দিরিয়া আমিরাত

প্রথম সৌদি রাষ্ট্র

দিরিয়া আমিরাত ছিল প্রথম সৌদি রাষ্ট্র।[১] ১৭৪৪ সালে (১১৫৭ হিজরি) এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। মুহাম্মদ ইবনে সৌদমুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহাবের মধ্যে মিত্রতা স্থাপনের পর এর প্রতিষ্ঠা হয়। একে ওয়াহাবিরা তাওহিদের বিশ্বাসের পুনপ্রতিষ্ঠা হিসেবে দেখেন। অনেক সালাফির দৃষ্টিতে এটি বৃহৎ পরিসরে সালাফি সংস্কার আন্দোলনের সূচনা। ১৭৪৪ সালে মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহাব ও মুহাম্মদ বিন সৌদ লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিয়োজিত হন।[২] মুহাম্মদ বিন সৌদের পুত্র আবদুল আজিজ বিন মুহাম্মদের সাথে মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহাবের মেয়ের বিয়ে তাদের পরিবারকে নিকটে আনে। এই মিত্রতা বর্তমান কালেও বিদ্যমান রয়েছে। দিরিয়া আমিরাতের রাজধানী দিরিয়াহকে ২০১০ সালে  ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান দেয়।[৩]

দিরিয়া আমিরাত

إمارة الدرعية
১৭৪৪–১৮১৮
দিরিয়ার জাতীয় পতাকা
দিরিয়ার পতাকা
দিরিয়ার অবস্থান
রাজধানীদিরিয়া
প্রচলিত ভাষাআরবি
ধর্ম
সুন্নি ইসলাম
সরকাররাজতন্ত্র
ইমাম 
• ১৭৪৪–১৭৬৫
মুহাম্মদ বিন সৌদ
• ১৭৬৫–১৮০৩
আবদুল আজিজ বিন মুহাম্মদ
• ১৮০৩–১৮১৪
সৌদ বিন আবদুল আজিজ বিন মুহাম্মদ বিন সৌদ
• ১৮১৪–১৮১৮
আবদুল্লাহ বিন সৌদ
ইতিহাস 
• দিরিয়া চুক্তি
১৭৪৪
১৮১৮
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
দিরিয়া
লাহিজ সালতানাত
মক্কা শরিফাত
মিশর এলিয়াত
বর্তমানে যার অংশ সৌদি আরব
 সংযুক্ত আরব আমিরাত
 কাতার
 ওমান
 ইয়েমেন
 জর্দান

সৌদ পরিবারের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা

নজদ ও এরপর পূর্বাঞ্চলীয় উপকূল যার দৈর্ঘ্য কুয়েত থেকে ওমানের উত্তর সীমানা পর্যন্ত, তা জয়ের মাধ্যমে আল সৌদ পরিবার ও তার মিত্ররা আরবের প্রধান সার্বভৌম শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। অধিকন্তু সৌদিরা আসিরের উচ্চভূমি তাদের অধীনে নিয়ে আসে। এসময় মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহাব বিভিন্ন জনগণ ও পন্ডিতদেরকে জিহাদে যোগদানের জন্য চিঠি লিখতে থাকেন যাতে তাদের দেশ যেমন ইরাক, মিশর, ভারত, ইয়েমেনসিরিয়াতে থাকা অনৈসিলামিক উপাদান দূরীভূত হয়। বেশ কিছু সামরিক অভিযানের পর মুহাম্মদ বিন সৌদ ১৭৬৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার পুত্র আবদুল আজিজ বিন মুহাম্মদ তার উত্তরসুরি হন। সৌদি সেনারা ১৮০১ সালে শিয়াদের নিকট পবিত্র বলে বিবেচিত কারবালা শহরে আক্রমণ চালায়। সেখানে থাকা সুফিদের নিদর্শন ও স্মৃতিমূলক বস্তুগুলো ধ্বংস করে ফেলা হয়। সালাফি মতাদর্শে এসবকে শিরক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহাবের মৃত্যুর ১১ বছর পর আবদুল আজিজ বিন মুহাম্মদের পুত্র সৌদ বিন আবদুল আজিজ বিন মুহাম্মদ বিন সৌদ হেজাজ তার নিজের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য অভিযানে বের হন।[৪] প্রথমে তাইফ শহর জয় করা হয়। এরপর দুই পবিত্র শহর মক্কামদিনা তার দখলে আসে। এই ঘটনা উসমানীয় সাম্রাজ্যের কর্তৃত্বের প্রতি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়। ১৫১৭ সাল থেকে উসমানীয়রা এই দুই শহর শাসনের দায়িত্ব পালন করছিল।

সার্বভৌমত্বের পতন

উসমানীয়রা আল সৌদকে দুর্বল করার দায়িত্ব মিশরের উসমানীয় শাসক মুহাম্মদ আলি পাশার হাতে অর্পণ করে। এর মাধ্যমে উসমানীয়-সৌদি যুদ্ধ শুরু হয়। মুহাম্মদ আলি পাশা সমুদ্রপথে তার সেনাদের হেজাজে পাঠান। তার পুত্র ইবরাহিম পাশা উসমানীয় সেনাদের নজদের কেন্দ্র পর্যন্ত নেতৃত্ব দেন। তারা একের পর এক শহর জয় করে। সৌদের উত্তরসুরি তার পুত্র আবদুল্লাহ বিন সৌদ হারানো অঞ্চল পুনরুদ্ধারে ব্যর্থ হন। শেষপর্যন্ত ইবরাহিম পাশা সৌদি রাজধানী দিরিয়া পৌছে যান এবং কয়েকমাস পর্যন্ত একে অবরোধ করা হয়। ১৮১৮ সালের শীতকালে দিরিয়া আত্মসমর্পণ করে। ইবরাহিম পাশা আল সৌদ ও মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহাব পরিবারের অনেক সদস্যকে মিশর ও উসমানীয় রাজধানী কনস্টান্টিনোপলে পাঠিয়ে দেন। চলে যাওয়ার পূর্বে তিনি দিরিয়া ধ্বংস করে দেয়ার আদেশ দেন। আবদুল্লাহ বিন সৌদকে কনস্টান্টিনোপলে মৃত্যুদন্ডে দণ্ডিত করা হয়। শিরচ্ছেদের পর তার মাথা বসফরাসে নিক্ষেপ করা হয়। এভাবে প্রথম সৌদি রাষ্ট্রের পতন ঘটে।[৫] তবে সালাফি আন্দোলন ও আল সৌদ পরিবারের বেঁচে যাওয়া সদস্যরা দ্বিতীয় সৌদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে যা ১৮৯১ সাল পর্যন্ত টিকে ছিল। পরবর্তীতে সৌদি আরব নামে তৃতীয় সৌদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়।[৬]

প্রথম সৌদি রাষ্ট্রের শাসকগণ

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ