আতাকামা মরুভূমি

আতাকামা মরুভূমি (স্পেনীয় ভাষায়: Desierto de Atacama দেসিয়ের্তো দে আতাকামা) উত্তর চিলিতে অবস্থিত একটি শীতল, শুষ্ক, বৃষ্টিবিহীন মরুভূমি অঞ্চল। এটি পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগর উপকূলস্থিত পর্বতমালা কর্দিলেরা দে লা কোস্তা এবং পূর্বে আন্দেস পর্বতমালা দ্বারা আবদ্ধ। উত্তরে মরুভূমিটি তারাপাকা অঞ্চল হয়ে পেরু সীমান্ত পর্যন্ত চলে গেছে। এখানে একশ বছরে গড়ে তিন থেকে চার বার বৃষ্টিপাত হয়। অ্যাটাকামা মরুভূমি পৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক অ-মেরু মরুভূমি। [ক]পাশাপাশি এটি একমাত্র প্রকৃত মরুভূমি যেখানে মেরু-মরুভূমির চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়। আন্দিসের অনুর্বর নিম্ন ভুমিগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হলে আতাকামা মরুভূমি ১,০৫,০০০ কিমি (৪১,০০০ মা) জুড়ে বিস্তৃত। [৫] or ১,২৮,০০০ কিমি (৪৯,০০০ মা)[৬] মরুভূমিটি উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ১০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং এটির আয়তন প্রায় ৩৬৩,০০০ বর্গকিলোমিটার।

আতাকামা মরুভূম
'নাসা ওয়ার্ডউইন্ড' কর্তৃক ধারণ
আতাকামা মরুভূমির মানচিত্র: আতাকামা হিসাবে সর্বাধিক সংজ্ঞায়িত অঞ্চলটি হলুদ। কমলা রঙে দক্ষিণ চালা, আলটিপ্লানো, পুনা দে আতাকামা এবং নরতে চিকোর বহির্মুখী শুষ্ক অঞ্চল দেখানো হয়েছে।
আয়তন১,০৫,০০০ বর্গকিলোমিটার (৪১,০০০ বর্গমাইল)
ভূগোল
দেশচিলি
স্থানাঙ্ক২৪°৩০′ দক্ষিণ ৬৯°১৫′ পশ্চিম / ২৪.৫০০° দক্ষিণ ৬৯.২৫০° পশ্চিম / -24.500; -69.250
আতাকামা মরুভূমি

তাপীয় বিপরীতায়নের (thermal inversion) কারণেই আতাকামাতে বৃষ্টিপাত কম হয়। অ্যান্টার্কটিক অঞ্চল থেকে হামবোল্ট সমুদ্রস্রোত যে শীতল পানি বয়ে নিয়ে আসে, তা সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরিভাগের বায়ুকে শীতল করে, এবং গরম বায়ু উপরে উঠে যায়। এই উষ্ণ বায়ু আতাকামা মরুভূমিতে কুয়াশার ও স্ট্র‌্যাটাস মেঘের সৃষ্টি করে, কিন্তু বৃষ্টিপাত হয় না বললেই চলে। ফলে কতিপয় সেচকৃত মরূদ্যান ছাড়া আতাকামা মরুভূমিতে উদ্ভিজ্জ্জ্জ অত্যন্ত দোষ্প্রাপ্য। বিপরীতায়নের ফলে বিষুবরেখার কাছে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও আতাকামা মরুভূমির তাপমাত্রা কম। উদাহরণস্বরূপ, আতাকামা মরুভূমিতে অবস্থিত চিলির আন্তোফাগাস্তা শহরের তাপমাত্রা এবং ১৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত চিলির সান্তিয়াগো শহরের তাপমাত্রা মোটামুটি একই। গ্রীষ্মে এখানকার গড় তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মরুভূমিটি ১৯শ শতকের শেষ দিকে এসে বলিভিয়া, পেরু ও চিলির বিবাদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তিনটি দেশই এ অঞ্চলের মূল্যবান নাইট্রেট ও তামার ব্যাপারে আগ্রহী ছিল। আন্তোফাগাস্তার উত্তর-পূর্বে এবং ইকিক থেকে দেশের অভ্যন্তরভাগে সোডিয়াম নাইট্রেটের ভাণ্ডার ছিল। এই এলাকাগুলির অধিকাংশই প্রথমে বলিভিয়া ও পেরুর অধীনে ছিল, কিন্তু খনন শিল্পগুলিতে চিলির ব্যবসায়ীরা অনেক বিনিয়োগ করেছিলেন এবং তারা চিলির সরকারের সমর্থন পেতেন। প্রশান্ত মহাসাগরের যুদ্ধ (১৮৭৯-১৮৮৩) শেষে চিলি বিজয়ী হয়। আনকনের চুক্তির ফলে চিলি অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণে নেয়; বলিভিয়া তার সমগ্র পশ্চিম সমুদ্র উপকূল হারায়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগ পর্যন্ত চিলি এখান থেকে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করে এবং চিলির সম্পদের এক বিরাট অংশের যোগান দেয় এই মরভূমি। এসময় বিশ্বের নাইট্রেট ব্যবসায় চিলির ছিল একক আধিপত্য। নাইট্রেট শিল্পের বিকাশের সুবিধার্থে ইকিক, কালদেরা, আন্তোফাগাস্তা, তালতাল, মেহিয়োনেস, এবং উত্তরে পিসাগুয়াতে সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা হয়, এবং সেগুলি থেকে উপকূলীয় পর্বতমালার মধ্যে দিয়ে অভ্যন্তরভাগে মরভূমি পর্যন্ত রেলপথ তৈরি করা হয়। কোন কোন বছরে ৩০ লক্ষ টন নাইট্রেট নিষ্কাশন করা হত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর কৃত্রিম নাইট্রেটের উদ্ভাবন আতাকামা থেকে নাইট্রেট নিষ্কাশনে ভাটার সৃষ্টি করে এবং চিলি নাইট্রেটের একটি আঞ্চলিক বাজারে পরিণত হয়। ফলে চিলি সরকার তামার খনিশিল্পে মনোযোগ দেন। বর্তমানে এই তামার খনিগুলিই অঞ্চলটির মূল আয়ের উৎস।

মরুভূমিতে স্থানে স্থানে হাজার খানেক লোক কৃষিকাজে নিয়োজিত। পিকাতে লেবুর চাষ হয়। সান পেদ্রো দে আতাকামার লবণাক্ত জলাভূমিগুলিতেও চাষাবাদ হয়। চুকিকামাতার কাছে কালামাতে লোয়া নদীর পানি সেচ করে আলু ও আলফালফা চাষ করা হয়।

টীকা

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন