১৪ | অস্ট্রেলিয়ান অ্যাকাডেমী অফ সিনেমা এন্ড টেলিভিশন আর্টস অ্যাওয়ার্ড | সেরা অভিনেতা | দি ইমিটেশন গেম | মনোনীত | |
বাফটা অ্যাওয়ার্ড | মনোনীত | ||||
ব্রিটিশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড | মনোনীত | ||||
বৈচিত্র্যতা | পুরস্কারপ্রাপ্ত |