অ্যালকেন
জৈব রসায়নে, অ্যালকেন বা প্যারাফিন (একটি ঐতিহাসিক নাম যার আরও অর্থ আছে) হলো সম্পৃক্ত হাইড্রোকার্বন। এদেরকে প্যরাফিন বলা হয় কারণ এরা সাধারণত বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না। এরা অনেকটা নিষ্ক্রিয়। অ্যালকেনে সাধারণত শক্তিশালী সিগমা বন্ধন বিদ্যমান থাকে। অ্যালকেন শুধুমাত্র হাইড্রোজেন এবং কার্বন পরমাণূ দ্বারা গঠিত যারা একক বন্ধনে আবদ্ধ থাকে।[১] অ্যালকেনের (কার্যত যা সর্বদাই চক্রবিহীন) সাধারণ রাসায়নিক সংকেত হলো CnH2n+2। অ্যালকেনসমূহ জৈব যৌগের একটি সমগোত্রীয় শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত যাতে প্রতিটি সদস্যের আণবিক ভরের পার্থক্য হয় ১৪.০৩ একক (একটি মিথ্যানিডাইল গ্রুপ (—CH2—) এর ভর; একটি কার্বন পরমাণু, ১২.০১ একক এবং দুইটি হাইড্রোজেন পরমাণু, প্রতিটি প্রায় ১.০১ একক)। অ্যালকেনের বাণিজ্যিক উৎস প্রধানত দুইটি: অপরিশোধিত তেল[২] এবং প্রাকৃতিক গ্যাস।
অ্যালকেন প্রস্তুতি
পরীক্ষাগারে সাধারণত কার্বক্সিলিক এসিড-এর সোডিয়াম লবণ-এর সাথে সোডালাইম মিশ্রণকে তীব্রভাবে উত্তপ্ত করলে অ্যালকেন উৎপন্ন হয়। এখানে সোডালাইমের তীব্র ক্ষার সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড কার্বক্সিলিক এসিডের সোডিয়াম লবণের অণু থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড-কে সোডিয়াম কার্বনেট হিসেবে অপসারণ করে অর্থাৎ ডিকার্বক্সিলেসন ঘটিয়ে অ্যালকেন উৎপন্ন করে।
- R—COONa+NaOH(CaO)→R—H+Na
2CO
3(CaO)
[গাড় কস্টিক সোডা (NaOH) দ্রবনে চুন (Cao) উত্তমরূপে মিশিয়ে উত্তাপের সাহায্যে মিশ্রণ থেকে পানি অপসারণ করে প্রাপ্ত সোডালাইম প্রধানত কস্টিক সোডার কাজ করে। সোডালাইম স্বচ্ছিদ্র, সহজে গলে না। তাই কাচ পাত্রে জমাট বাঁধে না এবং উৎপন্ন গ্যাস সহজেই বের হতে পারে।]শিল্প ক্ষেত্রে কার্বন মনোক্সাইড ও হাইড্রোজেন-এর মিশ্রণ ৩০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপামাত্রায় উত্তপ্ত নিকেল চূর্ণের ওপর দিয়ে চালনা করলে মিথেন উৎপন্ন হয়।কার্বন মনোক্সাইড এবং স্টিম অর্থাৎ জলীয় বাষ্পকে ২৫০-২৭০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় নিকেল কার্বনেট প্রভাবকের উপর দিয়ে চালনা করে মিথেনের শিল্পোৎপাদন করা হয়।
- CO+3H
2→CH
4+H
2O
CH2=CH2+H2=CH3-CH3