আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত

আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (ইংরেজি: International Court of Justice; ফরাসি: Cour internationale de Justice; মূলত আন্তর্জাতিক আদালত নামে পরিচিত। এটির সদর দপ্তর হেগ, নেদারল্যান্ডে। এটির প্রধান কাজ স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে আইনি বিরোধ নিষ্পত্তি করা এবং বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাকে আইন বিষয়ে পরামর্শ মতামত দেয়া। এটিকে সংক্ষেপে আইসিজে(ICJ)বলা হয়।

আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত
International Court of Justice
প্রতিষ্ঠাকাল১৯৪৫ সাল
অধিক্ষেত্রবিশ্ব, ১৯৩ রাষ্ট্র
অবস্থানহেগ, নেদারল্যান্ডস
স্থানাঙ্ক৫২°০৫′১১.৭৬″ উত্তর ৪°১৭′৪৩.৮০″ পূর্ব / ৫২.০৮৬৬০০০° উত্তর ৪.২৯৫৫০০০° পূর্ব / 52.0866000; 4.2955000
অনুমোদনকর্তাজাতিসংঘ
বিচারকের মেয়াদ৯ বছর
পদের সংখ্যা১৫ জন
তথ্যক্ষেত্রআন্তর্জাতিক আদালত
প্রেসিডেন্ট
সম্প্রতিআব্দুলকায়ী ইউসুফ[১]
হইতে৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২
ভূমিকা সমাপ্তির তারিখ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
ভাইস প্রেসিডেন্ট
সম্প্রতিবেরনার্দো সেপালভেদা-আমোর[১]
হইতে৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২
পদ সমাপ্তির তারিখ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
পিস পালেস, আন্তর্জাতিক আদালত

কার্যক্রম

জাতিসংঘদ্বারা ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। আদালত ১৯৪৬ সালে কার্যক্রম শুরু করে, আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের স্থায়ী আদালতের উত্তরসুরি হিসাবে। পূর্বসূরির মতই এটিও সাংবিধানিক নথিপত্র দ্বারা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত।[২] আদালত বৈচিত্র্যময় বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত করে থাকে। আজ পর্যন্ত, আন্তর্জাতিক আদালতে অল্প কিছু মামলা পরিচালিত হয়েছে। যাই হোক, ১৯৮০ সালের পর থেকে দৃশ্যত আদালতের ব্যবহার বেড়েছে বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে।

বিচারক নির্বাচন

আন্তর্জাতিক আদালত ৯ বছর মেয়াদি ১৫ জন বিচারক দ্বারা পরিচালিত। বিচারকগন স্থায়ী সালিস আদালতের মনোনীত তালিকা থেকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক নির্বাচিত হয়ে থাকে। এই নির্বাচন প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক আদালতের অনুচ্ছেদ ৪-১৯ –এর মাধ্যমে হয়ে থাকে। আদালতের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার জন্য প্রতি ৩ বছর পর পর ৫ জন বিচারক নির্বাচন করা হয়।কোন বিচারক মারা গেলে, সাধারনত বাকি সময়ের জন্য বিশেষ নির্বাচনের মাধ্যমে বিচারক নির্বাচন করা হয়। একই দেশ থেকে দুই জন বিচারক থাকে না। অনুচ্ছেদ ৯ অনুসারে আদালতের সদস্যপদ ‘মৌলিক সমাজ ব্যবস্থা ও শীর্ষস্থানীয় আইন ব্যবস্থা’ কে প্রতিনিধিত্ব করে। মূলত, সকল ধরনের বিদ্যমান আইন। জন্মলগ্ন থেকে, নিরাপত্তা পরিষদের ৫ সদস্যের (ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্যযুক্তরাষ্ট্র) মধ্যে ৮ জনের বিচারক সবসময় এই আদালতে থাকে। শুধুমাত্র চীন কোনো নাম না দেওয়ার কারণে, এই আদালতে কোন ) বিচারক (১৯৬৭ থেকে ১৯৮৫ ছিল না।

অনুচ্ছেদ ৬ অনুসারে সকল বিচারক দেশ - জাতি নির্বিশেষে উন্নত নৈতিক চরিত্রের অধিকারি নির্বাচিত হবেন যারা নিজ দেশে সরবোচ্চ বিচার কার্যালয়ে উপযুক্ত এবং আন্তর্জাতিক আইন সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা রাখেন। বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা অনুচ্ছেদ ১৬-১৮ দ্বারা নিশ্চিত করা হয় এবং আদালতের বিচারকেরা অন্য কোন পদে বা পরামর্শক হিসাবে কাজ করতে পারবেন না। সাধারনত এই আদালতের বিচারকেরা নিজস্ব নৈতিকতা দিয়ে এই আইন মেনে চলেন। কোন বিচারককে বরখাস্ত করা যাবে যদি বাকি বিচারকেরা সর্বসম্মত হন।[৩]বিচারকেরা সম্মিলিত বাঁ পৃথক মতামত দিতে পারেন। সিদ্ধান্ত এবং পরামর্শ মতামত সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে হয়। সমসংখ্যা মতামতের বিষয়ে প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত।[৪] বিচারকেরা কোন বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করতে পারেন।

অনানুষ্ঠানিক আদালত

আন্তর্জাতিক আদালতের সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোন বিবদমান মামলার জন্য অনানুষ্ঠানিক আদালত বসতে পারে। এই পদ্ধতিতে কোন বিবদমান পক্ষ অন্য কোন দেশের অতিরিক্ত বিচারপতির সহায়তা নিতে পারে শুধু মাত্র নিদিষ্ট মামলার জন্য। এইভাবে কোন মামলায় ১৭ জন পর্যন্ত বিচারক বসা সম্ভব।এটি দেশীয় বিচারব্যবস্থায় অদ্ভুত হলেও বিভিন্ন দেশকে এই আদালতে মামলা করতে উৎসাহিত করাই উদ্দেশ্য।

আনুষ্ঠানিক আদালত

সাধারনত আদালত সব বিচারক নিয়ে বসে, কিন্তু গত ১৫ বছরে কখনও সবাই এক সাথে বসেনি। সংবিধির ২৬-২৯ অনুচ্ছেদ কম বিচারপতির সমন্বয়ে আদালতের অনুমতি দেয় যাতে ৩ বা ৫ জন বিচারপতি শুনানিতে বসে। অনুচ্ছেদ ২৬ অনুযায়ী দুই ধরনের আদালত বসতে পারে – প্রথমত, বিশেষ ধরনের মামলার আদালত, দ্বিতীয়ত, বিশেষ মামলার শুনানির জন্য অনানুষ্ঠানিক আদালত। আন্তর্জাতিক আদালতের সংবিধানের ২৬(১) অনুসারে ১৯৯৩ সালে বিশেষ আদালত স্থাপিত হয়েছিল পরিবেশ বিষয়ে (যদিও এই আদালত কখনও ব্যবহার করা হয়নি)।

বর্তমান বিচারক

২৭ এপ্রিল, ২০১২ অনুযায়ী বিচারকের তালিকা নিম্নরূপ ঃ

নামজাতীয়তাপদমেয়াদ শুরুমেয়াদ শেষ
পিটার টমকা  স্লোভাকিয়াপ্রেসিডেন্টa২০০৩২০২১
বেরনার্দো সেপালভেদা-আমোর  মেক্সিকোভাইস প্রেসিডেন্ট a২০০৬২০১৫
হিসাশি ওয়াদা  জাপানসদস্য২০০৩২০২১
রনি আব্রাহাম  ফ্রান্সসদস্য২০০৫২০১৮
স্যার কেনেথ কিথ  নিউজিল্যান্ডসদস্য২০০৬২০১৫
মোহাম্মাদ বেনউনা  মরোক্কোসদস্য২০০৬২০১৫
লিওনিদ স্কটনিকভ  রাশিয়াসদস্য২০০৬২০১৫
আন্টিনিও অগাস্টো কানকাডো ট্রিন্দেদ    ব্রাজিলসদস্য২০০৯২০১৮
আব্দুলকায়ী আহমেদ ইউসুফ  সোমালিয়াসদস্য২০০৯২০১৮
স্যার ক্রিস্টফার গ্রীনউড  যুক্তরাজ্য   সদস্য২০০৯২০১৮
জু হাঙ্কিন  গণচীনসদস্য২০১০২০২১
জন ই ডনঘু  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  সদস্য২০১০২০১৫
জর্জিও গাজাল  ইতালিসদস্য২০১২২০২১
জুলিয়া সেবুতিন্ডে  উগান্ডাসদস্য২০১২২০২১
দল্ভীর ভাণ্ডারী  ভারতসদস্য২০১২২০১৮
 a ২০১২–২০১৫.

পদটীকা

আরো পড়ুন

  • Dunne, Michael. "Isolationism of a Kind: Two Generations of World Court Historiography in the United States," Journal of American Studies (1987) 21#3 pp 327–351.
  • Rosenne S., "Rosenne's the world court: what it is and how it works 6th ed (Leiden: Martinus Nijhoff, 2003).
  • Decisions of the World Court Relevant to the UNCLOS (2010) and Contents & Indexes[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] dedicated to Former ICJ President Stephen M. Schwebel
  • Van Der Wolf W. & De Ruiter D., "The International Court of Justice: Facts and Documents About the History and Work of the Court" (International Courts Association, 2011)

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ