ডাউন সিনড্রোম
ডাউন সিনড্রোম (ইংরেজি: Down syndrome)( সংক্ষেপে DS বা DNS), এটা ট্রাইসোমি ২১ নামেও পরিচিত। এটি একটি জেনেটিক রোগ যেখানে ২১ নং ক্রোমোজোমে আরেকটি অতিরিক্ত ক্রোমোজোম বিদ্যমান।[৩] এই রোগে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয় ও বুদ্ধিমত্তা স্বাভাবিকের তুলনায় কম থাকে।[৪] ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক তরুণের গড় আইকিউ (IQ) ৫০ যা ৮-৯ বছরের সুস্থ শিশুর সমান।[৫]
ডাউন সিনড্রোম | |
---|---|
ডাউন সিনড্রোম আক্রান্ত একটি শিশু | |
বিশেষত্ব | মেডিকেল জেনেটিক্স, পেডিয়েট্রিকস |
লক্ষণ | ধীর শারিরীক বৃদ্ধি, বিশেষ মুখের বৈশিষ্ট্য, হালকা থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বুদ্ধিবৃত্তিক অক্ষমতা |
কারণ | ক্রোমোজোম২১ এর ৩য় অনুলীপি |
ঝুঁকির কারণ | বয়স্ক মা |
আরোগ্যসম্ভাবনা | আয়ু ৫০-৬০ (উন্নত বিশ্বে) |
সংঘটনের হার | ৫৪ লাখ (০.১%)[১] |
মৃতের সংখ্যা | ২৬,৫০০(২০১৫)[২] |
আক্রান্ত শিশুর পিতামাতা জেনেটিকভাবে স্বাভাবিক থাকে।[৬] অতিরিক্ত ক্রোমোজোমের ঘটনা দৈবক্রমে ঘটে থাকে[৭] এরকম সন্তান জন্মদানের সম্ভাবনা ২০ বছর বয়সী মায়েদের ক্ষেত্রে ০.১% এরও কম এবং ৪৫ বছর বয়সী মায়েদের ক্ষেত্রে তা ৩% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।[৮] এই সম্ভাবনার উপর প্রভাব ফেলতে পারে এরকম আচরণগত কার্যক্রম বা পরিবেশগত বিষয়াবলী সম্পর্কে জানা যায় নি।[৭] বাচ্চা গর্ভে থাকা অবস্থায় স্ক্রিনিং পরীক্ষার মাধ্যমে অথবা জন্মের পর সরাসরি পর্যবেক্ষণ ও জেনেটিক পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ শনাক্ত করা যায়।[৯] গর্ভাবস্থায় ভ্রুণটি ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত হলে গর্ভপাতের পরামর্শ দেয়া হয়।[১০][১১] ডাউন সিনড্রোমের রোগীকে সারাজীবন কিছু রোগের স্ক্রিনিং পরীক্ষা করাতে হয়।[৫]
এই রোগের কোনো প্রতিকার নেই।[১২] শিক্ষা, যথাযথ যত্ন ও ভালোবাসা রোগীর জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।[১৩] কিছু কিছু ডাউন সিনড্রোমের শিশুকে স্বাভাবিক বিদ্যালয়ের শ্রেনীকক্ষে শিক্ষা দেওয়া গেলেও অন্যের ক্ষেত্রে বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা দিতে হয়।[১৪] কেউ কেউ মাধ্যমিক বিদ্যালয় শেষ করতে পারে, খুব অল্পসংখ্যক উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত যেতে পারে।[১৫] উন্নত বিশ্বে এই রোগীরা ৫০-৬০ বছর পর্যন্ত বাঁচে[৫][১৬]
ক্রোমোজোম সংক্রান্ত রোগের মধ্যে ডাউন সিনড্রোম প্রথম সারির একটি রোগ।[৫] প্রতিবছর জন্মগ্রহণকারী ১০০০ হাজার শিশুর মধ্যে ১ জন ডাউন সিনড্রোম নিয়ে জন্মায়[৪] ২০১৩ সালে ডাউন সিনড্রোমের রোগী ছিল প্রায় ৮.৫ মিলিয়ন এবং মৃত্যুবরণ করে ২৭০০০ জন যেখানে ১৯৯০ সালে মারা গিয়েছিলো ৪৩০০০ জন।[১৭][১৮]জন ল্যাংডন ডাউন (John Langdon Down) নামে একজন ব্রিটিশ ডাক্তার ১৮৬৬ সালে প্রথমবার এই রোগের পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা দেন তাই তার নামে এই রোগের নামকরণ করা হয়।[১৯]১৮৩৮ সালে Jean-Étienne Dominique Esquirol ও ১৮৪৪ সালে Édouard Séguin এই রোগ সম্পর্কে অল্পবিস্তর বর্ণনা করেন।[২০] Jérôme Lejeune নামে ফ্রান্সের গবেষক ১৯৫৯ সালে আবিষ্কার করেন যে ২১ নং ক্রোমোজোমে দুটির স্থলে তিনটি ক্রোমোজোম বিদ্যমান।[১৯]
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
- কার্লিতে ডাউন সিনড্রোম (ইংরেজি)
- Down's syndrome - Treatment by National Health Service
টেমপ্লেট:Chromosomal abnormalities