স্টিভেন হকিং

ব্রিটিশ তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী

স্টিভেন উইলিয়াম হকিং (বিকল্প প্রতিবর্ণীকরণে স্টিফেন উইলিয়াম হকিং) (ইংরেজি: Stephen William Hawking; আ-ধ্ব-ব: [ˈstiːvən 'hɔkɪŋ]; ; ৮ই জানুয়ারি, ১৯৪২ – ১৪ই মার্চ, ২০১৮) একজন ইংরেজ তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী , গণিতবিদ, বিশ্বতাত্ত্বিক ও বিজ্ঞান-বিষয়ক জনপ্রিয় ধারার লেখক ছিল। তাকে ২০শ শতকের অন্যতম সেরা তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানীদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। হকিং যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক মহাবিশ্বতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের (সেন্টার ফর থিওরেটিক্যাল কসমোলজি) প্রধান ছিলেন। তিনি ১৯৭৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লুকাসীয় অধ্যাপক ছিলেন[১৪] এবং ২০০৯ সালের ১ অক্টোবর এই পদ থেকে অবসর নেন।[১৫] এছাড়াও তিনি কেমব্রিজ নগরীর গনভিল অ্যান্ড কিজ কলেজের সভ্য (ফেলো) হিসেবে কাজ করেন।

স্টিভেন উইলিয়াম হকিং

সিএইচ সিবিই এফআরএস এফআরএসএ
Black & White photo of Hawking at NASA.
১৯৯৯ সালে স্টিভেন হকিং
জন্ম
স্টিভেন উইলিয়াম হকিং

(১৯৪২-০১-০৮)৮ জানুয়ারি ১৯৪২
অক্সফোর্ড, যুক্তরাজ্য
মৃত্যু১৪ মার্চ ২০১৮(2018-03-14) (বয়স ৭৬)
ক্যামব্রিজ, যুক্তরাজ্য
শিক্ষাসেন্ট আলবান্স স্কুল
মাতৃশিক্ষায়তনইউনিভার্সিটি কলেজ, অক্সফোর্ড (বিএ)
ট্রিনিটি হল, কেমব্রিজ (এমএ, পিএইচডি)
পরিচিতির কারণ
  • হকিং বিকিরণ
  • পেনরোজ-হকিং তত্ত্ব
  • বেকেনস্টাইন-হকিং সূত্র
  • হকিং শক্তি
  • গিবন্স–হকিং আনসাৎজ
  • গিবন্স–হকিং প্রভাব
  • গিবন্স–হকিং মহাশূন্য
  • গিবন্স–হকিং–ইয়র্ক বাউন্ডারি টার্ম
  • থর্ন–হকিং–প্রেস্কিল বাজি
কৃষ্ণগহ্বর
তত্ত্বীয় সৃষ্টিতত্ত্ব
কোয়ান্টাম মহাকর্ষ
দাম্পত্য সঙ্গী
  • জেন ওয়াইল্ড (বি. ১৯৬৫; বিচ্ছেদ. ১৯৯৫)
  • এলেন মেসন (বি. ১৯৯৫; বিচ্ছেদ. ২০০৬)
সন্তান৩, লুসি হকিং সহ
পুরস্কারপূর্ণ তালিকা
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্র
প্রতিষ্ঠানসমূহ
অভিসন্দর্ভের শিরোনামProperties of Expanding Universes (১৯৬৬)
ডক্টরাল উপদেষ্টাডেনিস শিয়ামা[১]
অন্যান্য উচ্চশিক্ষায়তনিক উপদেষ্টারবার্ট বারমান[২]
ডক্টরেট শিক্ষার্থী
ওয়েবসাইটঅফিসিয়াল ওয়েবসাইট
স্বাক্ষর

হকিং ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড নগরীতে একটি চিকিৎসক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে অক্সফোর্ডের ইউনিভার্সিটি কলেজ নামক প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষাজীবন শুরু করেন এবং ১৭ বছর বয়সে প্রথম শ্রেণীতে সম্মানসহ কলাবিদ্যায় স্নাতক উপাধি অর্জন করেন। এরপর তিনি ১৯৬২ সালে কেমব্রিজ নগরীতে ট্রিনিটি হলে স্নাতোকত্তর পর্যায়ের অধ্যয়নকর্ম শুরু করেন এবং সেখান থেকে ১৯৬৬ সালে ফলিত গণিত ও তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে ডক্টরেট উপাধি করেন, যেখানে তাঁর গবেষণার বিশেষায়িত ক্ষেত্র ছিল সাধারণ আপেক্ষিকতা ও বিশ্বতত্ত্ব।

১৯৬৩ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে হকিংয়ের দেহে ধীরগতিতে অগ্রসরমান একপ্রকার চেষ্টীয় স্নায়ুকোষ রোগের প্রারম্ভিক জীবনকালীন সূত্রপাত নির্ণয় করা হয়, যে রোগের নাম পেশীক্ষয়কারী পার্শ্বিক কাঠিন্য রোগ (এমায়োট্রফিক ল্যাটারাল স্ক্লেরোসিস) বা লু গেরিগের রোগ। রোগটির কারণে হকিং পরবর্তী দশকগুলিতে ধীরে ধীরে ক্রমাগত উত্তরোত্তর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন।[১৬][১৭] তবুও বহু বছর যাবৎ তিনি তার গবেষণা কার্যক্রম সাফল্যের সঙ্গে চালিয়ে যান। এক পর্যায়ে বাকশক্তি হারিয়ে ফেলার পরও তিনি এক ধরনের ভাষা-উৎপাদনকারী যন্ত্রের সাহায্যে অন্যদের সাথে যোগাযোগ করতেন। প্রথমে হাতে রাখা একটি সুইচের মাধ্যমে এবং শেষ পর্যন্ত গালের একটিমাত্র পেশীর সাহায্যে তিনি যন্ত্রটি পরিচালনা করতেন।

তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে হকিংয়ের প্রধান অবদান দুইটি। প্রথমত তিনি সতীর্থ রজার পেনরোজের সঙ্গে মিলে সাধারণ আপেক্ষিকতার প্রসঙ্গকাঠামোর ভেতরে মহাকর্ষীয় অদ্বৈত অবস্থান সংক্রান্ত কিছু উপপাদ্য প্রদান করেন, যাদের নাম পেনরোজ-হকিং অদ্বৈত অবস্থান উপপাদ্যসমূহ। দ্বিতীয়ত তিনি অনিশ্চয়তার তত্ত্ব কৃষ্ণগহ্বর-এর ঘটনা দিগন্তে প্রয়োগ করে দেখান যে কৃষ্ণগহ্বর থেকে কণাপ্রবাহ বিকিরিত হয়। এই বিকিরণকে বর্তমানে হকিং বিকিরণ (অথবা কখনো কখনো বেকেনস্টাইন-হকিং বিকিরণ) নামে অভিহিত করা হয়।[১৮] এছাড়া হকিং প্রথম বিজ্ঞানী হিসেবে আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব ও কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের একীভবনের মাধ্যমে একটি বিশ্বতত্ত্ব নির্মাণের প্রচেষ্টা চালান। তিনি কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের বহু-বিশ্ব ব্যাখ্যার বলিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন।[১৯][২০]

হকিং জনপ্রিয় ধারার বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ রচনা করে বাণিজ্যিক সাফল্য অর্জন করেন। এই গ্রন্থগুলিতে তিনি তঁর নিজের তত্ত্ব ও বিশ্বতত্ত্ব নিয়ে সাধারণ আলোচনা করেন। তাঁর রচিত গ্রন্থ কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস (আ ব্রিফ হিস্টরি অব টাইম) ব্রিটিশ দ্য সানডে টাইমস পত্রিকার সর্বোচ্চ বিক্রিত বইয়ের তালিকায় রেকর্ড ভঙ্গকারী ২৩৭ সপ্তাহ সময়কাল ধরে বিদ্যমান ছিল। তিনি রয়্যাল সোসাইটি অব আর্টসের সম্মানিত সভ্য বা ফেলো[২১] এবং পন্টিফিক্যাল একাডেমি অব সায়েন্সের আজীবন সদস্য ছিলেন।[২২] ২০০৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার "প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম" (রাষ্ট্রপতির মুক্তি পদক) খেতাবে ভূষিত হন। ২০০২ সালে ব্রিটিশ গণমাধ্যম সংস্থা বিবিসি পরিচালিত যুক্তরাজ্যের ইতিহাসের "সেরা ১০০ যুক্তরাজ্যবাসী" ("হান্ড্রেড গ্রেটেস্ট ব্রাইটন্‌স") নামক জরিপে তিনি ২৫তম স্থান অধিকার করেন। দীর্ঘ ৫০ বছরেরও বেশি সময়কাল ধরে চেষ্টীয় স্নায়ুকোষ রোগে ভোগার পরে হকিং ২০১৮ সালের ১৪ই মার্চ তারিখে ৭৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।[২৩]

জীবনী

প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা

জন্ম ও পরিবার

গ্যালিলিও গ্যালিলাই-এর মৃত্যুর ঠিক তিনশত বছর পরে, ১৯৪২ সালের ৮ই জানুয়ারি স্টিভেন হকিংয়ের জন্ম,[২৪] অক্সফোর্ডে[২৫][২৬] হকিংয়ের বাবা ড. ফ্রাঙ্ক হকিং (১৯০৫-১৯৮৬) একজন জীববিজ্ঞান গবেষক ও মা ইসোবেল হকিং (জন্মনাম: ওয়াকার, ১৯১৫-২০১৩) একজন রাজনৈতিক কর্মী। তার মা ছিলেন স্কটিশ।[২৭] হকিংয়ের বাবা-মা উত্তর লন্ডনে থাকতেন। লন্ডনে তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বাজছে, তখন একটি চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে তার মা-বাবার পরিচয় হয়, সেখানে ইসোবেল মেডিক্যাল সহকারী হিসেবে এবং ফ্রাঙ্ক চিকিৎসা গবেষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।[২৬][২৮] হকিং গর্ভে আসার পর নিরাপত্তার খাতিরে তারা অক্সফোর্ডে চলে যান।[২৯] হকিংয়ের জন্মের পর তারা আবার লল্ডনে ফিরে আসেন। ফিলিপ্পা ও মেরি নামে হকিংয়ের দুই বোন রয়েছে। এছাড়া হকিং পরিবারে এডওয়ার্ড নামে এক পালকপুত্রও ছিল।[৩০][৩১]

হকিংয়ের বাবা-মা পূর্ব লন্ডনে বসাবস করলেও ইসোবেল গর্ভবতী থাকার সময় তারা অক্সফোর্ডে চলে যান। সে সময় জার্মানরা নিয়মিতভাবে লন্ডনে 'বোমাবর্ষণ' করতো। হকিংয়ের একটি প্রকাশনা থেকে জানা গেছে তাদের বসতবাড়ির কয়েকটি গলি পরেই জার্মানির ভি-২ মিসাইল আঘাত হানে।[৩২] স্টিভেনের জন্মের পর তারা আবার লন্ডনে ফিরে আসেন। সেখানে স্টিভেনের বাবা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর মেডিক্যাল রিসার্চের প্যারাসাইটোলজি বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।[৩১]

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা

লন্ডনের হাইগেটের বাইরন হাউজ স্কুলে হকিংয়ের শিক্ষাজীবন শুরু হয়। তিনি পরবর্তীতে এই স্কুলে পড়াকালীন পড়তে না পারার জন্য স্কুলটির "অগ্রগামী শিক্ষা পদ্ধতি"কে দোষারোপ করেন।[৩৩][৩৪] ১৯৫০ হকিংদের পরিবার হার্টফোর্ডশায়ারের সেন্ট অ্যালবান্‌সে চলে যায়।[৩৪][৩৫] ১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত হকিং কয়েক মাস সেন্ট অ্যালবান্‌সের মেয়েদের স্কুলে পড়েন। সে সময় ১০ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলেরা মেয়েদের স্কুলে পড়তে পারতো।[৩৬][৩৭][৩৮] পরে সেখান থেকে ছেলেদের স্কুলে চলে যান। স্কুলে তাঁর রেজাল্ট ভালো ছিল বটে তবে অসাধারণ ছিল না।[৩১]

হকিং হার্টফোর্ডশায়ারের র‍্যাডলেট গ্রামের স্বাধীন স্কুল, র‍্যাডলেট স্কুলে, এক বছর পড়াশুনা করেন,[৩৭] এবং ১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে হার্টফোর্ডশায়ারের সেন্ট অ্যালবান্‌সের অপর একটি স্বাধীন স্কুল, সেন্ট অ্যালবান্‌স স্কুলে, পড়াশুনা করেন।[২৪][৩৯] হকিংয়ের পরিবার শিক্ষায় গুরুত্ব দিতো।[৩৪] হকিংয়ের বাবা চেয়েছিলেন তার পুত্র প্রখ্যাত ওয়েস্টমিনস্টার স্কুলে পড়াশুনা করুক, কিন্তু ১৩ বছর বয়সী হকিং বৃত্তি পরীক্ষার দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। বৃত্তি ছাড়া তাঁর পরিবার ওয়েস্টমিনস্টারে তাঁর পড়াশুনার খরচ চালাতে পারবে না, তাই তিনি সেন্ট অ্যালবান্‌সে রয়ে যান।[৪০][৪১] এর একটি ইতিবাচক দিক ছিল হকিং তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সাথে রয়ে যান এবং বোর্ড গেম খেলতেন, আতশবাজি প্রস্তুত করতেন, উড়োজাহাজ ও নৌকার মডেল তৈরি করতেন,[৪২] এবং খ্রিস্টান ধর্ম ও ইন্দ্রিয় বহির্ভূত অনুভূতি বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা করতেন।[৪৩] স্কুলের শিক্ষকদের মধ্যে গণিত শিক্ষক ডিকরান তাহতার অনুপ্রেরণার কথা হকিং পরবর্তী জীবনে স্মরণ করেন।[৪৪] ১৯৫৮ সাল থেকে তাহতার সাহায্যে তারা ঘড়ির অংশবিশেষ, পুরনো টেলিফোনের সুইচবোর্ড, ও অন্যান্য রিসাইকেল করার উপাদান দিয়ে কম্পিউটার তৈরি করেন।[৪৫][৪৬] পরবর্তী সময়ে হকিং স্কুলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বজায় রাখেন। নিজের নামে স্কুলের চারটি হাউসের একটি ও সহপাঠের লেকচার সিরিজের নাম দেন। স্কুল ম্যাগাজিন “দি অ্যালবানিয়ান”-এ দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দেন।

স্কুলে তিনি "আইনস্টাইন" নামে পরিচিত ছিলেন, কিন্তু শুরুর দিকে তার পরীক্ষার ফলাফল তেমন ভালো ছিল না।[৪৭] বিজ্ঞানে হকিংয়ের সহজাত আগ্রহ ছিল।[৩১] হকিং তার শিক্ষক তাহতার অনুপ্রেরণায় বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিষয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নেন।[৪৮][৪৯] হকিংয়ের বাবার ইচ্ছে ছিল হকিং যেন তার মতো ডাক্তার হয়, কারণ গণিতে স্নাতকদের জন্য খুব বেশি চাকরির সুযোগ ছিল না।[৫০] এছাড়া তার পিতা তার নিজের কলেজ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ভর্তি করাতে চান, কিন্তু যেহেতু সেখানে গণিতের কোর্স পড়ানো হতো না, সেজন্য হকিং পদার্থবিজ্ঞানরসায়ন বিষয় নিয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার শিক্ষক তাকে পরের বছরের জন্য অপেক্ষা করতে বলেছিলেন, কিন্তু তিনি ১৯৫৯ সালের মার্চে পরীক্ষা দিয়ে বৃত্তি লাভ করেন।[৫১][৫২] সে সময়ে তার আগ্রহের বিষয় ছিল তাপগতিবিদ্যা, আপেক্ষিকতা এবং কোয়ান্টাম বলবিদ্যা

স্নাতক বছরসমূহ

হকিং ১৯৫৯ সালের অক্টোবরে ১৭ বছর বয়সে[৫৩] অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে তার স্নাতক পাঠগ্রহণ শুরু করেন।[২৪] প্রথম ১৮ মাস তিনি বিরক্ত ও একাকিত্ব বোধ করতেন, কারণ তার কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ "হাস্যকর রকমের সহজ" মনে হতো।[৫৪][৫৫] তার পদার্থবিদ্যার শিক্ষক রবার্ট বারম্যান পরবর্তীতে বলেন, "তাঁর জন্য শুধু জানা দরকার ছিল কিছু করা যাবে, এবং তিনি নিজেই অন্যরা কীভাবে করছে তা না দেখেই করতে পারতো।"[২] বারম্যানের মতে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষে তার মধ্যে পরিবর্তন দেখা দেয় এবং তিনি "অন্য ছেলেদের মত" হওয়ার চেষ্টা করতেন। তিনি নিজেকে জনপ্রিয়, স্বতঃস্ফুর্ত, ও বুদ্ধিদীপ্ত হিসেবে গড়ে তুলেন এবং ধ্রুপদী সঙ্গীতবিজ্ঞান কল্পকাহিনীতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।[৫৩] তার এই পরিবর্তনের একটি অংশ ছিল কলেজের বোট ক্লাব, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ বোট ক্লাবে, যোগদান করা।[৫৬][৫৭] রোয়িং কোচ লক্ষ্য করেন হকিং তার নিজের মধ্যে সাহসী প্রতিমূর্তি গড়ে তুলেছেন, এবং তার দলকে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নেতৃত্ব দিতেন।[৫৮][৫৬]

স্নাতকোত্তর বছরসমূহ

কেমব্রিজে আসার পরপরই হকিং মটর নিউরন ডিজিজে আক্রান্ত হন। এ কারণে তার প্রায় সকল মাংসপেশি ধীরে ধীরে অবশ হয়ে আসে। কেমব্রিজে প্রথম দুই বছর তার কাজ তেমন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ছিল না। কিন্তু, রোগের প্রকোপ কিছুটা থামলে, হকিং তার সুপারভাইজার ডেনিশ উইলিয়াম শিয়ামার সাহায্য নিয়ে পিএইচডি অভিসন্দর্ভের কাজে এগিয়ে যান।[৩১]

কর্মজীবন

তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞান

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত স্টিভেন হকিং

তত্ত্বীয় কসমোলজি আর কোয়ান্টাম মধ্যাকর্ষ হকিংয়ের প্রধান গবেষণা ক্ষেত্র। ১৯৬০ এর দশকে ক্যামব্রিজের বন্ধু ও সহকর্মী রজার পেনরোজের সঙ্গে মিলে হকিং আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার তত্ত্ব থেকে একটি নতুন মডেল তৈরি করেন।[৫৯] সেই মডেলের উপর ভিত্তি করে ১৯৭০ এর দশকে হকিং প্রথম তাদের (পেনরোজ-হকিং তত্ত্ব নামে পরিচিত) তত্ত্বের প্রথমটি প্রমাণ করেন। এই তত্ত্বগুলো প্রথমবারের মতো কোয়ান্টাম মহাকর্ষে এককত্বের পর্যাপ্ত শর্তসমূহ পূরণ করে। আগে যেমনটি ভাবা হতো এককত্ব কেবল একটি গাণিতিক বিষয়। এই তত্ত্বের পর প্রথম বোঝা গেল, এককত্বের বীজ লুকোনো ছিল আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বে।[৬০]

১৯৭৪ সালে হকিং রয়্যাল সোসাইটির অন্যতম কনিষ্ঠ ফেলো নির্বাচিত হন।

ব্যক্তিগত জীবন

বিবাহ

কেমব্রিজে হকিং যখন স্নাতক শ্রেণীর শিক্ষার্থী, তখন জেন ওয়াইল্ডের সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জেন ছিলেন তার বোনের বান্ধবী। ১৯৬৩ সালে হকিংয়ের মোটর নিউরন রোগের চিকিৎসার পূর্বে জেনের সাথে তার পরিচয় হয়। ১৯৬৪ সালের অক্টোবরে তাদের বাগদান সম্পন্ন হয়।[৬১][৬২] হকিং পরবর্তীতে বলেন এই বাগদান তাকে "বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা" যোগায়।[৬৩] ১৯৬৫ সালের ১৪ই জুলাই তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।[৬৪]

বিবাহের প্রথম বছরে জেন লন্ডনে বসবাস করতেন এবং তার ডিগ্রি অর্জন করেন। তারা কনফারেন্স ও পদার্থবিজ্ঞান-বিষয়ক কাজের জন্য কয়েকবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান। ফলিত গণিত ও তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের নিকটবর্তী স্থানে বাড়ি খুঁজে পেতে তাদের ঝামেলা পোহাতে হয়। জেন পিএইচডি শুরু করেন। তাদের পুত্র রবার্ট ১৯৬৭ সালের মে মাসে জন্মগ্রহণ করে।[৬৫][৬৬] তাদের কন্যা লুসি ১৯৭০ সালে জন্মগ্রহণ করে,[৬৭] এবং তৃতীয় সন্তান টিমোথি ১৯৭৯ সালের এপ্রিল মাসে জন্মগ্রহণ করে।[৬৮]

মৃত্যু

হকিং ২০১৮ সালের ১৪ই মার্চ কেমব্রিজে তার বাড়িতে মারা যান। তার সন্তানরা তাদের দুঃখ প্রকাশ করে এই মর্মে একটি বিবৃতি জারি করেছে।[৬৯][৭০] তার মৃত্যুতে গনভিল অ্যান্ড কাইয়ুস কলেজের পতাকা অর্ধ-নমিত রাখা হয় এবং সেখানকার শিক্ষার্থী ও অতিথিরা শোক বইয়ে সাক্ষর করেন।[৭১][৭২]

তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ৩১শে মার্চ ক্যামব্রিজের গ্রেট সেন্ট ম্যারিস গির্জায়।[৭৩][৭৪] শেষকৃত্যের অতিথি হিসেবে ছিলেন এডি রেডমেইন, ফেলিসিটি জোন্স ও কুইন ব্যান্ডের গিটারবাদক ব্রায়ান মে।[৭৫] তার মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার পর ২০১৮ সালের ১৫ই জুন ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে আইজাক নিউটনের সমাধির পাশে ও চার্লস ডারউইনের সমাধি সংলগ্ন অংশে তার ভস্ম পু‌ঁঁতে ফেলা হয়।[৭৬]

সমকালীন মন্তব্যগুচ্ছ

১৯৮৫ সালে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন হকিং ৷ ১৯৮৫ সালের গ্রীষ্মে জেনেভার সার্ন-এ অবস্থানকালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বিজ্ঞানী ৷ চিকিৎসকরাও তার কষ্ট দেখে একসময় লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ৷ সম্প্রতি হকিংয়ের জীবন নিয়ে তৈরি হয়েছে এক তথ্যচিত্র। সেখানেই এই তথ্য জানিয়েছেন হকিং। তিনি বলেছেন, ‘নিউমোনিয়ার ধকল আমি সহ্য করতে পারি নি, কোমায় চলে গিয়েছিলাম। তবে চিকিৎসকরা শেষ অবধি চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলেন , হাল ছাড়েননি ৷’ কিন্তু চেষ্টা সত্ত্বেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে চিকিৎসকরা হকিংয়ের স্ত্রী জেনকেও লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানান। তবে সে প্রস্তাবে অবশ্য রাজি হন নি জেন। পাঁচ দশক ধরে মোটর নিউরোনের ব্যাধির শিকার জগৎখ্যাত এই পদার্থবিদ। বিশেষজ্ঞদের মত, এই রোগে আক্রান্তরা বড়জোর বছর পাঁচেক বাঁচেন। তথ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে রোগের সঙ্গে হকিংয়ের লড়াইয়ের কাহিনি ৷ বেঁচে থাকার জন্য হকিংয়ের আর্তিও ফিরে এসেছে বারে বারে ৷

গত দু’দশকের সঙ্গী জেন বলেছেন, ‘হকিংয়ের এই ব্যাধি আমাদের ব্যক্তিজীবনের কৃষ্ণগহ্বর। যে গহ্বরে বাঁচার আশা হয়ত তলিয়ে যেতে পারত অনেক আগেই। কিন্তু সম্পর্কে আস্থা আর পরস্পরের প্রতি অগাধ ভালোবাসা তলিয়ে যেতে দেয় নি।’ তথ্যচিত্রে কর্মজীবনের চেয়ে হকিংয়ের ব্যক্তিজীবনকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ায় বিজ্ঞানীদের একাংশ অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি, বিজ্ঞানে অবদান ছাড়া হকিংয়ের জীবনকে দেখানো মানে বকলমে তাকেই গুরুত্বহীন করে তোলা৷ তবে তথ্যচিত্রে এমন কিছু তথ্যও পরিবেশিত হয়েছে, যা হকিংয়ের একটা অদেখা দিক আমাদের সামনে তুলে ধরে।

একটা পুরানো বাজিতে পরাজয়

১৯৯৭ সালে ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণ গহ্বরের বিষয়ে একটি বাজি ধরেছিলেন স্টিভেন হকিং। বাজিতে তার পক্ষে ছিলেন আর এক পদার্থ বিজ্ঞানী কিপ থর্ন এবং অন্য পক্ষে ছিলেন জন প্রেস্কিল। পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে এই বাজি "থর্ন-হকিং-প্রেস্কিল বাজি" নামে পরিচিত। প্রফেসর হকিং এবং থর্ন যুক্তি দেখালেন যে, যেহেতু সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ অনুসারে কৃষ্ণগহ্বর তার ঘটনা দিগন্তের ভেতরের কোনো কিছুই বাইরে আসতে দেয়না, এমনকি সেখান থেকে আলো পর্যন্ত বের হতে পারে না সেহেতু হকিং বিকিরণের মাধ্যমে বস্তুর ভর-শক্তির যে তথ্য পাওয়া যায় তা কোনো ক্রমেই কৃষ্ণগহ্বরের ভেতরের তথ্য নয়, তা নতুন, এবং যেহেতু এটি আবার কোয়ান্টাম বলবিদ্যার সাথে সাংঘর্ষিক সেহেতু কোয়ান্টাম বলবিদ্যা নতুন করে লেখা প্রয়োজন। অপরপক্ষে জন প্রেস্কিল যুক্তি দেখালেন , যেহেতু কোয়ান্টাম বলবিদ্যা বলে যে, এই তথ্য কৃষ্ণগহ্বর দ্বারা উৎসারিত এমন তথ্য যা কৃষ্ণগহ্বরের প্রথম দিককার কোনো অবস্থা নির্দেশ করে এবং সেহেতু সাধারণ অপেক্ষবাদ দ্বারা নির্ণীত কৃষ্ণগহ্বরের চলতি ধারণায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। দীর্ঘদিন পরে ২০০৪ সালে হকিং স্বীকার করেন যে তিনি বাজিতে হেরেছেন এবং মন্তব্য করেন যে, কৃষ্ণগহ্বরের উচিত তার দিগন্ত ভেঙে তথ্য নির্গমন করা এবং এটা করার জন্য তিনি মজা করে জন প্রেসকিল কে বেসবল সম্পর্কিত একটি সম্পূর্ণ বিশ্বকোষ উপহার দিয়েছিলেন যা প্রেস্কিলের কাছে হকিংয়ের মতে কৃষ্ণগহ্বর থেকে পাওয়া তথাকথিত তথ্যের মত অকাজের ঈঙ্গিতবহ। তবে কিপ থর্ন পরাজয় মানেননি এবং বাজিতে তার অংশের পুরস্কার দিতে রাজি হননি।

কম্পিউটার সিমুলেশন এর মাধ্যমে দেখা গেছে যে পঞ্চম বা ততোধিকমুখী একধরনের চিকন বৃত্তাকৃতির কৃষ্ণগহ্বর কালক্রমে তার বৃত্তের ওপর অনেকগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কৃষ্ণগহ্বরের জন্ম দিচ্ছে যার ফলে আইনস্টাইনের সাধারণ অপেক্ষবাদ ভেঙে পড়েছে।[১] ঘটনা দিগন্তের বাইরে অবস্থিত কৃষ্ণগহ্বরের এ ধরনের উপসর্গ বা "Naked Singularity" খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কেননা বাইরে থেকে তা পর্যবেক্ষণ করা যাবে।

ব্যক্তিগত মতাদর্শ

মানবজাতির ভবিষ্যৎ

২০০৬ সালে হকিং ইন্টারনেটে প্রশ্ন রাখেন: "রাজনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগতভাবে বিশৃঙ্খল এই পৃথিবীতে, মানবজাতি কীভাবে আরও ১০০ বছর ঠিকে থাকবে?" পরবর্তীতে তিনি বিষয়টি পরিষ্কার করে বলেন, "আমি এর উত্তর জানি না। এজন্যই আমি এই প্রশ্নটি করেছি, যাতে মানুষ এই বিষয় নিয়ে ভাবে এবং এখন আমরা যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি তা সম্পর্কে সতর্ক থাকে।"[৭৭]

হকিং উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন হঠাৎ পারমাণবিক যুদ্ধ, ভাইরাস, বিশ্ব উষ্ণায়ন, বা মানুষ ভাবেনি এমন বিপদ থেকে পৃথিবীতে মানুষ ও অন্যান্য প্রজাতির জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে।[৭৮][৭৯] যদি মানবজাতি অন্য কোন গ্রহে উপনিবেশ স্থাপন করতে পারে, তাহলে গ্রহ-ব্যাপী দুর্যোগের ফলে মানুষ বিলুপ্ত হবে না।[৭৯] হকিং বিশ্বাস করেন মানবজাতির ভবিষ্যতের জন্য মহাশূন্যে ভ্রমণ ও মহাশূন্যে উপনিবেশ স্থাপন করার প্রয়োজন।[৭৮][৮০]

বিজ্ঞান বনাম দর্শন

২০১১ সালে গুগলের জেইটজিস্ট সম্মেলনে হকিং বলেন "দর্শন মৃত"। তিনি মনে করেন দার্শনিকগণ "বিজ্ঞানের আধুনিক বিকাশের সাথে তাল মিলাতে পারেননি" এবং বিজ্ঞানীরা "আমাদের জ্ঞানের ক্ষুদা মেটাতে আবিষ্কারের আলোকবর্তিকা বহনকারী হয়ে ওঠেছেন"। তিনি বলেন দর্শন বিষয়ক সমস্যার সমাধান বিজ্ঞান দিয়ে দেওয়া সম্ভব, বিশেষ করে মহাবিশ্বের নতুন ও খুবই ভিন্ন রকমের চিত্র তুলে ধরতে নতুন বৈজ্ঞানিক তত্ত্বসমূহের ক্ষেত্রে এবং মহাবিশ্বে আমাদের অবস্থান" সম্পর্কিত সমস্যার সমাধান প্রদান সম্ভব।[৮১]

ধর্ম বিশ্বাস

নিজের বই বা বক্তৃতায় নানা প্রসঙ্গে হকিং “ঈশ্বর” শব্দটি ব্যবহার করেছেন।[৮২] তার স্ত্রীসহ অনেকে তাকে একজন নাস্তিক হিসাবে বর্ণনা করলেও[৮৩][৮৪] হকিং নিজে মনে করেন তিনি “সাধারণ অর্থে ধার্মিক নন” এবং তিনি বিশ্বাস করেন “দুনিয়া বিজ্ঞানের নিয়ম মেনেই চলে। এমন হতে পারে নিয়মগুলো ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন কিন্তু তিনি নিয়মের ব্যত্যয় ঘটানোর জন্য কখনো হস্তক্ষেপ করেন না”।[৮৫]

পুরস্কার ও সম্মাননা

স্বাধীনতা পুরস্কার দেবার আগে হোয়াইট হাউসে বারাক ওবামার সাথে সাক্ষাত, পিছনে আছেন নোবেল বিজয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস ও সাথে স্টিভেন হকিং

২০০৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বীয় কসমোলজি কেন্দ্রে হকিংয়ের একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়। প্রয়াত শিল্পী আয়ান ওয়াল্টার এটি তৈরি করেন।[৮৬] ২০০৮ সালের মে মাসে হকিংয়ের আর একটি আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন করা হয় দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউনে অবস্থিত আফ্রিকান ইনস্টিটিউট অব ম্যাথমেটিক্যাল সায়েন্সের সামনে। মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদর তাদের রাজধানী সান সালভাদরে বিজ্ঞান জাদুঘরটির নাম হকিংয়ের নামে রেখেছে।[৮৭]

এছাড়া তিনি তার কর্মক্ষেত্রে অবদানের জন্য নিম্নোক্ত পদক ও পুরস্কার অর্জন করেছেন।

  • অ্যাডামস পুরস্কার (১৯৬৬)
  • এডিংটন পদক (১৯৭৫)
  • ম্যাক্সওয়েল পদক ও পুরস্কার (১৯৭৬)
  • গাণিতিক পদার্থবিদ্যায় ড্যানি হাইনম্যান পুরস্কার (১৯৭৬)
  • হিউ পদক (১৯৭৬)
  • আলবার্ট আইনস্টাইন পদক (১৯৭৮)
  • রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির স্বর্ণ পদক (১৯৮৫)
  • ডিরাক পুরস্কার (১৯৮৭)
  • উলফ পুরস্কার (১৯৮৮)
  • প্রিন্স অব অ্যাস্টুরিয়াস পুরস্কার (১৯৮৯)
  • অ্যান্ড্রু গেম্যান্ট পুরস্কার (১৯৯৮)
  • নেলর পুরস্কার ও লেকচারশিপ (১৯৯৯)
  • লিলিয়েনফেল্ড পুরস্কার (১৯৯৯)
  • রয়্যাল সোসাইটি অব আর্টসের আলবার্ট পদক (১৯৯৯)
  • কপলি পদক (২০০৬)
  • প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম (২০০৯)
  • ফান্ডামেন্টাল ফিজিক্স পুরস্কার (২০১২)
  • বিবিভিএ ফাউন্ডেশন ফ্রন্টিয়ারস অব নলেজ পুরস্কার (২০১৫)}}

প্রকাশনাসমূহ

তাত্ত্বিক

চলচ্চিত্র ও ধারাবাহিক

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ