বিষয়বস্তুতে চলুন

বৌদ্ধধর্ম ও যৌনতা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বুদ্ধ তার প্রথম প্রবচনে তৃষ্ণা(তণহা)কে দুঃখযন্ত্রণার কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। তারপর তিনি তিনটি তৃষিত বস্তুকে চিহ্নিত করেছেন যথা অস্তিত্বের জন্য তৃষ্ণা, অনঅস্তিত্বের জন্য তৃষ্ণা এবং ইন্দ্রিয়সুখের জন্য তৃষ্ণা (কাম)। বুদ্ধের শিক্ষা অনুযায়ী কামকে ঝান' বা ধ্যান লাভের পাঁচটি অন্তরায়ের মধ্যে একটি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সুত্তনিপাতে কামসুত্তয় বুদ্ধ ব্যাখ্যা করেছেন যে যৌনসুখের তৃষ্ণা দুঃখযন্ত্রণার একটি কারণ।

কেহ যদি, যৌনসুখলাভের আকাঙ্ক্ষায়, তাহা প্রাপ্ত হয়, তবে হ্যাঁ, তাহার

হৃদয় আনন্দোচ্ছাসিত হয়। নশ্বর প্রাণী তাহার কাঙ্ক্ষিত বস্তু প্রাপ্ত হয়।কিন্তু যদি সেই কামোদ্যত ব্যক্তির তৃপ্তি হ্রাস পায় তবে সে তীরবিদ্ধের ন্যায় চূর্ণবিচূর্ণ হয়।

— কাম সুত্ত, নিপাট সুত্ত, কাম সুত্ত, নিপাট সুত্ত

বুদ্ধ আরও বলিলেন:

অতএব একজন সদাসতর্ক ব্যক্তির কামাভিলাষ বর্জনীয়। এই আকাঙ্ক্ষা পরিত্যাগের মাধ্যমে তিনি মহাপ্লাবনে যেন বানের জলে তরী ভাসাইয়া দূরবর্তী নিরাপদ তীরে নোঙর করিতে সক্ষম হইবেন।

এখানে মানুষের দুর্ভোগরূপী 'মহাপ্লাবন' বোঝানো হয়েছে। 'দূরবর্তী তীর' হচ্ছে নির্বাণ যা যৌন ইচ্ছা বর্জিত এক অবস্থা।

কাম সুত্তের অর্থ হচ্ছে যে, যৌন ইচ্ছা অন্য অভ্যাসগত ইন্দ্রিয়সুখের ন্যায় দুর্ভোগ ডেকে আনে। সাধারণ মানুষকে বুদ্ধ  অন্তত যৌন অসদাচরণ এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন যার মানে যৌন নৈতিকতা এবং আচরণের সাধারণ গ্রহণীয় নীতিনির্দেশ। বুদ্ধের পূর্ণ শিষ্য, দীক্ষাপ্রাপ্ত ভিক্ষু ও ভিক্ষুণীর জন্য বিনয় পালন (ব্রহ্মচর্য) বাধ্যতামূলক।

সংক্ষিপ্ত বিবরণ

বৌদ্ধ সমাজের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ইংরেজি সংঘ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মরিস ওয়ালশ্ 'বৌদ্ধ,'  নামক একটি প্রবন্ধ লিখেছেন যেখানে তিনি মানুষের যৌনতা এবং লক্ষ্যের (নির্বাণ) সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়ে বুদ্ধের অপরিহার্য শিক্ষার উপস্থাপন করেছেন। পাঁচটি নিয়ম-কানুন তৃতীয়টি এরূপ:

কামেসু মিচ্ছাচরা অয়েরামনিশিক্ষাপদম সামদিয়ামি

এই বিবৃতির আক্ষরিক অর্থ "আমি যৌনতা সম্পর্কিত ভুল কাজ করা থেকে বিরত থাকার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি।" ওয়ালশের মন্তব্য

বৌদ্ধ মতে যৌনতার ক্ষেত্রে কিছুই বিশেষভাবে অপরাধের বা দোষত্রুটির নয়। যারা তাদের যৌন জীবন সম্পর্কে অপরাধবোধ-জটিলতায় ভোগেন তাদের উপলব্ধি করা উচিত যে এটা কোন ব্যর্থতা নয়, উপরন্তু, অন্য কোন নিয়মের সাথে মানিয়ে চলার ব্যর্থতার চেয়ে এটা কম গুরুতর। বাস্তবিকই, সবচেয়ে কঠিন নিয়ম হচ্ছে চতুর্থ আজ্ঞাটি — সবরকম কটু কথা বলার থেকে বিরত থাকা(যার মধ্যে অন্যান্য মানুষের বাস্তব বা কথিত যৌন দোষত্রুটির উপর মন্তব্য অন্তর্ভুক্ত!)...তাহলে সাধারণ ছাপোষা বৌদ্ধদের নিকট তৃতীয় নিয়মটির মর্ম কি? প্রথমত, অন্য সব নিয়ম-কানুনের সাথে মিল রেখে, এটি হল একটি প্রশিক্ষণের নিয়ম। এটা কোন ঈশ্বর বা বুদ্ধ প্রদত্ত "আজ্ঞা" নয় যে: "তুমি করবে না..." বৌদ্ধ ধর্মে এরূপ কোন আদেশ নেই। এটি নিজের দ্বারা নিজের প্রতি একটি অঙ্গীকার যে আপনি নির্দিষ্ট কিছু সংযম পালন করবেন কারণ আপনি মনে করেন যে এটা করা ভাল। এই ব্যাপারটা পরিষ্কারভাবে বুঝতে হবে। আর আপনি যদি মনে করেন যে এটি ভালো জিনিস না তাহলে করবেন না। আপনি যদি মনে করেন এটি একটি ভালো জিনিস কিন্তু তা করতে পারার বিষয়ে আপনার সামর্থ্য সম্পর্কে আপনার মনে সন্দেহ থাকে তাহলে আপনি যথাসাধ্য চেষ্টা করুন। আপনি সম্ভবত এক্ষেত্রে জিনিসটি সহজতর করতে কারুর সাহায্য এবং নির্দেশ করতে পারেন। আপনি যদি মনে করেন যে বৌদ্ধ পথে চলা একটি ভাল জিনিস তাহলে আপনি আন্তরিকতার সঙ্গে এই এবং অন্যান্য নিয়ম-কানুন মেনে চলার চেষ্টা করতে পারেন।[১]

সমকামিতা

বৌদ্ধ ধর্মে পায়ুকামের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে যে, পায়ু শিশ্ন প্রবেশের জন্য সঠিক পথ নয় এবং গৌতম বুদ্ধের দর্শন অনুযায়ী নারীর যোনিই হচ্ছে শিশ্ন প্রবেশ করানোর একমাত্র সঠিক পথ।[২][৩] পায়ুকামকে বৌদ্ধ নীতি শাস্ত্রে 'যৌন অসদাচরণ' এবং অপকর্ম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যদিও পায়ুকামের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো শাস্তির বিধান নেই।[৪][৫][৬]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন