যিহোবার সাক্ষী

(জেহোভার সাক্ষী থেকে পুনর্নির্দেশিত)

যিহোবার সাক্ষীরা বা যিহোবার সাক্ষী একটি সহস্রাব্দ ব্যাপী ধর্মচেতনতা সংরক্ষণবাদে বিশ্বাসী বিভক্ত খ্রিস্টান ধর্মগোষ্ঠী যারা  একেশ্বরবাদে বিশ্বাস করে, যা প্রচলিতধারার ত্রয়ী স্বত্তা মর্মভাবের খ্রিস্ট ধর্ম হতে ভিন্ন।[১] এই দলের দাবী মতে বিশ্বব্যাপী ৮৬ লাখ জনসংখ্যা অনুমিত ভাবে ধর্ম প্রচার বা চর্চা করে থাকে,[২] ১৫ মিলিয়ন লোক এ প্রথায় বিশ্বাসী, ২বং ধর্মসভায় ২০.৯ মিলিয়নের অধিক লোক জড়ো হয়।[৩]

জেহোভার সাক্ষী ধর্মমতটি পরিচালিত হয় কতৃত্বকারী সভ্যদের দ্বারা, যারা হলেন ব্রুকলিন, নিউইয়র্ক এ অবস্থানকারী প্রবীণ সদস্য, তারাই সকল নিয়ম-কানুন প্রণয়ন করেন[৪] বাইবেলের ভাবার্থানুসারে। [৫] তাদের নিজস্ব অনুদিত গ্রন্থ New World Translation of the Holy Scriptures কে তারা প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।[৬] এছাড়া ও তাতে অন্যান্য অনুবাদ হতে কদাচিৎ উদ্ধৃত করা হয়।[৭] তারা বিশ্বাস করেন মহাপ্রলয়ের দিনে ধংস অবশ্যম্ভাবী এবং অনিবার্য, এবং পৃথিবীতে ঈশ্বর এর রাজত্ব প্রতিষ্ঠা হচ্ছে মানব জীবনের সম্মুখীন হওয়া সকল অনাকাঙ্খিত সমস্যার একমাত্র সমাধান।[৮]

এই ধর্মমতের উদ্ভাবন হয় "বাইবেল স্টুডেন্ট মুভমেন্ট" নামীয় কট্টর বাইবেল অনুসারী গোষ্ঠীর দ্বারা, ১৮৭০ সালে চার্লস টেজ রাসেল কর্তৃক "জিওন'স ওয়াচ টাওয়ার ট্র্যাক্ট সোসাইটি" প্রতিষ্ঠার পর জোসেফ ফ্রাংকলিন রাদারফোর্ড এর নেতৃত্বে যার উল্লেখযোগ্য সাংগঠনিক ও মৌলিক নীতির পরিবর্তন সাধিত হয়।.[৯][১০] Jehovah's witnesses বা "জেহোভার সাক্ষী" শীর্ষক নামটি[১১] ১৯৩১ সালে বেছে নেয়া হয় যা বাইবেল অনুসারী অন্য উপদল ও চার্লস টেজ রাসেল এর মতবাদ হতে পৃথক করে ।[১২][১৩][১৪]

জেহোভার সাক্ষী অনুসারীদের দেখা যায় ঘরে ঘরে গিয়ে ধর্মপ্রচার করতে এবং এজন্য তারা সুবিদিত। তারা বিভিন্ন বই-প্রচারপত্র বিলি করে থাকে, যেমন- The WatchtowerAwake!। এছাড়া তারা "সামরিক চাকরি" ও রক্ত দান কে প্রত্যাখ্যান করে থাকে। জেহোভা শব্দটি ব্যতীত কোন প্রার্থনা সঠিক হয়না বলে তাদের মধ্যে দৃঢ়বিশ্বাস বিদ্যমান। এতদসত্ত্বেও তারা ত্রয়ী স্বত্তাতে ঈশ্বরের সন্ধান, পরলোকে মানবাত্মার অমরত্ব প্রাপ্তি ও নরকাগ্নি ইত্যাদিতে বিশ্বাস করেনা। বরং এগুলোকে ধর্মগ্রন্থ বহির্ভূত অনাচার বলে সাব্যস্ত করে। এছাড়া তারা ক্রিসমাস, ইস্টার, জন্মদিন জাতীয় যাবতীয় উৎসব পালনে বিরত থাকেন। কারণ এসব রীতি একটি প্রাচীন একেশ্বরবাদের ধ্যানধারনা থেকে উদ্ভূত ও খ্রিষ্ট ধর্ম বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক বলে বিবেচনা করেন।[১৫] এজন্য তারা কেবল নিজেদেরই সত্যাচারী বলে বিশ্বাস করেন এবং এ ধর্ম কে সত্য বলে থাকেন।[১৬] তারা মনে করেন ধর্ম নিরপেক্ষ সমাজ -বিশ্বাসের দিক থেকে শয়তান এর অনুগামী ও তা উত্তম হতে পারেনা তাই তারা নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে রাখতে চান।[১৭] তাদের "সম্মিলিত নিয়মানুবর্তা সভ্য" কোন অনুসারীকে শাস্তি হিসেবে অনুসারীত্ব বাতিল করে থাকেন, যার ফলে বহিস্কার ও বিতাড়ন করা হয়ে থাকে।[১৮] এছাড়া কোন পূর্ব হতে দীক্ষিত অনুসারী চাইলে অনুসারীত্ব বাতিল করতে পারেন ও পরে তা যোগ্যতা সাপেক্ষে পুনঃবহাল করার বিধান রয়েছে।[১৯]

জেহোভার সাক্ষী অনুসারীদের জ্ঞাতসারেই "সামরিক চাকরি" ও জাতীয় পতাকাকে সম্মান প্রদর্শন পূর্বক কেতা পালন এবং মানবদেহে রক্ত সঞ্চালন কে প্রত্যাখ্যান করে থাকে। অতীতে এ কারণে রাষ্ট্র কর্তৃক তাদের কে নিষেধাজ্ঞা ও বিচারের সম্মুখীন হতে হয়েছে। ধারাবাহিক আইন প্রয়োগের ও সমনের কারণে বিভিন্ন দেশে নাগরিক অধিকারের ভুক্তিতে এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।[২০]

জেহোভার সাক্ষী ধর্মমতটি বাইবেক্লের অনুবাদ, অনন্য নীতিমালা, সদস্যের উপর পরিচালিত দমন নীতি, যৌন নির্যাতন কেলেঙ্কারী ইত্যাদি বিতর্কের সম্মুখীন হয়। এসমস্ত অভিযোগ কে তাদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা অস্বীকার করেছেন। কিছু বিষয় নিস্পত্তির জন্য বিচারিক আদালতে তোলা হয় আর কিছু বিষয় ধর্মীয় পন্ডিতদের হাতে ন্যাস্ত হয়।

মানবদেহে রক্ত সঞ্চালনকে প্রত্যাখ্যান

জেহোভার সাক্ষীরা মানবদেহে রক্ত সঞ্চালনকে প্রত্যাখ্যান করে থাকে। এর কারণ হল এ কাজে তারা তাদের নিজস্ব অনুবাদের মতে ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করার সমতুল্য মনে করে।[২১][২২][২৩] ১৯৬১ সাল হতে এই ধারা অমান্য কারীকে অনুসারীত্ব হতে নিস্কৃতি দেয়া হয়।[২৪][২৫] এরুপ বিধি-নিষেধ মুমূর্ষু রোগীর জন্য ও বহাল থাকে।[২৬][২৭][২৮] এমতাবস্থায় তারা বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি বেছে নেয় যাতে রক্ত সঞ্চালন এড়ানো যায়। এ ব্যাপারে তাদের পুস্তক সমুহে উপদেশাবলী সন্নিবেশিত আছে।[২৯] তবে তারা রক্তের প্লাজমা বা মাতৃকাকে চিকিৎসা কার্যে শরীরে প্রবেশ করাতে পারে। এছাড়া তারা পূর্বেই একটি পত্রে ঘোষণা লিপিবদ্ধ করে যাতে তার ইচ্ছামাফিক উপাদানকে চিকিৎসা চলাকালে প্রয়োগ করা যায়। তবে তা গ্রহণ যোগ্যতার যে তালিকা থাকে তার অন্তর্ভুক্ত হতে হবে।[৩০][৩১][৩২] ওয়াচ টাওয়ার নামের কর্তা ব্যক্তিদের প্রতিষ্ঠান টি এ বিষয় টি নির্ধারণ করে।[৩৩][৩৪] এরপরেও তারা একটি কমিটি গঠন করে যারা হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ করার বিষয়টি দেখভাল করেন।[৩৫][৩৬]

ওয়েবসাইট


তথ্যসূত্র

উদ্ধৃতিসমূহ
🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ