গ্রিনল্যান্ড
গ্রিনল্যান্ড উত্তর আটলান্টিক ও আর্কটিক মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত একটি সুবৃহৎ দ্বীপ যা ডেনমার্কের একটি স্ব-নিয়ন্ত্রিত অংশ হিসেবে স্বীকৃত। দ্বীপটির অধিকাংশই সুমেরীয় বৃত্তের উত্তর অংশে অবস্থিত। এটি পশ্চিম দিকে ডেভিস প্রণালী ও ব্যাফিন উপসাগর দ্বারা প্রাথমিকভাবে কানাডীয় সুমেরীয় দ্বীপপুঞ্জ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং পূর্ব দিকে ডেনমার্ক প্রণালী দ্বারা আইসল্যান্ড থেকে পৃথক হয়েছে।
গ্রিনল্যান্ড | |
---|---|
সংগীত: "নুনার্পুত, উতোক্কার্সুয়ান্ন্গোরাভিত" (গ্রিনল্যান্ডীয়) (বাংলা: "তুমি, আমাদের প্রাচীন ভূমি") | |
কালাল্লিত সঙ্গীত: "নুনা আসিলাসোক" (গ্রিনল্যান্ডীয়) (বাংলা: "বিশাল প্রস্থের ভূমি")[১] | |
গ্রিনল্যান্ডের অবস্থান | |
রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর | নুক |
দাপ্তরিক ভাষা | গ্রিনল্যান্ডীয়, ডেনীয় |
সরকার | সংসদীয় গণতন্ত্র (সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের মধ্যে) |
• রাণী | ২য় মার্গারেট |
• প্রধানমন্ত্রী | মুৎসি বোওরব এয়েদে |
• পানি/জল (%) | ৮১.১ |
জনসংখ্যা | |
• ২০২০ আনুমানিক | ৫৬,০৮১[২] (২১০তম) |
জিডিপি (পিপিপি) | ২০১১ আনুমানিক |
• মোট | ১.৮ বিলিয়ন ডলার[৩] (র্যাঙ্কিং নেই) |
• মাথাপিছু | ২০,০০০ মার্কিন ডলার (র্যাঙ্কিং নেই) |
সময় অঞ্চল | ইউটিসি০ থেকে -৪ |
কলিং কোড | ২৯৯ |
ইন্টারনেট টিএলডি | .জিএল |
ভূ-প্রকৃৃতি
গ্রিনল্যান্ড পৃথিবীর বৃহত্তম দ্বীপ। এর সর্ব উত্তরের বিন্দু মরিস জেসাপ অন্তরীপ থেকে সর্ব দক্ষিণের বিন্দু ফেয়ারওয়েল অন্তরীপের দূরত্ব ২,৬৬০ কিমি (১,৬৫০ মাইল)। এটি এর সর্বাধিক বিস্তৃতি। অপরদিকে পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত সর্বাধিক দূরত্ব হচ্ছে ১,৩০০ কিমি (৮০০ মাইল)। এর সমগ্র উপকূলভূমি জুড়ে রয়েছে ফিয়র্ড যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৪,০০০ কিমি (২৭,০০০ মাইল)।
ভৌগোলিক অবস্হান মেরু অঞ্চলে হওয়ায় সেখানে সূর্যের দেখা পাওয়া যায় মাত্র ৩ ঘণ্টা বা তার একটু বেশি কিংবা কম সময়। ফলে সেখানকার শীতকাল বা শৈত্যপ্রবাহকাল খুব দীর্ঘ সময় হয়ে থাকে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ও অন্ধকারাচ্ছন্ন এক পরিবেশ যেনো কালো চাদরের মতো ঝুলে থাকে গোটা গ্রিনল্যান্ডে। তবে ভুলে গেলে চলবে না যে এটা সাইবেরিয়া নয়, এই ঠাণ্ডা অন্ধকারাচ্ছন্ন দ্বীপেও লুকিয়ে রয়েছে বিচিত্র সব সৌন্দর্য্য।
সারা বছর বরফে ঢাকা থাকলেও গ্রীষ্মে বরফ কেটে গেলে দেশটির রূপ পাল্টে যায়। এমন ঘটনা যে কেবল উত্তর মেরু অঞ্চলেই ঘটে তা নয়, দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের অনেকটা অংশজুড়ে গ্রীষ্মে একটা নির্দিষ্ট সময় আক্ষরিক অর্থেই সূর্য ডুবতে দেখা যায় না। অদ্ভুত হলেও সত্য যে, তখন ২৪ ঘণ্টা সূর্য আলোরিত হয়। দিন-রাত তখন সমান থাকে।[৫]
নগর ব্যবস্থাপনা
গ্রীনল্যান্ডের বেশিরভাগ নগরীই গড়ে উঠেছে পশ্চিম উপকূলবর্তী হয়ে। কারণ এর উত্তর পূর্ব কূল বরাবর গ্রীনল্যান্ড জাতীয় পার্ক অন্তর্ভুক্ত।
ইতিহাস
ধারণা করা হয়, সেই প্রাগৈতিহাসিক কালে পালেও ইস্কিমো গ্রুপের সময় থেকে গ্রীনল্যান্ড বসবাসের বাসযোগ্য হিসেবে আছে। তবে সঠিক গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, ইনুইটরা সর্বপ্রথম গ্রীনল্যান্ডে প্রবেশ করে ২৫০০ খ্রীস্টপূর্বে। অর্থাৎ, গ্রীনল্যান্ডের ইতিহাস বেশ পুরানো আর প্রত্নতাত্ত্বিক এবং পরবর্তী বহু বছর পর এখানে ইউরোপিয়ানরা বসবাস শুরু করে৷ কখনো নরওয়েজিয়ান ও আইসল্যান্ড বাসিন্দারা এর পশ্চিম উপকূলবর্তী হয়ে বাস শুরু করে। তখন থেকেই আদিম গ্রীনল্যান্ডের যাত্রা।
ইতিহাস অনুযায়ী এরিক দ্যা রেড গ্রিনল্যান্ডের নামকরণ করেন। কথিত আছে তিনি আইসল্যান্ড থেকে খুনের অপরাধে বিতারিত হয়ে গ্রিনল্যান্ডে নির্বাসিত হন এবং এর নাম গ্রিনল্যান্ড রাখেন। অনেকে মনে করেন এরিক দ্যা রেড মার্কেটিং পার্স্পেক্টিভ থেকে এর নাম গ্রিনল্যান্ড রাখেন যাতে এর নাম শুনে মানুষ এখানে প্রত্যাবর্তন করতে আগ্রহী হয়।[৫]
যোগাযোগ ব্যবস্থা
বরফের রাজ্য গ্রিনল্যান্ডে যাতায়াত ব্যবস্থা সুবিধাজনক নয়। অন্য দেশ থেকে গ্রিনল্যান্ডে সরাসরি যাতায়াতের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। গ্রিনল্যান্ডের অভ্যন্তরে রয়েছে ১৬টি বড় শহর। কিন্তু একটি শহর থেকে আরেকটি শহরে যাতায়াতের সু-ব্যবস্থা নেই। স্থানীয়রা তাদের যাতায়াতে ব্যবহার করে উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার। এক শহর থেকে আরেক শহরে যাতায়াতে তারা নিজেদের তৈরি যানবাহন ব্যবহার করে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- স্লেজ, কায়াক এবং স্নো স্যু।[৫]
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
- সরকারের দাপ্তরিক ওয়েবসাইট
- গ্রিনল্যান্ড পর্যটন তথ্যাবলী
- সিআইএ বিশ্ব ফ্যাক্টবুক ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ মে ২০২০ তারিখে
- গ্রিনল্যান্ডের পরিসংখ্যান
- গ্রিনল্যান্ডের মানচিত্র
- গ্রিনল্যান্ডের সমুদে আরও অধিক হারে বরফ ফেলছে।