শাখারভ পুরস্কার

শাখারভ পুরস্কার বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী, ভিন্নমতাবলম্বী এবং সোভিয়েত হাইড্রোজেন বোমার জনক হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিত্ব আন্দ্রে শাখারভের সম্মানার্থে প্রবর্তিত পুরস্কার। পুরস্কারটির পুরো নাম হলো মুক্তচিন্তায় শাখারভ পুরস্কার

মুক্তচিন্তায় শাখারভ পুরস্কার
স্ত্রাসবুরে ইউরোপীয়ান পার্লামেন্টের অভ্যন্তরে ২০০৯ সালের পুরস্কার প্রদানের দৃশ্য
অবস্থানস্ত্রাসবুর
দেশফ্রান্স
পুরস্কারদাতাইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট
পুরস্কার€৫০,০০০[১]
প্রথম পুরস্কৃত১৯৮৮
সর্বশেষ পুরস্কৃত২০১৫
বর্তমানে আধৃতরউফ বাদাবি
ওয়েবসাইটWebsite

প্রেক্ষাপট

মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখতে এবং মুক্তচিন্তাকে প্রস্ফুটিত করতে যিনি বা যে সকল প্রতিষ্ঠান জীবন-সংগ্রাম করছে তাদেরকে সম্মানিত করতে এ পুরস্কার দেয়া হয়। মানব অধিকার ও স্বাধীনতা বিষয়ে আজীবন সোচ্চার ছিলেন আন্দ্রে শাখারভ। তাই তার নামকে চিরভাস্বর করে রাখতে জীবিতকালেই ১৯৮৫ সালের ডিসেম্বর মাসে ইউরোপীয় সংসদ বার্ষিক ভিত্তিতে শাখারভ পুরস্কার প্রবর্তনের ঘোষণা দেয়।[২] পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালের ডিসেম্বর থেকে সাংবাৎসরিকভাবে মানবাধিকার ও মুক্তচিন্তার মৌলিক বিকাশে অবদানের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থানরত ব্যক্তি কিংবা সংগঠনকে এ পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে।[৩]

মনোনয়ন

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক সম্পর্ক বিভাগ এবং উন্নয়ন বিভাগের সদস্যদের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত আকারে পুরস্কারের জন্য একাধিক ব্যক্তি বা সংস্থাকে প্রাথমিকভাবে মনোনীত করা হয়। প্রতি বছরের অক্টোবর মাসে পুরস্কার বিজয়ী ব্যক্তি বা সংস্থার নাম ঘোষণা করা হয়।[১] ২০১০ সাল পর্যন্ত পুরস্কারের মূল্যমান ৫০,০০০ ইউরো ধার্য করা হয়েছে।[১]

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানস্থল

নেলসন মান্ডেলা যৌথভাবে অভিষেক পুরস্কার অর্জন করেন।

শাখারভ পুরস্কার সচরাচর প্রতি বছর ১০ই ডিসেম্বর তারিখে নির্ধারিত ব্যক্তি বা সংস্থাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফ্রান্সের স্ত্রাসবুরে অবস্থিত ইউরোপীয় সংসদের অভ্যন্তরে প্রদান করা হয়। ১৯৪৮ সালের এই তারিখে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র অনুমোদিত হয় যা বিশ্বের সর্বত্র মানবাধিকার দিবস হিসেবে প্রতিপালিত হয়।

পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকা

১৯৮৮ সালে যৌথভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত জননেতা নেলসন মান্ডেলা এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের ভিন্নমতাবলম্বী আনাতোলী মার্চেঙ্কো-কে পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে শাখারভ পুরস্কারের সূচনা হয়। সর্বশেষ ২০১১ সালে আরব বিশ্বের আরব বসন্ত নামে খ্যাত গণআন্দোলনে অংশগ্রহণকারী - আসমা মাহফুজ, আহমেদ আল-সেনুস্সি, রজন জাইতোনেহ, আলী ফারজাত, মোহামেদ বুয়াজিজি-কে প্রদান করা হয়। এছাড়াও, ১৯৯২ সালে আর্জেন্টিনার মাদার্স অব দ্য প্লাসা দে মাইয়ো সংস্থাকে শাখারভ পুরস্কারের ইতিহাসে প্রথম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পুরস্কৃত করা হয়।

বছরগ্রহণকারী ব্যক্তি/সংস্থার নামজাতীয়তাবিবরণতথ্যসূত্র
১৯৮৮নেলসন ম্যান্ডেলাদক্ষিণ আফ্রিকাজাতিগত বিরোধী কর্মী এবং পরবর্তীতে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি[৪]
১৯৮৮আনাতোলী মার্চেঙ্কো (মরণোত্তর)সোভিয়েত ইউনিয়নসোভিয়েত ইউনিয়নের ভিন্নমতাবলম্বী, লেখক এবং মানবাধিকার কর্মী[৪]
১৯৮৯আলেকজান্ডার ডুবচেকচেকোস্লোভাকিয়াস্লোভাক রাজনীতিবিদ[৪]
১৯৯০অং সান সু কীমায়ানমার (সাবেক বার্মা)বিরোধী দলীয় নেত্রী। সাবেক এনএলডি মহাসচিব[৫]
১৯৯১আদেম ডিমাকিকসোভোরাজনীতিবিদ ও দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক বন্দী[৪]
১৯৯২মাদার্স অব দ্য প্লাসা দে মাইয়োআর্জেন্টিনাডার্টি ওয়ার (গেররা সুসিয়া)-তে নিহত শিশুর মায়েদের জন্য আর্জেন্টিনার সংগঠন[৫]
১৯৯৩অসলোবোডেনজেবসনিয়া এন্ড হার্জেগোভিনাজনপ্রিয় সংবাদপত্র। সারায়েভোতে কর্মরত অবস্থায় যার ভবন ধ্বংস হয়ে যায়।[৫]
১৯৯৪তসলিমা নাসরিনবাংলাদেশসাবেক ডাক্তার, নারীবাদী লেখক[৫]
১৯৯৫লেলা জানাতুরস্ককুর্দী বংশোদ্ভূত নারী রাজনীতিবিদ। ১০ বছর নিজ ভাষায় তুরস্কের সংসদে বক্তৃতা রেখেছিলেন।[৪]
১৯৯৬ওয়েই জিনশেংচীন গণপ্রজাতন্ত্রচীনের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মী[৫]
১৯৯৭সলিমা ঘেজালিআলজেরিয়াসাংবাদিক, লেখক, নারী আন্দোলনকারী, মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রে অংশগ্রহণ[৫]
১৯৯৮ইব্রাহীম রুগোভাকসোভোআলবেনিয়ার রাজনীতিবিদ। কসোভোর ১ম রাষ্ট্রপতি[৪]
১৯৯৯জানানা গুসমাওপূর্ব তিমুরসাবেক বিচ্ছিন্নতাবাদী, যিনি পূর্ব তিমুরের রাষ্ট্রপতি ছিলেন[৬]
২০০০বাস্তা ইয়াস্পেনসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থানরত বিভিন্ন রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তিকে একত্রিত করায় ব্যস্ত সংগঠন[৭]
২০০১নুরিত পেলেড-এলহানানইসরায়েলশান্তি কর্মী[৪]
২০০১ইজ্জাত ঘাজ্জাউইপ্যালেস্টাইনলেখক। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অপরাধে ইসরাইলী কর্তৃপক্ষের হাতে অনেকবার গ্রেফতার হন।[৪]
২০০১ডম জাকারিয়াজ ক্যামুইনহোঅ্যাঙ্গোলাআর্চবিশপ এবং শান্তি কর্মী[৪]
২০০২ওসোয়াল্ডো পায়াকিউবারাজনৈতিক কর্মী এবং ভিন্নমতাবলম্বী[৮]
২০০৩কফি আনান (এবং জাতিসংঘ)নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এবং জাতিসংঘের ৭ম জাতিসংঘের মহাসচিব[৪]
২০০৪বেলারুশিয়ান এসোসিয়েশন অব জার্নালিস্টস্‌বেলারুশবে-সরকারী সংগঠন হিসেবে কথা বলার স্বাধীনতা এবং তথ্য আদান-প্রদান ও পেশাদারী সাংবাদিকতার মানদণ্ডে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান[৯]
২০০৫লেডিস ইন হুয়াইটকিউবাবিরোধী আন্দোলন, কারাগারে আটক ভিন্নমতাবলম্বীদের সংগঠন[১০]
২০০৫রিপোর্টার্স উইদআউট বর্ডারস্‌ফ্রান্সভিত্তিক বে-সরকারী সংগঠন যারা প্রচার মাধ্যমের স্বাধীনতায় পরামর্শ প্রদান করে[১০]
২০০৫হাউয়া ইব্রাহীমনাইজেরিয়ামানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী[১০]
২০০৬আলেকজান্ডার মিলিনকাইভিচবেলারুশইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস অব বেলারুশ কর্তৃক রাজনীতিবিদ হিসেবে ২০০৬ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশগ্রহণ[১১]
২০০৭সালিহ মাহমৌদ উসমানসুদানমানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী[৫]
২০০৮হু জিয়াগণপ্রজাতন্ত্রী চীনমানবাধিকার কর্মী এবং ভিন্নমতাবলম্বী[১২]
২০০৯মেমোরিয়াল (সোসাইটি)রাশিয়াআন্তর্জাতিক পৌর অধিকার এবং ঐতিহাসিক সমিতি[১৩]
২০১০গুইলার্মো ফারিনাসকিউবাডাক্তার, সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী[১৪]
২০১১আসমা মাহফৌজ,
আহমেদ আল-সেনুস্সি,
রজন জাইতোনেহ,
আলী ফারজাত,
মোহামেদ বোয়াজিজি (মরণোত্তর)
মিশর
লিবিয়া
সিরিয়া
সিরিয়া
তিউনিসিয়া
আরব বিশ্বের পাঁচ প্রতিনিধি, যারা মুক্তি এবং মানবাধিকারের বিষয়ে সমর্থনের জন্য আন্দোলন করেন[১৫]
২০১২জাফর পানাহি
নাসরিন সতুদে
ইরানইরানি মানবাধিকার কর্মী। সোতুদেহ আইনজীবী ও পানাহি চলচ্চিত্র পরিচালক[১৬][১৭]
২০১৩মালালা ইউসুফজাইপাকিস্তাননারী অধিকার ও নারী শিক্ষা কর্মী[১৮]
২০১৪দ্যনিস মুকওয়েগেকঙ্গো প্রজাতন্ত্রগণধর্ষনের শিকার নারীকে গাইনোকোলজি চিকিৎসা প্রদান[১৯]
২০১৫রউফ বাবাদিসৌদি আরবসৌদি আরব লেখক ও কর্মী, সৌদি উদারপন্থীদের ফ্রি ওয়েবসাইট স্রষ্টা[২০]

তথ্যসূত্র

🔥 Top keywords: রাম নবমীমুজিবনগর দিবসপ্রধান পাতামুজিবনগর সরকারবিশেষ:অনুসন্ধানইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশবাংলা ভাষামিয়া খলিফারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)আনন্দবাজার পত্রিকাআবহাওয়ারামপহেলা বৈশাখউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগইসরায়েলইরানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরমুজিবনগরইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনরিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাব২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগক্লিওপেট্রাচর্যাপদভূমি পরিমাপশেখ মুজিবুর রহমানজনি সিন্সকাজী নজরুল ইসলামঈদুল আযহাফিলিস্তিনইউটিউবভারতবিকাশআসসালামু আলাইকুমসৌদি আরববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকামুহাম্মাদ