ভিক্টর অরবান

ভিক্টর মিহাই অরবান[১] (হাঙ্গেরীয় উচ্চারণ: [orbaːn viktor ˈmihaːj] (); হাঙ্গেরীয়: Viktor Mihály Orbán; জন্ম: ৩১ মে, ১৯৬৩)[২] সেকেসফেহারভার এলাকায় জন্মগ্রহণকারী হাঙ্গেরির বিশিষ্ট ডানপন্থী রাজনীতিবিদ[৩][৪][৫] ২০১০ সাল থেকে তিনি হাঙ্গেরির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন রয়েছেন। এরপূর্বে ১৯৯৮ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত সময়কালেও তিনি হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।[৬] মধ্য ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ফিদেজ-হাঙ্গেরিয়ান সিভিক ইউনিয়নের সদস্য তিনি।

ভিক্টর অরবান
২০১১ সালে ব্রাসেলসে ভিক্টর অরবান
হাঙ্গেরীয় প্রধানমন্ত্রী
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
২৯ মে, ২০১০
রাষ্ট্রপতিলাসজলো সলিয়ম
পাল স্মিত
লাসজলো কোভার (ভারপ্রাপ্ত)
জানোস আদের
পূর্বসূরীগর্ডন বাজনাই
কাজের মেয়াদ
৮ জুলাই, ১৯৯৮ – ২৭ মে, ২০০২
রাষ্ট্রপতিআরপাদ গঞ্জ
ফেরেঙ্ক মাদ
পূর্বসূরীগাইয়ুলা হর্ন
উত্তরসূরীপিটার মেদগিসাই
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1963-05-31) ৩১ মে ১৯৬৩ (বয়স ৬০)
সেকেসফেহারভার, হাঙ্গেরি
রাজনৈতিক দলফিদেজ
দাম্পত্য সঙ্গীআনিকো লিভাই (১৯৮৬-বর্তমান)
সন্তানরাহেল
গাসপার
সারা
রোজা
ফ্লোরা
প্রাক্তন শিক্ষার্থীইয়তভস লোর‌্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়
পেমব্রুক কলেজ, অক্সফোর্ড
ধর্মকালভিনিজম
স্বাক্ষর
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট

পূর্ব ও মধ্য ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে তিনিই ঠাণ্ডা যুদ্ধ পরবর্তীকালের কোন দেশের সরকার প্রধান যিনি সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক আমলের সদস্য ছিলেন না।

প্রারম্ভিক জীবন

সেকেসফেহারভার এলাকায় ৩১ মে, ১৯৬৩ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু তার শৈশবকাল অতিবাহিত হয় পার্শ্ববর্তী আলকসাতদোবোজ ও ফেলকসাট নামের দুই গ্রামে। ১৯৭৭ সালে তার পরিবার পুনরায় সেকেসফেহারভার এলাকায় স্থানান্তরিত হয়।

১৯৮১ সালে অরবান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ইংরেজিতে অধ্যয়ন করে পাশ করেন। পরবর্তী দুই বছর সামরিক জীবন সম্পন্ন করেন। ১৯৮৭ সালে বুদাপেস্টের ইয়তভোস লোর‌্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনশাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।[২] এরপর দুই বছর তিনি সলনক এলাকায় বসবাস করে বুদাপেস্টের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন। কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সমাজবিজ্ঞানী হিসেবে চাকরি নেন।[৭] ১৯৮৯ সালে সোরোস ফাউন্ডেশনের বৃত্তি নিয়ে চারমাস অক্সফোর্ডে ব্যয় করেন। সেখানে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন পেমব্রুক কলেজে পড়াশোনা করেন।[৮] রাজনীতি বিষয়ে তার ব্যক্তিগত গৃহশিক্ষক ছিলেন জিগনিউ পেলসিনস্কি।[৯] ১৯৯০ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি অক্সফোর্ড ত্যাগ করে হাঙ্গেরিতে ফিরে আসেন। সমাজতন্ত্র পরবর্তী সময়কালে অনুষ্ঠিত হাঙ্গেরির প্রথম নির্বাচনে জয়লাভ করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

বিশিষ্ট আইনবিদ আনিকো লেভাইয়ের সাথে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন অরবান। এ দম্পতির পাঁচ সন্তান রয়েছে।[১০] তিনি ক্যালভিনিস্ট প্রোটেস্ট্যান্ট। ক্রীড়ানুরাগী অরবান ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে ফেলকাট ফুটবল দলের নিবন্ধিত খেলোয়াড়। ২০০৬ সালে ফুটবল ম্যানেজার হিসেবেও অংশ নেন।[১১]

রাজনৈতিক জীবন

সমাজতন্ত্র বিরোধী সংগঠন ফিদেজের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন তিনি। ১৬ জুন, ১৯৮৯ তারিখে বুদাপেস্টের হিরোজ স্কয়ারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ১৯৫৬ সালের হাঙ্গেরীয় বিপ্লবের নেতা ইম্রে নাগি ও শহীদদের স্মরণে ভাষণ প্রদান করে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। একই সাথে তিনি হাঙ্গেরি থেকে সোভিয়েত সেনা প্রত্যাহার ও মুক্ত নির্বাচনের আহ্বান জানান। এরফলে তিনি জাতীয় ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে পরিণ হন। ১৯৮৯ সালে তিনি বিরোধী দলের গোলটেবিলে অংশ নেন।[১২] ১৯৯১ সালের মাঝামাঝি সময়ে সকল সোভিয়েত সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

১৯৯০ সালে হাঙ্গেরির জাতীয় পরিষদে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে দল স্বল্পসংখ্যক আসন লাভ করে। সেপ্টেম্বর, ১৯৯২ সালে তিনি লিবারেল ইন্টারন্যাশনাল দলের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সাল থেকে ফিদেজ-হাঙ্গেরিয়ান সিভিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে রয়েছেন অরবান। ১৯৯৪ সালে তার দল আরো কম আসন পায়। ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যে দলকে মধ্য-ডানপন্থীতে রূপান্তরিত করতে মধ্য-ডানপন্থী দলের সাথে জোট বাঁধেন। ১৯৯৮ সালের নির্বাচনে ফিদেজ ও জোট দলগুলো সংসদে ৪২% ভোট পেয়ে বৃহৎসংখ্যক আসন দখল করে।[১৩] ফিদেজ ও অন্য দু’টি দল জোট সরকার গঠন করে। আন্দ্রাজ হেগেদাসের পর দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ৩৫ বছর বয়সে অরবান প্রধানমন্ত্রী হন।[১৪] তিনি একদল তরুণ মন্ত্রীকে সরকারে অন্তর্ভুক্ত করেন যাদের পূর্বেকার সরকারের সাথে সম্পৃক্ততা ছিল না। তিনি হাঙ্গেরিকে মুক্ত-বাজার অর্থনীতির দিকে নিয়ে যান। একই সময়ে তিনি ইউরোপ বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৯ সালে ন্যাটোতে হাঙ্গেরির প্রবেশ নিশ্চিত করেন।

জানুয়ারি, ২০০০ সালে ফিদেজ দলের প্রধান থেকে পদচ্যুত হন। পার্টি কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী ও দলনেতার পদ আলাদা করতে এ সিদ্ধান্ত নেয়। ২০০২ সালে হাঙ্গেরিয়ান সোশ্যালিস্ট পার্টি (এমএসজেডপি) দল সংসদ নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি প্রধানমন্ত্রীত্ব হারান। এর কিছুদিন পর তিনি ইউরোপীয়ান পিপল’স পার্টির সহ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০০৩ সালে ফিদেজ দলে তিনি পুনরায় ফিরে আসেন। কিন্তু ২০০৬ সালে এমএসজেডপি দলের কাছে তার দল পুনরায় হেরে যায়। এরফলে তিনি দলনেতা থেকে পদত্যাগ করেন ও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।[১৫] অরবানের জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। কিন্তু ক্ষমতাসীন এমএসজেডপি দল কর্তৃক দেশের অর্থনীতি প্রসঙ্গে যথেচ্ছ মিথ্যাচারের ফলে ভোট সংখ্যা বাড়তে থাকে। প্রথমে বিক্ষুদ্ধ জনতাকে সমর্থন জানালেও সহিংসতার আকার ধারণ করায় তিনি দূরে সরে যান।

মে, ২০০৭ সালে অরবান ফিদেজ দলের নেতৃত্বে পুণঃনির্বাচিত হন।[১৬] ২০০৮ সালে হাঙ্গেরির অর্থনীতি ধ্বংসের দিকে যেতে থাকে। ২০০৯ সালের ইউরোপীয় সংসদ নির্বাচনে ফিদেজ ৫৬.৩৬% ভোটসহ ২২ আসনের ১৪টিতেই জয়ী হয়।[১৭]

২০১০ সালের মধ্য-এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হাঙ্গেরির সংসদ নির্বাচনে ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পিপল’স পার্টির সাথে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে। ৫২.৭৩% শতাংশ ভোট পেয়ে দুই-তৃতীয়াংশ আসন লাভের মাধ্যমে সরকার গঠন করে।

তথ্যসূত্র

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ

বিধানসভার আসন
পূর্বসূরী
First
ফিদেজ সংসদীয় দলনেতা
১৯৯০-১৯৯৪
উত্তরসূরী
লাজলো কোভার
পার্টির রাজনৈতিক কার্যালয়
নতুন রাজনৈতিক দলফিদেজ সভাপতি
১৯৯৩-২০০০
উত্তরসূরী
লাজলো কোভার
পূর্বসূরী
জানোস আদের
ফিদেজ সভাপতি
২০০৩-বর্তমান
নির্ধারিত হয়নি
রাজনৈতিক দপ্তর
পূর্বসূরী
গাইওলা হর্ন
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী
১৯৯৮-২০০২
উত্তরসূরী
পিটার মেদগাইসি
পূর্বসূরী
গর্ডন বাজনাই
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী
২০১০-বর্তমান
নির্ধারিত হয়নি
🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ