মেসুত ওজিল
মেসুত ওজিল (জার্মান উচ্চারণ: [ˈmeːzut ˈøːzil], তুর্কি: [me̞ˈsut ˈø̞zil]; জন্ম অক্টোবর ১৯৮৮) একজন জার্মান মুসলিম ফুটবলার যিনি অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে খেলে থাকেন। ওজিল ২০০৬ সাল থেকে জার্মানির বয়সভিত্তিক দল এবং ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত জার্মানি জাতীয় ফুটবল দলে খেলেছেন। ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপের পারফর্মেন্সের মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবল মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হন এবং গোল্ডেন বল অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত করা হয়, যা টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়কে দেয়া হয়। ওজিল ২০০৬ সালে তার বরিষ্ঠ(সিনিয়র) ক্যারিয়ার শুরু করেন বুন্দেসলিগায় তার আদি শহরের ক্লাব শার্লকে ০৪ এর হয়ে। ২০০৮ সালে তিনি ওয়ের্ডার ব্রেমেনে চলে আসেন এবং ২০১০ সালে বিশ্বকাপে তার দারুণ পারফর্মেন্সে মুগ্ধ হয়ে রিয়াল মাদ্রিদ ওই বছরের আগস্ট মাসে তাকে দলে নেয়।২০১৩ সালের সামার ট্রান্সফার উইন্ডোর শেষ দিনে আর্সেনাল তাদের ক্লাব রেকর্ড £৪২.৫ মিলিয়ন ইউরোর মাধ্যমে তাকে দলে নিয়ে আসে।[৪][৫][৬][৭] এর মাধ্যমে তিনি জার্মানির সর্বকালের সবচেয়ে দামী খেলোয়াড় হন। ওজিল জার্মানির হয়ে ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ জয় করেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | মেসুত ওজিল[১] | |||||||||||||||||||
জন্ম | ১৫ অক্টোবর ১৯৮৮ | |||||||||||||||||||
জন্ম স্থান | জেলসেনকির্সেন, পশ্চিম জার্মানি | |||||||||||||||||||
উচ্চতা | ১.৮১ মি (৫ ফু ১১ ইঞ্চি)[২][৩] | |||||||||||||||||||
মাঠে অবস্থান | অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার | |||||||||||||||||||
যুব পর্যায় | ||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||
১৯৯৫–১৯৯৮ | ওয়েস্টফালিয়া ০৪ জেলসেনকির্সেন | |||||||||||||||||||
১৯৯৮–১৯৯৯ | টিউটোনিয়া শালকে-নর্ড | |||||||||||||||||||
১৯৯৯–২০০০ | ফালকে জেলসেনকির্সেন | |||||||||||||||||||
২০০০–২০০৫ | রট-উইস এসেন | |||||||||||||||||||
২০০৬-২০০৬ | শালকে ০৪ | |||||||||||||||||||
২০০৮–২০১০ | ওয়ের্ডার ব্রেমেন | ৭১ | (১৩) | |||||||||||||||||
২০১০–২০১৩ | রিয়াল মাদ্রিদ | ১০৫ | (১৯) | |||||||||||||||||
২০১৩–২০২১ | আর্সেনাল | ১৮৪ | (৩৩) | |||||||||||||||||
২০২১–২০২২ | ফেনারবাহচে | ৩২ | (৮) | |||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||
বছর | দল | ম্যাচ | ||||||||||||||||||
২০০৬–২০০৭ | জার্মানি অনূর্ধ্ব ১৯ | ১১ | (৪) | |||||||||||||||||
২০০৭–২০০৯ | জার্মানি অনূর্ধ্ব ২১ | ১৬ | (৫) | |||||||||||||||||
২০০৯–২০১৮ | জার্মানি | ৯২ | (২৩) | |||||||||||||||||
অর্জন ও সম্মাননা
|
ওজিল তার সহজসুলভ খেলার ধরন ও তাৎক্ষনিক চতুরতা জন্যে পরিচিত। তার শৈলী ও অন্য খেলোয়াড়কে গোলদানে সহায়তা করার ক্ষমতার জন্য রিয়াল মাদ্রিদের প্রাক্তন ম্যানেজার জোসে মরিনহো তাকে জিনেদিন জিদানের সাথে তুলনা করেছেন। ২০১১ সালে ২৫টি গোলে সহায়তা প্রদান করার মাধ্যমে তিনি সকল প্রধান ইউরোপিয়ান লিগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোলে সহায়তা করেন। ২০১২ সালে লা লিগায় তিনি ১৭টি গোলে সহায়তা প্রদান করেন।[৮][৯] তিনি ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপ ও ২০১২ উয়েফা ইউরোপিয়ান লিগে ৩টি গোলে সহায়তা করেন যা ছিল টুর্নামেন্টগুলোর সর্বোচ্চ।
ক্লাব ক্যারিয়ার
জেলসেনকির্সেন এবং রট-উইস এসেন
ওজিল প্রথমদিকে জেলসেনকির্সেনের বিভিন্ন যুবক্লাবে খেলেন। এরপর তিনি ৫ বছর রট-উইস এসেনের হয়ে খেলেন।
শালকে ০৪
২০০৫ সালে ওজিল শালকে ০৪ এর যুবদলে চলে আসেন। সেখানে তিনি একজন মিডফিল্ডার হিসেবে ১৭নং জার্সি পরে খেলেন[১০] দাবী করে যে € ১.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেতন যথেষ্ট হবে না, তিনি শেষ পর্যন্ত ক্লাব পরিচালনার সাথে পড়ে যান এবং জানুয়ারী ২008 সালে ওয়ারার ব্রেমেনে চলে যান। [11] এর ফলে মিরকো স্লোমকা, তারপর-শালকে ০৪ পরিচালকের নেতৃত্বে, দাবি করে যে ওজিল শালকে ০৪ এর জন্য আরেকটি ম্যাচ খেলবেন না। [12] ক্লাব কর্তৃপক্ষের সাথে বনিবনা না হওয়ায় ২০০৮ সালে তিনি শালকে ছেড়ে ওয়ের্ডার ব্রেমেনে চলে যান[১১]
ওয়ের্ডার ব্রেমেন
৩১ জানুয়ারি ২০০৮ সালে €৪.৩ মিলিয়ন ট্রান্সফার ফির মাধ্যমে তিনি ওয়ের্ডার ব্রেমেনে আসেন, তার চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০১১ সালের ৩০শে জুন পর্যন্ত।[১২] তিনি তার দলকে ২০০৯ ডিএফবি পোকাল জেতাতে ও উয়েফা কাপের ফাইনালে তুলতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন।[১৩][১৪] ২০০৮-০৯ সালের বুন্দেসলিগায় ব্রেমেন ভাল না করতে পারলেও(১০ম স্থান), ওজিল প্রতিটি খেলায়ই তার প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন এবং ৩টি গোল ও ১৫টি গোলে সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে তার যোগ্যতা তুলে ধরেন।[১৪] ২০০৯-১০ মৌসুমে ব্রেমেন বুন্দেসলিগায় সম্মানজনক ৩য় স্থান লাভ করে; ওজিল ওই মৌসুমে ৩১ খেলায় ৯টি গোল ও ১৭ টি গোলে সহায়তা প্রদান করে।
রিয়াল মাদ্রিদ
২০১০-১১ মৌসুম
২০১০ সালের বিশ্বকাপে তার অবদানের মাধ্যমে ওজিল ইউরোপের শীর্ষ প্রতিভাবান তরুণ হিসেবে নিজেকে ফুটবল জগতে তুলে ধরেন। ফলে ইউরোপের বড় বড় ক্লাবগুলো তাকে দলে ভিড়ানোর জন্যে উঠেপড়ে লাগে। এমনকি বার্সেলোনা তাকে নিজেদের দলে ভিড়িয়েছেন এমন গুজবও শোনা যায়। কিন্তু ওয়ের্ডার ব্রেমেন এমন গুজব নাকচ করে দেয়। ২০১০ সালের ১৭ই আগস্ট ক্লাবটি জানায় যে তারা রিয়াল মাদ্রিদের সাথে ওজিলের দলবদলের ব্যাপারে একমত হয়েছে।[১৫] ধারণা করা হয় তার জন্যে রিয়াল ১৫ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে।[১৬] ক্লাবটিতে যোগদান করার পর তিনি বলেন, "যখন রিয়াল মাদ্রিদে যোগদানের প্রস্তাব আসে তখন কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার ছিল না। সত্য বলতে গেলে আপনি কখনই ক্লাবটিকে না বলতে পারবেন না। আমি ওয়ের্ডার ব্রেমেন ছেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে কোন তাড়ায় ছিলাম না। কিন্তু রিয়াল এমনি একটি ক্লাব যেখানে আমাকে হ্যাঁ বলতেই হত। তারা একটি প্রতিষ্ঠান যাদের চমৎকার ইতিহাস রয়েছে, বিশ্বমানের খেলোয়াড় আর স্টেডিয়াম রয়েছে। সুযোগটি এতই চমৎকার ছিল যে আমি সেটি লুফে নিতে ঝাঁপিয়ে পড়ি।"[১৭]
তার অভিষেক ঘটে ২২শে আগস্ট হারকিউলিসের বিপক্ষে যেখানে রিয়াল মাদ্রিদ ৩-১ গোলে জয়ী হয়।[১৮] মৌসুম শুরুর পূর্বে তার জার্সি নাম্বার প্রায়ই পরিবর্তিত হত। প্রাক-মৌসুম ম্যাচগুলোতে তাকে ২৬ নাম্বার জার্সি দেয়া হয় এবং মৌসুমের অভিষেক খেলায় তাকে ১৯ নাম্বার জার্সি দেওয়া হয়। কিন্তু রাফায়েল ফন দার ভার্টের টটেনহামে চলে যাওয়ার পর তার ২৩ নম্বর জার্সি ওজিলকে দেয়া হয়।ওজিলকে কাকার পরিবর্তী খেলোয়াড় হিসেবে আনা হয়। কিন্তু কাকা ইনজুরিতে পড়লে তাকে শুরু থেকে খেলানো হয়। লা লিগায় তার অভিষেক হয় মায়োরকার বিপক্ষে যেখানে তিনি ৬২তম মিনিটে দি মারিয়ার পরিবর্তন হিসেবে মাঠে নামেন। খেলাটি ০-০ গোলে ড্র হয়।[১৯]
উয়েফা চ্যাম্পিয়ান্স লিগে তার অভিষেক ঘটে ১৫ই সেপ্টেম্বর। ম্যাচটিতে তিনি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে প্রথম গোলে সহায়তা করেন ৭৪তম মিনিটে যখন তিনি হিগুয়েইনকে ক্রস করেন।[২০] ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সহ ক্লাব ছেড়ে যাচ্ছেন এমন কয়েকজন রিয়াল মাদ্রিদ খেলোয়াড়েরা অসন্তুষ্ট ছিলেন, যিনি বলেন, "তিনি এমন খেলোয়াড় ছিলেন যিনি লক্ষ্যের সামনে আমার চলাফেরা সম্পর্কে ভালভাবেই জানতেন ... আমি ওজিলে চলে যাওয়া সম্পর্কে রাগ করি।" [45]
আর্সেনাল
২০১৩-১৪ মৌসুম
২ সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে ওজিল ইংলিশ ফুটবল দল আর্সেনালের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন।[৪] যদিও এই চুক্তির মেয়াদ ও ফির অর্থের ব্যপারে অফিসিয়ালি কোন তথ্য দেয়া হয়নি তবুও তা £৪২.৫ মিলিয়ন ও ৫ বছর মেয়াদী বলে ধারণা করা হয়।[৫] এর মাধ্যমে তিনি জার্মানির সর্বকালের সবচেয়ে দামী খেলোয়াড় হন।[৬] আর্সেনাল দলে তাকে ১১নং জার্সি ও সেন্টাল অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের ভূমিকা দেয়া হয়।[৭]
ট্রান্সফার প্রসঙ্গে ওজিল বলেন: “সপ্তাহের শেষের দিকে, আমি নিশ্চিত ছিলাম আমি রিয়াল মাদ্রিদে থাকব কিন্তু আমি দেখলাম যে আমার কোচ ও মালিকের আমার প্রতি সেই বিশ্বাসটি নেই। আমি একজন খেলোয়াড় যার জন্যে ওই বিশ্বাসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল যা আমি মনে করেছি আর্সেনালের আমার প্রতি ছিল, এটাই ছিল সেই কারণ যা আমাকে আর্সেনালে আসতে প্রভাবিত করেছে।"[২১] রিয়াল মাদ্রিদের অনেক খেলোয়াড় তার এই দল থেকে চলে যাওয়ার ঘটনায় অসন্তুষ্ট ছিলেন, যেমন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো যিনি বলেন: "সে একজন খেলোয়াড় যে গোলের আগে আমার পদক্ষেপগুলো জানতো…তার চলে যাওয়া নিয়ে আমি অত্যন্ত অখুশি।"[২২]
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে সান্ডারল্যান্ডের সাথে লিগ খেলায় আর্সেনালের হয়ে তার অভিষেক ঘটে। এই খেলার ১১ মিনিটে অলিভার জিরার্ডের গোলে তিনি সহায়তা করেন এবং আর্সেনাল খেলায় ৩-১ গোলে জয়লাভ করে।[২৩][২৪] এর তিনদিন পর মার্সেইএর বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আর্সেনালের হয়ে তার অভিষেক ঘটে।[২৫] ক্লাবে হয়ে অভিষেক ঘটার ৩ সপ্তাহ পর স্টোক সিটির বিরুদ্ধে আর্সেনালের হয়ে আর্সেনালের ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে তিনি তার প্রথম ম্যাচ খেলেন। খেলায় আর্সেনাল ৩-১ গোলে জয়লাভ করে যার তিনটি গোলেই তার অবদান ছিল।[২৬] আর্সেনালের হয়ে তিনি তার প্রথম গোল করেন নাপোলির বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেলায়। [২৭] প্রিমিয়ার লিগে তিনি তার প্রথম জোড়া গোল করেন নরউইচ সিটির বিরুদ্ধে যা আর্সেনাল ৪-১ গোলে জেতে।[২৮]
১৪ ডিসেম্বর ২০১৩ সালে, ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে ৬-৩ গোলে হেরে যাওয়ার খেলায় তিনি তার সতির্থ পার মার্টেস্যাকারের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। মার্টেস্যাকার গোল করার পর তাদের সফররত সমর্থকদের স্যালুট না দেয়ায় ওজিলের প্রতি ক্ষুদ্ধ হন।[২৯] যদিও ওজিল এই ঘটনার জন্য পরবর্তীকালে সমর্থকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার
ক্যারিয়ারের সূচনা
ফোরফোরটু ম্যাগাজিনের সাথে ওজিল তার এক সাক্ষাৎকারে ওজিল তার জার্মানির হয়ে খেলার সিদ্ধান্তের ব্যপারে বলেন: "জার্মানিতে আমি আমাদের তৃতীয় প্রজন্ম: আমার বাবা এখানে বেড়ে উঠেছেন। তুরস্ক আমার জন্য সর্বদাই একটি বিশেষ দেশ, কিন্তু আমি কখনোই জার্মানির হয়ে খেলার ব্যপারে সংশয়ে ছিলাম না। এই জন্যই আমি জার্মানির যুবদলে খেলা শুরু করি।"[৩০]
২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে ওজিল জার্মানি অ১৭ দলের জন্য ডাক পান।২০০৭ সাল হতে ওজিল জার্মানি অ২১ দলের হয়ে খেলেন। ২৯ জুন ২০০৯ সালে, ২০০৯ উয়েফা ২১ চ্যাম্পিয়নশিপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনি ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত।[১১]
১১ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ সালে নরওয়ের বিরুদ্ধে এক প্রীতি ম্যাচে জাতীয় দলের হয়ে তার অভিষেক ঘটে। জাতীয় দলের হয়ে তার তৃতীয় খেলায়, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে, তিনি তার প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করেন। সেই ম্যাচে, ৮টি গেল করেন, ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে ওজিল, তার ভাল খেলার পুরস্কারস্বরূপ ২০০৯-১০ সালের বুন্দেসলিগার প্রথমার্ধে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন।[৩১]
২০১০ ফিফা বিশ্বকাপ
ওজিল দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপের জন্য জার্মানি জাতীয় দলে জায়গা পান এবং প্রতিটি খেলায় প্রথম একাদশে খেলেন।অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বে ৪-০ গোলে জয়লাভের খেলায় কাকাউ এর গোলে সহায়তা প্রদান করেন। ঘানার বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বের শেষ খেলায় তার একমাত্র গোলে জার্মানি ১-০ গোলে জয়লাভ করে, যা জার্মানির ২য় পর্বে যাওয়া নিশ্চিত করে।[৩২]
২৭ জুন ২০১০ সালে বিশ্বকাপের শেষ ১৬ তে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলায় থমাস মুলারের একটি গোলে সহায়তা করেন; জার্মানি খেলাটি ৪-১ গোলে জেতে।[৩৩] আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলায় জার্মানির ৪-০ গোলে জয়লাভের খেলায় ২য় গোলে মিরোস্লাভ ক্লোসকে সহায়তা করেন। ফিফা তাকে গোল্ডেন বল অ্যাওয়ার্ডের জন্য নির্বাচিত সেরা ১০ এর তালিকায় রাখে।
২০১২ উয়েফা ইউরো
২০১২ উয়েফা ইউরোর বাছাইপর্বের জন্য তিনি জার্মানির অন্যতম শক্তি ছিলেন। বাছাইপর্বে ৫ গোল করেন এবং জার্মানি ১০ খেলায় ১০টিতেই জিতে প্রধান প্রতিযোগিতায় তাদের অবস্থান নিশ্চিত করে।[৩৪] বাছাইপর্বে তিনি তার পাস দেয়ার ক্ষমতার প্রমাণ রাখেন ৭টি গোলে সহায়তা করার মাধ্যমে যা অন্য যে কার চেয়ে বেশি ছিল।[৩৫][৩৬] ২০১২ ইউরোতে জার্মানির সম্ভবনা সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "আমাদের যেকোনো দলকে হারানোর এবং শিরোপা জেতার জন্য যা কিছু থাকার দরকার তা আমাদের আছে।"[৩৭]
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ সালে, ফ্রান্সের বিরুদ্ধে খেলার প্রাক্কালে তাকে ২০১১ সালের জার্মানির সেরা খেলোয়াড়য়ের সম্মাননা দেয়া হয়।[৩৮][৩৯] ওজিলের জার্মানি ২০১২ ইউরোতে নেদারল্যান্ড, ডেনমার্ক এবং পর্তুগালের সাথে একই গ্রুপ, গ্রুপ বিতে ছিল যাকে "গ্রুপ অফ ডেথ" বলা হচ্ছিল। [৪০] টুর্নামেন্টে তিনি তার পারফর্মেন্সের দরুন ২টি খেলায় ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ পুরস্কার লাভ করেন।[৪১]
২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ
২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ওজিল ৮টি গোল করার মাধ্যমে বাছাইপর্বের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। [৪২]
ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান
ক্লাব
ক্লাব | মৌসুম | লিগ | কাপ | লিগ কাপ | ইউরোপ | অন্যান্য | সর্বমোট | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
বিভাগ | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | ||
শার্লকে ০৪ | ২০০৬-০৭[৪৩] | বুন্দেসলিগা | ১৯ | ০ | ১ | ০ | ২ | ০ | ১ | ০ | — | ২৩ | ০ | |
২০০৭-০৮[৪৪] | বুন্দেসলিগা | ১১ | ০ | ১ | ১ | ০ | ০ | ৪ | ০ | — | ১৬ | ১ | ||
সর্বমোট | ৩০ | ০ | ২ | ১ | ২ | ০ | ৫ | ০ | — | ৩৯ | ১ | |||
ওয়ের্ডার ব্রেমেন | ২০০৭-০৮[৪৫] | বুন্দেসলিগা | ১২ | ১ | ০ | ০ | ০ | ০ | ২ | ০ | — | ১৪ | ১ | |
২০০৮-০৯[৪৬] | বুন্দেসলিগা | ২৮ | ৩ | ৫ | ২ | — | ১৪ | ০ | — | ৪৭ | ৫ | |||
২০০৯-১০[৪৭] | বুন্দেসলিগা | ৩১ | ৯ | ৫ | ০ | — | ৮ | ০ | — | ৪৪ | ১১ | |||
২০১০-১১[৪৮] | বুন্দেসলিগা | ০ | ০ | ১ | ০ | — | ০ | ০ | — | ১ | ০ | |||
সর্বমোট | ৭১ | ১৩ | ১১ | ২ | ০ | ০ | ২৪ | ২ | — | ১০৬ | ১৭ | |||
রিয়াল মাদ্রিদ | ২০১০-১১[৪৫] | লা লিগা | ৩৬ | ৬ | ৬ | ৩ | — | ১১ | ১ | — | ৫৩ | ১০ | ||
২০১১-১২[৪৯] | লা লিগা | ৩৫ | ৪ | ৫ | ০ | — | ১০ | ২ | ২ | ২ | ৫২ | ৭ | ||
২০১২-১৩[৫০] | লা লিগা | ৩২ | ৯ | ৮ | ০ | — | ১০ | ১ | ২ | ০ | ৫২ | ১০ | ||
২০১৩-১৪[৪৫] | লা লিগা | ২ | ০ | ০ | ০ | — | ০ | ০ | — | ২ | ০ | |||
সর্বমোট | ১০৫ | ১৯ | ১৯ | ৩ | — | ৩১ | ৪ | ৪ | ১ | ১৫৯ | ২৭ | |||
আর্সেনাল | ২০১৩-১৪[৪৫] | প্রিমিয়ার লিগ | ১৫ | ৪ | ১ | ০ | ১ | ০ | ৬ | ১ | — | ২৩ | ৫ | |
সর্বমোট | ১৫ | ৪ | ১ | ০ | ১ | ০ | ৬ | ১ | — | ২৩ | ৫ | |||
ক্যারিয়ার সর্বমোট | ২২১ | ৩৬ | ৩৩ | ৬ | ৩ | ০ | ৬৬ | ৭ | ৪ | ১ | ৩২৭ | ৫০ |
(২০১৪ সালের ৪র্থ জানুয়ারিতে সংশোধিত)
সম্মাননা
ক্লাব
- শার্লকে ০৪
- বুন্দেসলিগা রানার্স-আপ: ২০০৬-০৭
- ডিএফবি লিগাপোকাল রানার্স-আপ: ২০০৭
- ওয়ের্ডার ব্রেমেন
- ডিএফবি পোকাল: ২০০৮-০৯; রানার্স-আপ: ২০০৯-১০
- উয়েফা কাপ রানার্স-আপ: ২০০৮-০৯
- রিয়াল মাদ্রিদ
- লা লিগা: ২০১১-১২; রানার্স-আপ: ২০১০-১১, ২০১২-১৩
- কোপা দেল রে: ২০১০-১১; রানার্স-আপ: ২০১২-১৩
- সুপার কাপ দে স্পানা: ২০১২; রানার্স-আপ: ২০১১
আন্তর্জাতিক
- জার্মানি
ব্যক্তিগত
- উয়েফা ইউরোপিয়ান অনূর্ধ্ব ২১ চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল– ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ
- ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপ সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট (৩, থমাস মুলার, শোয়াইনস্টেইগার, কাকা, এবং ডার্ক কিয়ুটের সাথে মিলিতভাবে)
- ২০১২ উয়েফা ইউরো ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ: জার্মানি বনাম পর্তুগাল, জার্মানি বনাম গ্রীস
- উয়েফা ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ টিম অফ দ্যা টুর্নামেন্ট: ২০১২
- উয়েফা টিম অফ দ্যা ইয়ার: ২০১২
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
- দাপ্তরিক ওয়েবসাইট
- সকারবেসে মেসুত ওজিল (ইংরেজি)
- Arsenal official profile ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ মার্চ ২০১৪ তারিখে
- Profile at Premier League ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ মে ২০১৬ তারিখে
- Mesut Özil at kicker.de (জার্মান)
- ESPN Profile ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে
- BDFutbol profile
- 2010 FIFA World Cup profile ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে
- ন্যাশনাল-ফুটবল-টিমস.কমে মেসুত ওজিল (ইংরেজি)
- মেসুত ওজিল – ফিফা প্রতিযোগিতার রেকর্ড (ইংরেজি)