ভারতীয় বিমানবাহিনী
ভারতীয় বিমানবাহিনী বা ভারতীয় বায়ুসেনা (হিন্দি: भारतीय वायु सेना, Bhartiya Vāyu Senā; ইংরেজি: Indian Air Force বা IAF) ভারতের সামরিক বাহিনীর বৈমানিক শাখা। এই বাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হল ভারতের আকাশপথ সুরক্ষিত রাখা ও আকাশে সংঘটিত যুদ্ধ পরিচালনা করা।
ভারতীয় বিমানবাহিনী | |
---|---|
প্রতিষ্ঠা | ৮ অক্টোবর, ১৯৩২ |
দেশ | ভারত |
আকার | ১৭০,০০০ জওয়ান ১,৯১৫ বিমান (তন্মধ্যে ৭৬০টি যুদ্ধবিমান ও ৩৮৮টি ইউভিএস) |
অংশীদার | ভারতের সামরিক বাহিনী |
সদর | নতুন দিল্লি |
নীতিবাক্য | সংস্কৃত: নভ স্পর্শং দীপ্তম্ "সগৌরবে স্পর্শ করো আকাশ"[১] |
রং | গাঢ় নীল, আকাশী এবং সাদা |
কমান্ডার | |
বিমানবাহিনী প্রধান (সিএএস) | এয়ার চিফ মার্শাল বীরেন্দ্র সিংহ ধনোয়া |
বিমানবাহিনী উপপ্রধান ( VCAS ) | এয়ার মার্শাল শিরীষ ববন দেও |
উল্লেখযোগ্য কমান্ডার | সুব্রত মুখার্জী প্রতাপ চন্দ্র লাল |
প্রতীকসমূহ | |
পতাকা | |
রাউন্ডেল | |
ফিন ফ্ল্যাশ | |
বিমানবহর | |
আক্রমণ | জাগুআর আই এস, মিগ-২১, মিগ-২৭ |
বৈদ্যুতিক যুদ্ধ | আইএআই ফ্যাল্কন |
জঙ্গী বিমান | সুখোই এসইউ-৩০ এমকেআই, ডাসাল্ট মিরেজ ২০০০, মিগ-২১ |
হেলিকপ্টার | ধ্রুব, চেতক, চিতা, Mi-8/Mi-17, Mi-26, Mil Mi-24 |
গোয়েন্দা বিমান | গাল্ফস্ট্রীম ৪ |
পরিবহন বিমান | Il-76 MD, এএন ৩২, HS-748, Boeing 707, Boeing 737, ডিও ২২৮ |
১৯৩২ সালের ৮ অক্টোবর ব্রিটিশ ভারতীয় সাম্রাজ্যের সহায়ক বিমানবাহিনীরূপে ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের প্রতিষ্ঠা। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সেবার স্বীকৃতি স্বরূপ বাহিনীর নামের সঙ্গে রয়্যাল উপসর্গটি যুক্ত হয়। ১৯৪৭ সালে যুক্তরাজ্যের অধীনতাপাশ থেকে মুক্ত হওয়ার পর রয়্যাল ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স ভারতীয় সংঘের অধীনস্থ হয়। ১৯৫০ সালে ভারত প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র ঘোষিত হলে রয়্যাল উপসর্গটি বর্জন করা হয়। স্বাধীনতার পর ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে চারটি ও চীনের সঙ্গে একটি যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। এছাড়া যে অভিযানগুলিতে বায়ুসেনা অংশগ্রহণ করেছে সেগুলি হল গোয়া আক্রমণ, অপারেশন মেঘদূত ও অপারেশন ক্যাকটাস।
ভারতের রাষ্ট্রপতি বায়ুসেনার সর্বাধিনায়ক। এয়ার চিফ মার্শাল পদের অফিসার বায়ুসেনাপ্রধান বিমানবাহিনীকে পরিচালিত করেন। সাধারণত একই সময় এক জন বায়ুসেনাপ্রধানই নিযুক্ত থাকেন। একজন মাত্র অফিসার অদ্যাবধি পাঁচ-তারা মার্শাল অফ দ্য এয়ার ফোর্স পদে উন্নীত হয়েছেন।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর কর্মীসংখ্যা ১৭০,০০০; ১,১৩০টি কমব্যাট ও ১,৭০০টি নন-কমব্যাট এয়ারক্র্যাক্ট বর্তমানে সক্রিয় আছে। ভারতীয় বিমানবাহিনী বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম বিমানবাহিনী।[২] সাম্প্রতিককালে ভারতীয় বিমানবাহিনী একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিবর্ধন ও আধুনিকীকরণের প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছে। এই প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসেবে সোভিয়েত জমানার ফাইটার জেটগুলি বাতিল করা হচ্ছে। পরিবর্ধন প্রক্রিয়ায় ভারতীয় এমআরসিএ কর্মসূচির অধীনে বায়ুসেনা ১২৬টি নতুন ফাইটার জেট কেনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাদের অর্থমূল্য ১০০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।[৩]
লক্ষ্য
১৯৪৭ সালে সশস্ত্র বাহিনী আইন, ভারতের সংবিধান ও ১৯৫০ সালের বায়ুসেনা আইন অনুসারে আকাশযুদ্ধে বায়ুসেনার লক্ষ্য হল: প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি তথা ঐ জাতীয় সকল পদক্ষেপ সহ ভারত ও তাহার প্রত্যেক অংশের প্রতিরক্ষা যুদ্ধের প্রারম্ভকাল হইতে যুদ্ধকাল ও যুদ্ধসমাপ্তি-উত্তর কালে শান্তিপ্রতিষ্ঠা পর্যন্ত পরিচালনা করা।[৪] এছাড়াও ভারতীয় সামরিক বাহিনীর অন্যান্য শাখার ন্যায় বায়ুসেনাও প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিচালনার ক্ষেত্রে স্থানীয় ও রাজ্য সরকারগুলিকে সহায়তা করতে পারে।
ইতিহাস
১৯৩২ সালের ভারতীয় বিমানবাহিনী আইন বলে এই বছর অক্টোবর রয়্যাল এয়ারফোর্সের [৫][৬] সহকারী বিমানবাহিনী হিসেবে[৭] প্রতিষ্ঠিত হয় ভারতীয় বিমানবাহিনী। ১৯৩৩ সালের ১ এপ্রিল চারটি ওয়েস্টল্যান্ড ওয়াপিটি বাইপ্লেন ও পাঁচজন ভারতীয় পাইলট সহ ভারতীয় বিমানবাহিনী নং ১ স্কোয়াড্রন নামক বাহিনীর প্রথম স্কোয়াড্রনটিকে নিযুক্ত করে। ভারতীয় পাইলটদের নেতৃত্ব দেন ফ্লাইট লেফট্যানেন্ট (পরবর্তীকালে এয়ার চিফ মার্শাল) স্যার সিসিল বসিয়ার।[৮] ১৯৩৮ সালের পূর্বাবধি নং ১ স্কোয়াড্রন ছিল ভারতীয় বিমানবাহিনীর একমাত্র স্কোয়াড্রন। যদিও দুটি ফ্লাইট সংযুক্ত হয়েছিল বাহিনীর সঙ্গে।[৮] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রনের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ১৯৪৩ সালে স্কোয়াড্রনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় সাত এবং ১৯৪৫ সালে এই সংখ্যা হয় আট।[৮] ভারতীয় সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের স্বীকৃতি রূপে রাজা ষষ্ঠ জর্জ ১৯৪৫ সালে এই বিমানবাহিনীকে রয়্যাল বা রাজকীয় উপাধিটি দান করেন।[৬][৯]
১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের পর রয়্যাল ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্স দ্বিধাবিভক্ত হয়। বাহিনীর দশটি অপারেশনাল স্কোয়াড্রনের মধ্যে পাকিস্তানের সীমানার মধ্যে অবস্থিত তিনটি রয়্যাল পাকিস্তান এয়ারফোর্সের হাতে তুলে দেওয়া হয়।[১০]
১৯৪৭ সালে দেশীয় রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীরের অধিকার নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিবাদ উপস্থিত হলে কাশ্মীরের মহারাজা সামরিক সাহায্যলাভের আশায় ভারতে যোগ দেন।[১১] সংযোজন-সাধনপত্র সাক্ষরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় বিমানবাহিনী অবিলম্বে যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হয়।[১১] এর ফলে ১৯৪৭ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সূচনা ঘটে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনোরূপ যুদ্ধঘোষণা করা হয়নি।[১২] যুদ্ধকালে ভারতীয় বিমানবাহিনী রয়্যাল পাকিস্তান এয়ারফোর্সের সঙ্গে আকাশযুদ্ধে লিপ্ত না হলেও ভারতীয় বাহিনীকে পরিবহন সহায়তা সহ বিশেষ বৈমানিক সাহায্য দান করেছিল।[১৩] ১৯৫০ সালে ভারত প্রজাতন্ত্র ঘোষিত হলে ভারতীয় বিমানবাহিনীর নাম থেকে রয়্যাল উপসর্গটি বর্জন করা হয়।
|
১৯৬০ সালে কঙ্গোয় বেলজিয়ামের ৭৫ বছরের ঔপনিবেশিক শাসনের সহসা সমাপ্তি ঘটলে দেশ জুড়ে দাঙ্গা ও বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে।[১৪] ভারতীয় বিমানবাহিনীর এয়ারক্র্যাফট এই সময় কঙ্গোয় জাতিসংঘের অপারেশনকে সাহায্য করার জন্য উপস্থিত হয় এবং নভেম্বরে অপারেশনাল মিশনে হাত দেয়।[১৫] ১৯৬৬ সালে জাতিসংঘের মিশন শেষ হওয়া পর্যন্ত বিমানবাহিনীর ইউনিটটি সেখানেই থাকে।[১৫]
১৯৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধের সময় ভারতীয় সামরিক পরিকল্পনাকারীগণ কার্যকরীভাবে অনুপ্রবেশকারী চীন বাহিনীর বিরুদ্ধে ভারতীয় বিমানবাহিনীকে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হন।[১৭] তিন বছর বাদে ১৯৬৫ সালে কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তান পুনরায় যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এই সময় পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনীকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই প্রথম কোনো শত্রুবাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রত্যক্ষ আকাশযুদ্ধে লিপ্ত হয়।[১৮] এই যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে নিবিড় সহায়তা দানের বদলে[১৯] পাকিস্তান বিমানবাহিনীর বেসগুলিতে ভারতীয় বিমানবাহিনী স্বাধীনভাবে রেড চালায়।[২০] এই বেসগুলি পাকিস্তানি সীমার অনেক ভিতরে অবস্থিত ছিল। তাই এই রেড চালানোর ফলে ভারতীয় বিমানবাহিনী বিমান-বিধ্বংসী গুলিচালনার বিরুদ্ধে নিজ দক্ষতার বিশেষ পরিচয় রাখে।[২১] যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর সামরিক সরঞ্জামগুলি ভারতীয় বিমানবাহিনীর তুলনায় গুণগত মানের বিচারে অনেক উন্নত ছিল। কারণ ভারতীয় বিমানবাহিনীর ফ্লিটের অধিকাংশ জেটই ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন। তা সত্ত্বেও যুদ্ধক্ষেত্রে পাকিস্তানি বাহিনীকে প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে ভারতীয় বিমানবাহিনীর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠালাভ করে।[২২] যুদ্ধ শেষ হওয়ার সময় পাকিস্তান দাবি করেছিল যে তারা ১১৩টি ভারতীয় বিমানবাহিনী এয়ারক্র্যাফট গুলি করে নামিয়েছে। অন্যদিকে ভারত দাবি করে যে তারা ৭৩টি পাকিস্তান বিমানবাহিনী এয়ারক্র্যাফট গুলি করে নামায়।[২৩] কলাইকুন্ডা ও পাঠানকোটের বিধ্বংসী যুদ্ধের সময় ভারতীয় বিমানবাহিনীর ৬০% ক্ষতি সাধিত হয়। যেখানে অধিকাংশ ক্ষতিই স্থলে সাধিত হয়েছিল।[২৪]
১৯৬৫ সালের যুদ্ধের পর ভারতীয় বিমানবাহিনীতে ব্যাপক রদবদল করা হয়। ১৯৬৬ সালে সৃষ্টি করা হয় প্যারা কম্যান্ডো।[২৫] রসদ সরবরাহ বৃদ্ধি ও উদ্ধারকার্যে গতি আনার উদ্দেশ্যে ভারতীয় বিমানবাহিনী ৭২টি অ্যাভ্রো ৭৪৮ বাহিনীতে সংযোজিত করে। অ্যাভ্রোর লাইসেন্সের অধীনে এগুলি নির্মাণ করেছিল হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস (এইচএএল)।[২৬] ফাইটার এয়ারক্র্যাফটের দেশজ উৎপাদনে অধিক গুরুত্ব আরোপ করে ভারত। বিখ্যাত জার্মান এয়ারোস্পেস ডিজাইনার কার্ট ট্যাঙ্ক অঙ্কিত নকশায় নির্মিত এইচএএল এইচএফ-২৪ মারুত [২৭] ভারতীয় বিমানবাহিনীতে সংযোজিত হয়। এইচএএল অজিত নামে পরিচিত ফল্যান্ড ন্যাটের একটি উন্নততর সংস্করণ নির্মাণের কাজে হাত দেয় এইচএএল। একই সময় ভারতীয় বিমানবাহিনীতে সংযোজিত হয় ম্যাক ২ গতিসম্পন্ন সোভিয়েত মিগ-২১ ও সুখোই সু-৭ ফাইটারগুলি।
১৯৭১ সালের শেষদিকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পুনরায় যুদ্ধ বাধে।[২৮] ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর, পুরোদমে যুদ্ধ শুরুর দশ দিন আগে আন্তর্জাতিক সীমানার কাছে ভারতীয় বাহিনী ও মুক্তি বাহিনীর অবস্থান আক্রমণ করে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর এফ-৬৪ স্যাব্রে জেটগুলি। বয়রার যুদ্ধে চারটি পাকিস্তানি স্যাব্রেকে গুলি করে নামায় ভারতীয় ফল্যান্ড ন্যাটগুলি।[২৯] ৩ ডিসেম্বর ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এর আগে শ্রীনগর, আম্বালা, সিরসা, হালওয়াড়া ও যোধপুরে বিমানবাহিনীর স্থাপনার উপর পাকিস্তান বিমানবাহিনী অপারেশন চেঙ্গিজ খান নামে কয়েকটি প্রাকযুদ্ধ হানা চালায়। কিন্তু ভারতীয় বিমানবাহিনীর সুচতুর কৌশলের কাছে তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয় এবং ক্ষয়ক্ষতিও প্রায় কিছুই ঘটে না।[৩০] ভারতীয় বিমানবাহিনী অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামূলক সর্টির দ্বারা বিমান হানার জবাব দেয়।[৩১] প্রথম দুই সপ্তাহে ভারতীয় বিমানবাহিনী ২,০০০ সর্টি পাকিস্তানে নিয়ে যায় এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পূর্ব পাকিস্তান অপারেশন চালাতে বিশেষ বৈমানিক সহায়তা দান করে।[৩২] বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে পাকিস্তান নৌবাহিনী ও মেরিটাইম সিকিউরিটি এজেন্সির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাতে ভারতীয় নৌবাহিনীকেও সাহায্য করে ভারতীয় বিমানবাহিনী। পশ্চিমের ফ্রন্টে লঙ্গেওয়ালার যুদ্ধে ভারতীয় বিমানবাহিনী ২৯টি পাকিস্তানি ট্যাঙ্ক, ৪০টি সশস্ত্র জওয়ানবাহী যান ও একটি ট্রেন ধ্বংস করে।[৩৩] এছাড়া বিমানবাহিনী পশ্চিম পাকিস্তানের করাচির তৈলক্ষেত্র, মঙ্গলা বাঁধ ও সিন্ধুপ্রদেশের একটি গ্যাসক্ষেত্রে বিমানহানা চালায়।.[৩৪] একই রণকৌশল প্রয়োগ করে পূর্বের ফ্রন্টেও ভারতীয় বিমানবাহিনী চূড়ান্ত বৈমানিক সাফল্য লাভ করে। এর ফলে পূর্ব পাকিস্তানের অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি, সড়কপথ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলি বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[৩৫] পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণকালে ভারতীয় বিমানবাহিনী দাবি করেছিল ৫৪টি এফ-৮৬ স্যাব্রে সহ ৯৪টি পাকিস্তান বিমানবাহিনী এয়ারক্র্যাফট তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।[৩৬] পরিবহন এয়ারক্র্যাফট ও হেলিকপ্টার সহ[৩২] ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রায় ৬,০০০ সর্টি পূর্ব ও পশ্চিম রণাঙ্গনে উড়িয়েছিল।[৩২] যুদ্ধের শেষ লগ্নে ভারতীয় বিমানবাহিনী ঢাকায় পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তানি বাহিনীর মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য তাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে আকাশ থেকে লিফলেট ছড়ায়।
১৯৮৪ সালে কাশ্মীর অঞ্চলে সিয়াচেন হিমবাহ দখলের উদ্দেশ্যে ভারতীয় বিমানবাহিনী অপারেশন মেঘদূত পরিচালনা করে।[৩৭] ভারতীয় বিমানবাহিনীর এমআই-৮, চেতক ও চিতা নামের তিনটি হেলিকপ্টার শত শত ভারতীয় সেনাকে সিয়াচেনে নিয়ে যায়।[৩৮] ১৯৮৪ সালের ১৩ এপ্রিলের এই সামরিক অভিযান সিয়াচেনের প্রতিকূল পরিবেশ ও আবহাওয়ার কারণেই অন্য সকল অভিযান থেকে এর স্বাতন্ত্র্য নির্দেশ করে। অভিযান সফল হয়েছিল। কারণ পূর্বতন একটি চুক্তির ফলে এই অঞ্চলে ভারত বা পাকিস্তান কোনো দেশেরই সেনা-জওয়ান মোতায়েন ছিল না। বিনা বাধায় ভারত হিমবাহের অধিকাংশ স্থানে নিজের আধিপত্য স্থাপন করে।[৩৯]
১৯৯৯ সালের ২০ মে কার্গিল যুদ্ধ চলাকালীন ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার জন্য ভারতীয় বিমানবাহিনীকে ডাকা হয়।[৪০] কাশ্মীরের উচ্চতা ও প্রতিকূল ভূমিরূপের কারণে বিমানবাহিনী প্রথমে শ্লথগতির মিল এমআই-৮/১৭ হেলিকপ্টার ব্যবহারের ব্যাপারে নিজ সীমাবদ্ধতার কথা জানায়। উল্লেখ্য এই হেলিকপ্টার ১০,০০০ ফুট উচ্চতায় কাজ করতে পারত।[৪১] এই সীমাবদ্ধতার কথা প্রমাণিত হয়ে যায় যখন পাকিস্তানি বাহিনী ভারতীয় বিমানবাহিনী এমআই-৮ হেলিকপ্টার ও মিগ-২১ ও মিগ-২৭ নামে দুটি জেটকে গুলি করে নামায়। বলা হয়েছিল, এগুলি পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে।[৪২] এই প্রাথমিক ব্যর্থতার পর ভারতীয় বিমানবাহিনী মিরেজ ২০০০ নিয়োগ করে। এটি মিগের তুলনায় উন্নততর সামরিক সরঞ্জামই শুধু ছিল না, বরং রাতেও বিমান হানা চালানোর ক্ষমতা রাখত। মিরেজগুলি সফলভাবে কার্গিলে শত্রুশিবির ও রসদ ক্যাম্পে হানা দেয় এবং কয়েকদিনের মধ্যেই শত্রুদের সরবরাহ ব্যবস্থাটিকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে সক্ষম হয়।[৪৩] র্যাডার ও মিগ-২৯ বিমানের সাহায্যে বিমানবাহিনী সীমান্তে পাকিস্তানি বাহিনীর গতিবিধির উপর নজর রাখে।[৪৪] মিগ-২৯গুলি মিরেজ ২০০০-এর এসকর্ট হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। যুদ্ধের সময় বিমানবাহিনী প্রতিদিন ৪০টির বেশি সর্টি কার্গিল অঞ্চলে আনা-নেওয়া করত।[৪৫] কার্গিলে ভারতীয় বিমানবাহিনীর অপারেশন শুধুমাত্র ভারতীয় জওয়ানদের মনোবলই চাঙ্গা করে না, তা মুন্থো ঢালো ও টাইগার হিল পুনর্দখলের পথও প্রস্তুত করে।[৪৬] ২৬ জুলাই ভারতীয় বাহিনী সফলভাবে কার্গিলকে পাকিস্তানি ফৌজ ও ইসলামি জঙ্গিদের হাত থেকে মুক্ত করে।[৪৭] ১৯৯৯ সালের ১০ অক্টোবর স্যার ক্রিক অঞ্চলের উপর দিয়ে ওড়ার সময় ভারতীয় বিমানবাহিনীর মিগ-২১গুলির সঙ্গে পাকিস্তান নৌবাহিনীর ব্রেগেট আটলান্টিক-এর সংঘর্ষ বাধে। আটলান্টিক ঘটনা নামে পরিচিত এই সংঘর্ষে ষোলোজন পাকিস্তানি নৌবাহিনীর জওয়ানকে বোর্ডেই হত্যা করে ভারতীয় বিমানবাহিনী।[৪৮] ভারত দাবি করেছিল আটলান্টিক ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিমান প্রতিরক্ষারক্ষা সংক্রান্ত সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিযুক্ত ছিল।[৪৯] পাকিস্তান অবশ্য এই দাবি অস্বীকার করে জানায় ওই নিরস্ত্র এয়ারক্র্যাফটটি ট্রেনিং মিশনে গিয়েছিল।[৫০]
১৯৯০-এর দশকের শেষভাগ থেকেই ভারতীয় বিমানবাহিনীর আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়। এই বাহিনীকে নতুন শতাব্দীর উপযুক্ত করে তোলার কাজও শুরু হয়। পুরনো এয়ারক্র্যাফটগুলি বাতিল করার সঙ্গে সঙ্গে বিমানবাহিনীর ফ্লিটের সংখ্যাও কমিয়ে ফেলা হয়। তাসত্ত্বেও ভারতীয় বিমানবাহিনী বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম বিমানবাহিনী।[৫১] নতুন এয়ারক্র্যাফট সংযোজনের মাধ্যমে বিমানবাহিনীর আকারও এরপর বৃদ্ধি করা হয়। বর্তমানে বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রনের সংখ্যা ৪২ করার পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে।[৫২]
গঠন
কমান্ড
ভারতীয় বিমানবাহিনীর পাঁচটি পরিচালনাগত এবং দুই কার্মিক কমান্ডে বিভক্ত।
পরিচালনাগত কমান্ড
কমান্ড | সদর দফতর |
---|---|
ওয়েস্টার্ন এয়ার কমান্ড | নতুন দিল্লি |
সেন্ট্রাল এয়ার কমান্ড | এলাহাবাদ |
ইস্টার্ন এয়ার কমান্ড | শিলং |
দক্ষিণ পশ্চিম এয়ার কমান্ড | গান্ধিনগর |
দক্ষিণ এয়ার কমান্ড | তিরুবনন্তপুরম |
বায়ু সেনা ঘাঁটি
স্কোয়াড্রন এবং ইউনিট
একটি উড়ন্ত স্কোয়াড্রন বা ইউনিট , বিমানবাহিনী স্টেশনের একটি সাব - ইউনিট হয় যা আইএএফ প্রধান কাজ সম্পন্ন করে । একটি জঙ্গী স্কোয়াড্রন বিমানবাহিনীর ১৮টি বিমান নিয়ে গঠিত হয় ; সব ফাইটার স্কোয়াড্রনে উইং কমান্ডার পদমর্যাদার এক কমান্ডিং অফিসার নেতৃত্বে থাকেন । কিছু পরিবহন স্কোয়াড্রন এবং হেলিকপ্টার ইউনিটের ক্ষেত্রে গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার এক কমান্ডিং অফিসার নেতৃত্বে থাকেন ।
স্কোয়াড্রন ক্রম: | কেন্দ্র | ধরন |
---|---|---|
১ | গওয়ালিয়র | রণশীল |
২ | তেজপুর বিমানবন্দর | রণশীল |
৩ | পাঠানকোট | রণশীল |
৪ | বারমের | রণশীল |
৫ | আম্বালা | রণশীল |
১১ | বড়োদরা | পরিবহন |
১১ | বড়োদরা | পরিবহন |
২৫ | বড়োদরা | পরিবহন |
৮১ | হিন্দন | পরিবহন |
গরুড় কমান্ডো ফোর্স
২০০৪-এর সেপ্টেম্বরে, বায়ুসেনা নিজস্ব বিশেষ অপারেশন ইউনিট হিসেবে এই কমান্ডো ফোর্স প্রতিষ্ঠা করে। এই বাহিনীর হাতে অত্যাধুনিক মার্কিন ধাতুভেদী স্নাইপার রাইফেল ব্যারেট এএম৮২ রয়েছে। এছাড়া ইস্রায়েলি স্নাইপার রাইফেল আইএমআই গালিল রয়েছে আগ্নেয়াস্র ভাণ্ডারে।
সদস্যগণ
পদ গঠন
অফিসারগণ
- ভারতীয় বিমান বাহিনীর মার্শাল
- এয়ার চিফ মার্শাল
- এয়ার মার্শাল (এক একটি এয়ার কমান্ডের নেতৃত্ব দেন )
- এয়ার ভাইস মার্শাল
- এয়ার কমোডর (এক একটি উইং এর নেতৃত্ব দেন )
- গ্রুপ ক্যাপ্টেন (এক একটি এয়ার স্টেশন এর নেতৃত্ব দেন )
- উইং কমান্ডার (এক একটি যুদ্ধবিমান স্কোয়াড্রন এর নেতৃত্ব দেন। )
- স্কোয়াড্রন লিডার (এক একটি ফ্লাইট্স এর নেতৃত্ব দেন। )
- ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (এক একটি সেকশন এর নেতৃত্ব দেন। )
- ফ্লাইং অফিসার
- ফ্লাইট ক্যাডেট (শিক্ষানবিস পদ)
বিমান সম্ভার
বিমান | নমুনা চিত্র | উৎস | Type | Versions | সংখ্যা | নোট |
---|---|---|---|---|---|---|
মাল্টিরোল ফাইটার | ||||||
দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট (১৮,০০০ কেজি বা তার বেশি ভার বহন সক্ষম ) | ||||||
সুখোই সু-৩০ | রাশিয়া | মাল্টিরোল ফাইটার | এমকেআই | ২৭২ | ১২টি অতিরিক্ত অর্ডার দেয়া হয়েছে। [৫৩] মেটিওর মিসাইলের মতো ডাটালিংকের মাধ্যমে মিড-কোর্স আপডেট করতে সক্ষম বিশেষ শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র জুড়ে দেওয়া পরিকল্পনা হচ্ছে । স্যাটার্ন AL-31 গোত্রীয় ইঞ্জিন বিশিষ্ঠ যা সুখই-৩৪ , সুখই-৩৩ এবং চেংদু জে-২০ তে ব্যাবহৃত হয়েছে। এটি সুখই-৩৫ সমতুল্য। চীনের কাছে ২৭৮ টি (সুখই ৩০ + সুখই ৩৫ + চেংদু জে-২০ + জে-১৬) রয়েছে। | |
দাসল্ট রাফাল | ফ্রান্স | মাল্টিরোল ফাইটার | ইএইচ ডিএইচ | ৫ | আরো ৫টি সরবরাহ হবে অক্টোবর ২০২০ তে। পরবর্তী ২৬টি ২০২১ সালের মধ্যে সরবরাহ হবে। আরও ৩৬টি অর্ডারের পরিকল্পনা রয়েছে । মেটিওর মিসাইলের মতো ডাটালিংকের মাধ্যমে মিড-কোর্স আপডেট করতে সক্ষম বিশেষ শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র জুড়ে দেওয়া হচ্ছে । [৫৪] চীনের কাছে ৩৪৬ টি সুখই-২৭ সমতুল্য জে-১১ রয়েছে। ওজনে এটি জে-১১ র তুলনায় অনেক হালকা। বেশি যুদ্ধসীমা যুক্ত। জে-১১ র তুলনায় দ্বিগুন অস্রভার বহনে সক্ষম। জে-১১ এ মেটিওর এর সমতুল্য ক্ষেপণাস্র নেই। | |
মিগ-২৯ | সোভিয়েত ইউনিয়ন | মাল্টিরোল ফাইটার | মিগ্ -২৯এম মিগ্ -২৯কে | ৬৬ ৪৫ | মিগ্ -২৯ইউপিজি তে উন্নীত করা হচ্ছে , আরও ২১টি অর্ডার দেয়া হয়েছে। | |
এক ইঞ্জিন বিশিষ্ট (১৭,০০০ কেজি বা তার কম ভার বহন সক্ষম ) | ||||||
ডাসাল্ট মিরেজ ২০০০ | ফ্রান্স | মাল্টিরোল ফাইটার | 2000H, 2000TH | ৪২ | অত্যন্ত কম উচ্চতায় উড়তে সক্ষম। ১৯৯৯-এ কার্গিল যুদ্ধের সময়েও মিরাজ যুদ্ধবিমান যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। [৫৫] ২০১৯ এর ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোররাত সাড়ে তিনটা নাগাদ পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে ১২টি মিরেজ ২০০০ জেট বিমান এবং ১ হাজার কেজি বোমা (স্পাইস ২০০০ বোমা) বর্ষণ করে অনেক জঙ্গি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ২০০০আই এ উন্নীত করা হবে। | |
হ্যাল তেজস | ভারত | মাল্টিরোল ফাইটার | এমকে ১ | ১৬ (আইওসি স্ট্যান্ডার্ড) ১৬(এফওসি স্ট্যান্ডার্ড) ৮ (ট্রেইনার) | এতে একটি জেনারেল ইলেকট্রিক F404 ইঞ্জিন রয়েছে যা F/A ১৮ হর্নেট এ ব্যাবহৃত হয়েছে। এই ইঞ্জিনের উন্নত পরবর্তী সংস্করণ জেনারেল ইলেকট্রিক F414 কে তেজস মার্ক ২ বিমানে ব্যবহার করা হবে। গত বছর তারা ফের ৮৩টি তেজস মার্ক ১এ কেনার জন্য হ্যালকে বরাত দিয়েছে। [৫৬] এটি পারদর্শিক ক্ষমতার নিরিখে জেএফ-১৭ থান্ডার এর সমগোত্রীয়। জেএফ-১৭ থান্ডার চীন-পাকিস্তান যৌথ উদ্যোগে তৈরী পাকিস্তানের প্রধান যুদ্ধ বিমান। | |
আক্রমণাত্মক | ||||||
SEPECAT জাগুয়ার | যুক্তরাজ্য/ফ্রান্স | ফাইটার-বোম্বার[৫৭] | জাগুয়ার আইএস জাগুয়ারআইএম | ১২৪ ১২ | ১৯৭৯ সাল থেকে এটি সার্ভিস এ রয়েছে । ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সালে শ্রীলংকায় শান্তি রক্ষায় এটি ব্যবহৃত হয়। ১৯৯৯ এ কার্গিল যুদ্ধে বোমাবর্ষণের কাজে লাগে। এটি পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম। অধুনা প্রযুক্তিগতভাবে পিছিয়ে পরার কারণে বাতিলের পর্যায়ে চলে এসেছে। | |
যুদ্ধ বিমান | ||||||
মিগ-২১ | রাশিয়া | ফাইটার | মিগ্ -২১বিস্ | ২৪৫ | সম্পূর্ণ প্রতিস্থাপিত হবে হল তেজস দ্বারা ২০০৬ সালে অন্তত ১১০টি মিগ-২১ ফাইটার জেটকে আপগ্রেড করে মিগ-২১ বাইসনে পরিণত করা হয়েছে । এই আপগ্রেডেশনের সময় যুক্ত হয়েছিল শক্তিশালী মাল্টি-মোড রেডার, আরও উন্নত অ্যাভিয়েশন ও কমিউনিকেশন সিস্টেম। যুক্ত করা হয় স্বল্প পাল্লার আর-৭৩ ও মাঝারি পাল্লার আর-৭৭ অ্যান্টি-এয়ারক্র্যাফট মিসাইল ও লেজার-গাইডেড বোমা নিক্ষেপের ক্ষমতা।[৫৮] | |
রিফুয়েলার বিমান | ||||||
ইল্যুসিন আইএল-৭৮ | USSR | Aerial Refueling | ৭ | একবারে ৬-৮ টি সুখই ৩০ বিমানে রিফুয়েল করতে পারে। | ||
কৌশলগত এয়ার লিফট বিমান | ||||||
বিমান | নমুনা চিত্র | উৎস | সৈন্য বহন ক্ষমতা | সংখ্যা (Versions) | সর্বোচ্চ টেকঅফ ওজন | Comments |
বোয়িং সি-১৭ গ্লোবমাস্টার | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ১৩৪ | ১১ (গ্লোবমাস্টার ৩) | ২৬৫ মেট্রিক টন | বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম টার্বোফ্যান সামরিক পরিবহন বিমান। ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান বহনে সক্ষম। | |
ইল্যুসিন IL-৭৬ | রাশিয়া | - | ১৭ (MD) | ১৯০ মেট্রিক টন | বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম টার্বোফ্যান সামরিক পরিবহন বিমান। | |
লকহিড সি-১৩০ হারকিউলিস | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ১২৮ | ১২ (সুপার হারকিউলিস) | ৭৪ মেট্রিক টন | বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম টার্বোপ্রপ সামরিক পরিবহন বিমান। সাঁজোয়া যান বহনে সক্ষম। | |
মাঝারি পরিবহন বিমান | ||||||
ইএডিএস কাসা সি-২৯৫ | স্পেন / ভারত | ৭১ | ১ (সি-২৯৫MW) | ২৩ মেট্রিক টন | ৫৬টি বিমানের অর্ডার রয়েছে। ১৬টি স্পেন এ তৈরী হবে। বাকিগুলো ভারতে টাটা অ্যাডভান্স সিস্টেমস দ্বারা। | |
আন্তোনোভ এন-৩২ | ইউক্রেন | ৫০ | ৫৩ (৩২RE) ৫০ (৩২) | ২৮.৫ মেট্রিক টন ২৭ মেট্রিক টন | ২০০৯ সালে ভারত ইউক্রেনের সঙ্গে এই বিমানগুলির আধুনিকীকরণের চুক্তি করে। | |
এনএএল সারস | ভারত | ১৪ | - | ৭ মেট্রিক টন | বায়ুসেনা দ্বারা ১৫ MK II বিমানের প্রাথমিক অর্ডারটি আগামী বছরগুলিতে 120-140 পর্যন্ত যেতে পারে। | |
এয়ারবোর্ন প্রাথমিক সতর্কবার্তা এবং নিয়ন্ত্রণ | ||||||
ডিআরডিও নেত্র | ব্রাজিল/ভারত | সতর্কবার্তা এবং নিয়ন্ত্রণ | ইএমবি ১৪৫ আরএস | ২ | আরো ১টি অর্ডার রয়েছে। | |
বারিয়েভ এ-৫০ | সোভিয়েত ইউনিয়ন | সতর্কবার্তা এবং নিয়ন্ত্রণ | ই/আই | ৩ | আরো ২টি অর্ডার রয়েছে। | |
গুপ্ত-পর্যবেক্ষণ বিমান | ||||||
বিমান | নমুনা চিত্র | উৎস | সৈন্য বহন ক্ষমতা | সংখ্যা | পরিষেবা উচ্চতা | Comments |
বোম্বার্ডিয়ার ৫০০০ | কানাডা | বৈদ্যুতিন সংকেত বুদ্ধিমত্তা | ২ | ১৫.৫ কিমি | ||
Special Aircraft | ||||||
ইল্যুসিন আইএল-৭৮ | USSR | Aerial Refueling | ৭ | |||
আক্রমণাত্বক হেলিকপ্টার | ||||||
বিমান | নমুনা চিত্র | উৎস | বহন ক্ষমতা | Versions | সংখ্যা | Comments |
বোয়িং এএইচ-৬৪ অ্যাপাচে | যুক্তরাষ্ট্র | ৫,২০০ কেজি | এএইচ-৬৪ই | ২২ | ১০ কিমি পাল্লার স্পাইক ক্ষেপণাস্রো বহনে সক্ষম। এজিএম -114 হেল্পফায়ার মিসাইল সংবলিত। | |
হ্যাল এলসিএইচ | ভারত | ৩,০০০ কেজি | LCH | ৩ | ৬৫ অর্ডার দেয়া হয়েছে। ৭-১০ কিমি পাল্লার ৪টি ধ্রুবস্ত্রা (হেলিনা) ক্ষেপণাস্রো বা ৬ কিমি পাল্লার ২টি মিস্ট্রাল -২ ক্ষেপণাস্রো বহনে সক্ষম। | |
হ্যাল রুদ্র | ভারত | ৩,০০০ কেজি | ALH-WSI | ১২ | আরও ৪টি অর্ডার দেয়া হয়েছে। ৭-১০ কিমি পাল্লার ৮টি ধ্রুবস্ত্রা (হেলিনা) ক্ষেপণাস্রো বহনে সক্ষম। | |
মিল মি - ২৪ | রাশিয়া | ৩,৫০০ কেজি | মি - ৩৫ | ১৫ | ৫ কিমি পাল্লার 9কে-114শ্টর্ম ক্ষেপণাস্রো রয়েছে। | |
মিল মি - ১৭ | রাশিয়া | ৫,৫০০ কেজি | Mi-17V-5 | ২২৩ | ৪ কিমি পাল্লার ৬টি 9এম17ফালঙ্গা ক্ষেপণাস্র বহনে সক্ষম। | |
পরিবহণ হেলিকপ্টার | ||||||
মিল মি -২৬ | রাশিয়া | ২৭,৮০০ কেজি | ৪ | বড় আকারের সংস্কার এবং আয়ুক্ষমতা বাড়ানোর জন্য রাশিয়ায় রয়েছে ।[৫৯] | ||
বোয়িং সিএইচ-৪৭ চিনুক | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ১১,৫৩২ কেজি | এফ(১) | ১৫ | মোট ১৫টি চপার কিনতে ভারত ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে। ১০,০০০ কেজি ভার বহনে সক্ষম । | |
এইচএএল ধ্রুব | ভারত | ৩,৫০০ কেজি | ৯১ | |||
এইচএল লাইট ইউটিলিটি হেলিকপ্টার | ভারত | ১,৮৯০ কেজি | ৬ টি অর্ডার দেয়া হয়েছে। | ৬১ টি অর্ডার দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ক্ষমতার নিরিখে এটি মার্কিন বেল ৪২৯ গ্লোবালরেঞ্জের এবং রাশিয়ান কাজান আনসাট হেলিকপ্টারের সমতুল্য। |
মনুষ্যবিহীন আকাশযান
Aircraft | Origin | Type | Variant | In service | Notes | |
---|---|---|---|---|---|---|
আক্রমণকারী | ||||||
জেনারেল এটমিক্স MQ-৯ রিপার | USA | উচ্চ উচ্চতা দীর্ঘ পরিসীমা | স্কাই গার্ডিয়ান শ্রেণী | ৩০টি অর্ডার দেয়া হয়েছে | [৬০] এটি জেনারেল এটোমিক্স কোম্পানির বানানো MQ ৯ রিপার ড্রোন, যা দিয়ে ইরানের সেনাপ্রধান তথা ২য় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধারী কাসিম সুলেমানির মৃত্যু হয়েছে। ২০১৭ সালে ভারত ৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যে ২২ টি MQ ৯ রিপার ড্রোন কেনার বরাত দিয়েছে আমেরিকাকে। | |
আইএআই আইটন | Israel | মাঝারি উচ্চতা দীর্ঘ পরিসীমা | হেরন টিপি | ১০টি অর্ডার দেয়া হয়েছে | ||
DRDO Lakshya | India | Aerial target | PTA | ১৫ | ||
আত্মঘাতী | ||||||
আইএআই হারোপ | ইস্রায়েল | আত্মঘাতী ড্রোন | হার্পি ২ | 110[৬১] | ২৩ কেজি বিস্ফোরক বহনে সক্ষম | |
আইএআই হার্পি | ইস্রায়েল | আত্মঘাতী ড্রোন | হার্পি | 110[৬১] | ২৩ কেজি বিস্ফোরক বহনে সক্ষম | |
নজরদারী | ||||||
আইএআই হেরণ | ইস্রায়েল | Patrol | Heron 1 | 68[৬২] | Operated by all three services.[৬৩] 16 on order for Indian Army | |
IAI Searcher | Israel | Patrol | Mk. I / II | 108[৬২] | Operated by all three services.[৬৩] |
অ্যান্টি-রেডিয়েশন ক্ষেপণাস্ত্র
নাম | চিত্র | Origin | Type | পাল্লা | গতিবেগ | বর্তমান অবস্থা | Notes |
---|---|---|---|---|---|---|---|
রুদ্ররম -১ | ভারত | বায়ু থেকে পৃষ্ঠতল ক্ষেপণাস্ত্র | ২৫০ কিমি | মার্ক ২ | পরীক্ষা চলছে | রাশিয়ান এস-৩০০ এর সমরূপে চীন ২০০ কিমি পাল্লার এফটি-২০০০ ক্ষেপণাস্রো তৈরী করেছে , যা মার্ক ৪ গতিবেগ সম্পন্ন। | |
কেএইচ-৩১ | রাশিয়া | বায়ু থেকে পৃষ্ঠতল ক্ষেপণাস্ত্র | ১১০ কিমি | মার্ক ২ | নিয়োজিত | ৩১পি ক্ষেপণাস্রো নিয়োজিত । চীন একই ক্ষেপণাস্রো ব্যবহার করে। চীন সমরূপ প্রতিলিপি তৈরী করে ওয়াইজে-৯১ নামে। পাকিস্তান সম-পাল্লা সম্পন্ন ব্রাজিলীয় মার্-১ ক্ষেপণাস্রো ব্যবহার করে। | |
মার্টেল | ফ্রান্স | বায়ু থেকে পৃষ্ঠতল ক্ষেপণাস্ত্র | ৬০ কিমি | মার্ক ১ | নিয়োজিত |
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
পাদটীকা
- Ajithkumar, M.P. (২০০৬)। India-Pakistan relations: the story of a fractured fraternity। Gyan Books। আইএসবিএন 9788178354934।
- Bammi, Y.M. (২০০২)। Kargil 1999, impregnable conquered। Gorkha Publishers। xxviii, 558, 65, 8 p। এলসিসিএন ২০-৩।
- Bajwa, Kuldip Singh (২০০৫)। The Dynamics of Soldiering। Har-Anand Publications। 292। আইএসবিএন 9788124109403।
- Barua, Pradeep (২০০৫)। The State at War in South Asia। University of Nebraska Press। xvi; 437। আইএসবিএন 9780803213449।
- Boyne, Walter J.; Fopp, Michael (২০০২)। Air Warfare: An International Encyclopedia (Illustrated সংস্করণ)। ABC-CLIO। xvi; 437। আইএসবিএন 9781576073452।
- Chadha, Vivek (২০০৫)। Low intensity conflicts in India (Illustrated সংস্করণ)। SAGE। 513। আইএসবিএন 9780761933250।
- Coggins, Ed (২০০০)। Wings That Stay on (Illustrated সংস্করণ)। Turner Publishing Company। iii; 244। আইএসবিএন 9781563115684।
- Cordesman, Anthony H.; Kleiber, Martin (২০০৬)। The Asian Conventional Military Balance in 2006: Overview of major Asian Powers (পিডিএফ)। Center for Strategic & International Studies। 48। ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- Dixit, Jyotindra Nath (২০০২)। India-Pakistan in War & Peace। Routledge। 501। আইএসবিএন 9780415304726।
- Europa Publications (২০০৫)। Far East and Australasia 2003। Europa Publications। 1538। আইএসবিএন 9781857431339।
- Ganguly, Sumit; Kapur, S. Paul (২০০৮)। Nuclear Proliferation in South Asia (illustrated সংস্করণ)। Taylor & Francis। Xii; 251। আইএসবিএন 9780415440493।
- Gupta, Amit (১৯৯৭)। Building an arsenal: the evolution of regional power force structures (Illustrated সংস্করণ)। Greenwood Publishing Group। xi; 217। আইএসবিএন 9780275957872।
- Ives, Jack D. (২০০৪)। Himalayan perceptions: Environmental change and the well-being of mountain peoples (Illustrated সংস্করণ)। Routledge। xxi; 271। আইএসবিএন 9780415317986।
- Jones, Aubrey (১৯৮৫)। Britain's economy: the roots of stagnation (illustrated সংস্করণ)। Cambridge University Press। আইএসবিএন 9780521308168।
- Jones, Owen Bennett (২০০৩)। Pakistan: Eye of the Storm (2, illustrated, revised সংস্করণ)। Yale University Press। 328। আইএসবিএন 9780300101478।
- Kainikara, Sanu (২০০৭)। Red Air: Politics in Russian Air Power। Universal Publishers। আইএসবিএন 9781581129830।
- Kapur, S. Paul (২০০৭)। Dangerous deterrent: nuclear weapons proliferation and conflict in South Asia (Annotated সংস্করণ)। Stanford University Press। 280। আইএসবিএন 9780804755498।
- Karthikeyan, K.R.; Gupta; Sendilkumar, R.; Jaganathan, D. (২০০৮)। A Textbook of Agricultural Extension Management। Atlantic Publishers & Distributors। v; 192। আইএসবিএন 9788126908813।
- Khan, J.A. (২০০৪)। Air Power and Challenges to IAF। APH Publishing। xxxii; 361। আইএসবিএন 9788176485937।
- Lyon, Peter (২০০৮)। Conflict Between India and Pakistan: An Encyclopedia (illustrated সংস্করণ)। ABC-CLIO। আইএসবিএন 9781576077122।
- Massey, Reginald (২০০৫)। Azaadi!। Abhinav Publications। আইএসবিএন 9788170174691।
- Pradhan, R.D. (১৯৯৯)। Debacle to revival: Y.B. Chavan as Defence Minister, 1962-65। Orient Blackswan। xii; 316। আইএসবিএন 9788125014775।
- Pradhan, R. D.; Chavan, Yashwantrao Balwantrao (২০০৭)। 1965 War, the Inside Story: Defence Minister Y.B. Chavan's Diary of India-Pakistan War। Atlantic Publishers & Distributors। xviii; 141। আইএসবিএন 9788126907625।
- Praval, Karam Chand (১৯৭৫)। India's Paratroopers (A History of the Parachute Regiment of India)। Leo Cooper, London। আইএসবিএন 9780850521849।
- Shiva, Vandana (২০০৫)। India divided: diversity and democracy under attack। Seven Stories Press। 191। আইএসবিএন 9781583225400।
- Sisodia, N.S.; Bhaskar, Chitrapu Uday (২০০৫)। Emerging India: security and foreign policy perspectives। Bibliophile South Asia। xx; 376। আইএসবিএন 9788186019511।
- Sisson, Richard; Rose, Leo E. (১৯৯১)। War and Secession: Pakistan, India, and the Creation of Bangladesh (revised সংস্করণ)। University of California Press। আইএসবিএন 9780520076655।
- Thomas, Raju G.C. (১৯৯৬)। India's Security Environment: Towards the Year 2000। DIANE Publishing। iv; 33। আইএসবিএন 9781428913899।
- Warikoo, K. (২০০৯)। Himalayan Frontiers of India: Historical, Geo-Political and Strategic Perspectives (Illustrated সংস্করণ)। Taylor & Francis। xv; 240। আইএসবিএন 9780415468398।
- Wilson, Stewart (২০০২)। North American F-86 SABRE (Illustrated সংস্করণ)। Wilson Media Pty, Limited। 64। আইএসবিএন 9781876722050।
বহিঃসংযোগ
- Official website of The Indian Air Force
- Indian Air Force on bharat-rakshak.com
- Global Security article on Indo-Pakistani Wars