ঝাড়খণ্ড

ভারতের একটি রাজ্য

ঝাড়খণ্ড (হিন্দি: झारखंड, /ˈɑːrkənd/;[৩] হিন্দুস্তানি: [d͡ʒʱɑːɾkʰəɳɖ]) পূর্ব ভারতের একটি স্থলবেষ্টিত রাজ্য। এর রাজধানীর নাম রাঁচি। এটি বিহারের দক্ষিণাংশ থেকে আলাদা হয়ে ২০০০ সালের ১৫ই নভেম্বর গঠিত হয়েছিল।[৪] এই রাজ্য নানা খনিজ সম্পদে পূর্ণ ৷ ঝাড়খণ্ডের পর্যটনকেন্দ্রগুলির মধ্যে বিখ্যাত কয়েকটি হল হলুদপুকুর, রাজমহল, নেতারহাট, হাজারিবাগ, মন্দর পর্বত ইত্যাদি৷

ঝাড়খণ্ড
झारखण्ड
ᱡᱷᱟᱨᱠᱷᱚᱸᱰ
রাজ্য
উপর থেকে ঘড়ির কাঁটার দিকে: দাসম জলপ্রপাত, বিড়লা ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, পাঞ্চেত বাঁধ দামোদর নদীতে, সম্মেদ শিখরে জৈন মন্দির, বৈদ্যনাথ মন্দির, পাত্রতু হাইওয়ে এবং দলমা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য
ঝাড়খণ্ডের অফিসিয়াল সীলমোহর
সীলমোহর
ব্যুত্পত্তি: "Forest Land"
ডাকনাম: "Land of Forests"
নীতিবাক্য: Satyameva Jayate
(Truth alone triumphs)
ঝাড়খণ্ডের অবস্থান
স্থানাঙ্ক (রাঁচি): ২৩.৩৫° উত্তর ৮৫.৩৩° পূর্ব
দেশভারত
অঞ্চলপূর্ব ভারত
প্রতিষ্ঠা১৫ নভেম্বর ২০০০
রাজধানীরাঁচি
বৃহত্তম শহরজামশেদপুর
সরকার
 • রাজ্যপালরমেশ বৈস
 • মুখ্যমন্ত্রীহেমন্ত সোরেন
 • বিধানসভাএককক্ষীয় (৮১ আসন)
 • লোকসভা কেন্দ্র১৪
 • হাইকোর্টঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট
আয়তন
 • মোট৭৬,৭১৪ বর্গকিমি (২৯,৬১৯ বর্গমাইল)
এলাকার ক্রম১৫শ
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট৩,২৯,৮৮,১৩৪
 • ক্রম১৩শ
 • জনঘনত্ব৪১৪/বর্গকিমি (১,০৭০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলভা,প্র,স (ইউটিসি+০৫:৩০)
আইএসও ৩১৬৬ কোডIN-JH
মানব উন্নয়ন সূচকবৃদ্ধি ০.৫১৩ (medium)
মানব উন্নয়ন সূচক অনুসারে স্থান২৪শ (২০০৫)
সাক্ষরতা৬৭.৬% (২৫শ)
সরকারি ভাষা[১]হিন্দি, ইংরেজি[২] (দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে)
ওয়েবসাইটhttp://www.jharkhand.gov.in/

ভাষাসমূহ

২০১১ জনগণনা অনুযায়ী

Main languages of Jharkand[৫]

  খোরঠা (২৩.৪৬%)
  হিন্দী (২১.৪২%)
  সাঁওতালি (৯.৯১%)
  বাংলা (৯.৭৪%)
  সাদরি-নাগপুরী (৭.২৩%)
  উর্দু (৫.৯৬%)
  মগহী (৪.১৪%)
  হো (৩.০১%)
  মুণ্ডারি (২.৯৩%)
  ওরাওঁ (২.৮৯%)
  ভোজপুরী (২.২৯%)
  ওড়িয়া (১.৬১%)
  পঞ্চ পরগণিয়া (০.৭৪%)
  অন্যান্য (৪.৬৭%)

ইতিহাস

গৌতম কুমার বেরা সহ আন্যান লেখকদের মতে,[৬] মগধ সাম্রাজ্যের আগেও ঝাড়খণ্ড নামে একটি স্বতন্ত্র ভূ-রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক স্থান ছিল। গৌতম কুমার বেরার বই'য়ে (পৃষ্ঠা ৩৩) হিন্দু মহাকাব্য ভবিশ্য পুরাণের উল্লেখ আছে। আদিবাসী শাসকগণ, যাদের মধ্যে কেউ কেউ আজ পর্যন্ত উল্লেখিত হয় মুন্ডা রাজা উপাধিতে,[৭][৮] তারা মূলতঃ বড় খামারভূমিগুলির মালিকানার অধিকারী ছিল। [৯] প্রায় ৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মহাজনপদের যুগে, ঝাড়খণ্ড রাজ্য মগধ, অঙ্গ, বঙ্গ, কালিঙ্গ, কাশী এবং বাজ্জি'র অংশ ছিল।

ব্রিটিশ শাসন

১৭৬৫ সালে এই অঞ্চলটি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে আসে। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক ঝাড়খণ্ড অঞ্চলে নিপীড়ন ও উপনিবেশীকরণ স্থানীয় জনগণের মধ্যে স্বতঃস্ফুর্ত বিরোধিতার সঞ্চার করেছিল। ১৮৫৭ সালের ভারতে সিপাহী বিদ্রোহের প্রায় একশত বছর আগে, ঝাড়খণ্ডের আদিবাসীরা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে বারংবার বিদ্রোহের ধারাবাহিকতা শুরু করেছিল।

সাঁওতাল বিদ্রোহ

১৭৬৬ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত আদিবাসীরা তাদের জমি রক্ষা করার জন্য ঝাড়খণ্ডে জমিদারদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহ ছিল ১৭৬৬ সালে ঘাটশিলার জমিদার জগন্নাথ সিংয়ের নেতৃত্বে প্রথম চুয়াড় বিদ্রোহ। ১৭৭১ সালে রাজমহল পাহাড়ের পাহাড়িয়া নেতা তিলকা মাঝি, জমিদার ও ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন। তিনি তাঁর অনুগামীদের অকৃতজ্ঞ জমিদারদের চাতুর্য থেকে মুক্ত করে তাদের পূর্বপুরুষদের জমি পুনরুদ্ধার করতে চেয়েছিলেন। ব্রিটিশ সরকার তার সৈন্য প্রেরণ করে এবং তিলকা মাঞ্জির বিদ্রোহ চূর্ণবিচূর্ণ করে। এর পরপরই ১৭৭৯ সালে, ভূমিজ উপজাতিরা মানভূমে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে। এখন এই স্থানটি পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত। পালামৌর উপজাতি গোষ্ঠীগুলি এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করে ছিল।

তারা ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। সম্ভবত সাত বছর পরে ১৮০৭ সালে, বারওয়েতে ওঁরাও জনজাতি শ্রীনগরের জমিদারকে হত্যা করে। খুব শীঘ্রই বিদ্রোহের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। উপজাতীয় বিদ্রোহগুলি মুন্ডা উপজাতিদের নিকটবর্তী প্রতিবেশী তামর এলাকায় পূর্ব দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ১৮১১ এবং ১৮১৩ সালে তারাও বিদ্রোহে জড়িয়ে পড়ে। সিংহভূম অস্থির হচ্ছিল। ১৮২০ সালে খোলা বিদ্রোহ শুরু হয় এবং তারা জমিদার ও ব্রিটিশ সৈন্যদের সঙ্গে দুই বছরের জন্য যুদ্ধ করে। এটি লাকরা কুল রিশিংস ১৮২০-১৮২১ নামে পরিচিত। তারপর ১৮৩২ সালের মহান কোল রিসিংস বা বিদ্রোহী আসেন। এটি প্রথম বড় আদিবাসী বিপ্লব যা ঝাড়খণ্ডে ব্রিটিশ প্রশাসনকে ব্যাপকভাবে বিপর্যস্ত করেছিল। জমিদারদের কাছ থেকে উপজাতীয় কৃষককে তাদের উত্তরাধিকারী সম্পত্তি থেকে উৎখাত করার চেষ্টা করার ফলে এটি ঘটেছিল। ১৮৫৫ সালে দুই ভাই সিধু ও কানহুর নেতৃত্বে সাঁওতাল বিদ্রোহ শুরু হয়।

তারপর ১৮৯৫ সালে বিরসা মুন্ডার বিদ্রোহ,[১০] ছড়িয়ে পড়ে এবং ১৯০০ সাল পর্যন্ত চলে। এই বিদ্রোহ মূলতঃ খুনটি, তামর, সারওয়াদা ও বন্দগাঁও এর মুন্ডা অধ্যুষিত অঞ্চলে ছড়িয়েছিল। তার সমর্থকরা লোহারদাগার ওঁরাও, সিসাই ও ব্যারওয়ে অঞ্চল থেকে আকৃষ্ট হন।

স্বাধীনতা-উত্তর সময়

বর্তমানে ঝাড়খণ্ড ভারতীয় ফেডারেল রাষ্ট্রের একটি রাজ্য। এটি পূর্বে বিহার রাজ্যের অন্তর্গত ছিল।

বিভাগ এবং জেলাসমূহ

পালামৌ বিভাগউত্তর ছোটনাগপুর বিভাগদক্ষিণ ছোটনাগপুর বিভাগকোলহান বিভাগসাঁওতাল পরগনা বিভাগ

প্রধান শহরসমূহ

জামশেদপুর
বোকারো
ঝাড়খণ্ডের বৃহত্তম নগর
(ভারতের ২০১১ সনের আদমশুমারি অনুযায়ী)[১১]
স্থাননগরজেলাজনসংখ্যাস্থাননগরজেলাজনসংখ্যা
০১জামশেদপুরপূর্ব সিংভুম১,৩৩৯,৪৩৮০৬ফুসরোবোকারো১৮৫,৫৫৫
০২ধানবাদধানবাদ১,১৯৬,২১৪০৭হাজারিবাগহাজারিবাগ১৫৩,৫৯৫
০৩রাঁচিরাঁচি১,১২০,৩৭৪০৮গিরিডিগিরিডি১৪৩,৬৩০
০৪বোকারো সিটিবোকারো৫৬৪,৩১৯০৯রামগড়রামগড়১৩২,৪২৫
০৫দেওঘরদেওঘর২০৩,১২৩১০মেদিনীনগরপালামৌ১২০,৩২৫

সংস্কৃতি

ধর্ম

এই রাজ্যে বেশকিছু সুপ্রাচীন মন্দির রয়েছে। তারমধ্যে দেওঘর জেলা-র বৈদ্যনাথ মন্দির, রামগড় জেলার ছিন্নমস্তা মন্দির ও রাঁচি জেলার মা দেউড়ি মন্দির প্রসিদ্ধ।

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, হিন্দুধর্ম রাজ্যটির সর্বাধিক ৬৭.৮ শতাংশের পালিত ধর্ম। এর পর আছে ইসলাম ১৪.৫% এবং খ্রিস্টান ৪.৩%। [30] অন্যান্য প্রধান ধর্ম হিসাবে সরনা ধর্ম জনসংখ্যার ১২.৮%। [১২]

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

খেলাধুলা

ঝাড়খণ্ডে বিবিধ খেলাধুলা প্রচলিত। রাঁচি শহরের জেএসসিএ আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম কমপ্লেক্স-এ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এখানে রাঁচি শহরের বিরসা মুন্ডা হকি স্টেডিয়াম-এ হকির প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। হকি ইন্ডিয়া লীগ-এর রাঁচি রেইস দলের ঘরের মাঠও এটি। এখানে জামশেদপুর শহরের জেআরডি টাটা স্পোর্টস কমপ্লেক্স-এ ফুটবল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। ইন্ডিয়ান সুপার লীগ-এর জামশেদপুর এফসি দলের ঘরের মাঠ এটি।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ