হাসান রুহানি
হাসান রুহানী (ফার্সি: حسن روحانی, উচ্চারণ: [hæˈsæn-e ɾowhɒːˈniː] (ⓘ); জন্মনাম: হাসান ফরিদুন حسن فریدون; ১২ নভেম্বর ১৯৪৮)[৭][৮] হলেন একজন ইরানি রাজনীতিবিদ যিনি ২০১৩ সালের ৩ আগস্ট থেকে ইরানের ৭ম রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি একজন আইনবিদ, অ্যাকাডেমিক, সাবেক কূটনীতিবিদ এবং ইসলামি পণ্ডিত। তিনি ১৯৯৯ সাল থেকে ইরানের বিশেষজ্ঞ সভার সদস্য,[৯] ১৯৯১ সাল থেকে যুক্তিসিদ্ধ বুদ্ধিবৃত্তিক পরিষদের সদস্য[১০] এবং ১৯৮৯ সাল থেকে সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একজন সদস্য হিসাবে নিয়োজিত রয়েছেন।[৬][১১]রুহানী ১৯৮৯ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ইরানের সংসদের চতুর্থ ও পঞ্চম মেয়াদের ডেপুটি স্পিকার এবং সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব ছিলেন।[৬] তিনি ইরানের পারমাণবিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ইইউ থ্রি, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে শীর্ষ সমঝোতাকারী ছিলেন। এছাড়া তিনি একজন শিয়া মুজতাহিদ (প্রবীণ যাজক)[১২] ও অর্থনৈতিক বাণিজ্য আলাপালোচকও ছিলেন।[১৩][১৪]:১৩৮ তিনি জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকারের পক্ষে দাপ্তরিক সমর্থন ব্যক্তি করেছেন।[১৫] ২০১৩ সালে তিনি সাবেক শিল্পমন্ত্রী এসহাক জাহাঙ্গীরীকে তাঁর প্রথম উপরাষ্ট্রপতি পদে নিযুক্ত করেন।[১৬]
মহামান্য রাষ্ট্রপতি হুজ্জাতুল ইসলাম হাসান রুহানীحسن روحانی | |
---|---|
ইরানের ৭ম রাষ্ট্রপতি | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ৩ আগস্ট ২০১৩ | |
সর্বোচ্চ নেতা | আলী খামেনেয়ী |
উপরাষ্ট্রপতি | এসহাক জাহাঙ্গীরী |
পূর্বসূরী | মাহমুদ আহমাদিনেজাদ |
উত্তরসূরী | ইব্রাহিম রাইসি |
জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের মহাসচিব | |
কাজের মেয়াদ ৩ আগস্ট ২০১৩ – ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | |
পূর্বসূরী | মাহমুদ আহমাদিনেজাদ |
উত্তরসূরী | নিকোলাস মাদুরো |
ইরানের প্রধান পারমাণবিক সমঝোতাকারী | |
কাজের মেয়াদ ৬ অক্টোবর ২০০৩ – ১৫ আগস্ট ২০০৫ | |
রাষ্ট্রপতি | মোহাম্মদ খাতমী |
ডেপুটি | হোসেইন মুসাবিয়ান |
পূর্বসূরী | পদ প্রতিষ্ঠা |
উত্তরসূরী | আলী লারিজানী |
জাতীয় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পরিষদের সম্পাদক | |
কাজের মেয়াদ ১৪ অক্টোবর ১৯৮৯ – ১৫ আগস্ট ২০০৫ | |
রাষ্ট্রপতি | আকবর হাশেমী রফসঞ্জানী মোহাম্মদ খাতমী |
পূর্বসূরী | পদ প্রতিষ্ঠা |
উত্তরসূরী | আলী লারিজানী |
বিশেষজ্ঞ সভার সদস্য | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ | |
সংসদীয় এলাকা | তেহরন প্রদেশ |
সংখ্যাগরিষ্ঠ | ২,২৩৮,১৬৬ (৫৩.৫৬%) |
কাজের মেয়াদ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০০০ – ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ | |
সংসদীয় এলাকা | সেম্নন প্রদেশ |
সংসদের প্রথম ডেপুটি স্পিকার | |
কাজের মেয়াদ ২ জুন ১৯৯২ – ১৬ মে ২০০০ | |
পূর্বসূরী | হোসেইন হাশেমিয়ান |
উত্তরসূরী | বেহজাদ নববী |
ইসলামি পরামর্শদাতা সভার সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ২৮ মে ১৯৮৪ – ২৭ মে ২০০০ | |
সংসদীয় এলাকা | তেহরান, রে, শমিরানাত ও এসলামশহর |
সংখ্যাগরিষ্ঠ | ৭২৯,৯৬৫ (৫৮.৩%; ২য় মেয়াদ) |
কাজের মেয়াদ ২৮ মে ১৯৮০ – ২৭ মে ১৯৮৪ | |
সংসদীয় এলাকা | সেমনান |
সংখ্যাগরিষ্ঠ | ১৯,০১৭ (৬২.১%) |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | হাসান ফরিদুন ১২ নভেম্বর ১৯৪৮ সরখে, পহলবী ইরান |
রাজনৈতিক দল | মধ্যপন্থা ও উন্নয়ন দল (১৯৯৯–বর্তমান) |
অন্যান্য রাজনৈতিক দল | যুযুধান যাজক সংঘ (১৯৮৮–বর্তমান; ২০০৯ থেকে নিষ্ক্রিয়)[১] ইসলামি প্রজাতান্ত্রিক দল (১৯৭৯–১৯৮৭) |
দাম্পত্য সঙ্গী | সাহেবা আরাবী (১৯৬৮–বর্তমান) |
সন্তান | ৫ |
শিক্ষা | বিএ, এমফিল, পিএইচডি |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | কোম হওজা তেহরান বিশ্ববিদ্যালয় (বিএ) গ্লাসগো ক্যালেডোনিয়ান ইউনিভার্সিটি (এমফিল, পিএইচডি) |
স্বাক্ষর | |
ওয়েবসাইট | সরকারি ওয়েবসাইট ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট |
সামরিক পরিষেবা | |
আনুগত্য | ইরান |
কাজের মেয়াদ | ১৯৭১–১৯৭২ (বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা)[৫] ১৯৮৫–১৯৯১[৬] |
ইউনিট | নিশাপুরের সেপাহ দানেশ (১৯৭১–৭২)[৫] |
কমান্ড | বিমানবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ (১৯৮৫–৯১)[৬] ইরানি জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের সেকন্ড-ইন-কমান্ডের ডেপুটি (১৯৮৮–৮৯)[৬] |
যুদ্ধ | ইরান-ইরাক যুদ্ধ |
পুরস্কার | নসর পদক (১ম শ্রেণি)[২] ফতেহ পদক (২য় শ্রেণি)[৩][৪] |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
ধর্ম | ইসলাম |
আখ্যা | শিয়া |
ব্যবহারশাস্ত্র | জাফরি |
ধর্মীয় মতবিশ্বাস | ইসনা আশারিয়া |
পেশা | রাজনীতিবিদ, ফকীহ, মুজতাহিদ, অধ্যাপক, গবেষক, লেখক |
প্রতিষ্ঠান | সেমনান হওজা কোম হওজা |
মুসলিম নেতা | |
ভিত্তিক | কোম, ইরান |
কাজের মেয়াদ | ১৯৬১–১৯৬৯ |
পেশা | রাজনীতিবিদ, ফকীহ, মুজতাহিদ, অধ্যাপক, গবেষক, লেখক |
পদ | হুজ্জাতুল ইসলাম |
প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা
তরুণ বয়সে দেশের রাজনীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেছিলেন। ১৮ বছর বয়সে তরুণ ছাত্র রুহানি ইরাকি সীমান্ত গোপনে অতিক্রম করে এক বিপজ্জনক সফরে গিয়েছিলেন নির্বাসিত নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির সঙ্গে দেখা করতে। ১৯৭৯ সালের শেষদিকে খোমেনির নির্বাসনের শেষ দিনগুলোতে রুহানি তার সঙ্গে ফ্রান্সে ছিলেন।[১৭]
১৯৯৭ সালে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো ক্যালেডোনিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে সাংবিধানিক আইনের ওপর ডক্টরেট লাভ করতে রুহানি ‘দ্য ফ্লেক্সিবিলিটি অব শরিয়াহ ল (শরিয়া আইনের নমনীয়তা)’ নিয়ে থিসিস লিখেছিলেন।[১৮]
ফার্সি ভাষার পাশাপাশি ইংরেজি, জার্মান, ফরাসি, রুশ এবং আরবি এই পাঁচটি ভাষায় অনর্গল কথা বলায় পারদর্শী হাসান রুহানি।[১৯]
রাজনৈতিক জীবন
১৯৬৭ সালে এক ট্রেন যাত্রার সময় সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির সঙ্গে পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয় হাসান রুহানির। আলি আকবর হাশেমি রাফসানজানি এক বন্ধু ছিলেন রুহানির, যিনি পরবর্তীকালে প্রেসিডেন্ট হন। এদের সবার সমর্থন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হতে রুহানির ভাগ্যাকাশের নক্ষত্র হয়ে উঠেছে দ্রুত।[১৭]
৮০-র দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধবিষয়ক ডেপুটি লিডার ছিলেন তিনি। ২০ বছর পার্লামেন্ট সদস্য ছিলেন। ১৬ বছর ছিলেন দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদের দৈনন্দিন ব্যবস্থাপনার ইনচার্জ। তেহরানের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক রিসার্চের প্রধান ছিলেন, যে সংস্থার কাজ হাশেমি রাফসানজানি আর আয়াতুল্লাহ খামেনিকে পরামর্শ দেওয়া।[১৭]
সেন্ট্রিফিউজ পরিচালনা করা ভালো। তবে দেশ যাতে ভালোভাবে পরিচালিত হয় আর কলকারখানার চাকা ঘোরে, সেদিকে নজর রাখাও জরুরি
নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় রুহানির বক্তব্য [২০]
গ্যালারি
- তেহরানের পরমাণু আলোচনা। ২১শে অক্টোবর, ২০০৩-এ ইরানের তেহরানে ইরান-ইইউ তিনটি প্রথম সভা।
- ২০০৩-এ ইরানের বামে ভূমিকম্পের পরে রুহানি মার্কিন ক্ষেত্রের হাসপাতাল পরিদর্শন করছে।
- ভালিয়াস রাস্তার মধ্যে হাসান রুহানির সমর্থকদের সভা।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
- আল জাজিরা ইংরেজিতে হাসান রুহানি সংগৃহীত সংবাদ ও মন্তব্য।
- হাসান রুহানি দ্যা গার্ডিয়ান-এর সংবাদ ও ধারাভাষ্যের সংগ্রহশালা।
- গ্রন্থাগারে হাসান রুহানি সম্পর্কিত বা কর্তৃক কাজ (ওয়ার্ল্ডক্যাট ক্যাটালগ) (ইংরেজি), in Englsh
- Hassan Rowhani, Iran's moderate conservative behind nuclear breakthrough, 22 October 2003
- Power Play The Daily Beast – 16 February 2004
- Former chief nuclear negotiator – Hassan Rouhani – exposes new details on Iran’s nuclear policy, 9–16 May 2012
- Setting a legacy in Iranian politicsMWC News – 4 June 2013
- Early photos of Hassan Rouhani by Islamic Revolution Document Center
- The memoir of Dr Hassan Rouhani (table of contents and introduction, in Persian)