পালং শাক

উদ্ভিদের প্রজাতি

পালং শাক ( বৈজ্ঞানিক নাম:Spinacia oleracea) এমারান্থাসি পরিবারভুক্ত এক প্রকার সপুষ্পক উদ্ভিদ। এটি জনপ্রিয় শাক ও সবজি। এর আদিবাস মধ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া। এটি একবর্ষজীবি উদ্ভিদ, তবে দ্বিবর্ষজীবি পালং গাছ হতে পারে যদিও বিরল। পালং গাছ ৩০ সেমি পর্যন্ত লম্বা হয়। বাংলাদেশে শীতকালে এর চাষ হয়। এর পাতা একান্তর, সরল, ডিম্বাকার বা ত্রিভূজাকার। এই পাতার আকার ২-৩০ সেমি লম্বা ও ১-১৫ সেমি চওড়া হতে পারে। গাছের গোড়ার দিকের পাতাগুলো বড় বড় এবং উপরের দিকের পাতাগুলো ছোট হয়। এর ফুল হলদেটে সাদা, ৩-৪ মিমি ব্যাসবিশিষ্ট হয়। এর ফল ছোট, শক্ত, দানাকৃতির ও গুচ্ছাকার। ফলের আকার আড়াআড়ি ৫-১০ মিমি; এতে বেশ কয়েকটি বীজ থাকে।

পালং শাক
Spinacia oleracea
ফুলসহ পালং শাক
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ:Plantae
শ্রেণীবিহীন:সপুষ্পক উদ্ভিদ
শ্রেণীবিহীন:Eudicots
শ্রেণীবিহীন:Core eudicots
বর্গ:Caryophyllales
পরিবার:Amaranthaceae,
formerly Chenopodiaceae[২]
গণ:Spinacia
প্রজাতি:S. oleracea
দ্বিপদী নাম
Spinacia oleracea
L.

পালং শাকের বর্ণনার প্রাচীনতম নিদর্শন পাওয়া গেছে চীনে। সেখানে বলা হয়েছে, এই শাক নেপাল থেকে চীনে এসেছে (সম্ভবত ৬৪৭ খ্রি.)।[১]

পুষ্টি উপাদান

পালং শাক, কাঁচা
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)-এ পুষ্টিমান
শক্তি৯৭ কিজু (২৩ kcal)
৩.৬ g
চিনি০.৪ g
খাদ্য আঁশ২.২ g
০.৪ g
২.২ g
ভিটামিনপরিমাণ দৈপ%
ভিটামিন এ সমতুল্য
লুটিন জিয়াক্সানথিন
৫৯%
৪৬৯ μg
৫২%
৫৬২৬ μg
১২১৯৮ μg
ভিটামিন এ৯৪০০ IU
ফোলেট (বি)
৪৯%
১৯৪ μg
ভিটামিন সি
৩৪%
২৮ মিগ্রা
ভিটামিন ই
১৩%
২ মিগ্রা
ভিটামিন কে
৪৬০%
৪৮৩ μg
খনিজপরিমাণ দৈপ%
ক্যালসিয়াম
১০%
৯৯ মিগ্রা
লৌহ
২১%
২.৭ মিগ্রা
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মার্কিন সুপারিশ ব্যবহার করে শতাংশ অনুমান করা হয়েছে।
উৎস: ইউএসডিএ ফুডডাটা সেন্ট্রাল

পালং শাক অত্যন্ত পুষ্টিকর ও রুচিকর। এতে আছে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট। তাজা এবং অল্পসেদ্ধ করে খেলে বেশি এন্টিঅক্সিডেন্ট লাভ করা যায়। ভিটামিন-বি ১৯৪১ সালে প্রথম পালং শাকে আবিষ্কৃত হয়েছিল [২]

উপকারিতা

  • পালং শাকে আছে উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেসিয়াম, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • এতে থাকা বেশি মাত্রার ভিটামিন এ, লিম্ফোসাইট বা রক্তের শ্বেত কণিকা দেহকে বিভিন্ন সংক্রমণ ও রোগ থেকে রক্ষা করে।
  • এতে থাকা ১০টিরও বেশি ভিন্ন ধরনের ফ্ল্যাভোনয়েড ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে।
  • এর উচ্চ মাত্রার বিটা ক্যারোটিন চোখের ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
  • এর ভিটামিন 'এ' ত্বকের বাইরের স্তরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • এতে ফলিক এসিড থাকায় তা হৃদ যন্ত্রের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে সক্ষম।[৩]
  • প্রাপ্ত বয়স্ক ঘন সবুজ পালং পাতায় উচ্চ মাত্রায় ক্লোরোফিল থাকায় এতে ক্যারটিনয়েড বিদ্যমান আর তা আমাদের শরীরে ব্যাথা নাশক ও ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।

আরও উপকারিতাঃপালং শাক অন্ত্রের ভেতরে জমে থাকা মল সহজে বের করে দিতে সহায়তা করে। যার কারণে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে তাদের জন্য এ শাক খুব উপকারী। পালং শাকের বীজ কৃমি ও মূত্রের রোগ সারায় ও এর কচি পাতা ফুসফুস, কণ্ঠনালীর সমস্যা, শরীর জ্বালাপোড়া সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে। জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য এই শাক বিশেষ উপকারী। পোড়া ঘায়ে, ক্ষত স্থানে, ব্রণে বা কোথাও ব্যথায় কালচে হয়ে গেলে টাটকা পালং পাতার রসের প্রলেপ লাগালে উপকার পাওয়া যায়। পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি, ই এবং আয়রন। এজন্য পালং শাক খেলে রক্তে আয়রনের মাত্রা বেড়ে যায়।

১। পালং শাক এমারান্থাসি পরিবারভুক্ত এক প্রকার সপুষ্পক উদ্ভিদ। এটি জনপ্রিয় শাক ও সবজি। এর আদিবাস মধ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া। এটি একবর্ষজীবি উদ্ভিদ, তবে দ্বিবর্ষজীবি পালং গাছ হতে পারে, যদিও বিরল। পালং গাছ ৩০ সেমি পর্যন্ত লম্বা হয়। বাংলাদেশে শীতকালে এর চাষ হয়। এর পাতা একান্তর, সরল, ডিম্বাকার বা ত্রিভূজাকার। এই পাতার আকার ২-৩০ সেমি লম্বা ও ১-১৫ সেমি চওড়া হতে পারে। গাছের গোড়ার দিকের পাতাগুলো বড় বড় এবং উপরের দিকের পাতাগুলো ছোট হয়। এর ফুল হলদেটে সাদা, ৩-৪ মিমি ব্যাসবিশিষ্ট হয়। এর ফল ছোট, শক্ত, দানাকৃতির ও গুচ্ছাকার। ফলের আকার আড়াআড়ি ৫-১০ মিমি; এতে বেশ কয়েকটি বীজ থাকে।

২। পালং শাকের বর্ণনার প্রাচীনতম নিদর্শন পাওয়া গেছে চীনে। সেখানে বলা হয়েছে, এই শাক নেপালথেকে চীনে এসেছে (সম্ভবতঃ ৬৪৭ খৃঃ)।

৩। বয়সের ছাপ লুকানোর জন্য আমরা কতকিছুই না করি। মুখে দামি ক্রিম মাখা থেকে শুরু করে শাক-সবজির ন্যাচারাল ট্রিটমেন্টও নিচ্ছে অনেকে। অথচ শীতের সবজি পালং শাকেই আছে এন্টি-অক্সিডেন্ট। আর এন্টি-অক্সিডেন্টের কাজই হলো কোষের ক্ষয়রোধ করে শরীরকে তারুণ্যদীপ্ত এবং সুস্থ-সবল রাখা। অর্থাৎ বার্ধক্যকে জয় করতে পালং শাকের রয়েছে অনন্য ভূমিকা।

৪। এছাড়া সহজলভ্য এ শাকটির রয়েছে অনেক খাদ্যগুণ। ভিটামিন 'ডি' ছাড়া বাকি সব ভিটামিনই এতে রয়েছে। বিশেষ করে বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন 'ই' এবং ভিটামিন 'সি'র উৎস পালং শাক। প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, আয়রনসহ বেশকিছু প্রয়োজনীয় মিনারেল রয়েছে এতে।

৫। পালং শাকের এন্টি-অক্সিডেন্ট মস্তিষ্কেও কোষগুলোকেও সতেজ এবং কর্মক্ষম রাখে। তাই মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও এর জুড়ি নেই। তাছাড়া পালং শাকের রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা। সব মিলিয়ে পালং শাক শীতের এক অসাধারণ সবজি!

চিত্রশালা

তথ্যসূত্র

আরো পড়ুন

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ