অভ্যুত্থান
অভ্যুত্থান (ইংরেজি: coup d'état, coup, putsch, overthrow) (ইংরেজি: /ˌkuːdeɪˈtɑː/, ফরাসি : [ku deta]) হচ্ছে হঠাৎ ও অবৈধভাবে নির্বাচিত সরকারের রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে দলগতভাবে কোন গোষ্ঠীর অবস্থান ব্যক্ত করে ক্ষমতাচ্যুত করা কিংবা জোরপূর্বক পদত্যাগ করতে বাধ্য করা।[১][২][৩][৪] সাধারণতঃ ছোট্ট একটি দলের সদস্য হিসেবে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা রাষ্ট্রের বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান কাজ পরিচালনা করে থাকে। এরপর সরকার পরিবর্তনে অন্য কোন পরিচালনা কমিটি, বেসামরিক অথবা সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে রাষ্ট্র পরিচালনায় অগ্রসর হয়।
বিপ্লবাত্মক কর্মকাণ্ডে বৃহৎসংখ্যক জনগোষ্ঠী অংশ নেয়; কিন্তু, অভ্যুত্থানে স্বল্পসংখ্যক ব্যক্তি অংশ নিয়ে থাকে। এমনকি একজন ব্যক্তি হিসেবে সংশ্লিষ্ট দেশের সেনাবাহিনী প্রধানের মাধ্যমেও অভ্যুত্থান কার্য পরিচালনা হতে পারে। এছাড়াও, অন্য দেশের মাধ্যমেও অভ্যুত্থান কাজ হতে পারে। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে রয়েছে ১৯৫৩ সালের ইরানের অভ্যুত্থান। জার্মানির বাভারিয়া প্রদেশের সরকার উৎখাতের লক্ষ্যে এডলফ হিটলার বিয়ার হল পুটস ভবন অবরোধ করে অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালিয়েছিলেন।
অভ্যুত্থান শব্দটি ফরাসী ভাষা থেকে এসেছে যার অর্থ হচ্ছে আকস্মিকভাবে সরকারের বিরুদ্ধে অবরোধ করা। অনানুষ্ঠানিকভাবে অভ্যুত্থান বা ক্যু শব্দটি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার ক্ষেত্রে প্রয়োগ হয়ে থাকে। দায়িত্বভার গ্রহণ, বিজয় কিংবা স্থান পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ক্যু শব্দ ব্যবহার হয়ে থাকে।
ইতিহাস
আফ্রিকা মহাদেশের রাষ্ট্রগুলোয় অভ্যুত্থান একটি সাধারণ ঘটনা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। ১৯৫২ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে নির্দিষ্ট ৩৩টি দেশে ৮৫ বার অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। পশ্চিম আফ্রিকায় সর্বাধিক ৪২ বার এ ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ অভ্যুত্থানই নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে ঘটছে; ২৭ বার সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে এবং মাত্র পাঁচবার হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে।[৫]
সরকার ব্যবস্থা পরিবর্তনে বিশ্বব্যাপী এ নিয়ম পরিচিত। সাধারণতঃ সামরিক বাহিনী সরাসরি ক্ষমতায় না গিয়ে তাদের মদদপুষ্ট বেসামরিক ব্যক্তিকে দেশ পরিচালনায় আহ্বান জানায়। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্রেঞ্চ ফোর্থ রিপাবলিকের শাসন ব্যবস্থা ধ্বসে পড়ে, মৌরিতানিয়ায় রাষ্ট্রপতি সৌদি আরবে থাকাবস্থায় ৩ আগস্ট, ২০০৫ সালে সরকার পরিবর্তিত হয়।
বর্তমানে ক্ষমতাসীন
পদবী | নাম | ক্ষমতায় আরোহণ | দেশ | অঞ্চল |
---|---|---|---|---|
সুলতান | কাবুস বিন সাঈদ আল সাঈদ* | ২৩ জুলাই, ১৯৭০ | ওমান | মধ্যপ্রাচ্য |
রাষ্ট্রপতি | টিওডোরো অবিয়াং এনগুইমা এমবাসোগো | ৩ আগস্ট, ১৯৭৯ | টেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত ইকুয়েটোরিয়াল গিনি | সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা |
রাষ্ট্রপতি | ব্লেইজ কম্পাউরি | ১৫ অক্টোবর, ১৯৮৭ | বুর্কিনা ফাসো | সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা |
রাষ্ট্রপতি | ওমর হাসান আহমদ আল-বশির | ৩০ জুন, ১৯৮৯ | সুদান | সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা |
রাষ্ট্রপতি | ইদ্রিস দিবাই | ২ ডিসেম্বর, ১৯৯০ | চাদ | সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা |
রাষ্ট্রপতি | ইয়াহিয়া জম্মেহ** | ২২ জুলাই, ১৯৯৪ | গাম্বিয়া | সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা |
আমির | হামাদ বিন খলিফা আল থানি* | ২৭ জুন, ১৯৯৫ | কাতার | মধ্যপ্রাচ্য |
রাষ্ট্রপতি | ডেনিস সাসৌ-এনকিউসো | ২৫ অক্টোবর, ১৯৯৭ | কঙ্গো প্রজাতন্ত্র | সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা |
রাষ্ট্রপতি | ফ্রাঙ্কোইজ বোজিজে** | ১৫ মার্চ, ২০০৩ | কেন্দ্রীয় আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র | সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা |
অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী | ফ্রাঙ্ক বাইনিমারামা | ৫ ডিসেম্বর, ২০০৬ | ফিজি | দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল |
রাষ্ট্রপতি | মোহামেদ অউল্দ আব্দেল আজিজ*** | ৬ আগস্ট, ২০০৮ | মৌরিতানিয়া | সাহারা আফ্রিকা |
উচ্চপর্যায়ের পরিবর্তনকালীন কর্তৃপক্ষীয় রাষ্ট্রপতি | আন্দ্রি রাজোলিনা | ১৭ মার্চ, ২০০৯ | মাদাগাস্কার | ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল |
অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি | ডিওনকোন্ডা ত্রাউরি**** | ১১ এপ্রিল, ২০১২ | মালি | সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা |
অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি | মেন্যুয়েল সেরিফো নামাদজো***** | ১১ মে, ২০১২ | গিনি-বিসাউ | সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা |