গ্লুকোমা
গ্লুকোমা হলো চোখের একপ্রকার রোগ যাতে অপটিক স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও চোখ অন্ধ হয়ে যায়।[১] গ্লুকোমা অনেক প্রকারের হয় যেমন ওপেন অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা, ক্লোজড অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা, নরমাল টেনশন গ্লুকোমা অন্যতম । ওপেন অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা ধীরে ধীরে হয় ফলে চোখে ব্যথা অনুভূত হয় না। চিকিৎসা না করালে প্রথমে পার্শ্বীয় দৃষ্টি, তারপর কেন্দ্রীয় দৃষ্টি নষ্ট হয়ে অন্ধত্ব বরণ করতে হয়।[১] ক্লোজড অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা ধীরে ধীরে বা হঠাৎ করে হতে পারে। [২] এর লক্ষণগুলো হলো চোখে তীব্র ব্যথা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, ঝাপসা দৃষ্টি, চোখের মণি বা তারারন্ধ্র বড়ো হয়ে যাওয়া, বমিভাব। [১][২] গ্লুকোমার কারণে দৃষ্টিশক্তি কমে গেলে তা স্থায়ীভাবে কমে।[১]
গ্লুকোমা | |
---|---|
বিশেষত্ব | চক্ষুচিকিৎসাবিজ্ঞান |
এই রোগের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ (intraocular pressure) বেড়ে যাওয়া, পরিবারের অন্য সদস্যের এই রোগ থাকা, উচ্চ রক্তচাপ, অতিস্থুলতা ইত্যাদি।[১][৩] ইন্ট্রাওকুলার প্রেসার ২১ মি.মি. পারদ চাপের বেশি থাকলে গ্লুকোমার আশঙ্কা বেশি। তবে চোখের চাপ স্বাভাবিক থাকলেও গ্লুকোমা হতে পারে যেমন নরমাল-টেনশন গ্লুকোমা। [৪]
রোগের প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা শুরু করলে দৃষ্টিশক্তি অটুট রাখা সম্ভব।[১] ওষুধের মাধ্যমে চোখের চাপ স্বাভাবিক রাখা হয়।গ্লুকোমা চিকিৎসায় অনেক রকম ওষুধ রয়েছে। এছাড়া কিছুক্ষেত্রে লেজারের মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়া যায়। ওষুধে ভালো না হলে বিভিন্ন সার্জিক্যাল পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।[২] ক্লোজড অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমার চিকিৎসা জরুরি ভিত্তিতে করতে হবে।[১]
সারাবিশ্বে প্রায় ৬৭ মিলিয়ন লোক গ্লুকোমায় আক্রান্ত। [২][৫]সাধারণত বয়স্ক লোকের বেশি হয়। ক্লোজড অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা মহিলাদের বেশি হয়।[৬] সারাবিশ্বে ছানির পরে গ্লুকোমা অন্ধত্বের দ্বিতীয় কারণ।[২][৭] গ্লুকোমা (glaucoma) শব্দটি প্রাচীন গ্রিক glaukos থেকে এসেছে যার অর্থ নীল, সবুজ বা ধূসর। [৮] ইংরেজিতে শব্দটির ব্যবহার শুরু হয় ১৫৮৭ সাল থেকে তবে ১৮৫০ সাল থেকে অফথালমোস্কোপের ব্যবহার শুরু হলে এই শব্দটির ব্যবহার ব্যাপকতা লাভ করে।[৯]