হেরার্দ পিকে
হেরার্দ পিকে বের্নাবেউ (জন্ম ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭, বার্সেলোনা) একজন স্পেনীয় সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় যিনি রক্ষণভাগে খেলতেন। তাকে তার প্রজন্মের সেরা ডিফেন্ডারদের একজন বলে মনে করা হয়।[২][৩]
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | হেরার্দ পিকে বের্নাবেউ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম স্থান | বার্সেলোনা, স্পেন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ১.৯২ মিটার (৬ ফুট ৩+১⁄২ ইঞ্চি)[১] | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মাঠে অবস্থান | সেন্টার-ব্যাক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||
যুব পর্যায় | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৯৭–২০০৪ | বার্সেলোনা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৪–২০০৫ | ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৪–২০০৮ | ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড | ১২ | (০) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৬–২০০৭ | → রিয়াল জারাগোজা (ধার) | ২২ | (২) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৮–২০২২ | বার্সেলোনা | ৩৯৭ | (২৯) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||
মোট | ৪৩১ | (৩১) | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০২–২০০৩ | স্পেন অনূর্ধ্ব ১৬ | ৭ | (২) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৪ | স্পেন অনূর্ধ্ব ১৭ | ৮ | (৩) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৬ | স্পেন অনূর্ধ্ব ১৯ | ৮ | (৩) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৭ | স্পেন অনূর্ধ্ব ২০ | ৫ | (১) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৬–২০০৮ | স্পেন অনূর্ধ্ব ২১ | ১২ | (১) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৯–২০১৮ | স্পেন | ১০২ | (৫) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৪–২০১৯ | কাতালোনিয়া | ১০ | (০) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||
অর্জন ও সম্মাননা
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে |
বার্সেলোনার যুব একডেমী লা মাসিয়া থেকে তার উদ্ভব ঘটেছে। ২০০৪ সালের ১ জুলাই তাকে কিনে নেয় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সেখানে তিনি চার বছর ছিলেন। এরপর তিনি ফিরে আসেন গার্দিওলার বার্সেলোনায়। গার্দিওলার অধীনে বার্সেলোনার সেক্সটাপল জয়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পিকে সেই চারজন খেলোয়াড়দের অন্যতম যারা টানা দুই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জিতেছেন, দুইটি আলাদা দলের হয়ে।[৪]
স্পেন জাতীয় দলে পিকের অভিষেক হয় ২০০৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি। স্পেন দলকে ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপ ও ২০১২ উয়েফা ইউরো জেতাতে পিকে অসাধারণ ভূমিকা রাখেন। ১১ অগাস্ট ২০১৮ হেরার্দ পিকে স্পেন জাতীয় দল থেকে থেকে অবসর নেন। ৫ নভেম্বর ২০২২ সালে পিকে অবসর নেন।
ক্যারিয়ার
প্রারম্ভিক ক্যারিয়ার
পিকে স্পেনের কাতালোনিয়া রাজ্যের বার্সেলোনা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বার্সেলোনার যুব দলে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে তার ক্যারিয়ার শুরু করেন। কিন্তু ক্লাবের সাথে চুক্তি করার পূর্বে তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাথে চুক্তি করতে চাইছিলেন। তবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাকে কোন ফি পরিশোধ করেনি, কারণ পেশাদারী চুক্তির জন্য তার বয়স খুব কম ছিল।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে পিকের অভিষেক হয় ২০০৪ সালের অক্টোবরে। লিগ কাপে ক্রিউই আলেক্সান্দ্রার বিপক্ষে খেলায় তিনি জন ও’শিয়ার বদলি হিসেবে নেমেছিলেন। ২০০৬ সালের ৪ আগস্ট স্পেনীয় ক্লাব রিয়াল সারাগোসা এক মৌসুমের জন্য পিকেকে ধারে নিয়ে আসে।[৫][৬] ২০০৭ সালের ৫ মে ঘোষণা করা হয় পিকে সেই মৌসুমের জন্য ওল্ড ট্রাফোর্ডেই থাকবেন। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের ইচ্ছা ছিল স্টেডিয়ামে পিকের খেলা দেখে তার উন্নতি বিশ্লেষণ করার, কিন্তু ফ্লাইটের বিলম্বের কারণে তা হয়নি।
বার্সেলোনা
২৭ মে ২০০৮-এ, পিকে বার্সেলোনার সাথে €৫ মিলিয়ন বাই-আউট ধারায় একটি চার বছরের চুক্তি স্বাক্ষর করেন।[৭] বার্সেলোনা খেলোয়াড়টির জন্য £৫ মিলিয়ন পারিশ্রমিক দিয়েছে।[৮] তিনি তার ছেলেবেলার ক্লাবের সাথে পুনরায় স্বাক্ষর করার জন্য তার আনন্দ প্রকাশ করেছেন, যদিও তিনি স্বীকার করেছেন যে তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে তার খেলা উপভোগ করেছেন:
আমি ফিরে আসতে পেরে খুব খুশি, আমি ভাবিনি যে আমি আবার এখানে আসব তবে এটি আমার জন্য খুব ভাল। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড একটি দুর্দান্ত ক্লাব এবং আমি জিতে উপভোগ করেছি। বিশ্বমানের খেলোয়াড়দের সাথে খেলা আমাকে সাহায্য করেছে এবং এখন আমি বার্সায় এটা চালিয়ে যেতে চাই।
বার্সেলোনার হয়ে পিকের প্রথম গোলটি আসে ৫-১ ২০০৮-০৯ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে ২৬ নভেম্বর ২০০৮-এ স্পোর্টিং সিপি-তে ক্লাবের জয়ে।[৯][১০] ২০০৯, একটি কোপা দেল রে ম্যাচে স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বী এসপানিওলের বিরুদ্ধে । ৫৭ তম মিনিটে কর্নার কিক থেকে আসা গোলটি বার্সেলোনার জন্য ৩-২ ব্যবধানে জয়ে পরিণত হয়েছিল।[১১][১২] ২ মে ২০০৯ -এ, সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে ৬-২ এল ক্লাসিকোতে বার্সেলোনার ষষ্ঠ গোলটি করেন পিকে।, যা তাকে একটি আবেগপূর্ণ গোল উদ্যাপন করতে দেখেছিল যেখানে তিনি তার বার্সেলোনার জার্সিটি ধরেছিলেন।[১৩][১৪]
১৩ মে ২০০৯-এ, তিনি তার বার্সেলোনা ক্যারিয়ারের প্রথম ট্রফিটি তুলে নেন কারণ তিনি তার ক্লাবকে কোপা দেল রে ফাইনালে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে জয়ে সাহায্য করেছিলেন।[১৫] তিন দিন পর, বার্সেলোনা ২০০৮-০৯ লা লিগা শিরোপা জয় করে রিয়াল মাদ্রিদ ৩-২ ভিয়ারিয়ালের কাছে হারের পর, যখন মৌসুমে দুটি খেলা বাকি ছিল।[১৬]
২৭ মে ২০০৯-এ, পিকে তার প্রাক্তন ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ২০০৯ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলেন , যেটি বার্সেলোনা রোমের বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতেছিল,[১৭] একটি ঐতিহাসিক ট্রেবল সম্পন্ন করে এবং এই কৃতিত্ব অর্জনকারী প্রথম স্প্যানিশ ক্লাব হয়ে ওঠে।[১৮]
ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান
ক্লাব
- ৭ নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।[১৯]
ক্লাব | মৌসুম | লিগ | কাপ | লিগ কাপ | ইউরোপ | অন্যান্য | মোট | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | উপস্থিতি | গোল | ||
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড | ২০০৪–০৫ | ০ | ০ | ১ | ০ | ১ | ০ | ১ | ০ | ০ | ০ | ৩ | ০ |
২০০৫–০৬ | ৩ | ০ | ২ | ০ | ২ | ০ | ০ | ০ | — | ৭ | ০ | ||
২০০৬–০৭ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | ০ | — | ০ | ০ | ||
২০০৭–০৮ | ৯ | ০ | ০ | ০ | ১ | ০ | ৩ | ২ | ০ | ০ | ১৩ | ২ | |
মোট | ১২ | ০ | ৩ | ০ | ৪ | ০ | ৪ | ২ | ০ | ০ | ২৩ | ২ | |
রিয়াল সারাগোসা (ধারে) | ২০০৬–০৭ | ২২ | ২ | ৬ | ১ | — | ২৮ | ৩ | |||||
বার্সেলোনা | ২০০৮–০৯ | ২৫ | ১ | ৬ | ১ | — | ১৪ | ১ | ০ | ০ | ৪৫ | ৩ | |
২০০৯–১০ | ৩২ | ২ | ১ | ০ | — | ১২ | ২ | ৪ | ০ | ৪৯ | ৪ | ||
২০১০–১১ | ৩১ | ৩ | ৭ | ০ | — | ১২ | ১ | ১ | ০ | ৫১ | ৪ | ||
২০১১–১২ | ২২ | ২ | ৮ | ০ | — | ৫ | ০ | ৩ | ০ | ৩৮ | ২ | ||
২০১২–১৩ | ২৮ | ২ | ৪ | ১ | — | ১০ | ০ | ২ | ০ | ৪৪ | ৩ | ||
২০১৩–১৪ | ২৬ | ২ | ২ | ০ | — | ৯ | ২ | ২ | ০ | ৩৯ | ৪ | ||
২০১৪–১৫ | ২৭ | ৫ | ৬ | ১ | — | ১১ | ১ | — | ৪৪ | ৭ | |||
২০১৫–১৬ | ৩০ | ২ | ৫ | ২ | — | ৮ | ১ | ৩ | ০ | ৪৬ | ৫ | ||
২০১৬–১৭ | ২৫ | ২ | ৭ | ০ | — | ৮ | ১ | ১ | ০ | ৪১ | ৩ | ||
২০১৭–১৮ | ৩০ | ২ | ৮ | ১ | — | ৯ | ১ | ২ | ০ | ৪৯ | ৪ | ||
২০১৮–১৯ | ৩৫ | ৪ | ৫ | ০ | — | ১১ | ২ | ১ | ১ | ৫২ | ৭ | ||
২০১৯–২০ | ৩৫ | ১ | ২ | ০ | — | ৭ | ০ | ১ | ০ | ৪৫ | ১ | ||
২০২০–২১ | ১৮ | ০ | ২ | ১ | — | ৩ | ২ | ০ | ০ | ২৩ | ৩ | ||
২০২১–২২ | ২৭ | ১ | ২ | ০ | — | ১০ | ২ | ১ | ০ | ৪০ | ৩ | ||
২০২২–২৩ | ৬ | ০ | — | — | ৪ | ০ | — | ১০ | ০ | ||||
মোট | ৩৯৭ | ২৯ | ৬৫ | ৭ | — | ১৩৩ | ১৫ | ২১ | ১ | ৬১৬ | ৫২ | ||
সর্বমোট | ৪৩১ | ৩১ | ৭৪ | ৮ | ৪ | ০ | ১৩৭ | ১৭ | ২১ | ১ | ৬৬৭ | ৫৭ |
আন্তর্জাতিক
জাতীয় দল | সাল | উপস্থিতি | গোল |
---|---|---|---|
স্পেন | ২০০৯ | ১৩ | ৪ |
২০১০ | ১৬ | ০ | |
২০১১ | ৮ | ০ | |
২০১২ | ১১ | ০ | |
২০১৩ | ১১ | ০ | |
২০১৪ | ৬ | ০ | |
২০১৫ | ৪ | ০ | |
২০১৬ | ১২ | ১ | |
২০১৭ | ৯ | ০ | |
২০১৮ | ৮ | ০ | |
মোট | ১০২ | ৫ |
অর্জন
ক্লাব
- ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
- প্রিমিয়ার লিগ: ২০০৭–০৮[২২]
- এফএ কমিউনিটি শিল্ড: ২০০৭[২৩]
- উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ: ২০০৭–০৮[২৪]
- বার্সেলোনা
- লা লিগা: ২০০৮–০৯, ২০০৯–১০, ২০১০–১১, ২০১২–১৩, ২০১৪–১৫, ২০১৫–১৬, ২০১৭–১৮, ২০১৮–১৯, ২০২২–২৩
- কোপা দেল রে: ২০০৮–০৯, ২০১১–১২, ২০১৪–১৫, ২০১৫–১৬, ২০১৭–১৮
- স্পেনীয় সুপার কাপ: ২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১৩, ২০১৬, ২০১৮
- উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ: ২০০৮–০৯, ২০১০–১১, ২০১৪–১৫
- উয়েফা সুপার কাপ: ২০০৯, ২০১৫
- ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ: ২০০৯, ২০১১, ২০১৫
আন্তর্জাতিক
- ফিফা বিশ্বকাপ: ২০১০
- উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ: ২০১২
- উয়েফা ইউরপিয়ান অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ: ২০০৬
ব্যক্তিগত
- লা লিগা বর্ষসেরা ব্রেকথ্রু খেলোয়াড়: ২০০৮–০৯
- লা লিগা সেরা ডিফেন্ডার: ২০০৯–১০
- লা লিগা মৌসুমসেরা দল: ২০১৪–১৫, ২০০১৫–১৬[২৫]
- উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ মৌসুমসেরা দল: ২০১৪–১৫[২৬]
- উয়েফা লা লিগা মৌসুমসেরা দল: ২০১৬–১৭[২৭]
- উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টসেরা দল: ২০১২
- উয়েফা বর্ষসেরা দল: ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৫, ২০১৬
- ফিফা ফিফপ্রো একাদশ: ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৬[২৮]
- ফিফা ফিফপ্রো একাদশ দ্বিতীয় দল: ২০১৩, ২০১৫, ২০১৭[২৯][৩০][৩১]
- ফিফা ফিফপ্রো একাদশ তৃতীয় দল: ২০১৪, ২০১৮[৩২][৩৩]
- ইএসএম বর্ষসেরা দল: ২০১০–১১, ২০১৩–১৪, ২০১৪–১৫, ২০১৫–১৬[৩৪][৩৫][৩৬]
সম্মানসূচক পদক
- রয়াল অর্ডার অফ স্পোর্টস মেরিট স্বর্ণপদক: ২০১১[৩৭]
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
- সকারবেসে হেরার্দ পিকে (ইংরেজি)