ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ (ইংরেজি: FIFA Club World Cup) হচ্ছে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা দ্বারা আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক ক্লাব ফুটবল প্রতিযোগিতা, যেখানে ৬টি কনফেডারেশনের পুরুষদের ফুটবল ক্লাবগুলো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দল ক্লাব পর্যায়ের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করে। এই প্রতিযোগিতাটি ২০০০ সালে প্রথম অনুষ্ঠিত হলেও ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত একাধিক কারণে অনুষ্ঠিত হয়নি, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ফিফার বিপণন অংশীদার আইএসএলের দেউলিয়া হওয়া।[১][২] তবে ২০০৫ সাল থেকে এটি প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই প্রতিযোগিতাটি ইতোমধ্যে ব্রাজিল, জাপান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মরক্কো এবং কাতারের মতো দেশ আয়োজন করেছে।[৩][৪] এটি মূলত ফিফা ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ নামে পরিচিত ছিল, অতঃপর ২০০৬ সালে আন্তঃমহাদেশীয় কাপের সাথে একত্রিত হয়ে বর্তমান নামে পরিবর্তন করা হয়েছে।

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ
আয়োজকফিফা
প্রতিষ্ঠিত২০০০; ২৪ বছর আগে (2000)
অঞ্চলআন্তর্জাতিক
দলের সংখ্যা৭ (৬টি কনফেডারেশন থেকে)
সম্পর্কিত
প্রতিযোগিতা
ফিফা আন্তঃমহাদেশীয় কাপ
বর্তমান চ্যাম্পিয়নইংল্যান্ড ম্যানচেস্টার সিটি (১ম শিরোপা)
সবচেয়ে সফল দলস্পেন রিয়াল মাদ্রিদ (৫টি শিরোপা)
টেলিভিশন সম্প্রচারকসম্প্রচারকের তালিকা
ওয়েবসাইটwww.fifa.com/tournaments/mens/clubworldcup
২০২৩ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ

২০০০ সালে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের প্রথম আসরটি ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি ২০০০ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং কোপা লিবের্তাদোরেসের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবদের মধ্যকার প্রতিযোগিতা আন্তঃমহাদেশীয় কাপের সাথে সমান্তরালে চলেছিল, যার প্রতিটি আসরের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ফিফা কর্তৃক স্বীকৃত। ২০০৫ সালে, আন্তঃমহাদেশীয় কাপ ফিফা ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সাথে একীভূত করা হয়েছে এবং ২০০৬ সালে প্রতিযোগিতাটি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ নামে নামকরণ করা হয়েছে। ক্লাব বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপা এবং একটি ফিফা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নস সনদ অর্জন করে।

এই প্রতিযোগিতার বর্তমান বিন্যাসে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে স্বাগতিক দেশের মধ্যে মাঠে সাতটি দল ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে; যেখানে উক্ত বছরের এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ (এশিয়া), ক্যাফ চ্যাম্পিয়নস লিগ (আফ্রিকা), কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস লিগ (উত্তর আমেরিকা), কোপা লিবের্তাদোরেস (দক্ষিণ আমেরিকা), ওএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ (ওশেনিয়া) এবং উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের (ইউরোপ) চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের পাশাপাশি স্বাগতিক দেশের জাতীয় লিগের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব সরাসরি নকআউট প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। স্বাগতিক দেশের জাতীয় লিগের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব ওএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের বিরুদ্ধে প্লে-অফে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, যেখানের বিজয়ী ক্লাব কোয়ার্টার-ফাইনালে এশিয়া, আফ্রিকা এবং উত্তর আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন ক্লাব মুখোমুখি হয়। কোয়ার্টার-ফাইনালের বিজয়ী ক্লাব ফাইনালে জায়গা পাওয়ার জন্য সেমি-ফাইনালে ইউরোপীয় এবং দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের মুখোমুখি হয়।

এপর্যন্ত এই প্রতিযোগিতাটি ১১টি ক্লাব জয়লাভ করেছে, যার মধ্যে ৪টি ক্লাব একাধিকবার জয়লাভ করেছে। স্পেনীয় ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ক্লাব, যারা টানা ৩টি শিরোপাসহ সর্বমোট ৫টি শিরোপা জয়ালাভ করেছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আরেক স্পেনীয় ক্লাব বার্সেলোনা, যারা এপর্যন্ত ৩ বার এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিলীয় ক্লাব করিন্থিয়ান্স ও জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ, যারা এপর্যন্ত ২ বার করে শিরোপা জয়লাভ করেছে। এই প্রতিযোগিতায় স্পেনীয় ক্লাবগুলো সর্বাধিক ৮ বার শিরোপা জয়লাভ করেছে, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ব্রাজিলের ক্লাবগুলো (যারা এপর্যন্ত ৪ বার শিরোপা জয়লাভ করেছে) এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো (যারা এপর্যন্ত ৪ বার শিরোপা জয়লাভ করেছে)। ইংল্যান্ড এবং ব্রাজিল হতে সর্বাধিক ৩ বার ভিন্ন ভিন্ন ক্লাব এই প্রতিযোগিতার শিরোপা জয়লাভ করেছে।

সর্বশেষ আসরটি ২০২৩ সালে সৌদি আরবে আয়োজন করা হয়েছে; জেদ্দার কিং আবদুল্লাহ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটি ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লিউমিনেন্সকে ৪–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়লাভ করেছে।

ইতিহাস

১৯৯৩ সালের ডিসেম্বর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডার লাস ভেগাসে অনুষ্ঠিত ফিফার নির্বাহী কমিটির সভায় এই প্রতিযোগিতার সূচনা হয়েছে

সূচনা

ফুটবল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ হিসেবে নথিভুক্ত ক্লাব প্রতিযোগিতার প্রথম আসরটি ১৮৮৭ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে এফএ কাপের চ্যাম্পিয়ন অ্যাস্টন ভিলা স্কটিশ কাপের চ্যাম্পিয়ন হিবের্নিয়ানকে পরাজিত করেছিল; অ্যাস্টন ভিলা উক্ত সময়ে অনুষ্ঠিত একমাত্র জাতীয় প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন দল ছিল। ১৮৯৫ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ নামে পরিচিত প্রতিজগিতায় প্রথমবারের মতো দুটি ইউরোপীয় লিগের চ্যাম্পিয়ন দল মুখোমুখি হয়েছিল, উক্ত ম্যাচে ইংরেজ চ্যাম্পিয়ন সান্ডারল্যান্ড স্কটিশ চ্যাম্পিয়ন হার্ট অব মিডলোদিয়ানকে ৫–৩ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছিল।[৫] কাকতালীয়ভাবে, উক্ত ম্যাচে সান্ডারল্যান্ডের একাদশটি সম্পূর্ণরূপে স্কটিশ খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত ছিল; স্কটিশ খেলোয়াড়রা যারা উক্ত দিন পেশাদারভাবে খেলার জন্য ইংল্যান্ডে চলে এসেছিলেন তারা স্কচ অধ্যাপক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।[৫][৬]

ফিফার মতে, প্রথম ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনের ২১ বছর পূর্বে, ১৯০৯ সালে প্রথমবারের মতো তারা একটি আন্তর্জাতিক ক্লাব ফুটবল প্রতিযোগিতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়েছিল।[৭] ১৯০৯ এবং ১৯১১ সালে স্যার টমাস লিপটন শিরোপা ইতালিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে ইংরেজ, ইতালীয়, জার্মান এবং সুইস ক্লাবগুলো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল।[৮] ইংরেজ অপেশাদার ক্লাব ওয়েস্ট অকল্যান্ড টাউন উক্ত প্রতিযোগিতাটি দুইবারই জয়লাভ করেছিল।[৯] ১৯৫০-এর দশকের শুরুতে ফিফার আন্তর্জাতিক ক্লাব প্রতিযোগিতা আয়োজন করা উচিত এই ধারণাটি প্রবর্তন হয়।[১০] ১৯৫১ সালে, ফিফার তৎকালীন সভাপতি জুলে রিমেকে ব্রাজিলীয় ফুটবল কনফেডারেশন দ্বারা আয়োজিত একটি ক্লাব বিশ্বকাপ (ফিফা বিশ্বকাপের একটি "ক্লাব সংস্করণ") কোপা রিওর সাথে ফিফার সংযুক্ত থাকার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল এবং রিমে জানিয়েছিলেন যে, ব্রাজিলীয় ফুটবল কনফেডারেশন দ্বারা আয়োজিত হওয়ায় এটি ফিফার এখতিয়ারের অধীনে ছিল না।[১১] ফিফা বোর্ডের কর্মকর্তা স্ট্যানলি রাউস এবং অত্তোরিনো বারাসসি ১৯৫১ সালে কোপা রিও আয়োজনে ফিফার সহকারী হিসেবে নয়, ব্যক্তিগতভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ব্রাজিলীয় ক্লাব পালমেইরাস ২০০ হাজারেরও অধিক দর্শকের উপস্থিতিতে মারাকানা স্টেডিয়ামে ইতালীয় ক্লাব ইয়ুভেন্তুসকে পরাজিত করেছিল; উক্ত ম্যাচে বিজয়ী পালমেইরাসকে অনেকেই প্রথম ক্লাব বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন।[১২] স্ট্যানলি রাউসের ভূমিকা ছিল ইউরোপীয় ক্লাবগুলির সাথে আলোচনা, যেখানে বারাসসিও একই কাজ করার পাশাপাশি প্রতিযোগিতার কাঠামো গঠনেও সহায়তা করেছিলেন। ইতালীয় সংবাদ মাধ্যম এই প্রতিযোগিতাকে একটি "চিত্তাকর্ষক প্রকল্প" হিসেবে বিবেচনা করে; আনুষ্ঠানিকভাবে ফিফার সম্মতি প্রদানের জন্য ফিফা কর্মকর্তা স্ট্যানলি রুস এবং জুলে রিমে যার প্রতি ভালোভাবে স্বাগত জানিয়েছিল।[১৩] ব্রাজিলীয় ফুটবল কনফেডারেশন ইউরোপীয় ক্লাবগুলোকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করানোর ক্ষেত্রে যে অসুবিধার সম্মুখীন হয়, তার কারণে ও এস্তাদো দে সাও পাওলো নামক একটি পত্রিকা পরামর্শ দিয়েছিল যে, আন্তর্জাতিক ক্লাব প্রতিযোগিতার আয়োজনে ফিফার সম্পৃক্ততা থাকা উচিত এবং "আদর্শভাবে, এখানে অথবা বিদেশে, আন্তর্জাতিক আসর ফিফা দ্বারা নির্ধারিত সময়সূচীর সাথে আয়োজন করা উচিত"।[১৪] ১৯৫০-এর দশক পর্যন্ত, পেকেনিয়া কোপা দেল মুন্দো (স্পেনীয় ভাষায় ছোট বিশ্বকাপ) ১৯৫২ থেকে ১৯৫৭ সালের মধ্যে ভেনেজুয়েলায় অনুষ্ঠিত একটি প্রতিযোগিতা ছিল, ১৯৫৮ সাল থেকে কারাকাসে অনুষ্ঠিত কিছু অন্যান্য ক্লাব টুর্নামেন্টও প্রায়শই মূল ১৯৫২–১৯৫৭ প্রতিযোগিতার নামে পরিচিত।[১৫] এই প্রতিযোগিতায় সাধারণত ৪টি দল অংশগ্রহণ করতো, যেখানে অর্ধেক দল ইউরোপ থেকে এবং অর্ধেক দক্ষিণ আমেরিকা থেকে অংশগ্রহণ করতো।[১৫]

প্রতিষ্ঠায় বাঁধা

আমরা শিরোপা জিততে চাই, নিজেদের জন্য [শিরোপা জয়ের চেয়ে] রেসিংকে চ্যাম্পিয়ন হওয়া থেকে বিরত রাখতে চাই।

— জোক স্টেইন, সেল্টিকের ম্যানেজার, ১৯৬৫–১৯৭৮, ১৯৬৭ আন্তঃমহাদেশীয় কাপের প্লে-অফ ম্যাচের (যা মোন্তেভিদেওর যুদ্ধ নামে পরিচিত) পূর্বে মন্তব্য করেছিলেন; ইভেনিং টাইমস, ৩ নভেম্বর ১৯৬৭।[১৬]

ওলন্দাজ ক্লাব [আয়াক্স] কোন সমস্যা ছাড়াই একটি জয় অর্জন করেছিল এবং এই ম্যাচটি ইউরোপীয় কাপের একটি সাধারণ ম্যাচের হওয়ার চেয়ে বেশি কঠিন ছিল না।

আমস্টারডামের এক ওলন্দাজ সংবাদপত্রের সাংবাদিক, ১৯৭২ আন্তঃমহাদেশীয় কাপের পরে প্রতিযোগিতার মান এবং আয়াক্সের প্রতিপক্ষ সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন; ডে টেলেগ্রাফ, ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৭২।[১৭]

সমর্থকদের উদাসীনতাই [আন্তঃমহাদেশীয় কাপে] আমাদের আর্থিক ব্যর্থতার একমাত্র কারণ। ১১ই জানুয়ারি তারিখে তেল আবিবে আমরা ২,৫৫,০০০ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে যে প্রীতি ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিলাম, তার অনুরূপ একটি ব্যবস্থা পেলে অনেক ভালো হতো।

— ১৯৭৫–১৯৭৭ সালে বায়ার্ন মিউনিখের ম্যানেজার ডেটমার ক্রেমার, ১৯৭৬ সালে তার দলের বিজয়ের পর আন্তঃমহাদেশীয় কাপের নিম্ন প্রাসঙ্গিকতা, প্রতিপত্তি এবং পুরস্কার সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন; জরনাল দো ব্রাজিল, ২২ ডিসেম্বর ১৯৭৬।[১৮]

প্যারিস টুর্নামেন্ট নামক একটি প্রতিযোগিতা ছিল, যা প্রাথমিকভাবে ইউরোপ এবং দক্ষিণ আমেরিকার শীর্ষ ক্লাবগুলোকে একত্রিত করে একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল; ১৯৫৭ সালে এই প্রতিযোগিতার প্রথম আসর অনুষ্ঠিত হয়েছিল, পার্ক দেস প্রিন্সেসে অনুষ্ঠিত উক্ত আসরের ফাইনালে রিউ দি জানেইরুর চ্যাম্পিয়ন ভাস্কো দা গামা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদকে ৪–৩ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছিল। ফ্রান্স ও ব্রাজিলে এই জয়কে "দক্ষিণ আমেরিকার সেরা ও ইউরোপ সেরা" ক্লাবের ম্যাচ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছিল, কেননা এটি ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন হিসেবে রিয়াল মাদ্রিদের প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় প্রতিযোগিতা ছিল (মাদ্রিদ দল ১৯৫৬ সালের পেকেনিয়া কোপা দে মুন্দোয় অংশগ্রহণ করেছিল, তবে ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পূর্বে তারা ভেনেজুয়েলার প্রতিজগিতায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছিল)।[১৯] ১৯৫৮ সালে, রিয়াল মাদ্রিদ প্যারিস টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করতে অস্বীকার করে দাবি করেছিল যে ১৯৫৭–৫৮ মৌসুমের ইউরোপীয় কাপের ফাইনাল প্যারিস তুরনোয়ার মাত্র ৫ দিন পরে ছিল।[২০] ১৯৫৮ সালের ৮ই ই অক্টোবর তারিখে, ব্রাজিলীয় ফুটবল কনফেডারেশনের তৎকালীন সভাপতি জোয়াও আভেলাঞ্জে উয়েফার একটি সভায় তিনি আমন্ত্রণ পেয়ে উপস্থিত থাকার পর ঘোষণা করেছিলেন, কোপা লিবের্তাদোরেস এবং আন্তঃমহাদেশীয় কাপ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, যার মধ্যে দ্বিতীয়টি উয়েফা/কনমেবল-অনুমোদিত "বিশ্বের সেরা ক্লাব" প্রতিযোগিতা হবে, যেখানে উভয় কনফেডারেশনের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবগুলো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।

রিয়াল মাদ্রিদ ১৯৬০ সালে অনুষ্ঠিত আন্তঃমহাদেশীয় কাপের প্রথম আসরে শিরোপা জয়লাভ করেছিল[২১][২২] এবং ফিফা দ্বারা কোন পদক্ষেপ না নেওয়া এবং আপত্তি না করা পর্যন্ত নিজেদেরকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন প্রচার করে; অতঃপর ফিফা জানিয়েছিল যে এই প্রতিযোগিতায় অন্যান্য কনফেডারেশনের অন্য কোন চ্যাম্পিয়নকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, এটি কেবল দুটি মহাদেশের সংস্থার মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি প্রতিযোগিতা ছিল। এর ফলে রিয়াল মাদ্রিদে নিজেদের আন্তঃমহাদেশীয় চ্যাম্পিয়ন বলে দাবি করতে পারে, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন নয়; কেননা এই প্রতিযোগিতায় অন্য কোন মহাদেশের অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল না।[২৩] ফিফা জানিয়েছিল যে তারা ১৯৬১ সালের আসরটি নিষিদ্ধ করবে, যদি না আয়োজকরা প্রতিযোগিতাটিকে দুটি সংস্থার মধ্যে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ অথবা ব্যক্তিগত ম্যাচ হিসেবে বিবেচনা না করে।[২৪] যে বছর আন্তঃমহাদেশীয় কাপ প্রথম অনুষ্ঠিত হয়, উক্ত বছরে ফিফা আন্তর্জাতিক সকার লিগকে অনুমোদন দিয়েছিল), যা তৈরি করা হয়েছিল (১৯৫০-এর দশকের কোপা রিওর মতো) ফিফার তৎকালীন স্যার স্ট্যানলি রাউসের অনুসমর্থনের সাথে ক্লাব বিশ্বকাপ তৈরির লক্ষ্যে।[২৫]

আন্তঃমহাদেশীয় কাপ অন্যান্য মহাদেশের এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে আকৃষ্ট করেছিল।[২৬] উত্তর ও মধ্য আমেরিকান কনফেডারেশন কনকাকাফ ১৯৬১ সালে তৈরি করা হয়েছিল, যার প্রতিষ্ঠার অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে কোপা লিবের্তাদোরেস এবং ব্যাপকভাবে আন্তঃমহাদেশীয় কাপে তাদের ক্লাবগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা অন্যতম ছিল।[২৭] তবে, উভয় প্রতিযোগিতায় তাদের প্রবেশ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। এরপর ১৯৬২ সালে কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।[২৮]

আন্তঃমহাদেশীয় কাপে আর্জেন্টিনার এবং উরুগুয়ের ক্লাবগুলোর নিষ্ঠুরতার কারণে, ফিফাকে ১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে বেশ কয়েকবার জরিমানা মূল্যায়ন এবং প্রতিযোগিতাটি নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছিল।[২৯] তবে, ফিফা প্রতিটি অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল।[৩০] এই অনুরোধগুলোর মধ্যে প্রথমটি একটি প্লে-অফ ম্যাচের পরে ১৯৬৭ সালে করা হয়েছিল, যা মোন্তেদিভেওর যুদ্ধ নামে পরিচিত।[৩১] স্কটিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, তৎকালীন সভাপতি উইলি অ্যালানের মাধ্যমে, ফুটবল প্রবিধান প্রয়োগের জন্য ফিফা প্রতিযোগিতাটিকে স্বীকৃতি দিতে চেয়েছিল; জবাবে ফিফা জানিয়েছিল যে তারা উক্ত প্রতিযোগিতার আয়োজক নয়, তাই তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।[১৬] কনমেবলের পরে তৎকালীন সভাপতি তেওফিলো সালিনাস এবং আর্জেন্টিনীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে অ্যালানের ধর্মযুদ্ধও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল; যারা সমর্থন নিয়ে প্রতিযোগিতায় ফিফার কোন হস্তক্ষেপ থাকার অনুমতি দিতে অস্বীকার করে জানিয়েছিল:[৩২]

স্ট্যানলি রাউসকে ক্লাব বিশ্বকাপের জন্য পথ "প্রতিষ্ঠাতা পিতা" হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। রেফারি হিসেবে তিনি ১৯৩০ সালের কুপ দ্য নেশন্সে অংশগ্রহণ করেছিলেন। একজন ফুটবল কর্মকর্তা হিসেবে তিনি কোপা রিও এবং আন্তর্জাতিক সকার লিগকে সমর্থন করেছিলেন। ফিফার সভাপতি হিসেবে, তিনি প্রথম ফিফা কর্মকর্তা হিসেবে ফিফার পৃষ্ঠপোষকতায় আন্তঃমহাদেশীয় কাপকে একটি সর্ব-মহাদেশীয় ক্লাব বিশ্বকাপে সম্প্রসারণের প্রস্তাব করেছিলেন, যা তিনি ১৯৬৭ সালে উত্থাপন করেছিলেন এবং এটি ২০০০ সালে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে পরিণত হয়েছে

ফিফার সাধারণ উপ-সচিব রেনে কুর্ত ১৯৬৭ সালে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে, ফিফা আন্তঃমহাদেশীয় কাপকে "ইউরোপীয়-দক্ষিণ আমেরিকান প্রীতি ম্যাচ" হিসেবে দেখে।[৩৩] ফিফার তৎকালীন সভাপতি স্যার স্ট্যানলি রাউস এটি নিশ্চিত করেছিলেন। ১৯৬৭ সালে এশীয় ও উত্তর আমেরিকার ক্লাব প্রতিযোগিতার সাথে সাথে ফিফা আন্তঃমহাদেশীয় কাপের তত্ত্বাবধান করার ধারণাটি উন্মুক্ত করেছিল, যদি উক্ত প্রতিযোগিতায় সকল কনফেডারেশন অংশগ্রহণে করে। স্ট্যানলি রুস বলেছিলেন যে কনকাকাফ এবং এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন ১৯৬৭ সালে আন্তঃমহাদেশীয় কাপে তাদের চ্যাম্পিয়নদের অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছিল; প্রস্তাবটি উয়েফা এবং কনমেবলের কাছ থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছিল। ১৯৬৮ এবং ১৯৬৯ সালের আন্তঃমহাদেশীয় কাপ একই রকম সহিংসভাবে শেষ হয়েছিল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের তৎকালীন ম্যানেজার ম্যাট বাসবি জোর দিয়ে বলেছিলেন যে "আর্জেন্টিনীয়দের সকল প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করা উচিত এবং এক্ষেত্রে ফিফার অবশ্যই এগিয়ে আসা উচিত"।[৩৪] ১৯৭০ সালে, ফিফার নির্বাহী কমিটি একটি বহু-মহাদেশীয় ক্লাব বিশ্বকাপ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল, যা কেবল ইউরোপ এবং দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, তবে অন্যান্য কনফেডারেশনগুলোও অন্তর্ভুক্ত করে; উয়েফা প্রতিরোধের কারণে এই ধারণাটিও এগিয়ে যায়নি।

১৯৭৩ সালে, ফরাসি সংবাদপত্র লেকিপ (যারা ইউরোপীয় কাপ প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছিলেন[৩৫]) ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা, উত্তর আমেরিকা এবং আফ্রিকার চ্যাম্পিয়নদের মধ্যকার একটি ক্লাব বিশ্বকাপ পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্য স্বেচ্ছায় কাজ করেছিল, যা সেই সময়ে বিদ্যমান একমাত্র মহাদেশীয় ক্লাব প্রতিযোগিতা ছিল; প্রতিযোগিতাটি সম্ভবত ১৯৭৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মধ্যে প্যারিসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, যার ফাইনাল পার্ক দেস প্রিন্সেসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ইউরোপীয়দের চরম নেতিবাচকতা এটি আয়োজন হতে বাধা দিয়েছিল।[৩৬] একই সংবাদপত্র ১৯৭৫ সালে আবারও ক্লাব বিশ্বকাপ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছিল, যেখানে অংশগ্রহণকারী হবেন ইউরোপীয় কাপের সেমি-ফাইনালে অংশগ্রহণকারী চার দল, কোপা লিবের্তাদোরেসের ফাইনালের দুই দল এবং আফ্রিকান ও এশীয় চ্যাম্পিয়ন দল; আরও একবার এই প্রস্তাবটি ফলপ্রসূ হয়নি।[৩৭] বহুমহাদেশীয় ফিফা-সমর্থিত ক্লাব বিশ্বকাপের ধারণাটিও জোয়াও আভেলাঞ্জে ১৯৭৪ সালে ফিফার সভাপতি নির্বাচনের জন্য তার প্রচারাভিযানে সমর্থন করেছিলেন। ১৯৭৭–১৯৭৮ এবং ১৯৮০–১৯৮১ মৌসুমের আসরে দক্ষিণ আমেরিকার চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে আন্তঃআমেরিকান কাপ জয়ের পরে মেক্সিকীয় ফুটবল ফেডারেশন এবং মেক্সিকীয় ক্লাব আমেরিকা এবং নাসিওনাল আন্তঃমহাদেশীয় কাপে অংশগ্রহণের দাবি জানিয়েছিল (হয় আন্তঃমহাদেশীয় কাপে আমেরিকান-মহাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে অথবা উয়েফা-কনমেবল-কনকাকাফ নতুন আন্তঃমহাদেশীয় কাপের অংশ হিসেবে); তবে অনুরোধটিও ব্যর্থ হয়েছিল।

আন্তঃমহাদেশীয় কাপ বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকায়,[৩৮] একটি ব্রিটিশ বিপণন সংস্থা ওয়েস্ট নালি, ১৯৮০ সালে একটি কার্যকর সমাধান খুঁজে বের করার জন্য উয়েফা এবং কনমেবলের জন্য কাজ করেছিল;[৩৯][৪০][৪১] টয়োটা মোটর কর্পোরেশন ওয়েস্ট নালির মাধ্যমে, প্রতিযোগিতাটি তাদের অধীনে নিয়ে যায় এবং এটি টয়োটা কাপ হিসেবে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়, যা জাপানে অনুষ্ঠিত একটি একক ম্যাচ ছিল।[৪২][৪৩] টয়োটা ১৯৮০ সালের আসরে টোকিওর জাতীয় অলিম্পিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য ৭,০০,০০০ মার্কিন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছিল, প্রতিটি অংশগ্রহণকারী দলকে ২,০০,০০০ মার্কিন ডলারেরও বেশি পুরস্কৃত করা হয়েছিল।[৪৪] টয়োটা কাপ নতুন বিন্যাসে প্রতিষ্ঠিত হলেও এটি নিয়ে সংশয়বাদ ছিল, কারণ খেলাটি সুদূর প্রাচ্যে অপরিচিত ছিল।[৪৫][৪৬] তবে, আর্থিক প্রণোদনাকে স্বাগত জানানো হয়েছিল, কেননা উক্ত সময়ে ইউরোপীয় এবং দক্ষিণ আমেরিকান ক্লাবগুলো আর্থিক সমস্যায় ভুগছিল।[৪৭]

ইউরোপীয় প্রত্যাহারের সম্ভাবনা থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য, টয়োটা, উয়েফা এবং প্রতিটি অংশগ্রহণকারী দল ইউরোপীয় কাপের চূড়ান্ত বিজয়ীদের আন্তঃমহাদেশীয় কাপে অংশগ্রহণের জন্য বার্ষিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল, যার একটি শর্ত ছিল উয়েফা ইউরোপীয় কাপে ক্লাবগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত অথবা উয়েফা এবং টয়োটা আন্তর্জাতিক মামলার মুখোমুখি হওয়া।[৪৮] ১৯৮৩ সালে, দ্য ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ১৯৮৫ সালে ওয়েস্ট নালির পৃষ্ঠপোষকতায় একটি ক্লাব বিশ্বকাপ আয়োজনের চেষ্টা করেছিল, যেখানে শুধুমাত্র উয়েফা অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।[৪৯]

প্রতিষ্ঠা

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এটিকে প্রথম ক্লাব বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জনের জন্য প্রতিযোগিতা করার সুযোগ হিসেবে দেখছে।

— মার্টিন এডওয়ার্ডস, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের চেয়ারম্যান, ১৯৮০–২০০২, ফিফা ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন; ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন নিউজ, ৩০ জুন ১৯৯৯।[৫০]

২০০০ ফিফা ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের কাঠামোটি বহু বছর আগে থেকেই স্থাপন করা হয়েছিল।[৫১] সেপ ব্লাটারের মতে, ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে এসি মিলানের তৎকালীন সভাপতি সিলভিও বেরলুস্কোনি এই প্রতিযোগিতার ধারণাটি নির্বাহী কমিটির কাছে উপস্থাপন করেছিলেন।[৫২] যেহেতু প্রতিটি কনফেডারেশনের একটি স্থিতিশীল মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ছিল, ফিফা মনে করেছিল যে ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতা আয়োজন করা দূরদর্শী এবং প্রাসঙ্গিক ছিল। প্রাথমিকভাবে, এই প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করার জন্য ৯টি দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন; যেখানে চীন, ব্রাজিল, মেক্সিকো, প্যারাগুয়ে, সৌদি আরব, তাহিতি, তুরস্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং উরুগুয়ে ছিল; ৯টি দেশের মধ্যে কেবল সৌদি আরব, মেক্সিকো, ব্রাজিল ও উরুগুয়ে ফিফার কাছে তাদের আগ্রহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল। ১৯৯৭ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর তারিখে, ফিফা ব্রাজিলকে এই প্রতিযোগিতাটি আয়োজনের জন্য নির্বাচিত করেছিল, যা প্রাথমিকভাবে ১৯৯৯ সালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।[৫৩] ১৯৬৬ ফিফা বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম সদস্য ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি ববি চার্লটন বলেছিলেন যে ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ "প্রথম সত্যিকারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার একটি চমৎকার সুযোগ" প্রদান করেছে।[৫৪] এই প্রতিযোগিতাটি ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থমূল্য প্রদান করেছিল এবং প্রতিযোগিতাটির সম্প্রচার স্বত্ব (যার মূল্য ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল) পাঁচটি মহাদেশ জুড়ে ১৫টি সম্প্রচারকের কাছে বিক্রি করা হয়েছিল।[৫৪] ১৯৯৯ সালের ১৯শে অক্টোবর তারিখে রিউ দি জানেইরুর কোপাকাবানা প্রাসাদ হোটেলে প্রথম ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে।[৫৫]

তারা দাবি করা হয়েছিল যে ইংরেজরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে আগ্রহী ছিল না, তবুও বিবিসি এই প্রতিযোগিতা সম্প্রচার করার জন্য ৬০ জনকে পাঠিয়েছিল। এটি প্রদর্শন করে যে এটি তাদের ইতিহাসে অংশ নেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা ছিল। তারা এখানে এসেছিল এই ভেবে যে তারা সহজেই শিরোপা জয়লাভ করতে পারবে, তবে তাদের ভাস্কোর শক্তি সম্পর্কে ধারণা না। ম্যানচেস্টারের কোনো খেলোয়াড় এই মুহূর্তে ভাস্কো দলে জায়গা পাবে না। ব্রাজিলীয়রা বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়, ইউরোপীয়রাআ তাদের ধারে কাছেও নেই।

— ইউরিকো মিরান্দা, ভাস্কো দা গামা তৎকালীন সহ-সভাপতি, ১৯৮৬–২০০০, ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমে এই প্রতিযোগিতাকে যে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ও ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের স্তর এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে তার দলের ৩–১ গোলের ব্যবধানে জয়ের পরে ব্রাজিলের গুরুত্ব সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন; ইন্ডিপেন্ডেন্ট অনলাইন, ১১ জানুয়ারি ২০০০।[৫৬]

উদ্বোধনী আসরটি ১৯৯৯ সালে ১৯৯৮ সালের মহাদেশীয় ক্লাব চ্যাম্পিয়ন, আন্তঃমহাদেশীয় কাপের চ্যাম্পিয়ন এবং আয়োজক দেশের জাতীয় ক্লাব প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন দলের মধ্যকার প্রতিযোগিতা আয়োজন করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তবে এটি এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছিল। যখন এটি পুনরায় নির্ধারণ করা হয়েছিল, তখন প্রতিযোগিতায় ১৯৯৯ সালের মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়ন দলগুলো অংশগ্রহণ করেছিল, যা ১৯৯৮ সালের দলগুলো হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল: ব্রাজিলীয় ক্লাব করিন্থিয়ান্স এবং ভাস্কো দা গামা, ইংরেজ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, মেক্সিকীয় ক্লাব নেকাক্সা, মরক্কী ক্লাব রাজা কাসাব্লাঙ্কা, স্পেনীয় ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ, সৌদি ক্লাব আল নাসর এবং অস্ট্রেলীয় ক্লাব দক্ষিণ মেলবোর্ন।[৫৭] এই প্রতিযোগিতার প্রথম গোলটি রিয়াল মাদ্রিদের নিকোলা আনেলকা আল নাসরের বিপক্ষে করেছেন; ম্যাচটি রিয়াল মাদ্রিদ ৩–১ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল।[৫৮] ফাইনালটি ছিল সর্ব-ব্রাজিলীয়, উক্ত ম্যাচটি একমাত্র ম্যাচ যেখানে উভয় দলই নিজেদের মাঠে অংশগ্রহণ করেছে।[৫৯] ১৪ই জানুয়ারি তারিখে রিউ দি জানেইরুর মারাকানা স্টেডিয়ামে ৭৩,০০০ দর্শকের সামনে অনুষ্ঠিত ব্রাজিলীয় ক্লাব করিন্থিয়ান্স ফাইনালের অতিরিক্ত সময় শেষে ০–০ গোলে ড্র করার পর পেনাল্টি শুট-আউটে আরেক ব্রাজিলীয় ক্লাব ভাস্কো দা গামাকে ৪–৩ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে শিরোপা জয়লাভ করেছে।[৬০][৬১][৬২][৬৩]

এই প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় আসরটি ২০০১ সালে স্পেনে আয়োজনের জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছিলম যেখানে ১২টি ক্লাব অংশগ্রহণ করার কথা ছিল।[৬৪] ২০০১ সালের ৬ই মার্চ তারিখে, আ কারুনিয়ার কংগ্রেস সেন্টারে গ্রুপ পর্বে অংশগ্রহণকারী দলের গ্রুপ নির্ধারণ করার জন্য ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[৬৫][৬৬] তবে ১৮ই মে তারিখে, ফিফার বিপণন অংশীদার আইএসএলের দেউলিয়া হওয়ার মতো কারণে এটি বাতিল করা হয়েছিল।[৬৭] বাতিল সংস্করণের অংশগ্রহণকারীরা প্রত্যেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৭,৫০,০০০ মার্কিন ডলার পেয়েছিল; রেয়াল ফেদেরাসিওন এস্পানিওলা দে ফুতবল (আরএফইএফ) ফিফার কাছ থেকে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পেয়েছিল।[৬৮]

২০০৩ সালে এই প্রতিযোগিতাটি মঞ্চস্থ করার আরেকটি প্রচেষ্টা করা হয়েছিল, যেখানে ১৭টি দেশ আয়োজক হতে চেয়েছিল, তাও ব্যর্থ হয়েছিল।[৬৯][৭০] অতঃপর ফিফা উয়েফা, কনমেবল এবং টয়োটার সাথে আন্তঃমহাদেশীয় কাপ এবং ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপকে একীভূত করার জন্য একমত হয়েছিল।[৭১] ফুটবল বিশ্বের বেশিরভাগ উন্নত মহাদেশের প্রতিনিধি ক্লাবগুলো দ্বারা অনুষ্ঠিত শেষ আন্তঃমহাদেশীয় কাপটি ২০০৪ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, অতঃপর আন্তঃমহাদেশীয় কা ২০০৫ সালের ডিসেম্বর মাসে জাপানে পুনরায় চালু হওয়া ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সাথে একীভূত হয়েছে।[৭২] ২০১৭ সাল পর্যন্ত আন্তঃমহাদেশীয় কাপের সকল চ্যাম্পিয়ন দলকে বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যম এবং ফুটবল সম্প্রদায় কার্যত "বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন" হিসেবে বিবেচনা করেছিল,[৭৩][৭৪][৭৫] অতঃপর ২০১৭ সালে ফিফা আনুষ্ঠানিকভাবে (দে জুরি) তাদের সবাইকে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ বিজয়ীদের সমান মর্যাদায় আনুষ্ঠানিক ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।[৭৬][৭৭]

প্লে-অফ আয়োজন

২০০৫ সালের আসরটি পূর্ববর্তী বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের চেয়ে ছোট ছিল, কেননা প্রতিটি মহাদেশের বিভিন্ন ক্লাব মৌসুমের সময়সূচী নির্ধারণের সমস্যা হ্রাস করা প্রয়োজন ছিল। উক্ত আসরে মাত্র ছয়টি মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়ন অংশগ্রহণ করেছিল, কনমেবল এবং উয়েফার প্রতিনিধিরা সরাসরি সেমি-ফাইনালে অংশগ্রহণ করেছিল। উক্ত আসরে আন্তঃমহাদেশীয় কাপের শিরোপা, টয়োটা শিরোপা এবং ২০০০ সালের ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপার পরিবর্তে একটি নতুন শিরোপার উদ্বোধন করা হয়েছিল। এই প্রতিযোগিতার ২০০৫ সালের আসরের ড্র ২০০৫ সালের ৩০শে জুলাই তারিখে জাপানের টোকিওর ওয়েস্টিন হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[৭৮] ২০০৫ সালের আসরের সেমি-ফাইনালে সাও পাওলো এবং সৌদি ক্লাব আল ইত্তিহাদের মধ্যে এক জমজমাট লড়াই হয়েছিল।[৭৯] ফাইনালে, মিনেইরোর করা একমাত্র গোলটি ইংরেজ ক্লাব লিভারপুলকে পরাজিত করে শিরোপা জয়লাভ করতে যথেষ্ট ছিল;[৮০] মিনেইরো প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল করেছেন।[৮১]

ইন্তেরনাসিওনাল ২০০৬ কোপা লিবের্তাদোরেসের ফাইনালে পূর্ববর্তী আসরের বিশ্ব ও দক্ষিণ আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন সাও পাওলোকে পরাজিত করে ২০০৬ সালের আসরের জন্য উত্তীর্ণ হয়েছিল।[৮২] সেমি-ফাইনালে, ইন্তেরনাসিওনাল মিশরীয় ক্লাব আল আহলিকে পরাজিত করে ফাইনালে বার্সেলোনার মুখোমুখি হয়েছিল।[৮৩] আদ্রিয়ানো গাবিরুর একমাত্র গোলের বিনিময়ে শিরোপাটি পুনরায় ব্রাজিলীয় ক্লাবের ঘরে উঠেছিল।[৮৪][৮৫] ২০০৭ সালে শেষ পর্যন্ত ব্রাজিলের আধিপত্যের অবসান হয়েছিল: উক্ত আসরে ইতালীয় ক্লাব এসি মিলান জাপানি ক্লাব উরাওয়া রেড ডায়মন্ডসের বিরুদ্ধে একটি জমজমাট ম্যাচ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল, এসি মিলান ইয়োকোহামার আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ৬৭,০০০-এর বেশি দর্শকের সামনে অনুষ্ঠিত সেমি-ফাইনালে ১–০ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল।[৮৬] ফাইনালে, এসি মিলান আর্জেন্টিনীয় ক্লাব বোকা জুনিয়র্সকে ৪–২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছিল, উক্ত ম্যাচের ৭৭তম মিনিটে জর্জীয় রক্ষণভাগের খেলোয়াড় কাখা কালাজে এই প্রতিযোগিতার ফাইনালের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লাল কার্ড পেয়েছিলেন।[৮৭] এগারো মিনিট পরে, বোকা জুনিয়র্সের পাবলো লেদেসমাও লাল কার্ড পেয়েছিলেন।[৮৮] পরবর্তী বছর, ইংরেজ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাদের সেমি-ফাইনালের প্রতিপক্ষ জাপানি ক্লাব গাম্বা ওসাকাকে ৫–৩ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছিল।[৮৯] তারা ২০০৮ সালে ইকুয়েডরীয় ক্লাব কুইতোকে ১–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।[৯০][৯১]

২০১১ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের পর বার্সেলোনার খেলোয়াড়গণ তাদের ম্যানেজার পেপ গার্দিওলাকে বাতাসে উত্তোলন করছে

তিন বছর পূর্বে গৃহীত না হওয়ার পর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ২০০৯ এবং ২০১০ সালে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার জন্য আবেদন করেছিল, যা গৃহীত হয়েছিল।[৯২] বার্সেলোনা ২০০৯ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে বিশ্ব ও ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে পরাজিত করে ২০০৯ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের জন্য উত্তীর্ণ হয়েছিল।[৯৩] সেমি-ফাইনালে মেক্সিকীয় ক্লাব আতলান্তেকে ৩–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত ফাইনালে এস্তুদিয়ান্তেসের মুখোমুখি হয়েছিল বার্সেলোনা।[৯৪] আবুধাবির জায়েদ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে খুব জমজমাট লড়াইয়ের পর অতিরিক্ত সময়ে বার্সেলোনা আর্জেন্টিনীয় ক্লাব এস্তুদিয়ান্তেসকে ২–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছিল;[৯৫][৯৬][৯৭] ইক্ত ম্যাচে লিওনেল মেসি হেডার থেকে গোল করে বার্সেলোনার জন্য নিশ্চিত করেছিল, যার মাধ্যমে বার্সেলোনা একটি অভূতপূর্ব সেক্সটুপল সম্পূর্ণ করেছিল।[৯৮][৯৯][১০০][১০১][১০২] ২০১০ সালের আসরে প্রথমবারের মতো কোন অ-ইউরোপীয় এবং অ-দক্ষিণ আমেরিকান ক্লাব ফাইনালে পৌঁছেছিল; গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের মাজেম্বে সেমি-ফাইনালে ব্রাজিলের ইন্তেরনাসিওনালকে ২–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হয়েছিল, যারা দক্ষিণ কোরীয় ক্লাব সংনামকে ৩–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছিল।[১০৩][১০৪] ফাইনালে ইন্টার মিলান তাদের কুইন্টুপল সম্পূর্ণ করার জন্য একই ব্যবধানে দিয়ে মাজেম্বেকে পরাজিত করেছিল।[১০৫][১০৬]

২০১১ এবং ২০১২ সালের ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের আসরদ্বয় পুনরায় জাপানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[১০৭] ২০১১ সালে, বার্সেলোনা তাদের সেমি-ফাইনাল ম্যাচটি কাতারি ক্লাব আল সাদের বিরুদ্ধে ৪–০ গোলের ব্যবধানে খুব সহজে জয়লাভ করেছিল।[১০৮] ফাইনালে, বার্সেলোনা সান্তোসের বিরুদ্ধে তাদের অসাধারণ খেলার পুনরাবৃত্তি করেছিল।[১০৯] উক্ত আসরের ফাইনালে মেসি প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে দুটি ভিন্ন ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল করেছিলেন।[১১০] ২০১২ সালের আসরে করিন্থিয়ান্স ইউরোপের আধিপত্যের অবসান ঘটিয়েছিল, উক্ত ফাইনালে জাপানে আসা করিন্থিয়ান্সের ৩০,০০০-এরও অধিক দর্শককে গর্বিত করে তারা শিরোপা জয়লাভ করেছিল, যা "ইনভাসাও দা ফিয়েল" নামে পরিচিত। এর মাধ্যমে তারা বার্সেলোনার পাশাপাশি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের দুইবারের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।[১১১][১১২] সেমি-ফাইনালে, আল আহলি ম্যাচে ড্র রাখতে সক্ষম হলেও করিন্থিয়ান্সের পাওলো গুরেরোর গোলে করিন্থিয়ান্স ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছিল।[১১৩] ফাইনালে গুরেরো পুনরায় করিন্থিয়ান্সের হয়ে গোল করেছিল, যেখানে তারা ইংরেজ ক্লাব চেলসিকে ১–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে ব্রাহিলে শিরোপা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল।[৬২][১১৪]

২০১৩ এবং ২০১৪ সালের ক্লাব বিশ্বকাপ মরক্কোতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। প্রথম আসরে স্বাগতিক ক্লাব রাজা কাসাব্লাঙ্কা অসাধারণ নৈপুণ্যে ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছিল, যার শুরুটা হয়েছিল প্লে-অফে অংশগ্রহণ করা মাধ্যমে। সেমি-ফাইনালে ব্রাজিলীয় ক্লাব আতলেতিকো মিনেইরোকে পরাজিত করে তারা দ্বিতীয় আফ্রিকান ক্লাব হিসেবে ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছিল।[১১৫] মাজেম্বের মতো রাজা কাসাব্লাঙ্কাও ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নের কাছে পরাজিত হয়েছিল, এবার বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ২–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয় আফ্রিকার ক্লাবটি।[১১৬] ২০১৪ সালে দক্ষিণ আমেরিকান ও ইউরোপীয় ক্লাবের মধ্যে পুনরায় ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে স্পেনীয় ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ আর্জেন্টিনীয় ক্লাব সান লোরেন্সোকে ২–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছিল।[১১৭]

২০১৫ এবং ২০১৬ সালের আসরের আয়োজকের দায়িত্ব পুনরায় জাপানকে দেওয়া হয়েছিল; যার ফলে তারা ১২তম ও ১৩তম আসরে যথাক্রমে সপ্তম ও অষ্টমবারের মতো আয়োজক হয়েছিল। ২০১৫ সালের আসরে রিভার প্লেত এবং বার্সেলোনার মধ্যে ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে বার্সেলোনা তাদের তৃতীয় ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জয়লাভ করেছিল; উক্ত ম্যাচে লুইস সুয়ারেস দুইটি এবং লিওনেল মেসি একটি গোল করেছেন। ২০১৫ সালের আসরে ঘটে যাওয়া একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো সানফ্রেকে হিরোশিমার তৃতীয় স্থান অধিকার করা, যা জাপানের কোন ক্লাবের সর্বোচ্চ অর্জন ছিল। যদিও এই রেকর্ডটি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি, কেননা ২০১৬ সালের আসরে জে১ লিগের চ্যাম্পিয়ন কাশিমা অ্যান্টলার্স সেমি-ফাইনালে প্রতিপক্ষকে ৭–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে ফাইনালে অংশগ্রহণ করেছিল। ফাইনালে গাকু শিবাসাকি গোল করে কাশিমা অ্যান্টলার্সকে প্রথম ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ (ইউরোপ এবং দক্ষিণ আমেরিকার বাইরে কোন ক্লাব দ্বারা যা পূর্বে জয়লাভ হয়নি) জয়ের চেষ্টা করেছিলেন, তবে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর হ্যাট্রিকে রিয়াল মাদ্রিদ অতিরিক্ত সময়ে ৪–২ গোলের ব্যবধানে ম্যাচটি জয়লাভ করেছিল।[১১৮]

রিয়াল মাদ্রিদ প্রথম দল হিসেবে শিরোপাটি টানা দুইবার জয়লাভ করার পর ২০১৭ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে সংবাদ সম্মেলনে জিনেদিন জিদান

সংযুক্ত আরব আমিরাত ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে আসরদ্বয় আয়োজন করেছিল।[১১৯][১২০] ২০১৭ সালে রিয়াল মাদ্রিদের ক্লাব বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে টানা দুই বার শিরোপা জয়লাভ করার কৃতিত্ব অর্জন করেছিল। রিয়াল মাদ্রিদ ফাইনালে ব্রাজিলীয় ক্লাব গ্রেমিওকে পরাজিত করার পরে তারা শিরোপা রক্ষাকারী প্রথম দল হয়েছিল, এর পূর্বে তারা সেমি-ফাইনালে আল জাজিরাকে পরাজিত করেছিল। ২০১৮ সালে আল আইন প্রথম আমিরাতি দল হিসেবে ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়েছিল, এর পাশাপাশি তারা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছানোর জন্য দ্বিতীয় এশীয় দল ছিল।[১২১] ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ আল আইনকে ৪–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে এই প্রতিযোগিতায় তাদের চতুর্থ এবং প্রতিযোগিতার ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে টানা তিন বার শিরোপা জয়লাভ করেছিল। এর মাধ্যমে রিয়াল মাদ্রিদ ২০১৮ সালের আসর জয়ের পরে তাদের আন্তর্জাতিক শিরোপার সংখ্যা সাতটিতে সম্প্রসারিত করেছিল (তার মধ্যে তিনটি আন্তঃমহাদেশীয় কাপ এবং চারটি ক্লাব বিশ্বকাপ)।[১২২]

২০১৯ সালের ৩রা জুন তারিখে ফিফা কাতারকে ২০১৯ এবং ২০২০ সালের আসর আয়োজনের দায়িত্ব প্রদান করেছিল।[১২৩][১২৪] কনমেবলের উপ-মহাসচিব ও উন্নয়ন পরিচালক গোনসালো বেয়োসোর এর পূর্বে বলেছিলেন যে ২০১৯ এবং ২০২০ আসর উভয়ই জাপানে অনুষ্ঠিত হবে।[১২৫] ২০১৯ সালের আসরের ফাইনালে লিভারপুল ফ্লামেঙ্গোকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো এই প্রতিযোগিতার শিরোপা জয়লাভ করেছিল।[১২৬] ২০২০ সালের আসরে জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ তিগ্রেস ইউএএনএলকে ১–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে তাদের সেক্সটুপল সম্পূর্ণ করেছিল।[১২৭] ২০২০ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক স্থগিত হওয়ার কারণে ফুটবলের সময়সূচীর ওপর কোভিড-১৯ এর মহামারীর প্রভাবের কারণে, টোকিও অলিম্পিক, উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ এবং কোপা আমেরিকা ২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০২১ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছিল। অতঃপর ২০২১ সালে, জাপান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন জাপানে কোভিড-১৯ এর মহামারীর কারণে ভক্তদের উপস্থিতির উপর বিধিনিষেধের সম্ভাবনার কারণে ২০২১ সালের আসরটি আয়োজনের প্রতিশ্রুতি প্রত্যাহার করে নিয়েছিল।[১২৮][১২৯] ২০২১ সালের ২০শে অক্টোবর তারিখে, ফিফা কাউন্সিলের সভায় সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ২০২১ সালের আসরের আয়োজক নির্ধারণ করা হলেও ২০২১ সালের শেষ থেকে ২০২২ সালের প্রথম দিকে এই আসরটি স্থগিত করা হয়েছিল।[১৩০] উক্ত আসরের ফাইনালে ইংরেজ ক্লাব চেলসি ব্রাজিলীয় ক্লাব পালমেইরাসকে ২–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছিল।[১৩১][১৩২][১৩৩][১৩৪]

সম্প্রসারণ

২০১৬ সালের শেষের দিকে, ফিফা সভাপতি জান্নি ইনফান্তিনো ২০১৯ সালে শুরু হওয়া ৩২টি ক্লাবের সমন্বয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ সম্প্রসারণের পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং সম্প্রচারক এবং পৃষ্ঠপোষকদের কাছে আরও ভারসাম্যপূর্ণ এবং আকর্ষণীয় হওয়ার জন্য জুন মাসে পুনঃনির্ধারণের পরামর্শ দিয়েছিলেন।[১৩৫] ২০১৭ সালের শেষের দিকে, ফিফা এই প্রতিযোগিতাটি ২৪টি ক্লাবে সম্প্রসারিত করার প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা করেছিল এবং ফিফা কনফেডারেশন্স কাপের পরিবর্তে ২০২১ সালের হতে প্রতি চার বছর অন্তর এটি অনুষ্ঠিত হবে।[১৩৬]

২০২১ সালে শুরু হতে যাওয়া এই নতুন বিন্যাসের আসরটি বার্ষিক হওয়ার পরিবর্তে প্রতি চার বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ২৪টি ক্লাবের মধ্যে ৩১টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের বছর হয়ে পূর্ববর্তী চারটি মৌসুমের উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের চ্যাম্পিয়ন ও রানার-আপ, উয়েফা ইউরোপা লিগের চ্যাম্পিয়ন এবং কোপা লিবের্তাদোরেসের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবগুলো অংশগ্রহণ করবে, বাকি ক্লাবগুলো চারটি কনফেডারেশন থেকে উত্তীর্ণ হবে।[১৩৭] এই প্রতিযোগিতাটি উয়েফা নেশনস লিগের পাশাপাশি, ২০২১ থেকে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত সময়ে ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।[১৩৮]

২০১৯ সালের মার্চ মাসে, ফিফা ২০২১ সালে শুরু হওয়া ক্লাব বিশ্বকাপ সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যার প্রথম আসরটি চীনে অনুষ্ঠিত হবে।[১৩৯] তবে, কোভিড-১৯ এর মহামারীর কারণে নির্ধারিত সময়ের সমস্যার কারণে আসরটি পরবর্তী এক বছরের জন্য পুনরায় নির্ধারণ করা হবে।[১৪০]

বিন্যাস

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে
অংশগ্রহণকারী ক্লাবের বণ্টন[১৪১]
প্লে- অফ
কোয়ার্টার-ফাইনাল
সেমি-ফাইনাল
ফাইনাল
  • সেমি-ফাইনালে বিজয়ী

২০১২ সাল অনুযায়ী, অধিকাংশ ক্লাব তাদের মহাদেশীয় প্রতিযোগিতা জয়লাভ করে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের জন্য উত্তীর্ণ হতো, উক্ত প্রতিযোগিতাগুলোর মধ্যে রয়েছে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ, কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস লিগ, ক্যাফ চ্যাম্পিয়নস লিগ, কোপা লিবের্তাদোরেস, ওএফসি চ্যাম্পিয়নসলিগ এবং উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ। এই প্রতিযোগিতাগুলো ছাড়াও স্বাগতিক দেশের জাতীয় লিগের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবও ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের জন্য উত্তীর্ণ হতো।[১৪১]

এই প্রতিযোগিতার প্রথম আসরটি দুটি পর্বে বিভক্ত করা হয়েছিল, যেখানে ৮টি ক্লাবকে চারটি দলের দুটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছিল। প্রতিটি গ্রুপে প্রথম স্থান অধিকারী ক্লাব ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল এবং দ্বিতীয় স্থান অধিকারী ক্লাব তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিল। এই প্রতিযোগিতাটি ২০০৫ সালে পুনরায় চালু হওয়ার সময় এর বিন্যাসটি একটি একক-অপনয়ন প্রতিযোগিতায় রূপান্তরিত হয়েছিল, যেখানে ক্লাবগুলো একে অপরের সাথে মাত্র এক বার মুখোমুখি হয়েছিল। যদি একটি ম্যাচের ফলাফল যদি পূর্ণ ৯০ মিনিট পর সমতায় থাকতো তবে তা প্রথমে অতিরিক্ত সময়ের খেলা এবং প্রয়োজন অনুসারে পরবর্তীতে পেনাল্টি শুট-আউটের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে।উক্ত আসরে ছয়টি ক্লাব দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিযোগিতা করেছিল, যার তিনটি পর্ব ছিল: কোয়ার্টার-ফাইনাল, সেমি-ফাইনাল এবং ফাইনাল। কোয়ার্টার-ফাইনাল পর্বে ওএফসি চ্যাম্পিয়নসলিগের চ্যাম্পিয়ন, ক্যাফ চ্যাম্পিয়নস লিগের চ্যাম্পিয়ন, এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের চ্যাম্পিয়ন এবং কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস লিগের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব একে অপরের বিরুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। পরবর্তীকালে, কোয়ার্টার-ফাইনালে বিজয়ী ক্লাবগুলো সেমি-ফাইনালে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের চ্যাম্পিয়ন এবং কোপা লিবের্তাদোরেসের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের মুখোমুখি হয়েছিল। অতঃপর সেমি-ফাইনালের বিজয়ী ক্লাবগুলো ফাইনালে খেলার জন্য উত্তীর্ণ হয়েছিল।[১৪১]

অতঃপর এই প্রতিযোগিতার বিন্যাসে পরিবর্তন করা হয়েছে, যেখানে পঞ্চম স্থান নির্ধারণী ম্যাচ রয়েছে এবং স্বাগতিক দেশের জাতীয় লিগের চ্যাম্পিয়নদের জন্য একটি স্থান রয়েছে। এই প্রতিযোগিতার নতুন বিন্যাসে চারটি পর্ব রয়েছে: প্লে-অফ, কোয়ার্টার-ফাইনাল, সেমি-ফাইনাল এবং ফাইনাল। প্রথম পর্বে ওএফসি চ্যাম্পিয়নসলিগের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের বিরুদ্ধে স্বাগতিক দেশের জাতীয় লিগের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব মুখোমুখি হয়। এই পর্বের বিজয়ী কোয়ার্টার-ফাইনালে ক্যাফ চ্যাম্পিয়নস লিগের চ্যাম্পিয়ন, এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের চ্যাম্পিয়ন এবং কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস লিগের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের মুখোমুখি হয়। এই পর্বে বিজয়ী ক্লাবগুলো উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের চ্যাম্পিয়ন এবং দক্ষিণ আমেরিকার কোপা লিবের্তাদোরেস চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের সাথে সেমি-ফাইনালে মুখোমুখি হয়। প্রতিটি সেমি-ফাইনালের বিজয়ী ফাইনালে একে অপরের মুখোমুখি হয়।[১৪১]

পুরস্কার

শিরোপা

এই প্রতিযোগিতায় উদ্বোধনী আসরে ব্যবহৃত ট্রফিটির নাম দেওয়া হয়েছিল ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা। মূল প্রতীকটি সাওয়ায়া এবং মোরোনি দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল, একটি ইতালীয় নকশাকার সংস্থা (যারা সাংস্কৃতিক পটভূমি এবং নকশা ধারণাগুলোর মাধ্যমে সমসাময়িক নকশা তৈরি করে থাকে) শিরোপাটি তৈরি করেছিল। নকশা করার কারখানাটি ইতালির মিলানে অবস্থিত। সম্পূর্ণ রূপালী রঙের শিরোপাটির ওজন ছিল ৪ কেজি (৮.৮ পাউন্ড) এবং উচ্চতা ছিল ৩৭.৫ সেন্টিমিটার (১৪.৮ ইঞ্চি)। এর ভিত্তি এবং প্রশস্ততম বিন্দুগুলো ১০ সেন্টিমিটার (৩.৯ ইঞ্চি) দীর্ঘ। শিরোপাটিতে দুটি স্তম্ভমূলের একটি ভিত্তি ছিল, যার মধ্যে চারটি আয়তক্ষেত্রাকার স্তম্ভ ছিল। চারটি স্তম্ভের মধ্যে দুটিতে শিলালিপি ছিল; একটিতে "ফিফা ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ" শব্দটি ছিল। অন্যটিতে "ফিফা" অক্ষরগুলো খোদাই করা ছিল। উপরন্তু, ১৯৯৮ ফিফা বিশ্বকাপের বলের উপর ভিত্তি করে তৈরি আডিডাস ত্রিকোলোরে নামক একটি ফুটবল দেখা গিয়েছিল। প্রতীকটির উৎপাদন খরচ ছিল ২৫,০০০ মার্কিন ডলার। ২০০০ সালের ৪ঠা জানুয়ারি তারিখে, রিউ দি জানেইরুর শেরাটন হোটেলস অ্যান্ড রিসোর্টে প্রথমবারের মতো এটি উপস্থাপন করা হয়েছিল।[১৪২][১৪৩][১৪৪][১৪৫]

যেমন [ফিফা] নারী [বিশ্বকাপ] শিরোপাটিতে একটি স্বতন্ত্র নারী টীকা ছিল, তেমন এই নতুন শিরোপাটিও পুরুষতান্ত্রিক ছিল। এটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের স্থিতির মতো স্থায়ী ধারণাগুলোর পাশাপাশি জ্যামিতি এবং স্থাপত্যের একটি সর্বোত্তম ধারণা দ্বারাও অনুপ্রাণিত।

উইলিয়াম সাওয়ায়া, ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপার নকশাকার, প্রতীকের সম্পর্কে করে বলেছিলেন; ফিফা, ৩ জানুয়ারি ২০০০।[১৪২]

এই প্রতিযোগিতাটি, তার বর্তমান বিন্যাসে, বর্তমান শিরোপার সাথে তার নাম ভাগ করে নেয়, যা "ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ" বা শুধুমাত্র "লা কোপা" নামেও পরিচিত। এই শিরোপাটি ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবকে প্রদান করা হয়। ২০০৫ সালের ৩০শে জুলাই তারিখে টোকিওতে এই প্রতিযোগিতার ২০০৫ সালের আসরের ড্রয়ের সময় নতুন শিরোপাটি উন্মোচন করা হয়েছিল। ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে টমাস ফাত্তোরিনি লিমিটেডে, ইংরেজ নকশাকার জেন পাওয়েল, তার সহকারী ডন ফোর্বসের পাশাপাশি ফিফার নির্দেশে এই প্রতীকটি নকশা করেছিলেন। ৫.২ কেজি (১১ পাউন্ড) ওজনের স্বর্ণ-রৌপ্য রঙের শিরোপাটির উচ্চতা ৫০ সেন্টিমিটার (২০ ইঞ্চি)। এর ভিত্তি এবং প্রশস্ততম বিন্দুগুলো ঠিক ২০ সেন্টিমিটার (৭.৯ ইঞ্চি) দীর্ঘ। এটি পিতল, তামা, স্টার্লিং রৌপ্য, গিল্ডিং ধাতু, অ্যালুমিনিয়াম, ক্রোম এবং রোডিয়ামের সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়েছে। শিরোপাটি সোনার ধাতুপট্টাবৃত।[৭৮][১৪৩]

ফিফার মতে, নকশাটিতে ছয়টি স্তম্ভ দেখানো হয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট ছয়টি কনফেডারেশনের ছয়টি অংশগ্রহণকারী দলের প্রতিনিধিত্ব করে এবং এই প্রতিযোগিতার বিজয়ীকে উল্লেখ করে একটি পৃথক ধাতব কাঠামো রয়েছে। তারা একটি ফুটবলের আকৃতিতে একটি গোলক ধরে রাখে, যা ফিফার প্রায় সমস্ত শিরোপায় বিদ্যমান একটি ধারাবাহিক বৈশিষ্ট্য। সোনালী স্তম্ভমূলের "ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ" বাক্যাংশটি উল্লেখ রয়েছে।[১৪৩]

ক্লাব বিশ্বকাপের প্রতিটি আসর শেষে, আসরের তাদের চূড়ান্ত দলগত অবস্থান ব্যতীত অন্যান্য অর্জনের জন্য খেলোয়াড় এবং দলগুলোকে কিছু পুরস্কার প্রদান করা হয়। বর্তমানে তিনটি পুরস্কার রয়েছে:[১৪৬]

  • আসরের সেরা খেলোয়াড়ের জন্য গোল্ডেন বল, যা গণমাধ্যম ব্যক্তিদের ভোট দ্বারা নির্ধারিত হয়। এছাড়াও আসরের সেরা খেলোয়াড়কে আলিবাবা ক্লাউড পুরস্কার (ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের মূল পৃষ্ঠপোষক) প্রদান করা হয়; অন্যদিকে রৌপ্য বল এবং ব্রোঞ্জ বল যথাক্রমে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সেরা খেলোয়াড়কে প্রদান করা হয়;[১৪৬]
  • ফিফা ফেয়ার প্লে কমিটি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত পয়েন্ট পদ্ধতি এবং মানদণ্ড অনুযায়ী, শাস্তিমূলক পয়েন্টে সেরা দলকে ফিফা ফেয়ার প্লে পুরস্কার করা হয়;[১৪৬]
  • আসরের প্রতিটি ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের জন্য ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার প্রদান করা হয়। ২০১৩ সালে এটি প্রথম প্রদান করা হয়েছে।

এই প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন ক্লাব ফিফা চ্যাম্পিয়নস প্রতীক পাওয়ার অধিকারী; এতে শিরোপার একটি চিত্র রয়েছে, যা শিরোপাধারী চ্যাম্পিয়ন তাদের দলের পোশাকে কেবলমাত্র পরবর্তী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল পর্যন্ত প্রদর্শন করার অধিকারী। প্রতীকের প্রথম আসরটি ২০০৭ সালের ফাইনালের বিজয়ী মিলানকে প্রদান করা হয়েছে।[১৪৭][১৪৮] ২০০৮ সালের ফাইনাল পর্যন্ত পূর্ববর্তী চারটি চ্যাম্পিয়নকে প্রতীকটি পরিধান করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, যেখানে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড শিরোপা জয়লাভ করে প্রতীকটি পরিধান করার অধিকার অর্জন করেছিল।[১৪৯]

প্রতিটি আসরের শীর্ষ তিনটি ক্লাব তাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে বিতরণ করার জন্য স্বর্ণ, রৌপ্য অথবা ব্রোঞ্জ পদকের একটি সেট অর্জন করে।[১৪৬]

পুরস্কারের অর্থমূল্য

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ক্লাবগুলো তাদের ফলাফলের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ গ্রহণ করে থাকে। এই প্রদানকৃত অর্থের পরিমাণ বিভিন্ন পর্যায়ের বিভক্ত, যার ওপর তাদের টেলিভিশন বাজারের মূল্য নির্ভর করে। ২০২১ সালের আসরের জন্য, ক্লাবগুলোকে প্রদত্ত পুরস্কারের অর্থের পরিমাণ নিম্নরূপ:

  • চ্যাম্পিয়ন: €৫ মিলিয়ন
  • রানার-আপ: €৪ মিলিয়ন
  • তৃতীয় স্থান: €২.৫ মিলিয়ন
  • চতুর্থ স্থান: €২ মিলিয়ন
  • পঞ্চম স্থান: €১.৫ মিলিয়ন
  • ষষ্ঠ স্থান: €১ মিলিয়ন
  • সপ্তম স্থান: €০.৫ মিলিয়ন

২০০০ ফিফা ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী আসর ছিল; যেখানে ফিফা অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলোর জন্য ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থমূল্য প্রদান করেছিল। অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলোর দ্বারা প্রাপ্ত পুরস্কারের অর্থমূল্য অংশগ্রহণ এবং ফলাফলের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট অর্থ প্রদানে ভাগ করা হয়েছিল। পঞ্চম থেকে অষ্টম স্থান অধিকারী ক্লাবগুলো ২.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পেয়েছিল। চতুর্থ স্থান অধিকারী ক্লাবটি ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী ক্লাবটি ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পেয়েছিল। রানার-আপ ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জন করেছিল, অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন ক্লাবটি ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জন করেছিল।[১৫০]

২০০৫ সালের ফিফা ক্লাব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে আসরটি পুনরায় চালু করার সময় বিভিন্ন পরিমাণ অর্থমূল্য প্রদান করা হয়েছিল এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জয়লাভ করার মানদণ্ডে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছিল। তবে মোট অর্থমূল্যের পরিমাণ ১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছিল। উক্ত আসরে চ্যাম্পিয়ন ক্লাব ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং রানার-আপ ক্লাব মার্কিন ৪ মিলিয়ন, তৃতীয় স্থান অধিকারী ক্লাব ২.৫ মিলিয়ন ডলার, চতুর্থ স্থান অধিকারী ক্লাব ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, পঞ্চম স্থান অধিকারী ক্লাব ১.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ষষ্ঠ স্থান অধিকারী ক্লাব জন্য ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জন করেছিল।[১৫১]

২০০৭ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের জন্য, ওএফসি চ্যাম্পিয়ন এবং স্বাগতিক দেশের লিগ চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের মধ্যে কোয়ার্টার-ফাইনালে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য একটি প্লে-অফ ম্যাচ চালু করা হয়েছিল। ২০০৮ সালের আসরের জন্য পঞ্চম স্থান নির্ধারণী ম্যাচের পুনঃপ্রবর্তনের ফলে অর্থমূল্য ৫,০০,০০০ মার্কিন ডলার বেড়ে মোট ১৬.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।[১৫২]

পৃষ্ঠপোষক

ফিফা বিশ্বকাপের মতো, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপেও বহুজাতিক সংস্থাগুলো পৃষ্ঠপোষকতার দায়িত্ব পালন করে থাকে। জাপানি বহুজাতিক গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান টয়োটা মোটর কর্পোরেশন (যার সদর দফতর জাপানের আইচির টয়োটায় ছিল) ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে পৃষ্ঠপোষক চুক্তির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের অংশীদার ছিল, এই চুক্তি পরবর্তীকালে আর পুনর্নবীকরণ করা হয়নি।[১৫৩] যেহেতু টয়োটা একটি অটোমোবাইল প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এবং টুর্নামেন্টের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিল, তাই ফিফা অংশীদার হিসেবে হুন্ডাই-কিয়ার অবস্থা ২০১৫ সালের পূর্বে ক্লাব বিশ্বকাপের ক্ষেত্রে সক্রিয় ছিল না। তবে, ফিফার অন্যান্য অংশীদার আডিডাস, কোকা-কোলা এবং ভিসা সম্পূর্ণ পৃষ্ঠপোষক অধিকার বজায় রেখেছিল। ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতার প্রধান পৃষ্ঠপোষকের দায়িত্ব পালন করেছে আলিবাবা গ্রুপের আলিবাবা ক্লাউড[১৫৪]

উদ্বোধনী আসরের জন্য ছয়টি পৃষ্ঠপোষক ছিল: ফুজিফিল্ম, হুন্দাই, জেভিসি, ম্যাকডোনাল্ড’স, বাডওয়াইজার এবং মাস্টারকার্ড।[৫৪][১৫৫][১৫৬]

পৃথক ক্লাবগুলো বিজ্ঞাপনী পৃষ্ঠপোষক সমন্বিত পোশাক পরিধান করে, এমনকি যদি এই ধরনের পৃষ্ঠপোষক ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের সাথে দ্বন্দ্বে থাকে। তবে, পোশাক প্রস্তুতকারকের পাশাপাশি পোশাকে প্রতি মাত্র একটি প্রধান পৃষ্ঠপোষকের প্রতীকের উপস্থিতি অনুমতি দেওয়া হয়েছে।[১৪১]

এই প্রতিযোগিতার বর্তমান প্রধান পৃষ্ঠপোষকগুলো হচ্ছে:[১৫৬]

গান

অধিকাংশ আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতার মতো ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপেরও ২০০৫ সাল থেকে প্রতিটি আসরের জন্য আনুষ্ঠানিক গান রয়েছে। ফিফা বিশ্বকাপের মতো অধিকাংশ বড় প্রতিযোগিতার বিপরীতে, গানগুলো অধিকাংশই জে-পপের ছিলম কেননা অধিকাংশ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জাপানে অনুষ্ঠিত হয়েছে।[১৫৭][১৫৮][১৫৯]

বছরআয়োজকগানভাষাশিল্পী
২০০০  ব্রাজিল
২০০৫  জাপান"লেজেন্ডারি মিডো"জাপানিকেমিস্ট্রি
২০০৬"টপ অব দ্য ওয়ার্ল্ড"
২০০৭"শাইনিং নাইট"কেমিস্ট্রি এবং মানকি মাজিক
২০০৮"সেপ্তেনোভা"ইংরেজি এবং জাপানিগস্পিলার্স বনাম সুকিমার সুইচের শিন্তারো তোকিতা
২০০৯  সংযুক্ত আরব আমিরাত"দ্য রিভার সিংস"লক্সিয়ানএনরিয়া
২০১০
২০১১  জাপান"নেভার গিভ আপ"জাপানিকাইলি
২০১২"ওয়ার্ল্ড কুয়েস্ট"নিউজ
২০১৩  মরক্কো"সেভেন কালার্স"ইংরেজি এবং জাপানি
২০১৪"কাম অ্যালাইভ"ইংরেজিরেডওয়ান এবং আহমদ শুকি
২০১৫  জাপান"অ্যান্থেম"ইংরেজিনিউজ
২০১৬
২০১৭  সংযুক্ত আরব আমিরাত"কিংডম"ইংরেজি এবং জাপানি
২০১৮"স্পিরিট"জাপানি
২০১৯  কাতার"সুপারস্টার"জাপানি
২০২০
২০২১  সংযুক্ত আরব আমিরাত

ফলাফল

২০২৩ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।
পাদটীকা
অতিরিক্ত সময়ে ফলাফল নির্ধারণ
পেনাল্টি শুট-আউটের মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ
বছরআয়োজকচ্যাম্পিয়নফলাফলরানার-আপতৃতীয় স্থানফলাফলচতুর্থ স্থান
২০০০  ব্রাজিল করিন্থিয়ান্স০–০ ভাস্কো দা গামা নেকাক্সা১–১ রিয়াল মাদ্রিদ
২০০১  স্পেন[১][১]
২০০৫  জাপান সাও পাওলো১–০ লিভারপুল সাপ্রিসা৩–২ আল ইত্তিহাদ
২০০৬  জাপান ইন্তেরনাসিওনাল১–০ বার্সেলোনা আল আহলি২–১ আমেরিকা
২০০৭  জাপান এসি মিলান৪–২ বোকা জুনিয়র্স উরাওয়া রেড ডায়মন্ডস২–২ সহেল
২০০৮  জাপান ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড১–০ কুইতো গাম্বা ওসাকা১–০ পাচুকা
২০০৯  ইউএই বার্সেলোনা২–১ এস্তুদিয়ান্তেস পোহাং স্টিলার্স১–১ আতলান্তে
২০১০  ইউএই ইন্টার মিলান৩–০ মাজেম্বে ইন্তেরনাসিওনাল৪–২ সংনাম
২০১১  জাপান বার্সেলোনা৪–০ সান্তোস আল সাদ০–০ কাশিওয়া রেইসোল
২০১২  জাপান করিন্থিয়ান্স১–০ চেলসি মোন্তেররেই২–০ আল আহলি
২০১৩  মরক্কো বায়ার্ন মিউনিখ২–০ রাজা কাসাব্লাঙ্কা আতলেতিকো মিনেইরো৩–২ কুয়াংচৌ
২০১৪  মরক্কো রিয়াল মাদ্রিদ২–০ সান লোরেন্সো অকল্যান্ড সিটি১–১ ক্রুস আসুল
২০১৫  জাপান বার্সেলোনা৩–০ রিভার প্লেত সানফ্রেকে হিরোশিমা২–১ কুয়াংচৌ
২০১৬  জাপান রিয়াল মাদ্রিদ৪–২ কাশিমা অ্যান্টলার্স আতলেতিকো নাসিওনাল২–২ আমেরিকা
২০১৭  ইউএই রিয়াল মাদ্রিদ১–০ গ্রেমিও পাচুকা৪–১ আল জাজিরা
২০১৮  ইউএই রিয়াল মাদ্রিদ৪–১ আল আইন রিভার প্লেত৪–০ কাশিমা অ্যান্টলার্স
২০১৯  কাতার লিভারপুল১–০ ফ্লামেঙ্গো মোন্তেররেই২–২ আল হিলাল
২০২০  কাতার বায়ার্ন মিউনিখ১–০ ইউএএনএল আল আহলি০–০ পালমেইরাস
২০২১  ইউএই চেলসি২–১ পালমেইরাস আল আহলি৪–০ আল হিলাল
২০২২  মরক্কো রিয়াল মাদ্রিদ৫–৩ আল হিলাল ফ্লামেঙ্গো৪–২ আল আহলি
২০২৩  সৌদি আরব ম্যানচেস্টার সিটি৪–০ ফ্লিউমিনেন্স আল আহলি৪–২ উরাওয়া রেড ডায়মন্ডস
২০২৫  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

পরিসংখ্যান

সর্বাধিক গোলদাতা

২০২২ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।
ক্রমখেলোয়াড়গোলম্যাচআসরক্লাব
ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো২০০৮, ২০১৪, ২০১৬, ২০১৭ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (১), রিয়াল মাদ্রিদ (৬)
গ্যারেথ বেল২০১৪, ২০১৬, ২০১৭রিয়াল মাদ্রিদ
লুইস সুয়ারেস২০১৫বার্সেলোনা
লিওনেল মেসি২০১৯, ২০১১, ২০১৫বার্সেলোনা
সেসার দেলগাদো২০১১, ২০১২, ২০১৩মোন্তেররেই
দেনিলসন২০০৯পোহাং স্টিলার্স
সুকাসা শিওতানি২০১২, ২০১৫, ২০১৮সানফ্রেকে হিরোশিমা (২), আল আইন (২)
মুহাম্মদ আবু তরিকাহ১১২০০৫, ২০০৬, ২০০৮, ২০১২, ২০১৩আল আহলি
ওয়েন রুনি২০০৮ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
১০ রাফায়েল সান্তোস২০১৮রিভার প্লেত

সর্বাধিক ম্যাচ

২০২২ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।
ক্রমখেলোয়াড়ম্যাচআসরক্লাব
হুসাইন আল শাহাত১২২০১৮, ২০২০, ২০২১, ২০২২আল আইন (৪), আল আহলি (৮)
মুহাম্মদ আবু তরিকাহ১১২০০৫, ২০০৬, ২০০৮, ২০১২, ২০১৩আল আহলি
হুসাম আশুর১১২০০৫, ২০০৬, ২০০৮, ২০১২, ২০১৩আল আহলি
ওয়াইল জুমাআহ১১২০০৫, ২০০৬, ২০০৮, ২০১২, ২০১৩আল আহলি
এমিলিয়ানো তাদে১০২০১১, ২০১২, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭অকল্যান্ড সিটি
ইভান ভিৎসেলিচ১০২০০৯, ২০১১, ২০১২, ২০১৩, ২০১৪অকল্যান্ড সিটি
নেরি কারদোসো২০০৭, ২০১১, ২০১২, ২০১৩বোকা জুনিয়র্স (২), আল আহলি (৭)
টনি ক্রুস২০১৩, ২০১৪, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮রিয়াল মাদ্রিদ
সুকাসা শিওতানি২০১২, ২০১৫, ২০১৮সানফ্রেকে হিরোশিমা (৫), আল আইন (৪)
১০ আনহেল বেরলাঙ্গা২০১১, ২০১২, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭অকল্যান্ড সিটি

ক্লাব অনুযায়ী

২০২২ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।
দলচ্যাম্পিয়নরানার-আপ
রিয়াল মাদ্রিদ (২০১৪, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮, ২০২২)
বার্সেলোনা (২০০৯, ২০১১, ২০১৫) (২০০৬)
করিন্থিয়ান্স (২০০০, ২০১২)
বায়ার্ন মিউনিখ (২০১৩, ২০২০)
লিভারপুল (২০১৯) (২০০৫)
চেলসি (২০২১) (২০১২)
সাও পাওলো (২০০৫)
ইন্তেরনাসিওনাল (২০০৬)
এসি মিলান (২০০৭)
ম্যানচেস্টার সিটি (২০২৩)
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (২০০৮)
ইন্টার মিলান (২০১০)
ভাস্কো দা গামা (২০০০)
বোকা জুনিয়র্স (২০০৭)
কুইতো (২০০৮)
এস্তুদিয়ান্তেস (২০০৯)
মাজেম্বে (২০১০)
সান্তোস (২০১১)
রাজা কাসাব্লাঙ্কা (২০১৩)
সান লোরেন্সো (২০১৪)
রিভার প্লেত (২০১৫)
কাশিমা অ্যান্টলার্স (২০১৬)
গ্রেমিও (২০১৭)
আল আইন (২০১৮)
ফ্লামেঙ্গো (২০১৯)
ইউএএনএল (২০২০)
পালমেইরাস (২০২১)
আল-হিলাল (২০২২)
ফ্লিউমিনেন্স (২০২৩)

দেশ অনুযায়ী

২০২২ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।
দেশচ্যাম্পিয়নরানার-আপ
 স্পেন (২০০৯, ২০১১, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮, ২০২২) (২০০৬)
 ব্রাজিল (২০০০, ২০০৫, ২০০৬, ২০১২) (২০০০, ২০১১, ২০১৭, ২০১৯, ২০২১, ২০২৩)
 ইংল্যান্ড (২০০৮, ২০১৯, ২০২১, ২০২৩) (২০০৫, ২০১২)
 ইতালি (২০০৭, ২০১০)
 জার্মানি (২০১৩, ২০২০)
 আর্জেন্টিনা (২০০৭, ২০০৯, ২০১৪, ২০১৫)
 ইকুয়েডর (২০০৮)
 গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (২০১০)
 মরক্কো (২০১৩)
 জাপান (২০১৬)
 সংযুক্ত আরব আমিরাত (২০১৮)
 মেক্সিকো (২০২০)
 সৌদি আরব (২০২২)

কনফেডারেশন অনুযায়ী

২০২২ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।
কনফেডারেশনচ্যাম্পিয়নরানার-আপ
উয়েফা১৬
কনমেবল১১
এএফসি
ক্যাফ
কনকাকাফ

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ