নাইজেরিয়া জাতীয় ফুটবল দল

নাইজেরিয়া জাতীয় ফুটবল দল (ইংরেজি: Nigeria national football team) হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে নাইজেরিয়ার প্রতিনিধিত্বকারী পুরুষদের জাতীয় দল, যার সকল কার্যক্রম নাইজেরিয়ার ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা নাইজেরিয়া ফুটবল ফেডারেশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই দলটি ১৯৬০ সাল হতে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার এবং ১৯৫৯ সাল হতে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা আফ্রিকান ফুটবল কনফেডারেশনের সদস্য হিসেবে রয়েছে। ১৯৪৯ সালের ৮ই অক্টোবর তারিখে, নাইজেরিয়া প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করেছে; সিয়েরা লিয়নের ফ্রিটাউনে অনুষ্ঠিত উক্ত ম্যাচে নাইজেরিয়া সিয়েরা লিয়নকে ২–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছে।

নাইজেরিয়া
দলের লোগো
ডাকনামসুপার ঈগল
অ্যাসোসিয়েশননাইজেরিয়া ফুটবল ফেডারেশন
কনফেডারেশনক্যাফ (আফ্রিকা)
প্রধান কোচগেরনট রোর
অধিনায়কআহমেদ মুসা
সর্বাধিক ম্যাচভিন্সেন্ট এনিয়ামা
জোসেফ ইয়োবো (১০১)
শীর্ষ গোলদাতারশিদি ইয়াকিনি (৩৭)
মাঠজাতীয় স্টেডিয়াম
ফিফা কোডNGA
ওয়েবসাইটwww.thenff.com
প্রথম জার্সি
দ্বিতীয় জার্সি
ফিফা র‌্যাঙ্কিং
বর্তমান ৪২ অপরিবর্তিত (২১ ডিসেম্বর ২০২৩)[১]
সর্বোচ্চ(এপ্রিল ১৯৯৪)
সর্বনিম্ন৮২ (নভেম্বর ১৯৯৯)
এলো র‌্যাঙ্কিং
বর্তমান ৬৫ হ্রাস ১১ (১২ জানুয়ারি ২০২৪)[২]
সর্বোচ্চ১৫ (মে ২০০৪)
সর্বনিম্ন৭২ (ডিসেম্বর ১৯৬৪)
প্রথম আন্তর্জাতিক খেলা
সিয়েরা লিয়ন ০–২ নাইজেরিয়া 
(ফ্রিটাউন, সিয়েরা লিয়ন; ৮ অক্টোবর ১৯৪৯)[৩]
বৃহত্তম জয়
 নাইজেরিয়া ১০–১ দাহোমি 
(লাগোস , নাইজেরিয়া; ২৮ নভেম্বর ১৯৫৯)
বৃহত্তম পরাজয়
 গোল্ড কোস্টযুক্তরাজ্য ব্রিটিশ টোগোল্যান্ড
৭–০ নাইজেরিয়া 
(আক্রা, স্বর্ণ উপকূল; ১ জুন ১৯৫৫)
বিশ্বকাপ
অংশগ্রহণ৬ (১৯৯৪-এ প্রথম)
সেরা সাফল্য১৬ দলের পর্ব (১৯৯৪, ১৯৯৮, ২০১৪)
আফ্রিকা কাপ অফ নেশন্স
অংশগ্রহণ১৮ (১৯৬৩-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যচ্যাম্পিয়ন (১৯৮০, ১৯৯৪, ২০১৩)
আফ্রিকান নেশন্স চ্যাম্পিয়নশিপ
অংশগ্রহণ৩ (২০১৪-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যরানার-আপ (২০১৮)
ডাব্লিউএএফইউ নেশন্স কাপ
অংশগ্রহণ৩ (২০১০-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যচ্যাম্পিয়ন (২০১০)
কনফেডারেশন্স কাপ
অংশগ্রহণ২ (১৯৯৫-এ প্রথম)
সেরা সাফল্যচতুর্থ স্থান (১৯৯৫)

৬০,৪৯১ ধারণক্ষমতাবিশিষ্ট মোশুদ আবিয়োলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সুপার ঈগল নামে পরিচিত এই দলটি তাদের সকল হোম ম্যাচ আয়োজন করে থাকে। এই দলের প্রধান কার্যালয় নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজায় অবস্থিত। বর্তমানে এই দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন গেরনট রোর এবং অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন আক্রমণভাগের খেলোয়াড় আহমেদ মুসা।

নাইজেরিয়া এপর্যন্ত ৬ বার ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে সেরা সাফল্য হচ্ছে ১৯৯৪, ১৯৯৮, ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপের ১৬ দলের পর্বে পৌঁছানো। অন্যদিকে, আফ্রিকা কাপ অফ নেশন্সে নাইজেরিয়া অন্যতম সফল দল, যেখানে তারা ৩টি (১৯৮০, ১৯৯৪ এবং ২০১৩) শিরোপা জয়লাভ করেছে। এছাড়াও, নাইজেরিয়া ১৯৯৫ কিং ফাহদ কাপে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছে।

ভিন্সেন্ট এনিয়ামা, জোসেফ ইয়োবো, জন অবি মিকেল, রশিদি ইয়াকিনি এবং অবাফেমি মার্টিন্সের মতো খেলোয়াড়গণ নাইজেরিয়ার জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন।

ইতিহাস

১৯৩০-এর দশকে অন্যান্য উপনিবেশের সাথে নাইজেরিয়া দলটি অনানুষ্ঠানিকভাবে ফুটবলে খেলায় অংশগ্রহণ করে।[৪] ব্রিটিশ উপনিবেশ হওয়া সত্ত্বেও ১৯৪৯ সালের অক্টোবর মাসে নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম খেলায় অংশ নেয়। ডালউইচ হ্যামলেট, বিশপ অকল্যান্ড, সাউথ লিভারপুল প্রভৃতি শৌখিন দলের বিপক্ষে ইংল্যান্ড সফরে প্রস্তুতিমূলক খেলায় অংশগ্রহণ করেছিল। ১৯৭৩ সালে দলটি প্রথম বৃহৎ সাফল্য লাভ করে। ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত ২য় অল-আফ্রিকা গেমসে স্বর্ণপদক পায়। এছাড়াও, ১৯৭৬ ও ১৯৭৮ সালের আফ্রিকান নেশন্স কাপে তৃতীয় স্থান দখল করেছিল। লাগোসে অনুষ্ঠিত ১৯৮০ সালের আফ্রিকা নেশন্স কাপে জন চিদোজি, তাঞ্জি ব্যাঞ্জো, মুদা লল, ক্রিশ্টিয়ান চুকু প্রমুখ ফুটবলারগণ অংশ নেন ও সুপার ঈগলকে প্রথমবারের মতো জয়ে সহায়তা করেন। ১৯৮৪ ও ১৯৮৮ সালে ফাইনালে পৌঁছলেও ক্যামেরুন দলের কাছে হেরে যায়। ক্যামেরুন চারবার আফ্রিকান কাপ জয় করে; তন্মধ্যে তিনবারই তারা নাইজেরিয়াকে হারায়। ক্যামেরুনের কাছে এজাতীয় ঘটনার বেশ কয়েকবার পুনরাবৃত্তি ঘটে। এরফলে উভয় দলই অলিখিতভাবে একে-অপরের চীর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।

বিশ্বকাপ

২০০৯ সালের ১৪ই নভেম্বর তারিখে নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত বাছাই-পর্বের খেলায় কেনিয়াকে ৩–২ গোলের ব্যবধানে পরাভূত করে ২০১০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।[৫]

বিশ্বকাপের মূল পর্বে উদ্বোধনী খেলায় গ্যাব্রিয়েল হেইঞ্জের হেডে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ০–১ গোলে হেরে যায়।[৬] দ্বিতীয় খেলায় শুরুতেই উচের গোলে গ্রিসের বিরুদ্ধে এগিয়ে যায়। কিন্তু সানি কাইতার লাল কার্ডপ্রাপ্তিতে গ্রিস সুবিধা পেয়ে যায় ও ২–১ গোলে জয়ী হয়। এরপর ২–২ গোলে দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে ড্র করে। ২০১০ সালের ৩০শে জুন তারিখে প্রতিযোগিত থেকে দ্রুত বিদায় ও দূর্বল ফলাফলের জন্যে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথন জাতীয় দলকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খেলার জন্যে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন।[৭] এ নিষেধাজ্ঞার ফলে ফিফা থেকেও আন্তর্জাতিক ফুটবলে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের দরুন দলটিও নিষেধাজ্ঞার পর্যায়ে পড়ে।[৮] ২০১০ সালের ৫ই জুলাই তারিখে নাইজেরীয় সরকার ফিফা/ক্যাফ ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।[৯] কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি ফিফা কর্তৃপক্ষের কাছে তিন মাস পর থেকে কার্যকরী হয়।[১০] ২০১০ সালের ৪ঠা অক্টোবর তারিখে বিশ্বকাপ ফুটবলের পর সরকারীভাবে হস্তক্ষেপ করায় দলটিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়।[১০] এর চারদিন পর নাইজেরিয় ফুটবলারদের জাতীয় সংস্থা থেকে অভিযোগ দাখিল করায় তা সাময়িকভাবে তুলে নেয়া হয়।[১১]

আফ্রিকা কাপ অফ নেশন্স

ইতিমধ্যে দলটি ১৯৮০, ১৯৯৪ ও ২০১৩ সালের আফ্রিকান নেশন্স কাপ ছয় করে এবং ১৯৮৪, ১৯৮৮, ১৯৯০ ও ২০০০ সালে তারা চারবার রানার-আপ হয়। এছাড়াও, সাতবার তৃতীয় স্থান দখল করে। ২০১৩ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি তারিখে বুরকিনা ফাসোকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো এ কাপটি জয় করে। ১৯৯৪ সালে অ্যাফকন চ্যাম্পিয়নধারী নাইজেরিয়া দলের অধিনায়ক ও বর্তমান নাইজেরীয় কোচ স্টিফেন কেসি প্রথমবারের মতো সুপার ঈগলদেরকে এ কাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।[১২]

র‌্যাঙ্কিং

ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে, ১৯৯৪ সালের এপ্রিল মাসে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে নাইজেরিয়া তাদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অবস্থান (৫ম) অর্জন করে এবং ১৯৯৯ সালের নভেম্বর মাসে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা ৮২তম স্থান অধিকার করে, যা তাদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে নাইজেরিয়ার সর্বোচ্চ অবস্থান হচ্ছে ১৫তম (যা তারা ২০০৪ সালে অর্জন করেছিল) এবং সর্বনিম্ন অবস্থান হচ্ছে ৭২। নিম্নে বর্তমানে ফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং এবং বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিংয়ে অবস্থান উল্লেখ করা হলো:

বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং
১২ জানুয়ারি ২০২৪ অনুযায়ী বিশ্ব ফুটবল এলো রেটিং[২]
অবস্থানপরিবর্তনদলপয়েন্ট
৬৩ ২৬  কোস্টা রিকা১৫৭৭
৬৪  বুর্কিনা ফাসো১৫৭১
৬৫ ১১  নাইজেরিয়া১৫৬৮
৬৫ ১২  উত্তর মেসিডোনিয়া১৫৬৮
৬৭  ওমান১৫৬৬

প্রতিযোগিতামূলক তথ্য

ফিফা বিশ্বকাপ

ফিফা বিশ্বকাপবাছাইপর্ব
সালপর্বঅবস্থানম্যাচজয়ড্রহারস্বগোবিগোম্যাচজয়ড্রহারস্বগোবিগো
১৯৩০অংশগ্রহণ করেনিঅংশগ্রহণ করেনি
১৯৩৪
১৯৩৮
১৯৫০
১৯৫৪
১৯৫৮
১৯৬২উত্তীর্ণ হয়নি
১৯৬৬প্রত্যাহারপ্রত্যাহার
১৯৭০উত্তীর্ণ হয়নি১৫১২
১৯৭৪
১৯৭৮১৭
১৯৮২
১৯৮৬১১
১৯৯০
১৯৯৪১৬ দলের পর্ব৯ম১৭
১৯৯৮১৬ দলের পর্ব১২তম১০
২০০২গ্রুপ পর্ব২৭তম১০১৯
২০০৬উত্তীর্ণ হয়নি১০২১
২০১০গ্রুপ পর্ব২৭তম১২২০
২০১৪১৬ দলের পর্ব১৬তম১১
২০১৮গ্রুপ পর্ব২১তম১৩
২০২২অনির্ধারিতঅনির্ধারিত
মোট১৬ দলের পর্ব৬/২১২১১২২৩৩০১০৪৫৮২৯১৭১৭৫৮০

অর্জন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ