জিনেদিন জিদান

ফরাসি ফুটবল খেলোয়াড়

জিনেদিন ইয়াজিদ জিদান (ফরাসি উচ্চারণ: ​[zinedin jazid zidan], আরবি: زين الدين يزيد زيدان, ইংরেজি: Zinedine Zidane; জন্ম: ২৩ জুন ১৯৭২) হলেন একজন ফরাসি পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় এবং ম্যানেজার। তিনি বর্তমানে স্পেনীয় পেশাদার ফুটবল লিগের শীর্ষ স্তর লা লিগার ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি তার খেলোয়াড়ি জীবনের অধিকাংশ সময় রিয়াল মাদ্রিদ, ইয়ুভেন্তুস, বর্দো এবং ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে একজন মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন। তিনি মূলত একজন আক্রমণাত্মক মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেললেও মাঝেমধ্যে বাম-পার্শ্বীয় মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন। তিনি প্রায়ই সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে আখ্যায়িত হয়ে থাকেন।[৫][৬][৭][৮][৯] জিদান একজন উচ্চস্তরের প্লেমেকার, যিনি তার খেলোয়াড়ি সৌন্দর্য, দূরদৃষ্টি, বল পাস, বল নিয়ন্ত্রণ ও কৌশলের জন্য প্রসিদ্ধ।[১০][১১] তিনি প্রথম আরব দেশ হিসেবে ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ মঞ্চায়নে কাতারের সফল নিলামডাকের প্রতিনিধি ছিলেন।[১২]

জিনেদিন জিদান
২০১৭ সালে রিয়াল মাদ্রিদের ম্যানেজার জিদান
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজিনেদিন ইয়াজিদ জিদান[১][২]
জন্ম (1972-06-23) ২৩ জুন ১৯৭২ (বয়স ৫১)[৩]
জন্ম স্থানমার্সেই, ফ্রান্স
উচ্চতা১.৮৫ মি (৬ ফু ১ ইঞ্চি)[৪]
মাঠে অবস্থানমধ্যমাঠের খেলোয়াড়
যুব পর্যায়
১৯৮১–১৯৮২ফোরেস্তা
১৯৮২–১৯৮৩সেঁত-অঁরি
১৯৮৩–১৯৮৬সেপ্তেমেস-লে-ভালোঁ
১৯৮৬–১৯৮৯কান
জ্যেষ্ঠ পর্যায়*
বছরদলম্যাচ(গোল)
১৯৮৯–১৯৯২কান৬১(৬)
১৯৯২–১৯৯৬বর্দো১৩৯(২৮)
১৯৯৬–২০০১ইয়ুভেন্তুস১৫১(২৪)
২০০১–২০০৬রিয়াল মাদ্রিদ১৫৫(৩৭)
মোট৫০৬(৯৫)
জাতীয় দল
১৯৮৮–১৯৮৯ফ্রান্স অনূর্ধ্ব-১৭(১)
১৯৮৯–১৯৯০ফ্রান্স অনূর্ধ্ব-১৮(০)
১৯৯০–১৯৯৪ফ্রান্স অনূর্ধ্ব-২১২০(৩)
১৯৯৪–২০০৬ফ্রান্স১০৮(৩১)
পরিচালিত দল
২০১৪–২০১৬রিয়াল মাদ্রিদ কাস্তিয়া
২০১৬–২০১৮রিয়াল মাদ্রিদ
২০১৯–২০২১রিয়াল মাদ্রিদ
অর্জন ও সম্মাননা
পুরুষদের ফুটবল
 ফ্রান্স-এর প্রতিনিধিত্বকারী
ফিফা বিশ্বকাপ
বিজয়ী১৯৯৮ ফ্রান্স
রানার-আপ২০০৬ জার্মানি
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে

১৯৮১–৮২ মৌসুমে, ফরাসি ফুটবল ক্লাব ফোরেস্তার যুব পর্যায়ের হয়ে খেলার মাধ্যমে জিদান ফুটবল জগতে প্রবেশ করেন এবং পরবর্তীতে সেঁত-অঁরি, সেপ্তেমেস-লে-ভালোঁ এবং কানের হয়ে খেলার মাধ্যমে ফুটবল খেলায় বিকশিত হয়েছেন। ১৯৮৯–৯০ মৌসুমে, কানের মূল দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি তার জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেন। কানের হয়ে ৩ মৌসুম খেলার পর, তিনি বর্দোয় যোগদান করেন, যেখানে তিনি ৪ মৌসুমে ১৩৯ ম্যাচে ২৮টি গোল করেছেন। অতঃপর তিনি ৩.৫০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ইতালীয় ক্লাব ইয়ুভেন্তুসে যোগদান করেন, যেখানে মার্চেল্লো লিপ্পির অধীনে তিনি ইয়ুভেন্তুসের হয়ে একটি উয়েফা সুপার কাপ শিরোপা জয়লাভ করেছেন। ইয়ুভেন্তুসের হয়ে ৫ মৌসুমে সকল প্রতিযোগিতায় ২০৯ ম্যাচে ৩১টি গোল করার পর, প্রায় ৭৭.৫০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে স্পেনীয় ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে যোগদান করেন, যেখানে তিনি ১টি লা লিগা এবং ১টি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জয়লাভ করেছেন।[১৩] রিয়াল মাদ্রিদে ৫ মৌসুম অতিবাহিত করার পর তিনি অবসর গ্রহণ করেছেন।

৬ বছর যাবত ফ্রান্সের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলার পর, ১৯৯৪ সালে, জিদান ফ্রান্সের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন, যেখানে তিনি ১০৮ ম্যাচে ৩১টি গোল করেছেন। তিনি ফ্রান্সের হয়ে ৩টি ফিফা বিশ্বকাপ (১৯৯৮, ২০০২ এবং ২০০৬) এবং ৩টি উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে (১৯৯৬, ২০০০ এবং ২০০৪) অংশগ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে ১৯৯৮ সালে এমে জাকের অধীনে ফিফা বিশ্বকাপের শিরোপা জয়লাভ করেছেন।

খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টানার পর ২০১৮ সালে, জিদান রিয়াল মাদ্রিদের রিয়াল মাদ্রিদ কাস্তিয়ার ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমে ম্যানেজার হিসেবে ফুটবল জগতে অভিষেক করেন।[১৪][১৫] রিয়াল মাদ্রিদ কাস্তিয়ায় ২ মৌসুমের জন্য ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করার পর তিনি রিয়াল মাদ্রিদে ম্যানেজার হিসেবে পুনরায় ফিরে আসেন; রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ম্যানেজার হিসেবে ২ মৌসুমে তিনি ৯টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন।[১৬] রিয়াল মাদ্রিদের হয়েই ম্যানেজার হিসেবে তিনি সেরা সময় অতিবাহিত করেছেন, যেখানে তিনি প্রায় ৭০ শতাংশ ম্যাচ জয়লাভ করেছেন। তার এই সাফল্য ২০১৭ সালে তাকে দ্য বেস্ট ফিফা ফুটবল পুরস্কার জয়লাভ করতে সাহায্য করেছিল।[১৭] ২০১৮ সালে ম্যানেজারের পদ ছেড়ে দেওয়ার পর,[১৮][১৯] ২০১৯ সালের মার্চ মাসে তিনি দ্বিতীয় দফায় রিয়াল মাদ্রিদের ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করেন।[২০][২১]

ব্যক্তিগতভাবে, জিদান বেশ কিছু পুরস্কার জয়লাভ করেছেন, যার মধ্যে ১৯৯৮ সালে বালোঁ দর এবং ২০০১–০২ মৌসুমে দোন বালোন পুরস্কার জয় অন্যতম।[২২] এছাড়াও তিনি ফিফার প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত ফিফা ১০০ তালিকায় স্থান পেয়েছেন। দলগতভাবে, খেলোয়াড় হিসেবে জিদান সর্বমোট ১৫টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন, যার মধ্যে ১টি বর্দোর হয়ে, ৬টি আয়াক্সের হয়ে, ৬টি ইয়ুভেন্তুসের হয়ে, ৬টি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে এবং ২টি ফ্রান্সের হয়ে জয়লাভ করেছেন। অন্যদিকে, ম্যানেজার হিসেবে, তিনি ১১টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন; যার সবগুলো রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জয়লাভ করেছেন।

ক্লাব কর্মজীবন

প্রারম্ভিক কর্মজীবন, কান এবং বোরেদক্স (১৯৯৮-১৯৯৬)

খুব অল্প বয়সে ইউএস সেইন্ট হেনরি ক্লাবের জুনিয়র টিম এ জিদানের ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু হয়। এটি মার্সাইল জেলার লা ক্যাস্তেইল্যান এর একটি স্থানীয় ক্লাব। ১৪ বছর বয়সে জিদান সেপ্টেমস ত্যাগ করেন এবং লিগ চ্যাম্পিয়নশীপ এর বাছাই পর্বে অংশগ্রহণ করেন।এখানে এসেই তিনি সর্বপ্রথম এ এস কান এর রিক্রুটার জিন ভ্যারার্ড এর চোখে পড়েন।এরপর জিদান ছয় সপ্তাহ থাকার উদ্দেশ্যে কানে যান কিন্তু শেষ পর্যন্ত পেশাদারদের সাথে খেলার জন্য পরবর্তী চার বছর তিনি সেখানেই থেকে যান। সবাইকে তাক লাগিয়ে জিদান মাত্র ১৭ বছর বয়সে প্রথম বিভাগ ম্যাচ খেলেন। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। কান এ মিডফিল্ডার হিসেবে খেলা জিদান তার প্রথম গোলটি করেন ৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯১ সালে।ঐ একই বছরে তার ক্লাব উয়েফা লিগ এর বাছাই পর্বে উত্তীর্ণ হওয়াতে বছরটি তার জন্য স্মরনীয় হয়ে থাকে।কান এ জিদানের দ্বিতীয় সেসন ততোটা আশাপ্রদ ছিলোনা।কিন্তু খেলোয়াড়ি জীবনের বাইরে এ সময়েই তার জীবন সঙ্গিনী স্প্যানিশ নৃত্যশিল্পী ভেরোনিকার সাথে জিদানের প্রথম দেখা হয়।[২৩] পরবর্তী ৪বছর জিদান এফসি গিরোন্ডিন্স দ্য বোরডিক্স ক্লাবে কাটান এবং ক্লাবটিকে ১৯৯৫ সালের ইন্টারটোটো কাপ জয় এবং ৯৬ এর উয়েফা কাপে দ্বিতীয় স্থান দখল করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।বোরডিক্স এ খেলার সময়েই প্রথম বিজেন্তে লিজারাজু এবং ক্রিস্টোফার ডুগারির সাথে তিনি মিডফিল্ড এ একসাথে খেলেন।পরবর্তিতে এই মিডফিল্ডারত্রয়ী ফ্রান্স জাতীয় দলেও একসাথে খেলেন এবং ১৯৯৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ জয়ে অসামান্য ভুমিকা রাখেন।১৯৯৬ সালে জিদান ৳৩ মিলিয়ন ট্রান্সফার ফির বিনিময়ে ইতালির জুভেন্টাস এফসি ক্লাবে যোগ দেন।

তুরিন এবং মাদ্রিদ (১৯৯৬-২০০৬)

জুভেন্টাস এ থাকাকালীন সময়ে দিদিয়ের ডেসচ্যাম্পস,আলসেন্দ্রো ডেল পিয়েরো এবং এডগার ডেভিডস এর পাশাপাশি জিদান মার্সেলো লিপ্পির দলটির অন্যতম প্রধান খেলোয়াড় এবং প্লেমেকার ছিলেন।তার দল এই সময়ে দুইবার সিরিএ শিরোপা এবং ১৯৯৭ ও ১৯৯৮ সালে উপর্যুপুরি দুইবার উয়েফা লিগের ফাইনাল এ ওঠে।কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে দুইবারই স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদের কাছে তারা হেরে বসে।২০০১ সালে জিদান জুভেন্টাস থেকে রেকর্ড পরিমাণ ৳৬৬ মিলিয়ন ট্রান্সফার ফির বিনিময়ে ৪ বছর মেয়াদে রিয়াল মাদ্রিদ এ যোগ দেন।গ্লাসগোর হ্যাম্পডেন পার্কে অনুষ্ঠিত ২০০১-২০০২ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে জার্মান ক্লাব বেয়ার লেভারকুসেনের বিরুদ্ধে রিয়াল মাদ্রিদ ২-১ গোল ব্যবধানে জয়ী হয় যাতে অসাধারণ ভলি থেকে করা জয়সূচক গোলটি আসে জিদানের পা থেকে। ২০০৬ সালের ৭ মে সান্টিয়াগো বার্নাবু স্টেডিয়ামে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি গায়ে জিদান তার শেষ ম্যাচটি খেলেন।কালজয়ী এই খেলোয়াড়ের সম্মানে সেদিন তার সতীর্থরা ক্লাব লোগোর নিচে "জিদান ২০০১-২০০৬" লিখা সংবলিত বিশেষ জার্সি পরে খেলতে নামেন।ভিলারিয়াল ক্লাবের বিরুদ্ধে খেলা এই ম্যাচটি ৩-৩ গোলে ড্র হয় যার দ্বিতীয় গোলটি ছিলো জিদানের করা।ম্যাচ শেষে জিদান ভিলারিয়াল মিডফিল্ডার ও আর্জেন্টাইন তারকা জুয়ান রোমান রিকুয়েমের সাথে তার জার্সি বদল করেন।খেলার পুরোসময় জুড়ে রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকদের মুর্হূমুহূ করতালিতে তিনি অভিনন্দিত হন এবং খেলা শেষে হাজারো ভক্তের ভালোবাসায় সিক্ত জিদান অশ্রুসিক্ত নয়নে রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় জানান।[২৪]

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার

জিদান দ্বৈত নাগরিকত্বের অধিকারী ছিলেন(ফ্রান্স এবং আলজেরিয়া)।সেই সুবাদে তিনি চাইলে আলজেরিয়া জাতীয় ফুটবল দলের হয়েও খেলতে পারতেন। কিন্তু আলজেরিয়া ফুটবল দলের তদানীন্তন কোচ আবদেল হামিদ কারমালি যথেষ্ট গতিসম্পন্ন নয় এই অজুহাতে তাকে জাতীয় দলে নেয়া থেকে বিরত থাকেন।[২৫] জিদান ১৯৯৪ সালের ১৭ আগস্ট ফরাসি জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তার প্রথম ম্যাচটি খেলেন। চেক প্রজাতন্ত্র জাতীয় দলের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত এই প্রীতি ম্যাচটিতে জিদান ৬৩ মিনিটের মাথায় যখন বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামেন ফ্রান্স তখন ২-০ গোলে পিছিয়ে ছিল। জিদান আসার পর তিনি দুইটি গোল করেন এবং ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে ড্র হয়।

এই সময়ে ফরাসি দলের ম্যানেজার আইমে জ্যাক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের তৎকালীন ফুটবল তারকা এরিক ক্যান্টোনাকে কেন্দ্র করে দল সাজাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ক্যান্টোনার উপরে তখন একবছরের নিষেধাজ্ঞা থাকায় প্লেমেকার হিসেবে তিনি জিদানকে খেলান। তার এই খেলোয়াড় নির্বাচনের ব্যাপারে ভক্ত এবং ফুটবল বোদ্ধাদের ব্যাপক সমালোচনা স্বত্বেও ফ্রান্স ইউরো ১৯৯৬ এর সেমিফাইনালে ওঠে এবং কিন্তু চেক প্রজাতন্ত্রের কাছে পেনাল্টিতে ৬-৫ গোলে হেরে যায়।

১৯৯৮ বিশ্বকাপ

জিদান ১৯৯৮ সালের ফিফা বিশ্বকাপজয়ী ফ্রান্স জাতীয় দলের সদস্য ছিলেন। সৌদি আরবের বিপক্ষে বিশ্বকাপে ফ্রান্সের দ্বিতীয় ম্যাচে সৌদি অধিনায়ক ফুয়াদ আমিনকে থুথু মারার অপরাধে জিদানকে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় এবং পরবর্তী দুই ম্যাচের জন্য তিনি নিষিদ্ধ হন।এ সময়ে যারা তার পাশে ছিলেন তাদের ভাষ্যমতে আমিন জিদানকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করেছিলেন। এই ঘটনাটি ২০০৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইতালীর বিপক্ষে পাওয়া লাল কার্ড এর ঘটনার সাথে যথেষ্ট সাদৃশ্যপূর্ণ।[২৬] কোয়ার্টার ফাইনালে ইতালির বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে একটি গোল করার পর জিদান টুর্নামেন্ট ফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে তার অপর দুইটি গোল করেন। দুটি গোলই তিনি প্রথমার্ধে কর্নার থেকে পাওয়া বল হেড করার মাধ্যমে করেন।এই ম্যাচটিতে ফ্রান্স ৩-০ গোলে ব্রাজিলকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের গৌরব অর্জন করে।জিদান ম্যান অব দা ম্যাচ নির্বাচিত হন।

২০০০ ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপ

অসাধারণ ফুটবল শৈলী ও গুরুত্বপূর্ণ গোল করার মাধ্যমে ইউরো ২০০০ এ ফ্রান্স জাতীয় দলকে ফাইনালে তুলতে জিদান অসামান্য অবদান রাখেন।তিনি স্পেনের বিপক্ষে সরাসরি ফ্রি কিক থেকে একটি এবং সেমিফাইনালে পর্তুগালের বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে গোল্ডেন গোল করে দলকে ফাইনালে তোলেন।ফাইনালে ফ্রান্স ইতালিকে পরাজিত করে ফুটবল ইতিহাসে ২৬ বছর পর প্রথমবারের মত একই সাথে বিশ্বকাপ ও ইউরোপীয়ান কাপ উভয় শিরোপা অর্জনের অসামান্য গৌরব অর্জন করে (১৯৭৪ সালে জার্মানি সর্বশেষ এ গৌরব অর্জন করেছিলো)।ফলশ্রুতিতে ফ্রান্স বিশ্ব র‌্যাংকিং এ ১ নম্বর অবস্থানে চলে আসে।

ইনজুরি,অবসর গ্রহণ ও পুনরায় প্রত্যাবর্তন

উরুতে ইনজুরির জন্য জিদান ২০০২ সালে অনুষ্ঠিত ফিফা বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে নিয়মিত একাদশের বাইরে থাকেন।তার অনুপস্থিতিতে খেলা বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ফ্রান্স আফ্রিকার নবাগত দল সেনেগালের বিরুদ্ধে ১-০ গোলে বিস্ময়করভাবে পরাজিত হয়। ইনজুরি থেকে ফিরে জিদান তৃতীয় ম্যাচে খেলতে নামলেও তিনি তার স্বাভাবিক খেলা খেলতে ব্যর্থ হন।ফলশ্রুতিতে জিদান ও তার দল বিশ্বকাপ আসরের প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেয়।[২৭] ফলশ্রুতিতে জিদান ও তার দল কোন গোল না করেই বিশ্বকাপ আসরের প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নেয় এবং বিশ্বকাপ শিরোপা অক্ষুণ্ণ রাখতে ব্যর্থ হয়।

ইউরো ২০০৪ এ জিদান ও তার দলের শুরুটা ভালোই হয়েছিল।গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমে পিছিয়ে থেকেও জিদানের নৈপুণ্যে ফ্রান্স শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়। এ ম্যাচটিতে জিদান দুটি গোল করেন যার একটি ফ্রি কিক ও আরেকটি পেনাল্টি থেকে করা।২০০৪ সালের ১২ আগস্ট কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্স পরবর্তী সময়ে ইউরো ২০০৪ শিরোপা জয়ী গ্রিস এর কাছে অপ্রত্যাশিত ভাবে হেরে যায়।এর পর পরই জিদান আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দেন।[২৮]

পরবর্তীকালে ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ফ্রান্স যখন চূড়ান্ত পর্বে উঠতে হিমশিম খাচ্ছিল,২০০৫ সালের ৩ আগস্ট জিদান আবার আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রত্যাবর্তনের ঘোষণা দেন এবং ফ্রান্স জাতীয় দলের অধিনায়ক নিযুক্ত হন।[২৯] ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জয়ের মধ্য দিয়ে জিদান প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে দ্বিতীয় বারের মতো প্রত্যাবর্তন করেন এবং ফ্রান্স গ্রপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।[৩০]

রিয়াল মাদ্রিদে এক মৌসুম ইনজুরিতে কাটানোর পর ২০০৬ সালের ২৫ এপ্রিল জিদান ২০০৬ বিশ্বকাপের পর পরই অবসর নেবার কথা ব্যাক্ত করেন।[৩১]

২০০৬ সালের ২৭ মে জিদান ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে তার ১০০ তম ম্যাচ খেলেন।প্যারিসের সেইন্ট ডেনিসের স্টাডে দ্য ফ্রান্স স্টেডিয়ামে মেক্সিকোর বিপক্ষে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচটিতে ফ্রান্স ১-০ তে জয়ী হয়।স্টেডিয়ামটিতে এটিই ছিলো তার শেষ ম্যাচ এবং দিদিয়ের ডেসচ্যাম্প, মার্সেই দেসাই এবং লিলিয়ান থুরামের পরে চতুর্থ ফরাসি খেলোয়াড় হিসেবে জিদান ১০০ টি ম্যাচ খেলার গৌরব অর্জন করেন।[৩২]

২০০৬ বিশ্বকাপ

একটি ফরাসি মেয়ে "জিজু" কে উদ্‌যাপন করছে

২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্যায়ের দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে খেলার একবারে শেষ মুহূর্তে এক কোরিয়ান ডিফেন্ডারকে ধাক্কা দেয়ার অপরাধে জিদান হলুদ কার্ড দেখেন। টুর্নামেন্টের উপর্যুপরি দুই ম্যাচে হলুদ কার্ড পাওয়ায় জিদান গ্রুপের তৃতীয় এবং শেষ ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড হন।[৩৩] জিদানকে ছাড়াই গ্রুপের তৃতীয় ম্যাচে ফ্রান্স টোগোর বিপক্ষে ২-০ গোলে জয়ী হয়। এর ফলে ফ্রান্স নকআউট পর্বে উত্তীর্ণ হয় এবং জিদান পরবর্তী ম্যাচগুলোতে দলের জন্য কিছু করার সুযোগ পান।[৩৪] রাউন্ডের ১৬তম ম্যাচে জিদান স্পেনের বিপক্ষে খেলায় আবার মাঠে ফেরেন।জিদানের ফ্রি কিক থেকে পেনাল্টি এরিয়াতে পাওয়া বলে প্যাট্রিক ভিয়েরা ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি করেন।এরপর খেলার অতিরিক্ত সময়ে (স্টপেজ টাইম) জিদান ম্যাচের শেষ গোলটি করেন এবং ফ্রান্স ৩-১ এ জয়ী হয়। এই জয়ের ফলে ফ্রান্স কোয়ার্টার ফাইনালে উত্তীর্ণ হয় এবং বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের মুখোমুখি হয়। জিদানের ফ্রি কিক থেকে পাওয়া বলে ম্যাচের একমাত্র গোলটি আসে ফরাসি স্ট্রাইকার থিয়েরি অরির পা থেকে এবং ম্যাচটিতে ফ্রান্স ১-০ গোলে জয়ী হয়।খেলার পুরোটা সময়জুড়ে ব্রাজিলিয়ানদের উপর ফরাসিদের একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় থাকে। জিদানের নেতৃত্বে ফরাসি মধ্যভাগ প্রতিপক্ষের সীমানায় যেখানে একের পর এক আক্রমণ রচনা করেছে তার বিপরীতে ব্রাজিলিয়ানরা ম্যাচের পুরোসময়ের মধ্যে মাত্র একবারের জন্য বিপক্ষ সীমানায় সত্যিকারের আক্রমণ চালাতে পেরেছিলো। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জিদান তার পায়ের মায়াবী কারুকার্যে পুরো ফুটবল বিশ্বকে মোহাবিষ্ট করে রাখে। ফিফার টেকনিক্যাল স্টাডি গ্রুপের বিবেচনায় জিদান ম্যাচটিতে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন।[৩৫] এর চারদিন পর অনুষ্ঠিত সেমিফাইনালে ফ্রান্স পর্তুগালের মুখোমুখি হয়।জিদান পেনাল্টি থেকে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন এবং পর্তুগালকে হারিয়ে ফ্রান্স ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়।

২০০৬ সালের ৯ জুলাই ফ্রান্স ফাইনালে ইতালির মুখোমুখি হয়। এটি ছিলো জিদানের জন্য দ্বিতীয় এবং শেষ বিশ্বকাপ ফাইনাল। ম্যাচের সপ্তম মিনিটের মাথায় জিদান পেনাল্টি থেকে গোল করে ফ্রান্সকে ১-০ তে এগিয়ে দেন।এরই সাথে পেলে,পল ব্রাইটনার এবং ভাভার পরে মাত্র চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে দুটি বিশ্বকাপ ফাইনালে গোল করার বিরল সম্মান অর্জন করেন। একই সাথে জিদান বিশ্বকাপ ফাইনালে সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে যুগ্মভাবে ভাভার সাথে প্রথম স্থানে চলে আসেন।খেলার ১১০ মিনিটের মাথায় জিদান লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন(নিচে দেখুন) ফলে অতিরিক্ত সময়ের পরেও ফলাফল ১-১ থাকায় অনুষ্ঠিত পেনাল্টি শুটআউটে জিদান অংশ নিতে পারেননি।টাইব্রেকারে ইতালি ৫-৩ গোলে ফ্রান্সকে পরাজিত করে ২০০৬ ফুটবল বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়।ফাইনালে জিদানের অসংলগ্ন আচরণের জন্য নানা সমালোচনা স্বত্বেও জিদান ২০০৬ বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে গোল্ডেন বল লাভ করেন।[৩৬]

লাল কার্ড প্রাপ্তি

জিদান ফুটবল বিশ্বে শান্ত,বিনয়ী এবং লাজুক হিসেবেই পরিচিত।তদুপরি খুব অল্প সময়ই তিনি মাঠে উত্তেজিত আচরণ প্রকাশ করেছেন।১৯৯৮ এবং ২০০৬ বিশ্বকাপের দুটো লাল কার্ড প্রাপ্তি ছাড়াও ২০০০/২০০১ সালে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জুভেন্টাস বনাম হামবুর্গ এসভি ম্যাচে জোসে কিয়েন্তেকে ঢুঁ মেরে জিদান লাল কার্ড পেয়েছিলেন।[২৬] জিদান তার ফুটবল ক্যারিয়ারে সর্বমোট ১৪বার লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন।[৩৭]

জিদান বিশ্বের চারজন খেলোয়াড়ের একজন যিনি বিশ্বকাপ ফাইনালে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছেন এবং দুইজন খেলোয়াড়ের একজন যিনি দুটি আলাদা বিশ্বকাপে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছেন(অন্যজন হচ্ছেন ক্যামেরুনের রিগোবার্ট সং)।[৩৮]

মাতারাজ্জির সাথে বিবাদ

২০০৬ বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে ইতালির বিপক্ষে ১১০ মিনিটের মাথায় জিদান ইতালীয় ডিফেন্ডার মার্কো মাতারাজ্জির বুকে মাথা দিয়ে ঢুঁ মারার অপরাধে লাল কার্ড দেখেন।ঘটনার শুরু হয় জিদান এবং মাতারাজ্জির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের মধ্য দিয়ে।এরপর জিদান যখন মাতারাজ্জির কাছ থেকে চলে আসতে শুরু করেন তাকে উদ্দেশ্য করে মাতারাজ্জি আবার কিছু কথা বলেন।এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে জিদান হঠা করে ঘুরে দাড়ান,কিছুটা দৌড়ে এসে সরাসরি মাতারাজ্জির বুকে মাথা দিয়ে ঢুঁ মারেন।ফলশ্রুতিতে মাতারাজ্জি বুক চেপে ধরে মাটিতে পরে যান।ঘটনার পরবর্তীকালে খেলা যদিও থেমে যায় কিন্তু ব্যাপারটি ঘটেছিলো রেফারি হোরাসিও এলিযোন্ডোর চোখের আড়ালে।ম্যাচ কর্মকর্তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, চতুর্থ কর্মকর্তা লুইস মেদিনা ক্যান্তালেযো ইয়ারফোনের মাধ্যমে রেফারিকে বিষয়টি অবহিত করেন।পরবর্তীকালে সহকারী রেফারির সাথে আলোচনা করে বিষয়টি নিশ্চিত হবার পর এলযোন্ডো জিদানকে লাল কার্ড প্রদর্শন করেন এবং তাকে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেন।

প্রতিক্রিয়া

বিশ্বকাপ ফাইনালের পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট জ্যাক শিরাক জিদানকে জাতীয় বীর হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং উদার হৃদয়ের মানুষ বলে মন্তব্য করেন।[৩৯] শিরাক পরবর্তীকালে জিদানের উক্ত ঘটনাকে অমার্জনীয় বলে অভিহিত করলেও তিনি আরো বলেন যে এর জন্য জিদানকে প্ররোচিত করা হয়েছিল।[৪০] আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আব্দেল আজিজ বুটেফ্লিকা একটি চিঠির মাধ্যমে জিদানের প্রতি তার সমর্থন ও একাত্ততা ঘোষণা করেন।[৪১] ফরাসি পত্রিকা "লা ফিগারো" জিদানের গুতো দেবার ঘটনাটিকে "অমার্জনীয়" বলে আখ্যায়িত করে।[৪২] ফ্রান্সে প্রকাশিত খেলাধুলা বিষয়ক দৈনিক পত্রিকা "লা ইকুইপে" এর প্রধান সম্পাদক জিদানকে মুহাম্মদ আলীর সাথে তুলনা করেন। একই সাথে তিনি এও উল্লেখ করেন যে মুহাম্মদ আলী,জেসি ওয়েন্স কিংবা পেলে কখনো জিদানের মত খেলাধুলার নিয়ম ভঙ্গ করেনি।একইসাথে তিনি প্রশ্ন রাখেন যে জিদান পুরো ব্যাপারটিকে সমগ্র বিশ্বের শিশুদের সামনে কীভাবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করবেন,অবশ্য পরবর্তী দিন উক্ত মন্তব্যের জন্য তিনি ক্ষমা চান।[৪৩] এত আলোচনা সমালোচনা সত্ত্বেও জিদানের স্পন্সর তার সাথে থাকার কথা ঘোষণা দেন।[৪৪]

ফিফার তদন্ত

জিদানের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ফিফা ঘটনাটির উপযুক্ত তদন্তের স্বার্থে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।[১০] তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে ফিফা মাতারাজ্জির বিরুদ্ধে $৪,১১৭ ডলার ক্ষতিপূরণ ধার্য করে এবং দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।ভঅন্যদিকে জিদানকে $৬,১৭৬ ডলার জরিমানা এবং পরবর্তী তিন ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ফিফার ভাষ্য অনুযায়ী জিদান ও মাতারাজ্জি উভয়েই বাদানুবাদটিকে নিন্দাসূচক বলে স্বীকার করে কিন্তু তা বর্ণবাদমূলক ছিলনা। জিদান যেহেতু বিশ্বকাপ ফাইনালের পরপরই অবসরে চলে যান সেহেতু তিনি তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে তিন দিন ফিফার পক্ষে স্বেচ্ছাসেবীমূলক কাজে অংশ নেন।[৪৫]

দাতব্য কর্মসূচী

২০০৭ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি জিদান উত্তর থাইল্যান্ড এ শিশুদের জন্য এইচআইভি/এইডস তহবিল গঠনের স্বার্থে একটি প্রদর্শনী ম্যাচে অংশ নেন যাতে ১০,০০০ এরও বেশি জিদান সমর্থক উপস্থিত ছিল।এই খেলাটি থেকে $৭,৭৫০ ডলার তহবিলের জন্য জমা হয়।[৪৬]২০০৭ সালের ১৯ মার্চ জিদান অবসর গ্রহণের পর প্রথম বারের মত ইউরোপের মাটিতে একটি প্রদর্শনী ম্যাচে খেলতে নামেন। খেলাটি মার্সেইএর স্টাডে ভেলোড্রোমে অনুষ্ঠিত হয়। "দারিদ্রতার বিরুদ্ধে খেলা" শীর্ষক ম্যাচটির আয়োজক ছিল ইউএনডিপি[৪৭]

পুরস্কার, সম্মাননা এবং অন্যান্য কর্মসূচি

২০০৪ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিন জিদানকে বিশ্বের ৪২তম সর্বোচ্চ সম্মানীপ্রাপ্ত খেলোয়াড় হিসেবে ঘোষণা করে যার বাৎসরিক আয় হলো $১.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার[৪৮] ২০০১ সালে জিদান ইউএনডিপি'র "দারিদ্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ" বিষয়ক কর্মসূচির জন্য জাতিসংঘের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে নিযুক্ত হন।[৪৯]২০০০ সাল থেকে জিদান নিয়মিতভাবে দৈনিক পত্রিকার ভোটে অন্যতম জনপ্রিয় ফরাসি ব্যক্তিত্ব হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আসছেন। তিনি ২০০০, ২০০৩ ও ২০০৬ সালে সর্বাধিক জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব, ২০০৫ সালে দ্বিতীয় সর্বাধিক জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব এবং ২০০১ ও ২০০২ সালে চতুর্থ সর্বাধিক জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে নির্বাচিত হন।[৫০]

২০০৬ সালের নভেম্বর মাসে জিদান নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসের অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ সফরে যান।[৫১][৫২]

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

পূর্বসূরী
রোনালদো
ইউরোপীয় বর্ষসেরা ফুটবলার
১৯৯৮
উত্তরসূরী
রিভালদো
🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ