আবদুলরাজাক গুরনাহ

তানজানীয় ঔপন্যাসিক

আবদুলরাজাক গুরনাহ এফআরএসএল (Abdulrazak Gurnah; জন্ম ২০ ডিসেম্বর ১৯৪৮) একজন তাঞ্জানীয় ঔপন্যাসিক যিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন।[২] তার মাতৃভাষা সোয়াহিলি, তবে তিনি ইংরেজি ভাষায় লিখে থাকেন।[৩] তিনি জাঞ্জিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৬০-এর দশকে জঞ্জিবার বিপ্লবের সময় শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাজ্যে চলে গিয়েছিলেন। এজন্য তাঁর উপন্যাসগুলোতে উপনিবেশবাদ ও শরনার্থী সংকট বিশেষভাবে স্থান পেয়েছে। ২০২০ সালে তার দশম উপন্যাস “আফটারলাইভস” প্রকাশিত হয়েছে।[৪] তাঁর উপন্যাসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো প্যারাডাইস (১৯৯৪), যা বুকার এবং হুইটব্রেড পুরস্কারের ক্ষুদ্র তালিকাভুক্ত হয়েছিল, ডিসার্শন (২০০৫) এবং বাই দ্য সি (২০০১), যা বুকারের জন্য দীর্ঘ তালিকাভুক্ত এবং লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস বুক অ্যাওয়ার্ডের ক্ষুদ্র তালিকাভুক্ত হয়েছিল।[৫] তিনি "উপনিবেশিকতার প্রভাব এবং সংস্কৃতি ও মহাদেশের মধ্যে উপসাগরে শরণার্থীদের ভাগ্যের আপোষহীন এবং সহানুভূতিশীল চিত্রায়নের জন্য" ২০২১ সালে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।[৬][৭] তিনি ২০২৩ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন।[৮]

আবদুলরাজাক গুরনাহ
২০২৩ সালে বাংলাদেশ ভ্রমণে আবদুলরাজাক গুরনাহ
জন্ম (1948-12-20) ২০ ডিসেম্বর ১৯৪৮ (বয়স ৭৫)
জাতীয়তাতাঞ্জানীয়, ব্রিটিশ
শিক্ষাপিএইচ.ডি.
উল্লেখযোগ্য কর্ম
আন্দোলনউত্তর-ঔপনিবেশিকতাবাদ
পুরস্কারসাহিত্যে নোবেল পুরস্কার (২০২১)

জীবন

আবদুলরাজ্জাক গুরনাহ ২০ ডিসেম্বর ১৯৪৮ তারিখে পূর্ব আফ্রিকার উপকূলবর্তী জাঞ্জিবার দ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন। এলাকাটি তখন ছিল “সালতানাত অব জাঞ্জিবার”, যা এখন তানজানিয়া হিসাবে পরিচিত।। ১৯৬৪ সালে জাঞ্জিবারে মুসলমানবিরোধী রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা হলে তার বড় ভাইয়ের সঙ্গে ইংল্যান্ডে চলে এসেছিলেন।[৩] তখন তার বয়স মাত্র ১৭, কিছু দিন আগে মাধ্যমিকের পড়ালেখা শেষ করেছেন। তার এক চাচাত ভাই তখন কেন্ট-এ পড়াশুনা করছিলেন। তিনি তাদের ইংল্যাণ্ডে বসবাস করতে সাহায্য করেন। যৌবনের প্রারম্ভেই বাস্তুচ্যুত হওয়ার নির্মম অভিজ্ঞতা কখনই তার মন থেকে অপসৃত হয় নি। তিনি ইংল্যাণ্ডেই লেখা পড়া করেন ও জীবিকা হিসাবে শিক্ষকতা গ্রহণ করেন।

ইংল্যাণ্ডে তিনি প্রথমে ক্যান্টারবারি ক্রাইস্ট চার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন।[৯] পরবর্তীকালে কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়-এ পড়াশুনা করেন। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৩ কয়েক বছর তিনি নাইজেরিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেয়ারিও বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৮২ সালে তিনি ইংল্যান্ডের কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়েই ১৯৮৫ সাল থেকে শুরু করে ২০১৭ সালে অবসরগ্রহণ অবধি এক নাগাড়ে তিনি অধ্যাপনা করেছেন।[৯]

আব্দুলরাজাক গুরনাহ অনেক দিন যাবৎ ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন। একই সঙ্গে উত্তর-ঔপন্যাসিক সাহিত্যের একজন বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তিনি কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কিছু দিন আগে অবসর নিয়েছেন। এখানে অধ্যাপনা ছাড়াও ডাইরেক্টর অফ গ্রাজুয়েট স্টাডিস-এর দায়িত্ব পালন করেছেন।[১০] তিনি সালমান রুশদী, ভি. এস. নাইপল, জোসেফ কনরাড, জর্জ ল্যামিং, জ্যামাইকা কিঙ্কেইড সহ বহু খ্যাতিমান সাহিত্যিকের সরাসরি শিক্ষক। তিনি “ওয়াসাফিরি” নামীয় জার্ণালের সহেযোগী সম্পদক।[১১]

অভিমুখ ও রচনাশৈলী

গুরনাহ এমন একজন কথাসাহিত্যিক যার উপন্যাস আনুপূর্ব সত্যান্বেষণে উন্মুখ। প্রথাসিদ্ধ বর্ণনার সরলরৈখিক অভিমুখ থেকে সরে এসে তিনি সাম্রাজ্যবাদী শোষণের শিকার উন্মূল, উদ্বাস্তু মানুষের অসহায়ত্বের কার্যকারণ সূত্র উদ্ঘাটনে বিস্ময়কর অনুপুঙ্খপরায়ণতার পরিচয় দিয়েছেন। ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ‘প্রস্থানের স্মৃতি’ থেকে ২০২০ সালে প্রকাশিত ‘উত্তরজীবন’ পর্যন্ত সকল রচনায় তিনি মানুষের পার্থিব অস্তিত্বের নিগূঢ় কারণ অনুসন্ধান করে ফিরেছেন। তিনি বারংবার প্রতিপন্ন করেছেন যে ঔপনিবেশিকতার কৃষ্ণছায়া শাসিত মানুষের মনন, দৃষ্টিভঙ্গি ও সংস্কৃতিতে দীর্ঘকাল বিদ্যমান থাকে।[১২] তিনি আরো প্রতিপন্ন করেছেন যে আফ্রিকায় দাস প্রথা ইউরোপীয়দের আগমনে পূর্ব থেকেই চালু ছিল।[৯][১৩]

চিনুয়া আচেবে থেকে শুরু করে গুগি ওয়া থিয়োঙ্গো অবধি প্রায় সকল আফ্রিকী লেখক তাদের সাহিত্যে ঔপনিবেশিকতার একটি জাতীয়তাবাদী উপাখ্যান উপস্থাপন করেছেন। আব্দুলরাজাক গুরনাহের উপন্যাসের অভিমুখ এর বিপ্রতীপে, যেখানে তিনি ব্যক্তিমানুষের অস্তিতসংকট নিয়ে চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন। পরাধীন মানুষের অসহায়ত্ব, বাস্তুচ্যূতি, অভিবাসন, আত্মপরিচয়ের সংকট ও বাধ্যতামূলক বিবর্তন, সম্মান ও মার্যাদাহানি ইত্যাদি নানা বিষয়-আশয় তাঁর রচনার কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। মানুষ কী ভাবে তার মূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, তা নানা ভাবে চিত্রিত হয়েছে গুরনাহের লেখনীতে। ভিন দেশে গিয়ে বসতি স্থাপনকারী মানুষের ‘বৈদেশিকতা’ কখনো ঘুচে যায় না। বস্তুত অভিবাসী মানুষ মৃত্যু অবধি নিরালম্ব ও নিরাশ্রয় থেকে যায়। অভিবাসন ললাটচিহ্নিত দারিদ্র, শত্রুতা, বা প্রতিকূলতার দুর্দশা থেকে পরিত্রাণের কোনো চাবিকাঠি নয়। আবদুলরাজ্জাক গুরনাহের আখ্যানে ইসলামের একটি ভূমিকাও সচরাচর সংরক্ষিত থাকে। ইসলাম বা মুসলমান সমাজ তার কাহিনীর পরিকাঠামো গঠন করে। সব মিলিয়ে গুরনাহ একই সঙ্গে অভিনিবেশী ও বৈচিত্রপূর্ণ। বলা হয়েছে, “তার একটি উপন্যাস পড়লেই সব উপন্যাসর আস্বাদন হয়ে যাবে না।”[১৪][১৫][১৬]

২০২০ সালে প্রকাশিত আব্দুলরাজাক গুরনাহ’র সর্বশেষ উপন্যাস ‘উত্তরজীবন’ (আফটারলাইভস্) ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এ উপন্যাসের একটি চরিত্র হামজা দুঃস্বপ্ন দেখতে দেখতে ফুঁপিয়ে ওঠে এই বলে, “এত চিৎকার, এত আর্তনাদ, এত রক্তক্ষরণ”। এই শব্দগুচ্ছ যেন দীর্ঘকাল ঔপনিবেশক শাসনে থাকা আফ্রিকা মহাদেশের পরাধীন জনসত্তার করুণ প্রতিচ্ছবি। উপনিবেশ-পূর্ব, ঔপনিবেশিক ও উত্তর-ঔপনিবেশ তিন প্রজন্মের কাহিনী নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘উত্তরজীবন’। গুরনাহ এ উপন্যাসে অত্যন্ত স্পষ্ট চিত্রে এঁকে তুলেছেন কীভাবে পরাধীনতার অবসান হলেও ঔপনিবেশিক শাসনের অপচ্ছায়া প্রলম্বিত হয়ে থাকে। সাম্রাজ্যবাদী শাসকরা চলে গেলেও থেকে যায় “চিৎকার, আর্তনাদ ও রক্তপাত”।[১৭][১৮]

গুরনাহের লিখনশৈলীর বৈশিষ্ট হলো বিভিন্ন চরিত্রের সমবায়ে একটি গল্পবিশ্ব গড়ে তোলা যা নানা স্থান, বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং বর্ণিল মানুষের বর্ণনায় সমৃদ্ধ। তার উপন্যাসের আখ্যানভাগ একই সঙ্গে কল্পনা ও বাস্তবের মিশেলে আকর্ষণীয়। নানা ঘটনা ও দুঘর্টনার অনুপুঙ্খ বর্ণনায় উপন্যাসের অবয়ব বিকশিত হয়। সংলাপ ব্যবহার করেন তিনি কেবল কাহিনীর প্রয়োজনে, অপরিহার্যভাবে। গতিময় বর্ণনায় তার চরিত্রগুলো উপন্যাসের কলেবরে বাস্তব হয়ে ওঠে। তার ভাষা প্রাঞ্জল ও মনোহর। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসাবে তিনি সাহিত্যের বিচার করেছেন একাডেমিক দৃষ্টিকোণ থেকে। কিন্তু বহু সাহিত্যিকের রচনাশৈলীর ব্যবচ্ছেদ তাকে ঋদ্ধ করেছে।[১৯]

কাহিনীসম্ভার

যৌবনের প্রারম্ভে স্বীয় মাত্রভাষা সোয়াহিলি ভাষায় গুরনাহ সাহিত্য রচনার প্রচেষ্টা নিয়ে ছিলেন। তারপর তিনি ইংরেজি ভাষাকে তার সাহিত্য ভাষা হিসাবে গ্রহণ করেন। তার প্রথম উপন্যাস “প্রস্থানের স্মৃতি” প্রকাশিত হয় ১৯৮৭তে। পূর্ব আফ্রিকার উপকূলে থাকার সময় গুরনার প্রথম উপন্যাস বেরোয়। কেনিয়াতে একজন ধনী চাচার সাথে থাকার জন্য যেতে চাইলে একজন যুবক যে সর্বগ্রাসী শাসনের অধীনে সংগ্রাম করে উপন্যাসের বিষয়বস্তু এমনটাই। পর্যালোচকগণ এটিকে "একজন মানুষের নিজের জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়ার সংগ্রামের একটি জোরালো অধ্যয়ন এবং দারিদ্র্য এবং দ্রুত পরিবর্তনের কবলে পড়ে একটি ঐতিহ্যবাহী সমাজের ভুতুড়ে প্রতিকৃতি" বলে অভিহিত করেছেন।

বুকার পুরস্কারের জন্য শর্টলিস্টেড গুরনাহের চতুর্থ উপন্যাস “প্যারাডাইজ” ১৯৯৪তে প্রকাশিত হয়। এ উপন্যাসটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্বেকার পূর্ব আফ্রিকায় পটভূমিতে লিখিত। এর নায়ক ১২ বছর বয়সী কিশোর ইউসুফ। ইউসফের বসবাস নিজস্ব এক জগতে বাস, নানারকম অদ্ভুত স্বপ্ন দেখে সে সর্বদা। এক দিন তাকে তার তথাকথিত এক চাচার কাছে কাজ করতে পাঠানো হয়। সেই চাচা সমুদ্র উপকূলবর্তী এলকার একজন নামজাদা বণিক। সেখানে গিয়ে ইউসুফ জানতে পারে ঐ বণিক প্রকৃতপক্ষে তার চাচা নয়। আসলে তাকে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। ঋণের বোঝা কমাতে ডেসপারেট পিতাই ছেলেকে বিক্রি করে দিয়েছে। ইউসুফকে সমুদ্রপথে পাচার করে দেয়া হয় ইউরোপে। সেখানে তাকে কিনে নেয়ার পর প্রথমে তেমন কোনো কাজ দেয়া না হলেও সে নিজে থেকেই তার মালিকের বাগানে কাজ করতে থাকে এবং বাগানটির প্রতি ধীরে ধীরে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। বাগানটি বাহির থেকে দেখা যায় না, এমন একটি উঁচু দেয়ালের আড়ালে সব সময় চারটি ফোয়ারার পানি শুষে বেঁচে থাকে। ইউসুফের কাছে দেয়ালঘেরা এই বাগান এবং এর বাইরের সেই মহাপৃথিবী উভয়ই সমানভাবে রহস্যময় প্রতীয়মান হয়। সে একসময় তার এই বাড়ি এবং বাগানকেন্দ্রিক জীবনযাপনের ভেতর হঠাৎই তার মালিক এবং এই বাড়ির এক অপ্রত্যাশিত গোপন রহস্য জেনে ফেলে যা পরে তার জীবনের জন্য জন্য হুমকি মনে করে। তবে এ ব্যাপারটি ইউসুফের সামনে উন্মোচন করে নতুন এক দিগন্ত।

নোবেল পুরস্কার বিজয়

২০২১ সালে সাহিত্যের জন্য নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে জেনে আব্দুলরাজাক গুরনাহ যারপরনাই খুশী ও বিস্মিত হয়েছেন। তিনি পাবেন একটি স্বর্ণপদক, সার্টিফিকেট ও ১০ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার যার মূল্যমান প্রায় ৯ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। পুরস্কার পৌঁছে দেয়া হবে প্রাপকের হাতেই।[৩]তিনি ১১৭শ সাহিত্যিক যিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন। ১৯৮৬ সালে ওলে সোয়িঙ্কার ৩৫ বছর পর একজন আফ্রিকী কৃষ্ণাঙ্গকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হলো। ১৯০১ প্রবর্তিত হওয়ার তিনি ৬ষ্ঠ আফ্রিকী ব্যক্তিত্ব।[১৬][২০]

ঢাকা ভ্রমণ

নোবেল বিজয়ী কথাসাহিত্যিক ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ভ্রমণ করেছেন। তিনি ২০২৩ সালের ৫ই জানুয়ারী থেকে ৮ই জানুয়ারী পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ১০ম ঢাকা লিটেরেরী ফেস্টিভ্যালে (ঢাকা লিট ফেস্টে) অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সাহিত্যের এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ৫ জানুয়ারি বেলা ১১টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আবদুলরাজাক গুরনাহ, অমিতাভ ঘোষ, বাংলঅদেশ সরকারের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূ্রুল হুদা আনুষ্ঠানিকভাবে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আবদুলরাজাক গুরনাহ বলেন, “আমি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসেছি। আমি ধারণা করছি এই আয়োজনের মাধ্যমে এমন কিছু দেখবো যা আমি জীবনেও দেখিনি। আমি মনে করি, এই আয়োজনের শুরুটা বেশ চমকপ্রদ ছিল।”[২১] ‘কেন্দ্রবিহীন এক বিশ্ব’ নামীয় আলোচনা পর্বে তিনি আরও বলেন, “কোনো গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ না থেকে যা দেখি তাই লেখি। আমি আমার জন্য বলি। নিজের জন্য লেখার কোনো যৌক্তিকতা আছে কিনা, এমন কোনো দ্বিধা আমার নেই। আমি নিজে যা দেখি ও জানি, তাই প্রকাশ করি। লেখার পর পড়ে মনে হয় হয়তো এটিই লিখতে চাচ্ছিলাম, আবার কখনো মনে হয়—কী আবোলতাবোল লিখলাম! আমার প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে কারও পক্ষে লেখা নয়, তবে আমি যেভাবে দেখি, সেটিকে তুলে ধরা। আমি যখন কোনো কিছু পড়ি তখন আমার মতো করেই পড়ি। আমি সবার উদ্দেশ্যেই বলি, আমি কখনো দেখি না আমার দর্শক কিংবা পাঠক কারা। আমি সবার জন্য লিখি, যারা আমার লেখা পড়ে।”[২২]

গ্রন্থাবলী

২০২১ সালে সাহিত্যের জন্য নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে জেনে আব্দুলরাজাক গুরনাহ যারপরনাই খুশী ও বিস্মিত হয়েছেন। তিনি পাবেন একটি স্বর্ণপদক, সার্টিফিকেট ও ১০ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার যার মূল্যমান প্রায় ৯ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। পুরস্কার পৌঁছে দেয়া হবে প্রাপকের হাতেই।[৩]তিনি ১১৭শ সাহিত্যিক যিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন। ১৯৮৬ সালে ওলে সোয়িঙ্কার ৩৫ বছর পর একজন আফ্রিকী কৃষ্ণাঙ্গকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হলো। ১৯০১ প্রবর্তিত হওয়ার তিনি ৬ষ্ঠ আফ্রিকী ব্যক্তিত্ব।[১৬][২০]

উপন্যাস

ছোটগল্প

  • দ্য কালেক্টেড স্টোরিজ অফ আব্দুলরাজাক গুরনাহ [আব্দুলরাজাক গুরনাহের সংগৃহীত গল্প] (২০০৪)
  • মাই মাদার লিভড অন আ ফার্ম ইন আফ্রিকা [আমার মা আফ্রিকার একটি খামারে বাস করত] (২০০৬)

ব্যক্তিগত জীবন

গুরনাহ যুক্তরাজ্যে পূর্ব সাসেক্সের ব্রাইটনে বসবাস করেন।[২৫][২৬][২৭]

প্রবন্ধ

  • এসেইজ অন আফ্রিকার রাইটিং, (২ খণ্ড), (১৯৯৩-৯৫)
  • দ্য ক্যামব্রিজ কম্পানিয়ন টু সালমান রুশদি (২০০৭)

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ