ডরিস ডে

মার্কিন অভিনেত্রী

ডরিস ডে (ইংরেজি: Doris Day; জন্ম: ডরিস ম্যারি অ্যান ক্যাপেলহফ, ৩ এপ্রিল ১৯২২ - ১৩ মে ২০১৯)[১][২] হলেন একজন মার্কিন অভিনেত্রী, গায়িকা, ও প্রাণি-কল্যাণকর্মী। ১৯৩৯ সালে বিগ ব্যান্ডের সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করার পর তার প্রথম রেকর্ডিং "সেন্টিমেন্টাল জার্নি" (১৯৪৫) তাকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাইয়ে দেয়। একক কর্মজীবন শুরুর লক্ষ্যে লে ব্রাউন অ্যান্ড হিজ ব্যান্ড অব রিনাউন ত্যাগ করার পর তিনি ১৯৪৭ থেকে ১৯৬৭ সালের মধ্যে ৬৫০-এর অধিক গানের রেকর্ড করেন, যা তাকে ২০শ শতাব্দীর অন্যতম জনপ্রিয় ও সমাদৃত সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।[৩]

ডরিস ডে
Doris Day
১৯৫৭ সালে ডরিস ডে
জন্ম
ডরিস ম্যারি অ্যান ক্যাপেলহফ

(১৯২২-০৪-০৩)৩ এপ্রিল ১৯২২
মৃত্যু১৩ মে ২০১৯(2019-05-13) (বয়স ৯৭)
পেশাঅভিনেত্রী, গায়িকা, প্রাণি-কল্যাণকর্মী
কর্মজীবন১৯৩৯-১৯৮৯
দাম্পত্য সঙ্গীআল জর্ডান
(বি. ১৯৪১; বিচ্ছেদ. ১৯৪৩)

জর্জ ওয়েডলার
(বি. ১৯৪৬; বিচ্ছেদ. ১৯৪৯)

মার্টিন মেলচার
(বি. ১৯৫১; মৃ. ১৯৬৮)

ব্যারি কমডেন
(বি. ১৯৭৬; বিচ্ছেদ. ১৯৮১)
সন্তানটেরি মেলচার
ওয়েবসাইটdorisday.com

ডরিস ধ্রুপদী হলিউড যুগের শেষভাগে রোম্যান্স অন দ্য হাই সিজ (১৯৪৮) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে তার চলচ্চিত্র অভিনয় জীবন শুরু করেন। তিনি সঙ্গীতধর্মী, হাস্যরসাত্মক ও নাট্যধর্মী চলচ্চিত্রসহ বিভিন্ন ধারার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি ক্যালামিটি জেন (১৯৫৩) চলচ্চিত্রে নাম ভূমিকায় এবং অ্যালফ্রেড হিচককের দ্য ম্যান হু ন্যু টু মাচ (১৯৫৬) চলচ্চিত্রে জেমস স্টুয়ার্টের বিপরীতে অভিনয় করনে। ১৯৬০-এর দশকের শুরুতে প্রধান নারী তারকা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি রক হাডসনের বিপরীতে পিলো টক ( ১৯৫৯) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে অস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তিনি মিডনাইট লেস চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সেরা নাট্য অভিনেত্রী এবং টানেল অব লাভ (১৯৫৮), পিলো টক (১৯৫৯), বিলি রোজ্‌স জাম্বু (১৯৬২) ও মুভ অভার, ডার্লিং (১৯৬৩) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সেরা সঙ্গীতধর্মী বা হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র অভিনেত্রী বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। এছাড়া তিনি পাঁচটি গোল্ডেন গ্লোব হেনরিয়েতা পুরস্কারের মনোনয়ন থেকে তিনটি পুরস্কার অর্জন করেন এবং ১৯৮৯ সালে গোল্ডেন গ্লোব সেসিল বি. ডামিল পুরস্কার লাভ করেন।

২০০৪ সালে তিনি মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ ডব্লিউ. বুশের নিকট থেকে প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম লাভ করেন। ২০১১ সালে তিনি তার ২৯তম স্টুডিও অ্যালবাম মাই হার্ট প্রকাশ করেন, যা যুক্তরাজ্যের শীর্ষ ১০ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। একই বছর তিনি লস অ্যাঞ্জেলেস ফিল্ম ক্রিটিকস অ্যাসোসিয়েশন থেকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন। বক্স অফিসে সর্বকালের সবচেয়ে বেশি আয়কারী তারকা তালিকায় ২০১২ সালে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেন।[৪]

প্রারম্ভিক জীবন

ডরিস ম্যারি অ্যান ক্যাপেলহফ ১৯২২ সালের ৩রা এপ্রিল ওহাইও অঙ্গরাজ্যের সিনসিনাটি শহরে জন্মগ্রহণ করেন।[৫] তার পিতা উইলিয়াম জোসেফ ক্যাপেলহফ (১৮৯২-১৯৬৭) ছিলেন একজন সঙ্গীতের শিক্ষক ও দলীয় সঙ্গীত নির্দেশক এবং মাতা আলমা সোফিয়া (জন্ম: ওয়েলজ, ১৮৯৫-১৯৭৬) ছিলেন একজন গৃহিণী।[৬][৭] তার পিতামহ ও মাতামহ জার্মান অভিবাসী ছিলেন।[৮] ডে তার জীবনের অনেকটা সময় জানতেন যে তিনি ১৯২৪ সালে জন্মগ্রহণ করেছেন, তার ৯৫তম জন্মদিনে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস তার জন্মসদন খুঁজে পায়, যাতে তার জন্ম তারিখ ১৯২২ দেওয়া ছিল।[৫]

ডরিস তিন ভাইবোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। তার দুই বড় ভাই ছিল, তাদের মধ্যে রিচার্ড তার জন্মের আগেই মারা যান এবং পল তার দুই/তিন বছরের বড়। তার পিতার সর্বজনজ্ঞাত ব্যভিচারের কারণে তার পিতামাতা আলাদা হয়ে যান।[৯] ডরিস শৈশবে নৃত্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং ১৯৩০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে জেরি ডোহার্টির সাথে নৃত্যজুটি গঠন করে সিনসিনাটি শহরে নৃত্য পরিবেশন করতেন।[১০] ১৯৩৭ সালের ১৩ই অক্টোবর এক গাড়ি দুর্ঘটনায় তিনি ডান পায়ে আঘাত পান, যা তার পেশাদার নৃত্যশিল্পী হতে বাধার সৃষ্টি করে।[১১][১২]

ব্যক্তিগত জীবন

বিবাহ

ডরিস ডে চারবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[১৩] তিনি ১৯৪১ সালের মার্চ মাসে আল জর্ডানকে বিয়ে করেন। জর্ডান একজন ট্রম্বোনিস্ট, যার সাথে ডে'র প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল বার্নি র‍্যাপ্‌স ব্যান্ডে কাজ করার সময়। ১৯৪৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।[১৪] এই বিয়ের ফলে তার একমাত্র সন্তান টেরেন্স পল জর্ডান (পরবর্তী কালে টেরি মেলচার নামে পরিচিত) জন্মগ্রহণ করে, যে ২০০৪ সালে মারা যায়। তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়েছিল স্যাক্সোফোনবাদক জর্জ উইলিয়াম ওয়েডলারের সাথে। তিনি ছিলেন অভিনেত্রী ভার্জিনিয়া ওয়েডলারের ভাই। এই বিয়ে ১৯৪৬ সালের ৩০ই মার্চ থেকে ১৯৪৯ সালের ৩১শে মে পর্যন্ত ঠিকেছিল।[১৪]

১৯৫১ সালের ৩রা এপ্রিল তার ২৯তম জন্মদিনে তিনি মার্টিন মেলচারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৬৮ সালের এপ্রিলে মেলচারের মৃত্যু পর্যন্ত এই বিয়ে ঠিকেছিল। মেলচার তার পুত্র টেরিকে দত্তক নেন এবং তাকে টেরি মেলচার হিসেবে লালন পালন করেন। টেরি একজন সফল সঙ্গীতজ্ঞ ও রেকর্ড প্রযোজক ছিলেন।[১৫] মার্টিন ডে'র অসংখ্য চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন।

ডে ১৯৭৬ সালের ১৪ই এপ্রিল ব্যারি কমডেনের (১৯৩৫-২০০৯) সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[১৬] কমডেন ডে'র একটি প্রিয় রেস্তোরাঁর প্রধান পরিবেশক ছিলেন। ১৯৮২ সালের ২রা এপ্রিল তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এই বিচ্ছেদের পর কমডেন অভিযোগ করেন যে ডে তার থেকেও তার "প্রাণী বন্ধুদের" বেশি যত্ন করতেন।[১৬]

মৃত্যু

ডে ২০১৯ সালের ১৩ই মে নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার কারমেল ভ্যালিতে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর।[১৭] ডরিস ডে অ্যানিম্যাল ফাউন্ডেশন তার মৃত্যুর বিষয়টি ঘোষণা দেয়। ফাউন্ডেশন আরও ঘোষণা দেয় যে ডে'র অনুরোধ অনুসারে কোন প্রকার শেষকৃত্য অনুষ্ঠান, সমাধি বা অন্য গণস্মারক না করা হয়।[১৮][১৯][২০]

চলচ্চিত্রের তালিকা

বছরশিরোনামভূমিকা
১৯৪৮রোম্যান্স অন দ্য হাই সিজজর্জিয়া গ্যারেট
১৯৪৯মাই ড্রিম ইজ ইউর্সমার্থা গিবসন
১৯৪৯ইটজ আ গ্রেট ফিলিংজুডি অ্যাডামস
১৯৫০ইয়াং ম্যান উইদ আ হর্নজো জর্ডান
১৯৫০টি ফর টুনানেট কার্টার
১৯৫০দ্য ওয়েস্ট পয়েন্ট স্টোরিজ্যান উইলসন
১৯৫১স্ট্রম ওয়ার্নিংলুসি রাইস
১৯৫১লুলাবি অব ব্রডওয়েমেলিন্ডা হাওয়ার্ড
১৯৫১অন মুনলাইট বেমার্জোরি "মারজি" উইনফিল্ড
১৯৫১আই উইল সি ইউ ইন মাই ড্রিমসগ্রেস লেবয় কান
১৯৫১স্টারলিফ্টনিজেই
১৯৫২দ্য উইনিং টিমঅ্যামি আলেকজান্ডার
১৯৫২এপ্রিল ইন প্যারিসএথেল  "ডিনামাইট" জ্যাকসন
১৯৫৩বাই দ্য লাইট অব দ্য সিলভারি মুনমার্জোরি "মারজি" উইনফিল্ড
১৯৫৩ক্যালামিটি জেনক্যালামিটি জেন
১৯৫৪লাকী মিক্যান্ডি উইলিয়ামস
১৯৫৫ইয়াং অ্যাট হার্টলরি টাটল
১৯৫৫লাভ মি অর লিভ মিরুথ এটিং
১৯৫৬দ্য ম্যান হূ নিউ টু মাচজোসেফাইন কনওয়ে "জো" ম্যাককেনা
১৯৫৬জুলিজুলি বেন্টন
১৯৫৭দ্য পাজামা গেমক্যাথরিন "বেব" উইলিয়ামস
১৯৫৮টিচার্স পেটএরিকা স্টোন
১৯৫৮দ্য টানেল অব লাভআইসোল্ড পুল
১৯৫৯ইট হ্যাপেন্ড টু জেনজেন ওসগুড
১৯৫৯পিলো টকজ্যান মরো
১৯৬০প্লিজ ডোন্ট ইএট দ্য ডেইজিজকেট রবিনসন ম্যাকাই
১৯৬০মিডনাইট লেসকিট প্রেস্টন
১৯৬১লাভার কাম ব্যাকক্যারল টেম্পলটন
১৯৬২থ্যাট টাচ অব মিংকক্যাথি টিম্বারলেক
১৯৬২বিলি রোজ্‌স জাম্বুকিটি ওয়ান্ডার
১৯৬৩দ্য থ্রিল অব ইট অলবেভারলি বয়ার
১৯৬৩মুভ অভার, ডার্লিংএলেন ওয়াগস্টাফ আরডেন
১৯৬৪সেন্ড মি নো ফ্লোয়ার্সজুডি কিমবল
১৯৬৫ডু নট ডিস্টার্বজ্যানেট হার্পার
১৯৬৬দ্য গ্লাস বটম বোটজেনিফার নেলসন
১৯৬৭ক্যাপ্রিসপ্যাট্রিসিয়া ফস্টার
১৯৬৭দ্য ব্যালাড অব জোসিজোসি মিনিক
১৯৬৮হোয়ের উই আর ইউ হোয়েন দ্য লাইটস ওয়েন্ট আউট?মার্গারেট গ্যারিসন
১৯৬৮উইদ সিক্স ইউ গেট এগরোলঅ্যাবি ম্যাকক্লুর

ডিস্কের তালিকা

  • ইউ আর মাই থ্রিল (১৯৪৯)
  • ডে ড্রিমস (১৯৫৫)
  • ডে বাই ডে (১৯৫৬)
  • ডে বাই নাইট (১৯৫৭)
  • হুরে ফর হলিউড (১৯৫৮)
  • কাটিন' ক্যাপার্স (১৯৫৯)
  • হোয়াট এভরি গার্ল শুড নো (১৯৬০)
  • শো টাইম (১৯৬০)
  • লিসেন টু ডে (১৯৬০)
  • ব্রাইট অ্যান্ড শাইনি (১৯৬১)
  • আই হ্যাভ ড্রিমড (১৯৬১)
  • ডুয়েট (আন্দ্রে প্রেভিনের সাথে) (১৯৬২)
  • ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন (১৯৬২)
  • লাভ হিম (১৯৬৩)
  • দ্য ডরিস ডে ক্রিসমাস অ্যালবাম (১৯৬৪)
  • উইথ আ স্মাইল অ্যান্ড আ সং (১৯৬৪)
  • ল্যাটিন ফর লাভার্স (১৯৬৫)
  • ডরিস ডেস সেন্টিমেন্টাল জার্নি (১৯৬৫)
  • দ্য লাভ অ্যালবাম (রেকর্ডকৃত ১৯৬৭, প্রকাশিত ১৯৯৪)
  • মাই হার্ট (২০১১)

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ