ম্যাকডোনাল্ড’স

আমেরিকান ফার্স্টফুড রেস্তোঁরা চেইন

ম্যাকডোনাল্ড’স (ইংরেজি: McDonald's Corporation) বিশ্বের সর্ববৃহৎ হ্যামবার্গার ফাস্ট ফুডের রেস্তোরাঁ। এর পুরো নাম ম্যাকডোনাল্ড’স কর্পোরেশন। নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে এটি এমসিডি নামে পরিচিত। প্রতিদিন সমগ্র বিশ্বের প্রায় ১১৯টি দেশে ৬৮ মিলিয়ন গ্রাহকের কাছে তাঁদের প্রিয় খাবার সরবরাহ করে থাকে। বহুমূখীখাদ্য সম্ভার, মজাদার এবং স্বাদে-গন্ধে এর আবেদনের কারণে এটি বিশ্বের আবালবৃদ্ধবনিতার কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানরূপে সর্বজনস্বীকৃত।

ম্যাকডোনাল্ড’স
ধরনপাবলিক কোম্পানী
শেয়ারবাজার প্রতীক
NYSEMCD
ডো জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ কম্পোনেন্ট
আইএসআইএনUS5801351017
শিল্পরেস্তোরাঁ
প্রতিষ্ঠাকাল১৫ মে, ১৯৪০ (স্যান বার্নারডিনো, ক্যালিফোর্নিয়া;
ম্যাকডোনাল্ড'স কর্পোরেশন, ১৫ এপ্রিল, ১৯৫৫, ডেস প্লেইনেস, ইলিনয়িস
প্রতিষ্ঠাতারিচার্ড এবং মরিস ম্যাকডোনাল্ড ভ্রাতৃদ্বয় ম্যাকডোনাল্ড'স রেস্টুরেন্টের প্রবক্তা;
রে ক্রোক, ম্যাকডোনাল্ড'স কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা
সদরদপ্তর
ওক ব্রুক, ইলিনয়িস
,
অবস্থানের সংখ্যা
৩৩,০০০+ বিশ্বব্যাপী[১]
বাণিজ্য অঞ্চল
বিশ্বব্যাপী
প্রধান ব্যক্তি
জেমস্‌ এ. স্কিনার
(সহ-সভাপতি এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা)
পণ্যসমূহফাস্ট ফুড
(হ্যামবার্গার • চিকেন • ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ • সফ্‌ট ড্রিঙ্ক • কফি • দুধের শরবত • সালাদ • ডিসার্ট • সকালের নাস্তা)
আয়বৃদ্ধি US$ ২৪.০৭৫ বিলিয়ন (২০১০)[২]
সুদ ও করপূর্ব আয়
বৃদ্ধি US$ ৭.৪৭৩ বিলিয়ন (২০১০)[২]
নীট আয়
বৃদ্ধি US$ ৪.৯৪৯ বিলিয়ন (২০১০)[২]
মোট সম্পদবৃদ্ধি US$ ৩১.৯৭৫ বিলিয়ন (২০১০)[২]
মোট ইকুইটিবৃদ্ধি US$ ১৪.৬৩৪ বিলিয়ন (২০১০)[২]
কর্মীসংখ্যা
৪০০,০০০ (জানুয়ারি, ২০১০)[২]
ওয়েবসাইটGlobal Corporate Website

ইতিহাস

ব্যবসায়টি রেস্তোরাঁ হিসেবে শুরু হয়েছিল। দুই ভাই - রিচার্ড ম্যাকডোনাল্ড এবং মরিস ম্যাকডোনাল্ড যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের স্যান বার্নারডিনোতে এটি চালু করেন। তাদের চিন্তা-চেতনায় ছিল স্পিডি সার্ভিস সিস্টেম ব্যবহার করা। এ পদ্ধতিটিই বর্তমানকালের ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁ হিসেবে হুয়াইট ক্যাসেল রেস্তোরাঁয় দু'দশক কাল পূর্বেই প্রবর্তিত হয়েছে।

ম্যাকডোনাল্ডের প্রকৃত মাস্কটটি ছিল একজন শেফ বা বাবুর্চীর টুপির উপরে রক্ষিত হ্যামবার্গার, তার নাম রাখা হয়েছিল স্পিডি। কোম্পানিটি যখন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেডমার্ক গ্রহণ করে, তখন রোনাল্ড ম্যাকডোনাল্ড স্পিডি'র স্থান গ্রহণ করে।

৪ মে, ১৯৬১ সালে ম্যাকডোনাল্ডস যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেডমার্ক গ্রহণ করে। ড্রাইভ-ইন রেস্টোরেন্ট সার্ভিসেস নামে এটি ডিসেম্বর, ২০০৯ পর্যন্ত এটি চলমান ছিল। একই বছর অর্থাৎ ১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠানটি এম প্রতীকে লোগো ট্রেডমার্ক গ্রহণ করে। ১৫ এপ্রিল, ১৯৫৫ সালে বর্তমান প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাকাল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও, এর মালিকানা স্বত্ত্ব - রে ক্রোক; স্থান হিসেবে - ড্যাস প্লেইনস্‌, ইলিনয়িস এবং শাখার সংখ্যা সর্বমোট ৯টি উল্লেখ করা আছে।[৩] ক্রোক পরবর্তীকালে ম্যাকডোনাল্ড ভ্রাতৃদ্বয়ের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানের সমূদয় শেয়ার ক্রয় করেছিলেন। এরপর থেকেই এটিকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেয়া হয়।

ম্যাকডোনাল্ড ভ্রাতৃদ্বয় প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করার পর ক্রোক আগ্রাসনভিত্তিক ব্যবসায়িক কর্মপন্থার জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। ম্যাকডোনাল্ড ভাইয়েরা ও ক্রোক ব্যবসায়ের পূর্ণাঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করতেন যা ক্রোকের আত্মজীবনী ও ম্যাকডোনাল্ড ভ্রাতৃদ্বয়ের আত্মজীবনী - উভয় পর্যায়েই উল্লেখ করা হয়েছে। ম্যাকডোনাল্ড ভ্রাতৃদ্বয়ের প্রতিষ্ঠা করা প্রকৃত রেস্তোঁরাটি এখন একটি স্থাপনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রয়েছে।[৪]

একটি ম্যাকডোনাল্ড’স রেস্তোরাঁ'র বহিরাঙ্গন, ভারসাভা, পোল্যান্ড, ২০০৮

বিশ্বায়নের প্রতীক

ম্যাকডোনাল্ডসের সম্প্রসারণ কার্যক্রমের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে কোম্পানীটি বিশ্বায়নের প্রতীক হিসেবে চিত্রিত হয়েছে। আমেরিকান জীবনধারাও ব্যাপক, বিস্তৃত আকার ধারণ করেছে ম্যাকডোনাল্ডসের জন্যেই। তা স্বত্ত্বেও, এটি জনগণের কাছে ব্যবসায়ের নীতি-নৈতিকতাসহ সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের কাছে তার দায়বদ্ধতার বিষয়েও প্রশ্ন তৈরী করেছে।

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ফাস্ট ফুড চেইন স্টোর হিসেবে ম্যাকডোনাল্ডসের ৬টি মহাদেশের ১১৯টি দেশে শাখা রয়েছে। ঐ দেশ ও অঙ্গরাজ্যগুলোতে তাদের মোট শাখার সংখ্যা ৩১,০০০-এরও বেশি।[৫] ৩১ জানুয়ারি, ১৯৯০ সালে ম্যাকডোনাল্ড’স কর্তৃপক্ষ রাশিয়ার মস্কোতে তাদের একটি শাখা খোলে। প্রথম দিনেই ঐ শাখায় মোট বিক্রির পরিমাণ এখন পর্যন্ত তাদের সর্বোচ্চ। ম্যাকডোনাল্ডসের সবচেয়ে বড় রেস্তোরাঁটি রয়েছে চীনের বেইজিংয়ে।নব্বুইয়ের দশকে সবচেয়ে বেশি প্রাতিষ্ঠানিক শাখা খোলা হয়। বলা হয়ে থাকে যে, বিশ্বের কোন না কোন স্থানে প্রতি ছয় ঘণ্টায় একটি করে ম্যাকডোনাল্ডসের নূতন শাখা খোলা হয়েছিল।[৬]

এছাড়াও, প্রতিষ্ঠানটি অন্যান্য ব্রান্ডের রেস্তোরাঁ কার্যক্রম যেমনঃ পাইলস্‌ ক্যাফে, বিগ ম্যাক, দি এগ ম্যাকমাফিন, হ্যাপী মিলস, চিকেন ম্যাকনাগেটস-এর বিপণন কার্যক্রমও পরিচালনা করে থাকে।

পরিচালনা

ম্যাকডোনাল্ড’স কোম্পানীটির সদর দফতর যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়িস অঙ্গরাজ্যের ওক ব্রুকে অবস্থিত। ১৯৪০ সালে কোম্পানীটি রিচার্ড এবং মরিস ম্যাকডোনাল্ড ভ্রাতৃদ্বয়ের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। ১৯৪৮ সালের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি হ্যামবার্গার বা বার্গার ব্যবসায় পূর্ণাঙ্গ উৎপাদন কলাকৌশল নীতি অবলম্বন করে ব্যাপক স্বীকৃতি অর্জন করে। ১৯৫৫ সালে রে ক্রোক ফ্র্যানচাইজ এজেন্ট বা বিশেষ অধিকারপ্রাপ্ত কর্মী হিসেবে উক্ত প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। তিনি পরবর্তীকালে ম্যাকডোনাল্ড ভাইদের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানটির সমূদয় শেয়ার কিনে নেন। তাঁর পরিচালনায় এটি বিশ্বের সর্বত্র ব্যাপক সফলতার মুখ দেখে।[৭]

বিশেষ অধিকার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভাড়া, রয়্যালিটি এবং ফি পরিশোধসহ কোম্পানীর পরিচালিত রেস্তোরাঁ থেকে এর রাজস্ব সংগৃহীত হয়। ম্যাকডোনাল্ডের রাজস্ব গত ৩ বছরে ২৭% বৃদ্ধি পেয়ে ২০০৭ সালের শেষে ২২.৮ বিলিয়ন ডলারে এসে পৌঁছায়। এছাড়াও, ৯% রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়ে পরিচালনা বাবদ আয় হয় ৩.৯ বিলিয়ন ডলারে।[৮]১৯৬৫ সালে কোম্পানীটি স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভূক্ত হয়।[৯]

বিক্রিত খাদ্যসামগ্রী

ম্যাকডোনাল্ডসের বিগ ম্যাক হ্যামবার্গার

ম্যাকডোনাল্ড’স প্রধানত হ্যামবার্গার, চিজবার্গার, চিকেন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, সকালের নাস্তাসামগ্রী, কোমল পানীয়, মিল্কশেক বা দুধের শরবত এবং মিষ্টান্ন বিক্রয় করে থাকে। গ্রাহকদের স্বাদে ভিন্নতা আনয়ণের জন্য খাদ্য তালিকায় অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে সালাদ, র‍্যাপ, স্মুথি এবং ফল সরবরাহ করে থাকে।[১০]

ঋতুভেদে ম্যাকডোনাল্ড’স কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদেরকে ম্যাকরিব স্যান্ডউইচ নামক খাবারের স্বাদ গ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকে। ঋতুভিত্তিক ম্যাকরিব স্যান্ডউইচে কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে ব্যতিক্রমধর্মী আবেদন যুক্ত করা হয়।[১১]

পর্তুগালই একমাত্র দেশ যেখানে ম্যাকডোনাল্ডের রেস্তোরাঁগুলোয় বর্তমান স্যুপ বা ঝোল পরিবেশন করা হয়। মালয়েশিয়ায় ম্যাকডোনাল্ডসে ভাত-ঝোল পর্যন্ত পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

News
  • CBC Archives—CBC Television reports on the opening of Moscow McDonald's (1990)
🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ