হিরোহিতো
হিরোহিতো (裕仁) (জন্ম: ২৯ এপ্রিল, ১৯০১ - মৃত্যু: ৭ জানুয়ারি, ১৯৮৯) জাপানের সনাতনী ধারা অনুযায়ী জাপানের ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ১২৪তম সম্রাট ছিলেন।[১] জাপানের ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী সম্রাট হিসেবে বিবেচিত হয়ে আছেন তিনি। ২৫ ডিসেম্বর, ১৯২৬ সালে ক্ষমতায আরোহণ করে ১৯৮৯ সালে মৃত্যু পূর্ব পর্যন্ত সম্রাট ছিলেন।[২] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকাল ও যুদ্ধ-পরবর্তীতে গণতান্ত্রিক জাপানের শাসনামলেও তিনি শাসনকার্য পরিচালনা করেছিলেন। মৃত্যু পরবর্তীকালে জাপানে আনুষ্ঠানিকভাবে তার নতুন নামকরণ করা হয় সম্রাট শোয়া বা শোয়া সম্রাট (昭和天皇 Shōwa tennō)। তার মৃত্যুর পর আকিহিতো নামীয় পুত্র ক্ষমতাভার গ্রহণ করেন।
হিরোহিতো / Emperor Shōwa 裕仁 / 昭和天皇 | |||||
---|---|---|---|---|---|
জাপানের সম্রাট | |||||
রাজত্ব | ২৫শে ডিসেম্বর, ১৯২৬ - ৭ই জানুয়ারি, ১৯৮৯ | ||||
জাপান | ১০ই নভেম্বর, ১৯২৮ | ||||
পূর্বসূরি | তাইশো | ||||
উত্তরসূরি | আকিহিতো | ||||
প্রধানমন্ত্রী | তালিকা দেখুন
| ||||
জন্ম | অ্যাইয়মা প্রাসাদ, টোকিও, জাপান | ২৯ এপ্রিল ১৯০১||||
মৃত্যু | জানুয়ারি ৭, ১৯৮৯ ফুকিয়াগে প্রাসাদ, টোকিও | (বয়স ৮৭)||||
সমাধি | হাচিওজি, টোকিও, জাপান | ||||
দাম্পত্য সঙ্গী | সম্রাগ্গী কজুন | ||||
বংশধর | শিগেকো, প্রিন্সে তেরু সাচিকো, প্রিন্সে হিসা কাজুকো, প্রিন্সেস তাকা আতসুকো, প্রিন্সেস ইউরি আকিহিতো, প্রিন্সেস Tsugu মাসাহিতো, প্রিন্স ইউশি তাকাকো, প্রিন্সেস সুগা | ||||
| |||||
রাজবংশ | জাপানের ইম্পেরিয়াল হাউস | ||||
পিতা | তাইশো | ||||
মাতা | তেইমেই | ||||
ধর্ম | শিন্তো ধর্ম | ||||
স্বাক্ষর |
শোয়া নামটি হিরোহিতো'র মৃত্যুর পর দেয়া হয়। সাধারণতঃ জাপানের সম্রাটগণ এ পন্থায় তাদের নতুন নাম পেয়ে থাকেন। ১৯৯০ সাল থেকে জনগণ তাকে এ নামে ডাকতে শুরু করেন।[৩] তার রাজত্বকালীন সময়ে জাপানের বাইরে তিনি সম্রাট হিরোহিতো [৪] অথবা শুধুই হিরোহিতো নামে পরিচিত ছিলেন।[৫]
রাষ্ট্রপ্রধান
১৯২১ সালে পিতার পরিবর্তে জাপানের পরবর্তী সম্রাট হিসেবে প্রিন্স হিরোহিতোর নাম ঘোষণা করা হয়। পিতার মৃত্যুর পর তিনি সম্রাট হিসেবে অভিষিক্ত হন।[৫] তিনি ছিলেন প্রথম সম্রাট যিনি বহিঃর্বিশ্বে ভ্রমণ করেছেন। ১৯৭১ সালে ইউরোপ ভ্রমণ শেষে ১৯৭৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেছিলেন।[৫]
রাজ্যভার গ্রহণের সময় জাপান বৃহৎ শক্তিধর দেশসমূহের একটি ছিল। বিশ্ব অর্থনীতিতে দেশটির অবস্থান ছিল নবম। নৌশক্তিতে ছিল তৃতীয় যা ইতালির পরই দেশটির অবস্থান। এছাড়াও, জাতিপুঞ্জে পাঁচটি স্থায়ী সদস্য দেশের একটি ছিল জাপান। জাপান সাম্রাজ্যের সংবিধানমাফিক রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তার নির্দেশনায় সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ, সামরিকীকরণ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটে। যুদ্ধশেষে অন্যান্য অনেক দেশের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের ন্যায় তিনিও যুদ্ধাপরাধী হিসেবে আখ্যায়িত হয়ে বিচারের সম্মুখীন হতে হয়নি। কিন্তু, যুদ্ধ পরবর্তীকালে নতুন দেশে হিরোহিতো প্রতীকি সম্রাটে পরিণত হন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়
তার শাসনামলেই জাপান ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে হিরোহিতোর ভূমিকা ছিল যথেষ্ট বিতর্কিত। বিশ্বযুদ্ধে জাপান পরাজিত হয় ও সম্রাটের ক্ষমতা যথেষ্ট পরিবর্তিত হয়ে যায়। রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে সম্রাটের হিরোহিতো'র ভূমিকা অনেকাংশেই প্রতীকি পর্যায়ে চলে যায়।[৫]
মৃত্যু
দূরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সম্রাট হিরোহিতো মৃত্যুবরণ করেন। তার স্থলাভিষিক্ত হন বর্তমান সম্রাট আকিহিতো। প্রয়াত সম্রাটের রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্যানুষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক ঘটনা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ শেষকৃত্যানুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তন্মধ্যে - মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ. ডব্লিউ. বুশ, ফরাসী প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরা, ডিউক অব এডিনবার্গ প্রিন্স ফিলিপ অন্যতম। সম্রাট শোয়াকে টোকিওর হ্যাচিওজি এলাকায় অবস্থিত রাজকীয় সমাধি-মন্দিরে সম্রাট তাইশো পাশে কবর দেয়া হয়।[১]সম্রাট আকিহিতর পর বর্তমান সম্রাট নারুহিত।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
উইকিমিডিয়া কমন্সে হিরোহিতো সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।
- Hirohito biography and timeline at the Rotten Library
- Reflections on emperor Hirohito's death
- Booknotes interview with Herbert Bix on Hirohito and the Making of Modern Japan, September 2, 2001
- Booknotes interview with John Dower on Embracing Defeat, March 26, 2000.
হিরোহিতো জাপানের ইম্পেরিয়াল হাউস জন্ম: ২৯শে এপ্রিল ১৯০১ মৃত্যু: ৭ই জানুয়ারি ১৯৮৯ | ||
শাসনতান্ত্রিক খেতাব | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী সম্রাট তাইশো (ইয়শিহিতো) | জাপানের সম্রাট ২৫শে ডিসেম্বর , ১৯২৬ - ৭ই জানুয়ারি, ১৯৮৯ | উত্তরসূরী আকিহিতো |