মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধ (১৮৬১-১৮৬৫)হল যুক্তরাষ্ট্রে সংগঠিত এক আঞ্চলিক বিরোধ যা মূলত মার্কিন ফেডারেল সরকার আর বিপ্লবী ১১ টি দাস-নির্ভর প্রদেশের মাঝে সংগঠিত হয়। রাষ্ট্রপতি জেফারসন ডেভিস এর নেতৃত্বে এই ১১ টি প্রদেশ পুর্বেই নিজেদেরকে মূল যুক্তরাষ্ট্র হতে আলাদা ঘোষণা করেছিল এবং নামকরণ করেছিল কনফেডারেট স্টেটস অব আমেরিকা। এদের বিরুদ্ধে ছিলো রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিঙ্কন-এর ইউনিয়ন সরকার আর মার্কিন রিপাবলিকান দল, যারা দাস-প্রথার বিস্তারের ঘোর বিরোধী ছিল ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধ

উপরে বামে: টেনেসির স্টোনস রিভারের যুদ্ধে উইলিয়াম রসক্র্যান্স, উপরে ডানে: গ্যাটিসবার্গের যুদ্ধে বন্দী কনফেডারেট সৈনিক, নিচে: আরাকানসের ফোর্ট হাইন্ডম্যানের যুদ্ধ
তারিখ১২ এপ্রিল, ১৮৬১ – ৯ এপ্রিল, ১৮৬৫ (সর্বশেষ যুদ্ধটি শেষ হয় হয় ১৮৬৫ সালের জুনে)
অবস্থান
ফলাফল

ইউনিয়নদের বিজয়

  • যুক্তরাষ্ট্রের ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষিত হয়
  • দেশটির পুনর্গঠন শুরু হয়
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে দাসত্ব বিলোপ করা হয়
বিবাদমান পক্ষ
 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইউনিয়ন)[১] কনফেডারেট স্টেটস অফ আমেরিকা (কনফেডারেন্সি)
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আব্রাহাম লিংকন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উইনফিল্ড স্কট
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জর্জ বি. ম্যাকলেলান
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হেনরি ওয়েজার হলেক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউলিসিস এস. গ্রান্ট
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উইলিয়াম টি. শারম্যান
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাইডিওন ওয়েলস

এবং অন্যান্যরা

কনফেডারেট স্টেটস অফ আমেরিকা জেফারসন ডেভিস
কনফেডারেট স্টেটস অফ আমেরিকা পি.জি.টি. ব্যুরেগার্ড
কনফেডারেট স্টেটস অফ আমেরিকা জোসেফ ই. জনস্টন
কনফেডারেট স্টেটস অফ আমেরিকা রবার্ট ই. লি
কনফেডারেট স্টেটস অফ আমেরিকা স্টিফেন ম্যালোরি

এবং অন্যান্যরা
শক্তি
২১,০০,০০০১০,৬৪,০০০
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
যুদ্ধে মৃত্যু: ১,১০,০০০
মোট মৃতের সংখ্যা: ৩,৬০,০০০
আহত: ২,৭৫,২০০
যুদ্ধে মৃত্যু: ৯৩,০০০
মোট মৃতের সংখ্যা: ২,৬০,০০০
আহত: ১,৩৭,০০০+

সূচনা

চার বছর ব্যাপী এই যুদ্ধের সূচনা ঘটে এপ্রিল ১২,১৮৬১ সালে, যখন কনফেডারেট বাহিনী ফোর্ট সামটারে অবস্থানকারী এক ফেডারেল বাহিনীকে আক্রমণ করে। এই সূচনাদায়ী খন্ডযুদ্ধটি ফোর্ট সামটারের খন্ডযুদ্ধ নামে পরিচিত।

আমেরিকার গৃহযুদ্ধ, আন্তঃ প্রাদেশিক যুদ্ধ নামেও পরিচিত, অথবা শুধুমাত্র গৃহযুদ্ধ (নামকরণ দেখুন), যেটা ১৮৬১ সালে শুরু হয়ে ১৮৬৫ সাল অবধি সংঘটিত হয়ে ছিল যখন আমেরিকার সাতটি দাসরাজ্য আমেরিকান ইউনিয়ন বর্জন করে কনফেডারেট স্টেটস অফ আমেরিকা ( কনফেডারেসি অথবা দক্ষিণ) তৈরী করে। বাকি প্রদেশ বা রাজ্য যেগুলো ইউনিয়নের সাথে থেকে যায় সেগুলো ইউনিয়ন অথবা উত্তর নামে প্রচলিত থাকে। যুদ্ধের শুরুটা হয় দাসপ্রথা সম্পর্কিত খুব স্পর্শকাতর একটি ব্যাপার থেকে, আরও সুনির্দিষ্টভাবে পশ্চিমা অঙ্গরাজ্যগুলোতে দাসপ্রথার প্রসারন নিয়ে। বিদেশী কোন শক্তি কোন ধরনের হস্তক্ষেপ করেনি। চার বছর ব্যাপী এই যুদ্ধে ৬০০,০০০ এর ও বেশি সৈন্য মারা যায় এবং দক্ষিণের বেশীরভাগ স্থাপনা ধ্বংসের সম্মুখীন হয়। কনফেডারেসি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, দাসপ্রথা বিলুপ্ত হয় এক-ই সাথে শুরু হয় জাতীয় ঐক্য এবং সদ্য স্বাধীন দাসদের তাদের প্রতিশ্রুত অধিকার দেবার অত্যন্ত কঠিন পুনঃনির্মান প্রক্রিয়া।১৮৬০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আব্রাহাম লিঙ্কনের নেতৃত্বাধীন রিপাব্লিকার পার্টি ইউনাইটেড স্টেটসের অঙ্গরাজ্যগুলোতে দাসপ্রথার বিস্তার এর বিরোধিতা করেন। লিঙ্কন জয়লাভ করেন, কিন্তু তার দায়িত্বগ্রহণের পূর্বেই ৪ঠা মার্চ, ১৮৬১ সালে সাতটি দাসরাজ্য যেগুলোর অর্থনীতি ছিল তাঁত ভিত্তিক, কনফেডারেসি গঠন করে। বিদায়ী ডেমক্রেটিক প্রেসিডেন্ট জেমস বুকানন এবং ক্ষমতাসীন রিপাব্লিকানরা এই বর্জনকে বেআইনি বলে প্রত্যাখ্যান করেন। লিঙ্কনের উদ্বোধনি বক্তব্য ঘোষণা করে যে তার প্রশাসন গৃহযুদ্ধ শুরু করবেনা। আটটি অঙ্গরাজ্য ইউনিয়ন বর্জনের আহবান ক্রমাগত প্রত্যাখ্যান করতে থাকে। কনফেডারেট বাহিনী কনফেডারেসির অধীন অসংখ্য দুর্গ দখল করে। এর মধ্যে একটি শান্তি আলোচনা সংঘটিত হয় এবং তা কোন ধরনের সমাধানের পথ দেখাতে ব্যার্থ হয় এবং দুই পক্ষ রণসাজে সজ্জিত হতে থাকে। কনফেডারেটরা আশা করছিল যে ইউরোপিয়ান শক্তিগুলো হস্তক্ষেপ করবে কেননা তারা কিং কটন এর প্রতি অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। পরিহাসের বিষয় এরা কেউই তা করেনি এবং কেউই এই নতুন কনফেডারেট শক্তিকে স্বীকৃতি প্রদান করেনি।সহিংসতা শুরু হয় ১৮৬১ সালের ১২-ই এপ্রিল যখন কনফেডারেট ফোর্স ফোর্ট সামটারের উপর গোলা বর্ষন করে। এটি ছিল ইউনিয়ন বাহিনীর অধীন সাউথ ক্যারোলিনার খুব-ই গুরুত্বপূর্ণ দুর্গ। লিঙ্কন এই দুর্গ পুনরুদ্ধারের জনয় প্রতিটি অঙ্গরাজ্য হতে সৈন্য সরবরাহের ডাক দিলেন। পরবর্তীতে আরও চারটি দাসরাজ্য কনফেডারেসিতে যোগ দেয়, এবার সর্বমোট কনফেডারেট রাজ্যের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১টিতে। ইউনিয়ন সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর দখল নেয় এবং নৌ-অবরোধ সৃষ্টি করে, ফলশ্রুতিতে দক্ষিণের অর্থনীতি একেবারে ভেঙ্গে পড়ে। ১৮৬১-৬২ সালের সময়কালে প্রাচ্যের ভূমিকা যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। ১৮৬২ সালের হেমন্তে কনফেডারেটরা মেরিল্যান্ডে জড় হয় যেটা কিনা ছিল একটি ইউনিয়ন অঙ্গরাজ্য, পরবর্তীতে ইংরেজ হস্তক্ষেপে কনফেডারেটরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। লিঙ্কন তার বিখ্যাত Emancipation Proclamation ঘোষণা করেন এবং এর মাধ্যমে তিনি দাসপ্রথা রহিত করাকে অভিলক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৮৬২ সালে ইউনিয়ন বাহিনী পশ্চিমাঞ্চলে কনফেডারেট নৌবাহিনীকে ধ্বংস করে এবং তারপর পশ্চিমাঞ্চলের কনফেডারেট বাহিনীর বৃহৎ অংশই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ইউনিয়ন বাহিনীর ভিক্সবার্গ দখলে কনফেডারেসি মিসিসিপির দুইপাশে দুইটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়।

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ