ভিক্টর কর্চনই

ভিক্টর লিভোভিচ কর্চনই (রুশ: Ви́ктор Льво́вич Корчно́й, আ-ধ্ব-ব[vʲiktər lʲvovʲɪtɕ kɐrtɕˈnoj]; জন্ম: ২৩ মার্চ, ১৯৩১ - মৃত্যু: ৬ জুন, ২০১৬) লেনিনগ্রাদে জন্মগ্রহণকারী তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিখ্যাত গ্র্যান্ডমাস্টার দাবাড়ুলেখক ছিলেন।[৩] তাকে অন্যতম সামর্থ্যবান খেলোয়াড়রূপে চিত্রিত করা হয়ে থাকে। দুর্ভাগ্যবশতঃ ভিক্টর কর্চনই বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশীপের কোন খেতাব লাভ করতে পারেননি।[৪]

ভিক্টর কর্চনই
১৯৯৩ সালে কর্চনই
পূর্ণ নামভিক্টর লোভিচ কর্চনই
দেশসোভিয়েত ইউনিয়ন
সুইজারল্যান্ড
জন্ম(১৯৩১-০৩-২৩)২৩ মার্চ ১৯৩১
লেনিনগ্রাদ, সোভিয়েত ইউনিয়ন
মৃত্যু৬ জুন ২০১৬(2016-06-06) (বয়স ৮৫)
ওলেন, সুইজারল্যান্ড[১]
খেতাবগ্র্যান্ডমাস্টার (১৯৫৬-২০১৬)
আন্তর্জাতিক মাস্টর (১৯৫৪-১৯৫৬)
সর্বোচ্চ রেটিং২৬৯৫ (জানুয়ারি, ১৯৭৯)[২]

প্রারম্ভিক জীবন

ইহুদি মাতা ও পোলীয়-ক্যাথলিক পিতার সন্তান ছিলেন।[৫][৬] মা জেল্ডা গারশেভনা আজবেল ইদ্দিস লেখক, পিয়ানোবাদক ও লেনিনগ্রাদ কনজারভেটরি মিউজিকের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হার্শ আজবেলের কন্যা ছিলেন। তার বাবা লেভ মার্কুরাইভিচ কর্চনই প্রকৌশলী ছিলেন ও ক্যান্ডি কারখানায় কাজ করতেন।[৭]

১৯২৮ সালে ইউক্রেন থেকে পরিবারসহ পিতা-মাতা উভয়েই লেনিনগ্রাদে চলে আসেন। কিন্তু বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটায় ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত মায়ের সাথে অবস্থান করেন। তারপর বাবা, দাদা ও সৎমাতা রোজা আব্রামোভনা ফ্রিডমানের কাছে বড় হন। ১৯৪১ সালে লেনিনগ্রাদে আক্রমণ চালানো হলে তার বাবা নিহত হন ও পরবর্তীতে তাকে নিয়ে সুইজারল্যান্ডে চলে যান।[৮][৯] ইতিহাস বিষয়ে লেনিনগ্রাদ স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।[১০]

নিজ জন্মভূমি সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে ১৯৭৬ সালে নেদারল্যান্ডসে চলে যান। পরবর্তীকালে ১৯৭৮ সালে সুইজারল্যান্ডে নিবাস গড়েন ও সুইস নাগরিকত্ব লাভ করেন।

খেলোয়াড়ী জীবন

গ্র্যান্ডমাস্টার আনাতোলি কারপভের বিপক্ষে তিনটি খেলায় অংশ নেন। ১৯৭৪ সালে ক্যান্ডিডেটস ফাইনালে কারপভের কাছে পরাজিত হন। কিন্তু গ্র্যান্ডমাস্টার ববি ফিশার নিজ শিরোপা রক্ষার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করলে ১৯৭৫ সালে কারপভকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। তারপর উপর্যুপরি দুইবার ক্যান্ডিডেটসে জয় পান। কিন্তু, ১৯৭৮ ও ১৯৮১ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় কারপভের কাছে আবারো পরাজিত হয়েছিলেন তিনি।

১৯৬২, ১৯৬৮, ১৯৭১, ১৯৭৪, ১৯৭৭, ১৯৮০, ১৯৮৩, ১৯৮৫, ১৯৮৮ ও ১৯৯১ - এ দশবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপের প্রার্থী ছিলেন। এছাড়াও তিনি চারবার সোভিয়েত ইউনিয়ন দাবা চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ী সোভিয়েত দলের সদস্যরূপে পাঁচবার প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। দাবা অলিম্পিয়াডের শিরোপা বিজয়ে সোভিয়েত দলে ছয়বার অংশ নেন। সেপ্টেম্বর, ২০০৬ সালে বিশ্ব সিনিয়র দাবা চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয় করেন তিনি।

সর্ববয়োঃজ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়রূপে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা লাভ করেন। ২০০৯ সালে ৭৮ বছর বয়সে সুইস চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা পান তিনি।[১১]

কর্চনই কখনো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি। কিন্তু অনেক দাবানুরাগী ব্যক্তিত্ব তাকে অন্যতম সেরা খেলোয়াড়রূপে বিবেচিত করে থাকেন যিনি পল কেরেসের ন্যায় এ মর্যাদার অধিকারী হয়েছেন।[১২][১৩]

দেহাবসান

ডিসেম্বর, ২০১২ সালের শেষ দিকে প্রতিবেদনে প্রকাশ পায় যে, কর্চনই স্ট্রোক থেকে আরোগ্য লাভ করেছেন ও প্রতিযোগিতামূলক দাবায় পুনরায় অংশগ্রহণ করছেন।[১৪] ডিসেম্বর, ২০১৩ সালে জুরিখ ক্রিসমাস ওপেন টুর্নামেন্টের ৩৭তম আসরে খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।[১৫] কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে নাম প্রত্যাহার করে নেন তিনি। ডিসেম্বর, ২০১৪ সালের ফিদে রেটিং তালিকায় কর্চনইকে নিষ্ক্রীয়রূপে তুলে ধরা হয় যা তার অবসরের ইঙ্গিত প্রদান করে।

৬ জুন, ২০১৬ তারিখে সুইস শহর ওলেনে ৮৫ বছর বয়সে দেহাবসান ঘটে তার। ফিদে সভাপতি কিরসান ইলিয়মঝিনভ এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন যে, কর্চনই তার সমগ্র দাবা খেলাকে সাথে নিয়ে চলে গেছেন।[১৬] এক শোকবার্তায় লিওনার্ড বার্ডেন লিখেন যে, সর্বশ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়রূপে তিনি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি।[১৭]

রচিত গ্রন্থসমগ্র

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ