তিবি‌লিসি

জর্জিয়ার রাজধানী

তিবি‌লিসি (ইংরেজি: /təbɪˈlsi, təˈbɪlɪsi/ tə-bih-LEE-see, tə-BIL-ih-see;[৬] জর্জীয়: თბილისი [tʰbilisi] ()), জর্জিয়ার রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর, এটি কুরা নদীর তীরে অবস্থিত যার জনসংখ্যা প্রায় ১৫ লক্ষ। কিছু কিছু দেশে এটি এখনও ১৯৩৬ সালের পূর্বের আন্তর্জাতিক উপাধি টিফলিস[৭] (/ˈtɪflɪs/ TIF-lis),[৬] নামে পরিচিত। ৫ম শতাব্দীতে আইবেরিয়ার প্রথম ভাখতং একে প্রথম প্রতিষ্ঠিত করেন, তখন থেকেই তিবি‌লিসিবিভিন্ন জর্জিয়ান রাজ্য এবং প্রজাতন্ত্রের রাজধানী হিসাবে কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। ১৮০১ এবং ১৯১৭ সালের মধ্যবর্তী সময়ে রাশিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবে তিবিলিশি ছিল দক্ষিণ এবং উত্তর ককেশাস এ দুটো শাসন করার জন্য ইম্পেরিয়াল ভাইসরয়ের আসন।

তিবি‌লিসি
თბილისი
টিফ্লিস
রাজধানী শহর
উপর থেকে নিচে এবং বাম থেকে ডান: পুরান তিবিলিসি এবং নারিকলা দুর্গ সন্ধ্যার সময়; ফ্রিডম স্কোয়ার; রাতে আলোকিত সামেবা এবং আভলাবারি প্রাসাদ সহ এলিয়ার পাড়া; এবং সিওনি ক্যাথেড্রাল, নোরাশেন চার্চ এবং শান্তির সেতু।
তিবি‌লিসির পতাকা
পতাকা
তিবি‌লিসির অফিসিয়াল সীলমোহর
সীলমোহর
মানচিত্র
তিবি‌লিসি তিবি‌লিসি-এ অবস্থিত
তিবি‌লিসি
তিবি‌লিসি
তিবি‌লিসি জর্জিয়া (রাষ্ট্র)-এ অবস্থিত
তিবি‌লিসি
তিবি‌লিসি
তিবি‌লিসি ইউরোপ-এ অবস্থিত
তিবি‌লিসি
তিবি‌লিসি
তিবি‌লিসি এশিয়া-এ অবস্থিত
তিবি‌লিসি
তিবি‌লিসি
স্থানাঙ্ক: ৪১°৪৩′ উত্তর ৪৪°৪৭′ পূর্ব / ৪১.৭১৭° উত্তর ৪৪.৭৮৩° পূর্ব / 41.717; 44.783
দেশ জর্জিয়া
প্রতিষ্ঠিতসি. খ্রিস্টপূর্ব ৪৭৯ [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
সরকার
 • মেয়রকাহা কালাদজে[২]
আয়তন[৩]
 • রাজধানী শহর৫০৪.২ বর্গকিমি (১৯৪.৭ বর্গমাইল)
সর্বোচ্চ উচ্চতা৭৭০ মিটার (২,৫৩০ ফুট)
সর্বনিন্ম উচ্চতা৩৮০ মিটার (১,২৫০ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১৮)
 • রাজধানী শহর১১,৫৮,৭০০[১]
 • জনঘনত্ব৩,১৯৪.৩৮/বর্গকিমি (৮,২৭৩.৪/বর্গমাইল)
 • মহানগর১৪,৮৫,২৯৩
বিশেষণতিবি‌লিসিয়ান
তিবি‌লিসিতে
সময় অঞ্চলজর্জিয় সময় (ইউটিসি+৪)
এলাকা কোড+৯৯৫ ৩২
জিপিডি[৪]২০১৮
 – মোটজিইএল ২০৫০ কোটি
($টেমপ্লেট:মার্কিন ডলারেB)
 – মাথাপিছুজিইএল ১৭,৭০০
($টেমপ্লেট:মার্কিন ডলারে)
এইচডিআই (২০১৭)০.৮৬১[৫]অনেক বেশি
ওয়েবসাইটhttp://www.tbilisi.gov.ge/

ইউরোপ এবং এশিয়া এর মধ্যবর্তী আড়াআড়ি পথে এর অবস্থান হওয়ার কারণে এবং সুবিধা জনক রেশম পথ এর কাছাকাছি হওয়ার ফলে ইতিহাস জুড়ে তিবিলিস বিভিন্ন বৈশ্বিক শক্তির কাছে আলোচিত। এই শহরের অবস্থান আজ অবধি বিভিন্ন শক্তি এবং বাণিজ্যিক প্রকল্পের ট্রানজিট রুট হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। তিবিলিসির বিবিধ ইতিহাস এর স্থাপত্যে প্রতিফলিত হয়েছে, যা মধ্যযুগীয়, নিওক্লাসিক্যাল, বিউক আর্টস, আর্ট নুভাউ, স্ট্যালিনিস্ট এবং আধুনিক কাঠামোর সংমিশ্রণ।

ঐতিহাসিক ভাবে, তিবিলিসি একাধিক সাংস্কৃতিক, নৃগোষ্ঠী এবং ধর্মীয় পটভূমির লোকদের বাসস্থান, যদিও বর্তমানে এর সিংহ ভাগই পূর্ব অর্থোডক্স খ্রিস্টান। এর উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে ক্যাথেড্রালস সামিবা এবং সায়নি, ফ্রিডম স্কয়ার, রুস্তাভেলি অ্যাভিনিউ এবং আগমশনেবেলি অ্যাভিনিউ, মধ্যযুগীয় নারিকালা দুর্গ, দ্যা সুডো-মরিশ অপেরা থিয়েটার, এবং জর্জিয়ান জাতীয় যাদুঘর উল্লেখযোগ্য।

নাম এবং ব্যুৎপত্তি

তিবিলিসি নামটি পুরাতন জর্জীয় ত'বিলিসি (თბილისი), এবং পরবর্তী টিপলি (თბილი, "গরম") শব্দ থেকে আসে। তি'বিলি বা তি'বিলিসি (আক্ষরিক অর্থে, "উষ্ণ জায়গা") শহরটিকে নামকরণ করা হয়েছিল কারণ এলাকাগুলোর অসংখ্য সালফিউরিক উষ্ণ প্রস্রবণগুলোর কারণে।

১৯৩৬ সাল পর্যন্তও শহরটির নাম ছিল ইংরেজিতে এবং বেশিরভাগ অন্যান্য ভাষা ছিল টিফলিস, যখন জর্জিয়ান নামটি ছিল ტფილისი (টিপলিসি)[৮]

১৯৩৬ সালের আগস্টের ১৭ তারিখে সোভিয়েত নেতৃত্বের আদেশে বিভিন্ন শহরের সরকারী রাশিয়ান নাম গুলো পরিবর্তন করে স্থানীয় ভাষার সাথে মিল রেখে নামকরণ করা হয়.[৮] এমনকি, জর্জিয়ান-ভাষা ফর্ম টেপিলিসিকে আধুনিকীকরণ করা হয়েছিল জর্জিয় ভাষাতত্ত্ববিদদের প্রস্তাবনার ভিত্তিতে; প্রাচীন জর্জিয় উপাংশ ტფილი (টিপিলি, "উষ্ণ") নতুন თბილი (টিবিলি) দ্বারা প্রতিস্থাপিত করে হয়েছিল।[৮] এই গঠনটি নুতুন একটি সরকারী নামের (Тбилиси তিবিলিসি) ভিত্তিতে করা হয়েছিল। বেশির ভাগ ভাষার পরিবর্তন নুতুন নামের আবলম্বনে করা হয়, কিন্তু অন্য ভাষা যেমন তুর্কি, পার্সিয়ান, গ্রীক এবং জার্মান টিফলিসের কিছুটা বৈচিত্র ধরে রেখেছে।

২০০৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর জর্জীয় সংসদে নাম পরিবর্তনের ৭০ বছর উৎযাপনের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

অঞ্চলের অন্যান্য ভাষায় তিবিলিসির কয়েকটি চিরাচরিত নামের বিভিন্ন মূল বা ভিত্তি রয়েছে। ওসেসিয়ান নাম Калак (কালাক) জর্জিয় শব্দ (কালকি) থেকে এসেছে, যার অর্থ "শহর"। চেচেন এবং ইঙ্গুশ শহরের নামগুলি জর্জিয় (Гуьржех গেরেক্স) নামক ঐতিহাসিক কাবার্ডিয়ান নাম (Курджы Kwrdžy) এর মতো তাদের নামের অনুরূপ বা একই রকম গঠন ব্যবহার করে, আর আবখাজ Қарҭ (কার্ট) এসেছে মিংগ্রেলিয়ান ქართი (Karti)।

ইতিহাস

পূর্বের ইতিহাস

প্রত্নতাত্ত্বিকগণ প্রথম ব্রোঞ্জ এবং এবং পাওলিওলিথিক যুগ থেকে প্রাপ্ত পাথরের নিদর্শনগুলি থেকেই দিঘোমি শহরতলিতে তিবলিসিদের একাধারে বসবাসের প্রমাণ পেয়েছিলেন।[৯] ব্রোঞ্জ যুগের শেষ এবং লৌহ যুগের শুরুর দিকে এটি ছিল ককেশাসের মধ্যে বৃহত্তম বসতি।[১০] কিংবদন্তি অনুসারে, এখনকার তিবিলিসি ৪৫৮ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকেও বন জঙ্গলে আবৃত ছিল। তিবিলিসির গোড়া পত্তন নিয়ে একটি ব্যাপক ভাবে প্রচলিত পৌরাণিক কাহিনী হলো যে আইবেরিয়ার প্রথম রাজা ভাখতাং -I একটি বাজ পাখি নিয়ে ঘন কাঠের জংগলের দিকে শিকারের জন্যে যান (কোথাও কোথাও বাজ পাখিটিকে চিল অথবা অন্য কোন ছোট শিকারী পাখি হিসেবে কিংবদন্তিতে পাওয়া যায়)। রাজার বাজ পাখিটি একটা ফিশান্ট (রঙ্গিন পাখি) কে ধরে ছিল বা আহত করেছিল বলে শোনা যায়, তারপরে দুটো পাখিই কাছের একটি উষ্ণ প্রস্রবণ এর মধ্যে পড়ে গিয়ে পুড়ে মারা যায়। রাজা ভখতাং উষ্ণ প্রস্রবণ গুলির প্রতি এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে বনটি খালি করবেন এবং সে জায়গায়টায় একটি শহর তৈরি করবেন।

আইবেরিয়ার রাজা দাচি যে ছিল প্রথম ভাখতাং এর উত্তরাধিকারী আইবেরিয়ার রাজধানী থেতা থেকে তিবিলিসি স্থানান্তরিত হন। তার রাজত্বকালে দুর্গ প্রাচীরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল যা শহরের নতুন সীমানা হিসেবে চিহ্নিত। ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে, ইউরোপ এবং এশিয়ার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য ও ভ্রমণ রুটের পাশাপাশি এই অঞ্চলের কৌশলগত অবস্থানের কারণে তিবিলিসি অবিচ্ছিন্ন গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছিল।

বিদেশী আধিপত্য

জর্জিয়ান কৃষ্ণ সাগর উপকূল এবং টিফলিস, ১৩৩৯ সালে চিত্রিত অ্যাঞ্জেলিনো ডুলসার্টের নটিকাল চার্ট মতে বিশদ বিবরণ।

তিবিলিসির অনুকূল বাণিজ্যের অবস্থানটি অবশ্য এর টিকে থাকার পক্ষে ভালভাবে কাজে দেয়নি। ইউরোপ এবং এশিয়ার মধ্যে ককেশাসের কেন্দ্রস্থলে কৌশলগত ভাবে অবস্থিতির কারণে তিবিলিসি রোমান সাম্রাজ্য, পার্থিয়া, সাসানিড পার্সিয়া, আরবস,বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য এবং সেলজুক তুর্কিদের মতো বিভিন্ন শক্তির মধ্যে অঞ্চলটি প্রতিদ্বন্দ্বিতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল।নগরীর সাংস্কৃতিক বিকাশ কিছুটা নির্ভরশীল ছিল যে বিভিন্ন সময়ে কে এই শহর শাসন করেছিল তার উপর, যদিও তিলিসি মোটামুটি বিশ্বখ্যাত ছিল।

৫৭০-৫৮০ পার্সিয়ানরা শহরটিকে শাসন করে ৬২৭ পর্যন্ত, যতক্ষণনা তিবিলিসি বাইজেন্টাইন/খজার সৈন্য দ্বারা দখল হয়েছিল এবং পরে ৭৩৬-৭৩৮ এর মধ্যে আরব সৈন্য শহরটিতে প্রবেশ করে দ্বিতীয় মারওয়ান এর অধীনে। এই পর্যায়ে আরবরা তিবিলিসি কে কেন্দ্র করে একটি আমিরাত প্রতিষ্ঠা করেন। ৭৬৪ এর দিকে তিবিলিসি আরবদের অধীনে থাকা অবস্থাতেই আরো একবার খাজার দের দ্বারা পরাজিত হয়। ৮৫৩ এর দিকে, আরব নেতা বুগা আল-তুর্কি সেনাবাহিনী তিবিলিসিতে আক্রমণ করেছিল যাতে আব্বাসীয়দের আনুগত্যে ফিরে আসে। তিবিলিসিতে আরবদের আধিপত্য প্রায় ১০৫০ অবধি অব্যাহত ছিল। ১০৬৮ এর দিকে শহরটি আবারো পরাজিত হয় তবে এই বার সুলতান আল্প আরসালানের. অধীনে সেলজুক তুর্কিদের অধীনে।

জর্জীয়ার রাজধানী

১১২১ সালের এর দিকে, সেলজুকদের সাথে প্রচণ্ড লড়াইয়ের পরে, জর্জীয় রাজা রাজা চতুর্থ ডেভিড জর্জীয়া সৈন্যরা তিবিলিসিকে অবরোধ হিসেবে গড়ে তুলে, যা ১১২২ সালে শেষ হয়েছিল এবং ফলস্বরূপ ডেভিড তার বাসস্থান কুটাইসি থেকে তিলিসিতে স্থানান্তরিত করে, এটিকে সংযুক্ত জর্জিয়ান রাজ্যের রাজধানী করে গড়ে তোলেএবং এভাবেই জর্জিয়ান স্বর্ণযুগের উদ্বোধন শুরু হয়। ১২-১৩ শতাব্দী থেকে তিবিলিসি সমৃদ্ধিশালী অর্থনীতি এবং আশ্চর্যজনক সাংস্কৃতিক ফলাফল নিয়ে একটি আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে গড়ে উঠে। দ্বাদশ শতাব্দীর শেষদিকে তিবিলিসির জনসংখ্যা ১,০০,০০০ এ পৌঁছায়। এই শহরটি কেবল জর্জীয়ার জন্যেই নয়, বরং সে সময়ের পূর্ব অর্থোডক্স বিশ্বের জন্যেও একটি গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়। রানী তামারের রাজত্বকালে শোটা রুস্তভেলি তার কিংবদন্তি মহাকাব্য রচনা করার সময় তিবিলিসিতে কাজ করেছিলেন, দ্য নাইট ইন দ্যা প্যান্থার'স স্কিন । এই সময়কাটিই "জর্জীয়ার স্বর্ণযুগ"[১১] বা জর্জীয়ান রেনেসাঁস নামে পরিচিত।[১২]

ফরাসী ভ্রমণকারী জিন চারডিন, এর আঁকা তিবিলিসি ১৬৭১

মঙ্গোল আধিপত্য এবং সে সময়কার অস্থিরতা

তিবিলিসির "স্বর্ণযুগ" এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে স্থায়ী হতে পারেনি। ১২২৬ সালের দিকে, তিবিলিসি খওয়ারেজমিয়ান সাম্রাজ্য শাহ জালাল আদ-দ্বীন দখল করে নেন এবং এর সুরক্ষাগুলি মারাত্মকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল এবং মঙ্গোল সেনাবাহিনীর কাছে দূর্বল হয়ে পড়ে। ১২৩৬ সালে মঙ্গোলদের নীপিড়নের কাছে পরাজিত হয়ে, জর্জীয়া মঙ্গোলদের আধিপত্যে চলে আসে। তিবিলিসি জাতিটি নিজেই আধা-স্বাধীনতার একটি রূপ বজায় রেখেছিল এবং তার রাষ্ট্রক্ষমতা হারায়নি, যার ফলে পরবর্তী শতাব্দীতে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ভাবে মঙ্গোলদের দ্বারা দৃড় ভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। ১৩০২-এর দশকে, মঙ্গোলরা জর্জীয়া থেকে পিছু হটে এবং তিবিলিসি আবার স্বাধীন জর্জীয়ান রাষ্ট্রের রাজধানী হয়। ১৩৬৬ সালে এক মহামারীর প্রাদুর্ভাব শহরটিতে আঘাত হানে।

চতুর্দশ শতাব্দীর শেষ থেকে ১৮ শতকের শেষ অবধি তিবিলিসি আবারও বিভিন্ন বিদেশী হানাদারদের অধীনে চলে আসে এবং বেশ কয়েকবার পুরোপুরি ধূলিসাৎ হয়ে যায়। ১৩৮৬ সালে টেমারলেনের সেনাবাহিনী তিবিলিস আক্রমণ করে। ১৪৪৪ সালে জাহান শাহ (পারস্যের তাবরিজ শহরের শাহ) শহরটি আক্রমণ করে এবং ধ্বংস করে দেয়। ১৪৭৭ থেকে ১৪৭৮ পর্যন্ত শহরটি উজুন হাসানের আক কোয়ুনলু উপজাতিদের দ্বারা দখল হয়েছিল।

ইরানি নিয়ন্ত্রণ

জোসেফ পিটন ডি ট্যুরনফর্টের টেফলিসের ১৭১৭ সালের একটি ছবি

১৫১০ এর দশকের প্রথমদিকে, তিবিলিসি (এবং কার্টিলি এবং কাখেটির রাজ্যগুলি) সাফাভিদ ইরানের ভাসাল অঞ্চল হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল।[১৩] ১৫২২ সালের দিকে তিবিলিসিকে প্রথমবারের মতো একটি বিশাল সাফাভিড সৈন্য বাহিনী সরবরাহ করর জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।[১৪][১৫] রাজা (শাহ) ইসমাইল প্রথম (রা. ১৫০১-১৫১৫) এর মৃত্যুর পরে কার্টালির রাজা ডেভিড এক্স ইরানিদের বিতাড়িত করেছিলেন। এই সময়কালেই, তিবিলিসির অনেকগুলি অংশ পুনঃর্গঠন ও পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল। রাজা প্রথম তাহমাস্পের (রা. ১৫২৪-১৫৭৬) চারটি অভিযানের ফলে কার্টিলি ও কাখেটি পুনরুদ্ধার ঘটে এবং ১৫৫১ সালের শুরু থেকে একটি সাফাভিড বাহিনী স্থায়ীভাবে তিবিলিসিতে বসানো হয়।[১৪][১৬] ১৫৫৫ আমাস্যার সন্ধির মাধ্যমে এবং আরও দৃড় ভাবে ১৬১৪ থেকে ১৭৪৭ অবধি সংক্ষিপ্ত মধ্যস্থতার মধ্য দিয়ে তিবিলিসি ইরান শাসনের অধীনে একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল এবং এটি কর্টিলির ইরানি ভাসাল রাজাদের আসন হিসাবে কাজ করেছিল, যাকে শাহ ভ্যালির উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। দ্বিতীয় তিমুরাজদ্বিতীয় হেরাক্লিয়াসের পরবর্তী শাসন অনুসারে তিবিলিসি বিদেশী শাসন মুক্ত একটি প্রাণবন্ত রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হয়ে উঠে - তবে ক্রমাগত আক্রমণাত্মক হুমকির আশঙ্কায় জর্জীয়ার শাসকরা ১৭৮৩ সালে জর্জিভস্কের চুক্তিতে রাশিয়ার সুরক্ষা চেয়ে বসেন। তবে এই চুক্তি সত্ত্বেও, এই শহরটি ১৭৯৫ সালে ইরানি কাজারের শাসক আঘ মোহাম্মদ খান কর্তৃক অধিগ্রহণ ও লুন্ঠিত হয়েছিল, যিনি এই অঞ্চলে ইরানের ঐতিহ্যবাহী অভিযান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।[১৭][১৮][১৯]

রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ

রাশিয়ান শাসন আমলে টিফলিসের অস্ত্রগুলির চিহ্ন

১৮০১ সালে, রাশিয়ান সাম্রাজ্য কর্টলি-কাখেটি (যার মধ্যে তিবিলিসি ছিল রাজধানী) জর্জিয়ান রাজত্বকে সংযুক্ত করেছিল, পরে ১৮১৩ সালের গুলিস্তানের চুক্তি[২০][২১] অনুসারে এর শাসন সীমাবদ্ধ করা হয়, যেটি জর্জীয়ার ইরানি নিয়ন্ত্রণের অবসান ঘটায়।[২২] তিবলিসি তখন হয়ে যায় তিবিলিসি গভর্নোরেট (গুবারনিয়া)) এর কেন্দ্রবিন্দু। রাশিয়ান সাম্রাজ্যিক প্রশাসকরা একটি নতুন ইউরোপীয় ধাঁচের নগর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছেন এবং পশ্চিমা শৈলীতে নতুন ভবনগুলি অনুমোদন করেন। রাস্তা এবং রেলপথ নির্মাণ করা হয় যেন তিবিলিসিকে রাশিয়ান সাম্রাজ্যের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলি, যেমন বাতুমি এবং পোটির সাথে সংযোগ স্থাপন করা যায়। ১৮৫০ দশকের মধ্যেই, তিবিলিসি আবারো একটি বড় বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ইলিয়া চাভচাভাদজে, আকাকি তাসেরেতেলি, মির্জা ফাতালি আখুন্দজাদে, ইকোব গোগেবাশভিলি, আলেকজান্ডার গ্রিবোয়েদভ এবং আরও অনেক রাষ্ট্রনায়ক, কবি এবং শিল্পীরা সকলেই তিবিলিসিতে তাদের বাসস্থান গড়েছিলেন। বিভিন্ন উৎসবে শহরটি পরিদর্শন করা হত এবং এটি আলেকজান্ডার পুশকিন, লিও টলস্টয়, মিখাইল লের্মোনটোভ, রোমানভ পরিবার এবং অন্যদের অনুরাগের বিষয়বস্তু ছিল। রাশিয়ান প্রশাসনের অধীনে নির্মিত নতুন প্রধান রুটটি হলো গোলোভিন এভিনিউ (এখনকার রুস্তাভেলি অ্যাভিনিউ), যার উপরে ভিত্তি করে ককেশাসের রাজপ্রতিনিধিগণ তাদের বাসস্থান স্থাপন করেন। উনিশ শতকের বেশিরভাগ সময়, তিবিলিসির বৃহত্তম নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী ছিল আর্মেনিয়ান, যারা কোনও এক সময়ে মোট জনসংখ্যার ৭৪.৩% ছিল।[২৩]

মিখাইল লের্মোনটোভ এর টিফলিস, ১৮৩৭।

স্বল্পস্থায়ী স্বাধীনতা

১৯১৭ সালের রাশিয়ান বিপ্লব এর পরে শহরটি ট্রান্সককেশাস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অবস্থান হিসাবে ব্যবহৃত হয় যেটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৮ সালের বসন্তের দিকে, যে ট্রান্সকোকেসিয়ান ফেডারেশন তিবিলিসিতে রাজধানী সহ ক্ষণস্থায়ী হয়েছিল। ঠিক এই সময়ে তিবিলিসিতে আর্মেনীয়ানদের তুলনায় জর্জীয়ানদের সংখ্যা ছিল খুব বা কাটায় কাটায় তাদের সমান সংখ্যক আর রাশিয়ানরা হয়ে উঠে তৃতীয় বৃহত্তম নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী।[২৪] এখানেই ছিল, প্রাক্তন ককেশাস রাজ প্রতিনিধিদের প্রাসাদ, যেখানে ১৯১৮ সালের ২৬ থেকে ২৮ মে এর মধ্যে জর্জীয়া, আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান - এ তিনটি ট্রান্সককেসাস জাতির স্বাধীনতা ঘোষিত হয়েছিল। তারপরে, তিবিলিসি ১৯২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জর্জিয়ার গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী হিসেবে আনুষ্ঠানিকতা পালন করে। ১৯১৮ থেকে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত এই শহরটি পরপর জার্মানি এবং ব্রিটিশ সামরিক সদর দফতরের অবাসস্থল ছিল।

জাতীয় সরকারের অধীনে ১৯১৮ সালে তিবিলিসিতে স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হবার পর তিবিলিসি প্রথম ককেশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় নগরীতে পরিণত হয়।[২৫] ১৯২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, শহরের উপকণ্ঠে তীব্র লড়াইয়ের পরে বলশেভিস্ট রাশিয়ান ১১ তম রেড আর্মি[২৬][২৭] তিবিলিসিতে আক্রমণ করে এবং সোভিয়েত শাসনের ঘোষণা দেয়।

সোভিয়েত শাসন

রেড আর্মি তিবিলিসিতে প্রবেশ করে ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯২১ সালে

১৯২১ সালে, জর্জীয়া গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র রাশিয়া থেকে সোভিয়েত বলশেভিক বাহিনী দ্বারা দখল হয়ে যায় এবং ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত ট্রান্সককেশিয়ান এস এফ এস আর (যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল আর্মেনিয়া, আজারবাইজান এবং জর্জিয়া ) এর প্রথম রাজধানী হিসেবে তিবিলিসি দায়িত্ব পালন করেছে এবং পর্বর্তীতে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জর্জিয়ান সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রর ও রাজধানী ছিল। সোভিয়েত শাসনামলেই তিবিলিসির জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পায়, শহরটি আরও শিল্পায়নে পরিণত হয় এবং এটি সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসাবেও পরিণত হয়েছিল। ১৯৮০ সালে শহরটি ইউ এস এস আরে প্রথম রাষ্ট্র-অনুমোদিত রক উৎসব পালনের জন্যে স্বীকৃতি পায়। সোভিয়েত নাগরিক এবং বিদেশী দর্শনার্থী উভয়ের জন্য একটি প্রধান পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে, তিবিলিসির "ওল্ড টাউন" (মূল শহরের দেয়ালের আশেপাশের অঞ্চলগুলি) ১৯৭০ এবং ১৯৮০ এর দশকে পুনর্গঠিত হয়।[২৮]

১৯৫৬ সালের ৯ মার্চ গণহত্যাতে নিকিতা ক্রুশ্চেভের স্ট্যালিন বিরোধী নীতির প্রতিবাদে তিবিলিসি রাশিয়ার বিরোধী বিক্ষোভ এর সাক্ষী হয়। ১৯৭৮ সালের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ এবং ১৯৮৯ সালের ৯ এপ্রিল এর ট্রাজেডি হিংস্র আকার ধারণ করে।

পরবর্তী স্বাধীনতা

সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই তিবিলিসি পর্যায়ক্রমে উল্লেখযোগ্য অস্থিতিশীলতা ও অশান্তির মুখোমুখি হয়। ১৯৯১ সালের ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারী, ১৯৯১ (যে গামাসখুরদিয়া ও বিরোধী পক্ষের বিরোধী দলগুলির মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল) দুই সপ্তাহ ধরে এই শহরটি সংক্ষিপ্ত গৃহযুদ্ধের পরে, তিবিলিসিতে বিভিন্ন মাফিয়া গোষ্ঠী এবং অবৈধ ব্যবসায়িক দলের মধ্যে ঘন ঘন সশস্ত্র সংঘাতের দৃশ্য প্রকট হয়ে উঠে। এমনকি শেভার্ডনেডজে যুগের সময় (১৯৯৩-২০০৩), সমাজের বেশিরভাগ স্তরে অপরাধ ও দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছিল। ক্ষয়ে যাওয়া অর্থনীতির এবং বেকারত্বের কারণে সমাজের অনেকগুলি অংশ দরিদ্র হয়ে পড়ে। তিবিলিসির গড় নাগরিকরা নগরীতে (এবং সাধারণভাবে জাতির মধ্যে) বিদ্যমান জীবন মানের সাথে তাল মিলাতে ক্রমশ হতাশ হতে শুরু করে। ২০০৩ সালের নভেম্বরে জনগণের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হওয়ার পরে ভূয়া সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ১,০০,০০০ এরও বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে আসে এবং রোজ বিপ্লবের সাথে সমাপ্ত হয়। ২০০৩ সাল থেকে তিবিলিসিতে অপরাধের ক্রমহ্রাসের হার, অর্থনীতির উন্নতী এবং জমি জমার উন্নতির সাথে সাথে যথেষ্ট পরিমাণে স্থিতিশীলতা লাভ করে।[২৯] ২০০৮ সালে দক্ষিণ ওসেটিয়া যুদ্ধের সময় তিবিলিসি অঞ্চলটি একাধিক রাশিয়ার বিমান আক্রমণের শিকার হয়।

যুদ্ধের পরে, রাস্তার গাড়ি ব্যবস্থা, একটি রেলপথের পার্শ্বপথ এবং কেন্দ্রীয় অধিদপ্তর[৩০] এবং নতুন নগর মহাসড়ক স্থানান্তর সহ বেশ কয়েকটি বড় আকারের প্রকল্প শুরু হয়।[৩১] ২০১৫ সালের জুন মাসের একটি বন্যায় কমপক্ষে বারো জন লোক মারা যায় এবং শহরের চিড়িয়াখানা থেকে প্রাণীগুলি রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।[৩২]

রাজনীতি এবং প্রশাসন

দেশটির রাজধানী হিসাবে তিবিলিসির মর্যাদা জর্জিয়ার সংবিধানের (১৯৯৫) এর ১০ নং অনুচ্ছেদে এবং জর্জিয়ার রাজধানী সম্পর্কিত আইন - তিবিলিসি (২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৮) দ্বারা সংজ্ঞায়িত হয়েছে।[৩৩]

তিবিলিসি শহরটি পরিচালিত হয় তিবিলিসি নগর সমাবেশ (সাক্রেবুলো) এবং তিবিলিসি সিটি হল (মেরিয়া) দ্বারা। সিটি অ্যাসেমব্লী প্রতি চার বছরে একবার নির্বাচিত হয়। সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতি চার বছরে একবার মেয়র নির্বাচিত হন। তিবিলিসির মেয়র হলেন কখা কালাদজে এবং তিবিলিসি সিটি অ্যাসেমব্লির চেয়ারম্যান হলেন জর্জি আলিবেগাশভিলি।

আগমশনেবেলি অ্যাভিনিউয়ের একটি থানা/পুলিশ স্টেশন

প্রশাসনিকভাবে, শহরটি অনেক গুলি রেইনে (জেলা) বিভক্ত, যার বিষয়গুলিতে সীমিত এখতিয়ার সহ কেন্দ্র ও স্থানীয় সরকারের নিজস্ব বিভাগ রয়েছে। এই উপবিভাগ সোভিয়েত ইউনিয়নের সাধারণ উপবিভাগ অনুসরণ করে ১৯৩০ এর দশকে সোভিয়েত শাসনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। জর্জিয়ার স্বাধীনতা লাভের পর থেকে রেইন পদ্ধতিটি সংশোধন ও পুনর্বহাল করা হয়। সর্বশেষ সংশোধন অনুসারে, তিবিলিসি রেইনস অন্তর্ভুক্ত হলো:

বেশিরভাগ রাইওন গুলি শহরের ঐতিহাসিক মহল গুলোর নামে নামকরণ করা হয়। তিবিলিসির নাগরিকরা ছোট ঐতিহাসিক ভাতৃত্ববোধ ঘরোয়া ভাবে পালন করে। এই ধরনের ভাতৃত্ববোধ অনেক থাকলেও এটি এক ধরনের শ্রেণিবিন্যাস মেনে চলে, কারণ তাদের বেশিরভাগই তাদের স্বতন্ত্র আদি স্থান বৃত্তান্ত হারিয়ে ফেলেছে। নগরীর উপবিভাগ প্রাকৃতিক প্রথম স্তরটি মিটিকিভারির ডান তীরে এবং বাম তীরে রয়েছে। পুরাতন ভাতৃত্ববোধের নামগুলি মধ্যযুগের দিকে ফিরে যায় এবং কখনও কখনও বড় ধরনের ভাষাগত আগ্রহ তৈরি করে। নুতুন নির্মিত পুরো উন্নয়ন গুলোর মধ্যে প্রধানত আবাসিক বিপণনের নাম রয়েছে।

প্রাক-বিপ্লব টিফলিসে, জর্জিয়ান কোয়ার্টারটি শহরের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে সীমাবদ্ধ ছিল; বেদেকার লে-আউটটিকে/নকশাটিকে সংক্ষেপে এই ভাবে বর্ণনা করেছেন:

শহরের উত্তর অংশে, কুরির বাম তীরে এবং রেলস্টেশনের দক্ষিণে, পরিষ্কার জার্মান কোয়ার্টারগুলো প্রসারিত, যেগুলো অনেক আগে ওয়ার্টেমবার্গ থেকে জার্মান অভিবাসীরা অধিগ্রহণ করেছিল(১৮১৮)। দক্ষিণে রয়েছে গ্রুজিনিয়ান বা জর্জিয়ান কোয়ার্টার (অবলাবার)। কুরার ডান তীরে রয়েছে রাশিয়ান কোয়ার্টার, আমলাদের আসন এবং বৃহত্তর ব্যবসায়িক সংস্থাগুলি। এটি দক্ষিণে আর্মেনিয়ান এবং পার্সিয়ান বাজার দ্বারা সংযুক্ত করা হয়।

— কার্ল বেদেকার, রাশিয়া: এ হ্যান্ডবুক ফর ট্রাভেলার্স[৩৪]

অবলাবাড়িকে "তথাকথিত 'পুরাতন তিবিলিসি'র অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়" এবং এটি বর্তমানে পরিকল্পনা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ ধরা হয়।[৩৫]

ভূগোল

তিলিসিতে অবস্থিত জর্জীয়ার জাতীয় বোটানিকাল গার্ডেনটি সোলোলাকী রেঞ্জের পাহাড়ের আড়ালের একটি দৃশ্য।

অবস্থান

তিবিলিসি দক্ষিণ ককেশাসে ৪১° ৪৩' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৪৪ ° ৪৭' পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। শহরটি মাতকোয়ারি নদীর তীরে পূর্ব জর্জিয়াতে অবস্থিত। শহরের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৮০–৭৭০ মিটার (১,২৫০–২,৫৩০ ফুট) এবং এর আকৃতি তিনপাশে পাহাড়ে ঘেরা একটি গোলাকার থিয়েটারের মত। তিবিলিসির উত্তরে রয়েছে সাগুরামো রেঞ্জ, পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্বে ইওরি সমতল এবং দক্ষিণে ও পশ্চিমে ট্রায়ালিটি রেঞ্জের বিভিন্ন প্রান্ত (উপ-রেঞ্জ) দ্বারা বেষ্টিত।

তিবিলিসির ভৌগোলিক অবস্থান বেশ জটিল। মাতকোয়ারি নদীর বাম তীরে অবস্থিত শহরের অংশটি অবচলা জেলা থেকে লোচিনি নদীর পূর্ব পর্যন্ত ৩০ কিমি (১৯ মা) এরও বেশি প্রসারিত। অপরদিকে মাতকোয়ারি নদীর ডানদিকে অবস্থিত এই শহরের অংশটি ত্রিলেটি রেঞ্জের পাদদেশে নির্মিত, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঢালু প্রান্ত গুলো মাতকোয়ারি নদীতে গিয়ে মিশেছে। যার কারণে মাতকোয়ারি নদীর ডান তীরে পাহাড়গুলি নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বাধা। এই ধরনের ভৌগোলিক পরিবেশ খুব ঘন বিকাশিত অঞ্চলের জন্য সংকীর্ণতা তৈরি করে যেখনে নগরীর অন্যান্য অংশগুলি জটিল টোপোগ্রাফিক ভোগলিক কারণে অনুন্নত অবস্থায় পড়ে থাকে।

শহরের উত্তরে, একটি বড় জলাধার রয়েছে ( সাধারণত তিবলিসি সমুদ্র হিসাবে পরিচিত) যেটি সেচ খাল গুলোর কারণে পূর্ণ থাকে।

আবহাওয়া

তিবিলিসি সমুদ্র হলো তিবিলিসির বড় পানির অংশ।

তিবিলিসির একটি আর্দ্র প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু রয়েছে (কপেন জলবায়ু শ্রেণিবিন্যাস: সিএফএ) যেটির যথেষ্ট মহাদেশীয় প্রভাব রয়েছে। শহরটিতে গ্রীষ্মকালে খুব উষ্ণতা এবং শীতকালে হালকা মাঝারি শীতলতা অনুভূত হয়। জর্জিয়ার অন্যান্য অঞ্চলের মতো, তিবিলিসিতেও বছর জুড়ে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয় যার কারণে এর আলাদা কোন শুকনো মৌসুম নেই। পূর্ব দিকের শুষ্ক (মধ্য এশীয় / সাইবেরিয়ান) বায়ুচাপ এবং পশ্চিমে সমুদ্রীয় (আটলান্টিক / কৃষ্ণ সাগর) বায়ু চাপ দুটোর কারণেই নগরীর জলবায়ু প্রভাবিত। যেহেতু শহরটি পাহাড়ের সীমা দ্বারা বেশিরভাগ দিকে আবদ্ধ, বৃহত্তর জলাধার (কৃষ্ণ ও ক্যাস্পিয়ান সমুদ্র) নিকটবর্তী এবং বৃহত্তর ককেশাস পর্বতমালা রেঞ্জ (আরও উত্তরে) রাশিয়া থেকে শীতল বায়ুচাপ প্রবেশের পথকে আটকে দিয়েছে বলেই, একই অক্ষাংশের সাথে একই রকম জলবায়ু অধিকারী অন্যান্য শহরগুলির তুলনায় তিবিলিসিতে তুলনামূলক ভাবে হালকা ক্ষুদ্র জলবায়ু রয়েছে।

তিবিলিসিতে গড় বার্ষিক তাপমাত্রা ১৩.৩ ° সে (৫৫.৯ ° ফা)। জানুয়ারি হচ্ছে শীতলতম মাস যার গড় তাপমাত্রা ২.৩ °সে (৩৬.১ °ফা)। জুলাই সবচেয়ে উষ্ণতম মাস যার গড় তাপমাত্রা ২৪.৯ °সে (৭৬.৮ °ফা)। দিনের বেলায় উচ্চ তাপমাত্রা এক বছরে ২২ দিন গড়ে ৩২ ° সে (৯০ ° ফা) পৌঁছায় বা এর থেকেও বেশি। ১৮৮৩ সালের জানুয়ারি মাসে সর্বনিম্ন রেকর্ড করা তাপমাত্রা −২৪.৪ ° সে (−১১.৯ ° ফা) এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২.০ ° সে (১০৭.৬ ° ফা) ১৮৮২ সালের ১৭ জুলাই। গড়ে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৪৯৫.৫ মিমি (১৯.৫ ইঞ্চি)। মে মসে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয় (গড় ৭৭.৬ মিমি (৩.১ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাতের পরিমাণ) হয় তবে জানুয়ারী সবচেয়ে শুষ্কতম মাস (গড় ১৮.৯ মিমি (০.৭ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাতের গড়)। প্রতি বছর গড়ে ১৫-২৫ দিন তুষারপাত হয়। পার্শ্ববর্তী পর্বতগুলি প্রায়ই মূলত বসন্ত এবং শরতের দিকে শহরের ভেতরে এবং তার চারপাশে মেঘ আটকে রাখে যার ফলে দীর্ঘায়িত বৃষ্টিপাত এবং/অথবা মেঘলা আবহাওয়া থাকে। তিবিলিসির বেশিরভাগ অংশে উত্তর-পশ্চিমের বায়ু প্রবাহ বছর জুড়ে প্রভাব বিস্তার করে। দক্ষিণ-পূর্বের বায়ু প্রবাহ খুবই সাধারণ।

Tbilisi-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাসজানুফেব্রুমার্চএপ্রিলমেজুনজুলাইআগস্টসেপ্টেঅক্টোনভেডিসেবছর
সর্বোচ্চ রেকর্ড °সে (°ফা)১৯.৫
(৬৭.১)
২২.৪
(৭২.৩)
২৮.৯
(৮৪.০)
৩৪.৪
(৯৩.৯)
৩৫.১
(৯৫.২)
৪০.২
(১০৪.৪)
৪২.০
(১০৭.৬)
৪০.৪
(১০৪.৭)
৩৭.৯
(১০০.২)
৩৩.৩
(৯১.৯)
২৭.২
(৮১.০)
২২.৮
(৭৩.০)
৪২.০
(১০৭.৬)
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা)৬.৬
(৪৩.৯)
৭.৭
(৪৫.৯)
১২.৬
(৫৪.৭)
১৮.৯
(৬৬.০)
২৩.১
(৭৩.৬)
২৮.১
(৮২.৬)
৩১.২
(৮৮.২)
৩০.৯
(৮৭.৬)
২৬.৪
(৭৯.৫)
১৯.৮
(৬৭.৬)
১২.৮
(৫৫.০)
৮.৪
(৪৭.১)
১৮.৯
(৬৬.০)
দৈনিক গড় °সে (°ফা)২.৩
(৩৬.১)
৩.১
(৩৭.৬)
৭.২
(৪৫.০)
১২.৭
(৫৪.৯)
১৭.২
(৬৩.০)
২১.৭
(৭১.১)
২৪.৯
(৭৬.৮)
২৪.৭
(৭৬.৫)
২০.২
(৬৮.৪)
১৪.২
(৫৭.৬)
৭.৯
(৪৬.২)
৩.৭
(৩৮.৭)
১৩.৩
(৫৫.৯)
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা)−০.৮
(৩০.৬)
০.০
(৩২.০)
৩.২
(৩৭.৮)
৮.৪
(৪৭.১)
১২.৪
(৫৪.৩)
১৬.৫
(৬১.৭)
১৯.৮
(৬৭.৬)
১৯.৫
(৬৭.১)
১৫.৪
(৫৯.৭)
১০.৪
(৫০.৭)
৪.৯
(৪০.৮)
১.৩
(৩৪.৩)
৯.৩
(৪৮.৭)
সর্বনিম্ন রেকর্ড °সে (°ফা)−২৪.৪
(−১১.৯)
−১৪.৮
(৫.৪)
−১২.৮
(৯.০)
−৩.৮
(২৫.২)
১.০
(৩৩.৮)
৬.৩
(৪৩.৩)
৯.৩
(৪৮.৭)
৮.৯
(৪৮.০)
০.৮
(৩৩.৪)
−৬.৪
(২০.৫)
−৭.১
(১৯.২)
−২০.৫
(−৪.৯)
−২৪.৪
(−১১.৯)
অধঃক্ষেপণের গড় মিমি (ইঞ্চি)১৮.৯
(০.৭৪)
২৫.৮
(১.০২)
৩০.৩
(১.১৯)
৫০.৫
(১.৯৯)
৭৭.৬
(৩.০৬)
৭৬.০
(২.৯৯)
৪৪.৯
(১.৭৭)
৪৭.৫
(১.৮৭)
৩৫.৬
(১.৪০)
৩৭.৫
(১.৪৮)
২৯.৯
(১.১৮)
২১.০
(০.৮৩)
৪৯৫.৫
(১৯.৫১)
অধঃক্ষেপণ দিনগুলির গড়৪.০৪.৬৫.৯৭.৬৯.৭৮.৭৫.৭৫.৭৫.০৫.৬৪.৪৪.০৭০.৯
আপেক্ষিক আদ্রতার গড় (%)৭৪৭২৬৮৬৬৬৭৬৪৬১৬২৬৬৭৩৭৬৭৬৬৯
মাসিক সূর্যালোক ঘণ্টার গড়৯৯১০২১৪২১৭১২১৩২৪৯২৫৬২৪৮২০৬১৬৪১০৩৯৩২,০৪৬
উৎস: Pogoda.ru.net (তাপমাত্রা, আর্দ্রতা),[৩৬]

WMO (বৃষ্টিপাত, বৃষ্টিপাতের দিন),[৩৭] NOAA (Sunshine hours)[৩৮]

মানুষ এবং সংস্কৃতি

জনসংখ্যার উপাত্ত

তিবিলিসির প্রধান নৃগোষ্ঠী
বছরজর্জীয়ান%আরমেনীয়%রাশিয়ান%মোট
১৮০১-৩[২৩]৪,৩০০২১.৫%১৪,৮৬০৭৪.৩%
২০,০০০
১৮৬৪/৬৫ শীতকালীন[৩৯]১৪,৮৭৮২৪.৮%২৮,৪০৪৪৭.৩%১২,৪৬২২০.৭%৬০,০৮৫
১৮৬৪/৬৫ গ্রীষ্ম[৩৯]১৪,৭৮৭২০.৮%৩১,১৮০৪৩.৯%১২,১৪২১৭.১%৭১,০৫১
১৮৭৬[৪০]২২,১৫৬২১.৩%৩৭,৬১০৩৬.১%৩০,৮১৩২৯.৩%১০৪,০২৪
১৮৯৭[৪১]৪১,১৫১২৯.৫%৪৭,১৩৩৩৬.৪%৪৪,৮২৩২৮.১%১৫৯,৫৯০
১৯২৬[২৪]১১২,০১৪৩৮.১%১০০,১৪৮৩৪.১%৪৫,৯৩৭১৫.৬%২৯৪,০৪৪
১৯৩৯[২৪]২২৮,৩৯৪৪৪%১৩৭,৩৩১২৬.৪%৯৩,৩৩৭১৮%৫১৯,২২০
১৯৫৯[২৪]৩৩৬,২৫৭৪৮.৪%১৪৯,২৫৮২১.৫%১২৫,৬৭৪১৮.১%৬৯৪,৬৬৪
১৯৭০[২৪]৫১১,৩৭৯৫৭.৫%১৫০,২০৫১৬.৯%১২৪,৩১৬১৮%৮৮৯,০২০
১৯৭৯[২৪]৬৫৩,২৪২৬২.১%১৫২,৭৬৭১৪.৫%১২৯,১২২১২.৩%১,০৫২,৭৩৪
২০০২[৪২]৯১০,৭১২৮৪.২%৮২,৫৮৬৭.৬%৩২,৫৮০৩%১,০৮১,৬৭৯
২০১৪[৪৩]৯৯৬,৮০৪৮৯.৯%৫৩,৪০৯৪.৮%১৩,৩৫০১.২%১,১০৮,৭১৭

বহুসংস্কৃতির শহর হিসাবে তিবিলিসিতে প্রায় শতাধিক নৃগোষ্ঠীর আবাস রয়েছে। জনসংখ্যার প্রায় ৮৯% জাতিগত জর্জিয়ানদের নিয়ে গঠিত, যার মধ্যে আর্মেনিয়ান, রাশিয়ান এবং আজারবাইজানীয়দের মতো অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর জনসংখ্যাও উল্লেখযোগ্য ভাবে রয়েছে। উল্লিখিত গোষ্ঠীগুলির পাশাপাশি তিবিলিসিতে ওসিয়েশিয়ান, আবখাজিয়ান, ইউক্রেনীয়, গ্রীক, জার্মান, ইহুদী, এস্তোনিয়ান, কুর্দি, আশেরিয়ানইয়াজিদিস সহ অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।[২৩][২৪][৩৯][৪০][৪২]

তিবিলিসির ৯৫% এরও বেশি বাসিন্দা খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের অনুশীলন করেন (যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জর্জিয়ান অর্থোডক্স চার্চ)। রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চ, যার সাথে জর্জিয়ানদের পুরোপুরি মিল থাকলেও শহরের মধ্যে আর্মেনীয় অ্যাপোস্টলিক চার্চেরও উল্লেখযোগ্য অনুসরণকারী রয়েছে। মোট জনসংখ্যার খুব কম সংখ্যক লোক (প্রায় ১.৫%) ইসলাম (প্রধানত শিয়া ইসলাম) অনুশীলন করে, যেখানে তিলিসির প্রায় ০.১% ইহুদী ধর্ম অনুশীলন করে।[৪৪] এছাড়াও এখানে রোমান ক্যাথলিক গির্জা এবং ইয়াজিদি সুলতান ইজিদ মন্দির রয়েছে।[৪৫][৪৬]

খেলাধুলা

উনিশ শতকের গোড়ার দিক পর্যন্তও অশ্বারোহণ (বিশেষত পোলো), কুস্তি, বক্সিং এবং লক্ষ্যবেধে নৈপুণ্যের মতো খেলা সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ছিল এই শরে। রাশিয়ান সাম্রাজ্যের প্রভাব বিস্তিতার তিবিলিসিতে আরও পশ্চিমা খেলাধুলা এবং ক্রিয়াকলাপ (বিলিয়ার্ড, বেড়া) নিয়ে আসে।

সোভিয়েত আমল খেলাধুলার একটি বিশেষ জনপ্রিয়তা নিয়ে এসেছিল যেটি সে সময় ইউরোপ এবং নির্দিষ্ট পরিমাণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত ছিল। এই সময়টাতেই, তিবিলিসি পেশাদার ক্রীড়াগুলির জন্য প্রয়োজনীয় ক্রীড়া অবকাঠামো তৈরি করে। ১৯৭৮ সালের মধ্যেই, এই শহরে প্রায় ২৫০ টি ছোট ও বড় খেলাধুলার সুবিধা ছিল, অন্য সুবিধা গুলির মধ্যে চারটি অভ্যন্তর খেলার স্থান এবং ছয়টি বহিরঙ্গন অলিম্পিক আকারের পুল, ১৮৫ টি বাস্কেটবল কোর্ট এবং হল, ১৯২ টি ভলিবল খেলার সুবিধা, ৮২ টি হ্যান্ডবল খেলার জায়গা, ১৯ টি টেনিস কোর্ট, ৩১ টি ফুটবল মাঠ এবং পাঁচটি স্টেডিয়াম ছিল। তিবিলিসির বৃহত্তম স্টেডিয়ামটি হলো দিনমো অ্যারিনা (৫৫,০০০ টি আসন) এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টেডিয়াম মাইখেল মেসখি স্টেডিয়াম (২৪,৬৮০ টি আসন)। স্পোর্টস প্যালেস যেটি সাধারণত টেনিস টুর্নামেন্টের সাথে বাস্কেটবল গেমস হোস্ট করে সব থেকে বেশি দর্শক ধারণ করতে পারে যাতে প্রায় ১১,০০০ লোক বসতে পারে।

ভেরি বাস্কেটবল হল কিছুটা ছোট পরিসরের অভ্যন্তর খেলার স্থান যার ধারণ ক্ষমতা ২,৫০০।

তিবিলিসির সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলাগুলি হ'ল ফুটবল, রাগবি ইউনিয়ন, বাস্কেটবল এবং কুস্তি। এছাড়াও টেনিস, সাঁতার এবং ওয়াটার পোলো জনপ্রিয় ক্রীড়াগুলির মধ্যে অন্যতম। বেশ কয়েকটি পেশাদার ফুটবল এবং রাগবি দলের পাশাপাশি কুস্তি ক্লাবও রয়েছে এখানে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বাস্কেটবল সংস্থার খেলোয়াড় জাজা পাচুলিয়া এবং নিকোলোজ ত্রিস্টিকিশভিলি হলেন তিবিলিসির স্থানীয় নাগরিক। পেশাদার ক্রীড়াগুলির বাইরেও শহরে বেশ কয়েকটি আন্ত:কলেজীয় এবং শৌখিন খেলোয়াড় দল এবং সংঘ রয়েছে।

তিবিলিসির স্বাক্ষরযুক্ত ফুটবল দল, দিনামো তিবিলিসি ১৯৮০-১৯৮১ মৌসুমের পরে কোনও বড় ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ জিততে পারেনি, কিন্তু এটি ইউরোপীয় উয়েফা কাপ বিজয়ীদের কাপ জিতেছিল এবং এই কৃতিত্ব অর্জনের জন্য ইউরোপের পূর্বতম দল হয়ে উঠেছিল। বাস্কেটবল ক্লাব ডিনামো তিবিলিসি ১৯৬২ সালে ইউরোলিগ জিতেছিলেন তবে এরপর এরকম কীর্তির পুনরাবৃত্তি আর ঘটেনি।

তিবিলিসি দেশটি ইউরোবাস্কেট ২০২১ এর জন্য গ্রুপ, চেক রিপাবলিক (প্যারাগুয়ে), জার্মানি(বার্লিন, কোলোন) এবং ইতালি (মিলান) শহরে গ্রুপ পর্বের বেশ কয়েকটি ম্যাচের আয়োজন করবে ।

তিবিলিসির দিনমো অ্যারেনায় ২০১৫ উয়েফা সুপার কাপের প্রস্তুতি।
ক্লাব/সংঘখেলাস্টেডিয়াম
লেলো সারেসেন্সরাগবি ইউনিয়নলেলো স্পোর্ট সেন্টার
আরসি আরমাজি তিবিলিসিরাগবি ইউনিয়নশেভডেনি স্টেডিয়াম
আরসি লোকোমোটিভ তিবিলিসিরাগবি ইউনিয়নঅবচালা স্টেডিয়াম
আরসি আর্মি তিবিলিসিরাগবি ইউনিয়নঅবচালা স্টেডিয়াম
এফসি দিনমো তিবিলিসিফুটবলবরিস পাইচাদজে স্টেডিয়াম
এফসি লোকোমোটেভি তিবিলিসিফুটবলমিখিল মেসখি স্টেডিয়াম
এফসি সবুর্তালো তিবিলিসিফুটবলবান্দেলা স্টেডিয়াম
এফসি উইট জর্জিয়াফুটবলমিখিল মেসখি স্টেডিয়াম # ২
বিসি দিনামো তিবিলিসিবাস্কেটবলতিবিলিসি স্পোর্টস প্যালেস
বিসি টিউসু তিবিলিসিবাস্কেটবলতিবিলিসি স্পোর্টস প্যালেস
বিসি মিয়া একাডেমিবাস্কেটবলতিবিলিসি স্পোর্টস প্যালেস
বিসি আর্মিয়াবাস্কেটবলতিবিলিসি স্পোর্টস প্যালেস
ম্যাকবি ব্রিংকফোর্ড তিবিলিসিবাস্কেটবলতিবিলিসি স্পোর্টস প্যালেস
বি.সি. ভিটা তিবিলিসিবাস্কেটবলতিবিলিসি স্পোর্টস প্যালেস

প্রচার মাধ্যম

জর্জিয়ার বেশিরভাগ মিডিয়া সংস্থাগুলির (টেলিভিশন, সংবাদপত্র এবং রেডিও সহ) সদর দফতর তিবিলিসিতে অবস্থিত। রুস্তাভি ২ টেলিভিশন চ্যানেলটি এই শহরের নিজস্ব, যেটি রোজ রেভুলেশনপ্রচারের মাধ্যমে যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করতে পেরেছিল। রুস্তভি ২ এর পাশাপাশি জর্জিয়ার চারটি প্রধান পাবলিক টেলিভিশন চ্যানেলের মধ্যে বাকি তিনটি (ইমেডি টিভি মায়েস্তো এবং পাবলিক ব্রডকাস্টিং চ্যানেল সহ) এই শহরেই অবস্থিত। তিবিলিসির টেলিভিশন বাজার ২০০৫ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায় যখন রুস্তভি ২ সফলভাবে মুজে টিভি সংস্থা কিনে ফেলেছিল এবং রুপার্ট মারডোকের নিউজ কর্পোরেশন ২০০৬ সালের শুরুতে আইমেডি মিডিয়া হোল্ডিংয়ের অংশীদার হয়ে গিয়েছিল।

তিবিলিসির বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র প্রকাশনা রয়েছে। বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সংবাদপত্রগুলির মধ্যে দৈনিক ২৪ সাতি ("২৪ ঘণ্টা"), রেজোনানসি ("অনুরণন"), আলিয়া, ইংরেজি ভাষার দৈনিক দ্য ম্যাসেঞ্জার, সাপ্তাহিক ফিনান্সিয়াল, জর্জিয়া টু ডে এবং ইংরেজি ভাষার সাপ্তাহিক দ্য জর্জিয়ান টাইমস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নগরীর রেডিও স্টেশনগুলির মধ্যে আইমেডি রেডিও (১০৫.৯ এফএম), ফরচুনা এবং ১০৫ রেডিও শ্রোতাদের মধ্যে ভালোই প্রতিযোগিতা ধরে রেখেছে।

তিবিলিসির রেডিও স্টেশনগুলির মধ্যে রয়েছে ৫ টি লাইন রেডিও (৯৩.৮ এফএম), ইউরোপ + তিবিলিসি (৯৯.৬ এফএম), এবং জর্জিয়ান প্যাট্রিয়ার্কি রেডিও (১০৫.৪ এফএম) উল্লেখযোগ্য।[৪৭]

স্থাপত্য

রুস্তাভেলি অ্যাভিনিউ থেকে রুস্তাভেলি থিয়েটারের একটি দৃশ্য।

শহরের স্থাপত্য শিল্প গুলো স্থানীয় (জর্জিয়ান) এবং বাইজেন্টাইন, নিওক্লাসিক্যাল, আর্ট নুউভাউ, বিউয়াক্স-আর্টস, মধ্য প্রাচ্য এবং সোভিয়েত আধুনিক শৈলীর সং মিশ্রণ।[৪৮] ১৭৯৫ সালে খুব অল্প কিছু বিল্ডিং শহরের ধ্বংস থেকে রক্ষা পেয়েছিল, তাই তিবিলিসির বেশিরভাগ ঐতিহাসিক ভবনগুলি রাশিয়ান সাম্রাজ্যকালীন সময় (১৮০১-১৯১৭)) থেকে রয়েছে। শহরের প্রাচীনতম অংশ (কালা, অবনোটুবানী, অবলাবাড়ি) তাদের মধ্যযুগীয় রাস্তার পরিকল্পনা অনুযায়ী পুনঃনির্মাণ করা হয় এবং কিছু প্রাচীন ঘর এমনকি তাদের সেই প্রাচীন ভিত্তির উপরেই পুনঃনির্মাণ করা হয়। তিবিলিসির শহরতলির যে অঞ্চলগুলি রাশিয়ান কর্তৃপক্ষের (সোলোলাকি, রুস্তাভেলি অ্যাভিনিউ, ভেরা ইত্যাদি) দ্বারা ইউরোপীয় ধাঁচের পরিকল্পনা অনুসারে গড়ে উঠেছিল সেগুলির পশ্চিমা চেহারাই রয়েছে, সেই সময়ে ইউরোপে জনপ্রিয় শৈলীর মিশ্রণ ছিল যেমন: বিউক আর্টস, প্রাচ্যবিদ , এবং বিভিন্ন সময়কালীন পুনরুজ্জীবনের শৈলী ইত্যাদি।

নুভাউ বিল্ডিং এবং বিশদ শিল্প (সোলোলাকি এবং চুগুড়িতে সাধারণ) এর প্রাচুর্যের জন্য তিবিলিসি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, যা ১৮৯০ এর দশকের মাঝামাঝি থেকে রাশিয়ান শাসনের শেষ অবধি বেড়ে উঠতে পেরেছিল। আর্ট নুভাউকে কমিউনিস্ট কর্তৃপক্ষরা বুর্জোয়া হিসাবে ঘোষণা করেছিল, এরাই মূলত পরীক্ষামূলক ভাবে আধুনিক স্থাপত্যের সূচনা করেছিল। জর্জিয়াতে আরও রক্ষণশীল এবং ঐতিহাসিক ভাবে প্রভাবিত স্টালিনবাদী স্থাপত্যটি ১৯৩৮ মার্কস-এঙ্গেলস-লেনিন ইনস্টিটিউট বিল্ডিং ("ইমেলি") দ্বারা সজ্জিত, বর্তমানে যেটি বিল্টমোর হোটেল তিবিলিসি নামে ব্যবহৃত হচ্ছে।[২]

পুরাতন তিবিলিসিতে খোলা আকাশের নিচের একটি ক্যাফে।

সোভিয়েত ইউনিয়ন জুড়ে পাওয়া মধ্যযুগের অধুনিকতম চিহ্নের সাথে তিবিলিসির যুদ্ধ-পরবর্তী স্থাপত্যগুলোর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে আবাসন সংকটের প্রতিক্রিয়ায় শহরটি নাটকীয়ভাবে সম্প্রসারিত হয়। গণ-উৎপাদন প্রযুক্তির অগ্রগতি নিয়ে কয়েক দশক ধরে নির্মিত পুরো শহরগুলি (সাবুর্তালো, দিঘোমি) শহরের উপকণ্ঠে পরিণত হয়। জর্জিয়ান স্থপতিবীদগন সোভিয়েত ইউনিয়নের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থাপত্য কীর্তি নির্মাণ করেছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে তিবিলিসির ১৯৭৫ সালের মিনিস্ট্রি অব রোডস এবং ১৯৮৪ সালের ওয়েডিং প্যালেসসোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে নগরকেন্দ্রিক অংশগুলির নির্মাণকাজ বেশিরভাগই থেমে/ধীর গতির হয়ে যায়। নতুন টাওয়ার গুলি পূর্বের সার্বজনীন জায়গাগুলি দখল করে নেয় এবং উপচে পড়া ভিড়ের অ্যাপার্টমেন্টের ভবনগুলি রাতারাতি "কামিকাজে লজ্ঞিয়া" ছড়িয়ে পড়ে। ২০০৪ সাল থেকে, নগর সরকার মিশ্র সাফল্যের সাথে অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণ প্রকল্পগুলি নিয়ন্ত্রণে নতুন উদ্যোগ নেয়। অদূর ভবিষ্যতে, তিবিলিসিতে তিনটি আকাশছোঁয়া কমপ্লেক্স থাকবে। অ্যাকসিস টাওয়ারস, রেডিক্স চ্যাচাভাদজে ৬৪, এবং বর্তমানে নির্মিত আজারা হোটেল / বিজনেস কমপ্লেক্সটি ককেশাসের সবচেয়ে উঁচু ভবন / আকাশচুম্বী হবে।[৩]

গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান

তিবিলিসি অপেরা এবং ব্যালে থিয়েটার।

তিবিলিসিতে গুরুত্বপূর্ণ চিহ্ন এবং অনেকগুলি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। জর্জিয়ার সংসদ ও সরকার (রাজ্য চ্যান্সেলারি) ভবনগুলি, পাশাপাশি জর্জিয়ার সুপ্রিম কোর্ট, তিবিলিসিতেই অবস্থিত। এই শহরে জর্জিয়ার জাতীয় জাদুঘর, তিবিলিসি স্টেট কনসার্ভটায়ার, তিবিলিসি অপেরা এবং ব্যালে থিয়েটার, শোটা রুস্তাভেলি স্টেট একাডেমিক থিয়েটার, মার্জনিশভিলি স্টেট একাডেমিক থিয়েটার, সামেবা ক্যাথেড্রাল, ভার্টনসোভের প্রাসাদ (বর্তমানে চিল্ড্রেন'স প্যালেস নামেও পরিচিত) এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক স্থান, রয়েছে অনেকগুলি রাজ্য যাদুঘর, জর্জিয়ার জাতীয় সংসদের জাতীয় পাবলিক লাইব্রেরি, জর্জিয়ার জাতীয় ব্যাংক, তিবিলিসি সার্কাস, দ্য ব্রিজ অফ পিস এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। সোভিয়েত আমলে অসংখ্য যাদুঘরের কারণে সোভিয়েত ইউনিয়নের শীর্ষ চারটি শহরের মধ্যে তিবিলিসি ক্রমাগত ভাবে শীর্ষ স্থান দখল করে রাখে।

নগরীর ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলির মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য হলো নারিকালা দূর্গ (৪র্থ – ১৭তম শতাব্দী), আঁচিশখতি বেসিলিকা (ষষ্ঠ শতাব্দী, ১৬তম শতাব্দীতে নির্মিত), সায়নি ক্যাথেড্রাল (৮ম শতাব্দী, পরে পুনঃর্নিমিত) এবং মেটেখি চার্চ

নিশিযাপন

গতানুগতিক আকর্ষণগুলির বাইরে, তিবিলিসি বর্ধমান নাইটক্লাব সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে যা ২০১০ এর দশকে আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে শুরু করে। বাসিয়ানি, মেটকভার্জ, খিদি এবং ক্যাফে গ্যালারী হিসেবে শীর্ষস্থানীয় প্রধান ক্লাবগুলিতে আন্তর্জাতিক মানের ডিজেদের পাশাপাশি স্থানীয় পারফর্মাররাও অংশ নেন।[৪৯][৫০]

অর্থনীতি

২০১৪ সালে ১২১৪ কোটি ৭০ লক্ষ জর্জিয়ান লারি এর মূল মূল্যে (৪৩০ কোটি) জিডিপি সহ, তিবিলিসি দেশের অর্থনৈতিক কেন্দ্রস্থল, যেটি জর্জিয়ার জিডিপির প্রায় ৫০ শতাংশ উৎপাদন করে। সরকারী সেবা সহ পরিষেবা খাত আধিপত্য বিস্তার করে এবং জিডিপিতে ৮৮ শতাংশ অবদান রাখে। এর মাথাপিছু জিডিপি ১০,৩৩৬ জর্জিয়ান লরি (€ ৩,৬০০) জাতীয় গড়কে ৫০ শতাংশের বেশি ছাড়িয়ে গেছে। সেবা খাত নিজেই পাইকারি ও খুচরা বাণিজ্য খাতের দ্বারা প্রভাব বিস্তার করে, যা দেশ এবং দক্ষিণ ককেশাসের পরিবহন এবং সরবরাহের মূল হিসেবে তিবিলিসির ভূমিকা প্রতিফলিত করে। জর্জিয়ার অন্য যে কোনও অঞ্চলে উৎপাদন ক্ষেত্রের তুলনায় তিলিসির উৎপাদন খাতটি জিডিপিতে মাত্র ১২ শতাংশ অবদান রাখে, তবে কর্মসংস্থান এবং মোট মূল্য যুক্ত করে এটি অনেক বৃহত্তর পরিসরের। তিবিলিসিতে বেকারত্বের হার ২২.৫ শতাংশ - যা অন্য অঞ্চলের তুলনায় তিবিলিসিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেশি।[৫১]

পরিবহন

তিবিলিসি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

বিমানবন্দর

শোটা রুস্তাভেলি তিবিলিসি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি তিবিলিসির একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যা শহর কেন্দ্রের দক্ষিণ-পূর্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার (১১ মাইল) জুড়ে বিস্তৃত। ২০১৭ সালে ৩১ লক্ষ ৬০ হাজার যাত্রী ব্যবস্থাপনা সহ এটি জর্জিয়ার সবচেয়ে ব্যস্ততম বিমানবন্দর এবং প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের সতেরো তম কর্মব্যস্ত বিমানবন্দর। বিগত দশকে বিমানবন্দরটি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে, ২০১৮ সালের ১১ মাসে ৩৫ লক্ষ ৬০ হাজার যাত্রীদের সেবা দিয়েছে।[৫২] এটি জাতীয় বাহক জর্জিয়ান এয়ারওয়েজ এবং মাইওয়ে এয়ারলাইন্স নামক একটি নুতুন জর্জিয়ান-চীনা এয়ার লাইনের সংযোগ স্থল। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, বিভিন্ন এয়ারলাইনস প্রধান ইউরোপীয় এবং এশিয়ান পরিবহরের মূল যাত্রা পথের কাজ করে, যেমন: লন্ডন, মিউনিখ, বার্লিন, আমস্টারডাম, দুবাই, ব্রাসেলস, ভিয়েনা, প্যারিস, দোহ প্রভৃতি। ২০১৬ সালে তিবিলিসি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সৌর শক্তি ব্যবহার শুরু করে এবং ২০০৮ সালে ককেশাস অঞ্চলের প্রথম "সবুজ বিমানবন্দর" এ পরিণত হয়।

নাটাখতারি এয়ারফিল্ড, নাটাখতারী শহর তিবিলিসি থেকে ৩৩ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত, এটি দেশীয় বিমানবন্দর যা বাতুমি, মেসতিয়া এবং আমব্রোলৌরি হয়ে রাজধানী পথে যাত্রীসেবা দিয়ে থাকে।

মেট্রো

তিবিলিসি মেট্রো, এর গভীরতার জন্য অন্যতম, যেটিতে প্রতিমাসে ৯০ লক্ষ রাইড চলাচল করে।
তিবলিসি শহরতলিতে মিনিবাস গুলো
শোটা রুস্তাভেলি এভেনিউতে তিবলিসির পৌর এলাকা মেনস লায়নস সিটি
ইউরোপ স্কয়ারকে নারিকলা এর সাথে সংযুক্তকারী ঝুলন্ত ট্রাম লাইন যেখান থেকে শহরটিকে উপর থেকে দেখা যায়।

তিবিলিসি মেট্রো দ্রুত পরিবহন পাতাল পথে পরিসেবা দিয়ে থাকে নগরীতে। এটি ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের চতুর্থ মেট্রো পদ্ধতি। এর নির্মাণ কাজ ১৯৫২ সালে শুরু হয়ে ১৯৬৬ সালে শেষ হয়। পদ্ধতিটি দুটি লাইনে পরিচালিত হয়, আখমেটেলি-ভারকেটিলি লাইন এবং সাবুর্তালো লাইন। এটিতে ২৩ টি স্টেশন এবং ১৮৬ টি মেট্রো গাড়ি রয়েছে। বেশিরভাগ স্টেশন, সোভিয়েত-নির্মিত মেট্রো পদ্ধতি গুলোর বৈশিষ্ট্যযুক্ত সাজ সজ্জায় সজ্জিত। সকাল ছয়টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত রেল চলাচল করে। অসমান স্থল হওয়ার কারণে কিছু কিছু জায়গায় রেললাইন মাটির উপরে চলে। স্টেশন দুটিও মাটির উপরেই অবস্থিত।

তৃতীয় মাটির উপরের লাইনটি তিবলিসির ৩০ কিলোমিটার পূর্বে রুস্তভি পর্যন্ত একটি সম্ভাব্য বর্ধনের মাধ্যমে মধ্য তিবিলিসি এবং তিবিলিসি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এর সাথে মধ্য তিলিসিকে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।[৫৩]

ট্রাম

তিবিলিসি শহরে ট্রাম লাইন ছিল যেটায় ১৮৮৩ সাল থেকে ঘোড়া চালিত ট্রাম চালু হয় এবং ১৯০৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর বৈদ্যুতিক ট্রাম চালু হয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন ভাঙ্গা শুরু হয় তখন কয়েক বছরের মধ্যেই বৈদ্যুতিক ট্রান্সপোর্ট একটি অবক্ষয়ের রাজ্যে চলে যায় এবং অবশেষে ২০০৬ সালের ৪ ডিসেম্বর ট্রাম লাইনগুলো বন্ধ হয়ে যায় এবং অবশিষ্ট থাকে শুধু একটি ট্রাম লাইন এবং দুটি ট্রলিবাস। [৫৪][৫৫] তখনো একটি আধুনিক ট্রাম লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা তাদের ছিল।[৫৬][৫৭]

মিনিবাস

পরিবহন ব্যবস্থায় মিনিবাস সর্বোচ্চ চলাচল করে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তিবিলিসিতে একটি বিস্তৃত মিনিবাস ব্যবস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে। শহর ছাড়াও, বেশ কয়েকটি লাইন তিবিলিসির আশেপাশের গ্রামাঞ্চলেও সেবা দিয়ে থাকে। শহর জুড়ে, নির্ধারিত দাম দূরত্ব নির্বিশেষে নির্ধারণ করা হয় (২০১৮ সালে ৮০ বা ৫০ তেত্রি ছিল)। শহরের বাইরে দীর্ঘ ভ্রমণের জন্য ভাড়াও সাধারণত বেশিই হয়ে থাকে। ২০১৮ সালের এপ্রিলপর্যন্ত, মিনিবাস লাইনের জন্য ১৪ টি রাস্তা[৫৮] বাদে কোনও পূর্ব নির্ধারিত স্টপেজ ছিলনা, তারা রাস্তা থেকে টেক্সির মত যাত্রী তুলে এবং প্রতিটি যাত্রীগুলোও যখন খুশি পছন্দসই নিজের মত প্রস্থান করতে পারে।

পৌরসভার বাস

পরিবহনের দ্বিতীয় বৃহত্তম রূপ লোল পৌরসভা বাসগুলি যা তিবিলিসি পরিবহন সংস্থা দ্বারা পরিচালিত হয়। ২০১৮ সালের অক্টোবর অবধি, বিভিন্ন আকারের ৬৭২ টি বাস শহরটিকে সেবা দিয়ে আসছে, তাদের বেশিরভাগ ১৪৩ দক্ষ শক্তির ম্যান লায়ন সিটির বাস সহ ইউক্রেনীয় বোগদান এ১৪৪ এবং এ০৯২ মডেল।[৫৯] ২০১৭ সাল থেকে নুতুন ম্যান লায়নস সিটির বাস গুলো পরিসেবাতে সংযুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে, ৯০ টি নতুন বাসের আদেশ দেওয়ার জন্য দরপত্র ঘোষণা করা হয়েছিল। তেগিতা ট্রাক এন্ড বাসেস টেন্ডারটি জিতে যায় এবং ২০১৯ সালের শুরুর দিকে উপর্যুক্ত নির্দেশ পালন ও সরবরাহ করার কথা।[৬০] ২০১৮ সালের অক্টোবরে, জর্জিয়ান ড্রিম সম্মেলনে ঘোষণা করা হয়েছিল যে ২০১৯ এর শেষ নাগাদ সমস্ত বাস নতুন করে পরিবর্তন করা হবে, যার মধ্যে ৯০ টি হবে বৈদ্যুতিক। এমনকি, কালাডজে দৃঢ় ভাবে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, ২০২০ সালের মধ্যে তিবিলিসিতে ২০০ টি বৈদ্যুতিন বাস থাকবে এবং মোট বাসের সংখ্যা ৯০০ তে পৌঁছাবে।[৬১]

ঝুলন্ত ট্রাম লাইন

তিহাসিকভাবে, শহরটিতে সাতটি পৃথক ঝুলন্ত লাইন ছিল, তবে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরে এগুলি সমস্ত বন্ধ হয়ে যায়।

২০১২ সাল থেকে তিবিলিসির একটি আধুনিক, উচ্চ-ক্ষমতার গন্ডোলা লিফট রয়েছে যা রাইক পার্ক এবং নারিকালার দুর্গের মধ্যে চলাচল করে; প্রতিটি গন্ডোলা সর্বোচ্চ ৮ জন পর্যন্ত বহন করতে পারে। পদ্ধতিটি ইতালীয় নির্মাতা লেটনার রোপওয়েস দ্বারা নির্মিত হয়েছিল।[৬২]

২০১৬ সালের অক্টোবরের ১২ তারিখ থেকে, টার্টল লেকের ঝুলন্ত ট্রাম লাইন (মূলত ১৯৬৫ সালে খোলা) সাত বছর অকার্যকর থাকার পরে আবার খোলা হয়েছিল। এটিতে বড় ধরনের পুনঃর্গঠন করা হয়েছিল তবে গন্ডোলাস এবং স্টেশনগুলির পুরানো নকশাতেই রাখা হয়। এই ট্রাম লাইনটি ভেক পার্কটিকে টার্টল লেকের সাথে সংযুক্ত করে।

২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে, সাবুর্তালো জেলা স্টেট ইউনিভার্সিটি (মগলিভি) এবং ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস (বাগেবি) এর মধ্যে আরেকটি সোভিয়েত-যুগীয় ঝুলন্ত ট্রাম লাইন (মূলত ১৯৮৮ সালে খোলা হয়েছিল) পরিত্যাগের ১৩ বছর পরে পুনঃর্গঠন করা হচ্ছে এবং ২০১৮ সালের এপ্রিলে খোলার কথা ছিল। লোভিসোলো দ্বারা উৎপাদিত এবং সেরেটি ও তানফানি দ্বারা সরবরাহ করা আসল ইতালিয়ান-উৎপাদিত কেবিনগুলি স্টেশনের পাশাপাশি রাখা হচ্ছে, যার প্রতিটির যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৪০ জন।

সোভিয়েত কর্তৃপক্ষের হাতে অব্যবস্থাপনার কারণে, [তথ্যসূত্রটি] মূল ঝুলন্ত চলা চলকারী ট্রামগুলির মধ্যে একটির মধ্যে বিরাট ত্রুটি দেখা দিয়েছিল, যার ফলে ১৯৯০ সালে তিবিলিসি ক্যাবল কার দুর্ঘটনা ঘটে এবং তখন থেকেই এটি বন্ধ রয়েছে।[৬৩] ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে, পুরাতন ঝুলন্ত ট্রামটি উল্লেখযোগ্য নিচের স্টেশনটি রেখে নতুন গন্ডোলাস, মাস্টস, আপার স্টেশন এবং অন্যান্য অবকাঠামোগত পরিকল্পনা নিয়ে পুনর্গঠনের কাজ চলছে। প্রকল্পটি ডপপলমায়ার গ্যারভেন্টা গ্রুপ দ্বারা পরিচালিত হয়।

ফানিকুলার

বহুবছরের অবসানের পরে তিবিলিসি ফানিকুলারটি ২০১২ আবার চালু হয়েছিল। এটি তার পথের রেলপথটি সর্বপ্রথম ১৯০৫ সালে নির্মিত হয়েছিল, এটি চনকাদজে রাস্তা এবং ম্যাটস্মিন্ডা পার্ককে সংযুক্ত করে এবং প্রায় ৩০০ মিটার উচ্চতার পার্থক্যে আবৃত করে। পাহাড়ের চূড়াটি হলো শহরের উচ্চতম জায়গা, এখান থেকে তিবিলিসিকে বিভিন্ন দৃষ্টি কোণ থেকে উপভোগ করা যায় এবং এটি তিবিলিসি টেলিভিশন ব্রডকাস্টিং টাওয়ারের পাশাপাশি রোলার-কোস্টার এবং ফেরি হুইল সহ কিছু বিনোদন এর কেন্দ্রস্থল।

ফানিকুলারের অর্ধ-পথ স্টেশনটি ম্যাটস্মিন্ডা পান্থেওন থেকে কিছুটা দূরে, নেক্রোপলিসে সহজে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়।

শিক্ষা ব্যবস্থা

তিবিলিসির পাবলিক স্কুল নম্বর ১, এটি প্রথম ধ্রুপদী জিমনেসিয়াম হিসাবেও পরিচিত

তিবিলিসিতে তিবিলিসি স্টেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং পেট্রে শটাদজে তিলিসি মেডিকেল একাডেমী সহ উচ্চশিক্ষার বেশ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা তাদের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত চিকিৎসা শিক্ষাব্যবস্থার জন্য বিখ্যাত। বৃহত্তম জর্জিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় হলো তিবিলিসি স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় যা ১৯১৮ সালের ৮ ই ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ৩৫,০০০ এরও বেশি নিবন্ধভুক্ত শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক এবং কর্মীর (সহযোগী) সংখ্যা প্রায় ৫,০০০। তিবিলিসি ককেশাস অঞ্চলের বৃহত্তম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়-তিবিলিসি স্টেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, যা ১৯১৮ সালে তিবিলিসি মেডিকেল ইনস্টিটিউট হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং ১৯৩০ সালে তিবিলিসি স্টেট ইউনিভার্সিটির (টিএসইউ) মধ্যে মেডিসিন অনুষদে পরিণত হয়। তিবিলিসি স্টেট মেডিকেল ইনস্টিটিউটটি ১৯৯২ সালে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নামে নামকরণ করা হয়। সেই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি স্বাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করে, তাই টিএসএমইউ ককেশাস অঞ্চলের উচ্চ শিক্ষার একটি উচ্চ-পদস্থ রাজ্য-সমর্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠল। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রায় ৫০০০ স্নাতক এবং ২০৩ স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী রয়েছে যাদের ১০% বিদেশী থেকে আগত।

জর্জিয়ার প্রধান এবং বৃহত্তম প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জর্জিয়ান টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় তিবিলিসিতেই অবস্থিত। জর্জিয়ান টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ১৯২২ সালে তিবিলিসি স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটেকনিক অনুষদ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রথম বক্তৃতাটি দিয়েছিলেন বিশ্বখ্যাত জর্জিয়ান গণিতবিদ অধ্যাপক আন্ডরিয়া রাজ্জাদজে। এটি ১৯৯০ সালের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা অর্জন করেছে। জর্জিয়ার তিনটি সর্বাধিক জনপ্রিয় বেসরকারী উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান - জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (তিবিলিসি), ককেশাস বিশ্ববিদ্যালয় এবং তিবিলিসির উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় - তিলিসিতেই অবস্থিত।

তিবিলিসি স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়, ভবন ১

জর্জিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় (তিবিলিসি) জর্জিয়ার বৃহত্তম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে প্রায় ৩৫০০ এরও বেশি আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় শিক্ষার্থী রয়েছে। এটি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং শীঘ্রই জর্জিয়ান শিক্ষা খাতের মধ্যে এটি শীর্ষ স্থানে পোঁছে যায়। ২০১০ সালে, ইউজি বিশ্ববিদ্যালয়টির অবকাঠামো এবং প্রযুক্তিগত সরঞ্জামগুলির উন্নয়নের জন্য ওপিকের (বিদেশী বেসরকারী বিনিয়োগ কর্পোরেশন) অর্থায়ন পেয়েছিল। জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্নাতক-পূর্ব এবং স্নাতক প্রোগ্রাম রয়েছে এবং এটি জর্জিয়ার প্রথম সংস্থা যা ওরাকল কর্পোরেশন, মাইক্রোসফ্ট, জেন্ড প্রযুক্তি এবং সিসকো একাডেমির আন্তর্জাতিক সনদ পত্র সরবরাহ করে। জর্জিয়ার স্টেট ইউনিভার্সিটির (আটলান্টা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) অংশীদারত্বে তিবিলিসি স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং জর্জিয়ান টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত একটি কনসোর্টিয়াম/সহায়-সংঘ দ্বারা ককেশাস বিশ্ববিদ্যালয় ২০০৪ সালে ককেশাস স্কুল অফ বিজনেস (সিএসবি) এর সম্প্রসারণ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল (১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত)। তিবিলিসির উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় দুটি উচ্চশিক্ষা বিদ্যালয়ের এককী করণের মাধ্যমে ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল: ইউরোপীয় স্কুল অফ ম্যানেজমেন্ট (ইএসএম-তিবিলিসি) এবং তিবিলিসি ইনস্টিটিউট অব এশিয়া এবং আফ্রিকা (টিআইএএ)। বর্তমানে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়টিতে তিনটি স্কুল রয়েছে - বিজনেস স্কুল (ইএসএম), এশিয়া এবং আফ্রিকা ইনস্টিটিউট এবং ল স্কুল - স্নাতক-পূর্ব, স্নাতক এবং ডক্টরেট স্তরে একাডেমিক প্রোগ্রাম সরবরাহ করে।এছাড়াও, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় স্বল্প-মেয়াদী কোর্সগুলি বিস্তারিত ভাবে পরিচালনা করে এবং বিভিন্ন গবেষণা কেন্দ্র এবং গ্রীষ্মকালীন বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

তিবিলিসিতে উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্টান গুলো হলো:

নারিকালা থেকে তিবিলিসির ২০১৬ সালের একটি প্যানারোমিক দৃশ্য।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক

জার্মানির সারব্রেকেনে তিবি‌লিসিস্থান

যমজ শহর এবং বোন শহর

তিবিলিসির যমজ শহরসমূহ হল:[৬৫]

অংশীদারিত্ব

আরও দেখুন

  • আবু তিবিলেলি, তিবিলিসির অনুগ্রাহী ঋষি
  • বাকু-তিবিলিসি-চিহান পাইপলাইন
  • তিবিলিসিয়ানদের তালিকা
  • জর্জিয়ার জাতীয় বোটানিকাল গার্ডেন
  • তিবিলিসি টেলিভিশন সম্প্রচার টাওয়ার
  • তিবিলিসি চিড়িয়াখানা

তথ্যসূত্র


গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ


🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ