বিষয়বস্তুতে চলুন

ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো
২০২৩ সালে আল নাসরের সাথে রোনালদো
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামক্রিস্তিয়ানো রোনালদো দোস সান্তোস আভেইরো[১][২]
জন্ম (1985-02-05) ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫ (বয়স ৩৯)[১][৩][৪]
জন্ম স্থানফুঞ্চাল, মাদেইরা, পর্তুগাল[১]
উচ্চতা১.৮৭ মিটার (৬ ফুট + ইঞ্চি)[৫]
মাঠে অবস্থানআক্রমণভাগের খেলোয়াড়
ক্লাবের তথ্য
বর্তমান দল
আল নাসর
জার্সি নম্বর
যুব পর্যায়
১৯৯২–১৯৯৫আন্দোরিনিয়া
১৯৯৫–১৯৯৭নাসিওনাল
১৯৯৭–২০০২স্পোর্টিং সিপি
জ্যেষ্ঠ পর্যায়*
বছরদলম্যাচ(গোল)
২০০২–২০০৩স্পোর্টিং সিপি বি(০)
২০০২–২০০৩স্পোর্টিং সিপি৩১(৫)
২০০৩–২০০৯ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড২৯২(১১৮)
২০০৯–২০১৮রিয়াল মাদ্রিদ৪৩৮(৪৫০)
২০১৮–২০২১জুভেন্টাস১৩৪(১০১)
২০২১–২০২২ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড৫৪(২৭)
২০২৩–আল নাসর৩৯(৪০)
জাতীয় দল
২০০১পর্তুগাল অনূর্ধ্ব-১৫(৭)
২০০১ –২০০২পর্তুগাল অনূর্ধ্ব-১৭(৫)
২০০৩পর্তুগাল অনূর্ধ্ব-২০(১)
২০০২–২০০৩পর্তুগাল অনূর্ধ্ব-২১১০(৩)
২০০৪পর্তুগাল অনূর্ধ্ব-২৩(২)
২০০৩–পর্তুগাল২০৬(১২৮)
অর্জন ও সম্মাননা
ফুটবল (পুরুষ)
 পর্তুগাল-এর প্রতিনিধিত্বকারী
উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ
বিজয়ী২০১৬ ফ্রান্স
রানার-আপ২০০৪ পর্তুগাল
তৃতীয় স্থান২০১২ পোল্যান্ড-ইউক্রেন
উয়েফা নেশনস লিগ
বিজয়ী২০১৯ পর্তুগাল
ফিফা কনফেডারেশন্স কাপ
তৃতীয় স্থান২০১৭ রাশিয়া

স্বাক্ষর
ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর স্বাক্ষর
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ১২:১২, ৩০ মার্চ ২০২৪ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক।
‡ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা ১২:১২, ৩০ মার্চ ২০২৪ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সঠিক।

ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো দোস সান্তোস আভেইরো জিওআইএইচ কমএম (পর্তুগিজ: Cristiano Ronaldo, পর্তুগিজ উচ্চারণ: [kɾiʃˈtjɐnu ʁɔˈnaldu]; জন্ম: ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫; ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো নামে সুপরিচিত) হলেন একজন পর্তুগিজ পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়। তিনি বর্তমানে সৌদি আরবের পেশাদার ফুটবল লিগের শীর্ষ স্তর সৌদি পেশাদার লিগের ক্লাব আল নাসর এবং পর্তুগাল জাতীয় দলের হয়ে আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন।[৬][৭] তিনি মূলত কেন্দ্রীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেললেও মাঝেমধ্যে ডান পার্শ্বীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় অথবা বাম পার্শ্বীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় এবং সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে গণ্য রোনালদো পাঁচটি ব্যালন ডি’অর এবং চারটি ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট অর্জন করেছেন, যা কোন ইউরোপীয় খেলোয়াড় হিসেবে রেকর্ড সংখ্যক জয়। কর্মজীবনে তিনি ৩৪টি প্রধান সারির শিরোপা জয় করেছেন, তন্মধ্যে রয়েছে সাতটি লিগ শিরোপা, পাঁচটি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ, একটি উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ, এবং একটি উয়েফা নেশনস লিগ শিরোপা। রোনালদোর চ্যাম্পিয়নস লিগে সর্বাধিক ১৪০টি গোল এবং ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে সর্বাধিক ১২টি গোলের রেকর্ড রয়েছে। তিনি অল্পসংখ্যক খেলোয়াড়দের একজন যিনি ১,১৮১ টি পেশাদার খেলায় অংশগ্রহণ করেছেন এবং তার ক্লাব ও দেশের হয়ে ৮৫১ টি গোল করেছেন। তিনি ১০০টি আন্তর্জাতিক গোল করা দ্বিতীয় পুরুষ ফুটবলার এবং প্রথম ইউরোপীয়।

মাদেইরায় জন্মগ্রহণ করা ও বেড়ে ওঠা রোনালদো এডরিনহার হয়ে তার যুব ক্যারিয়ার শুরু করেন এবং ন্যাশিওনালে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সেখানে তিনি ২ বছর খেলেন। ১৯৯৭ সালে রোনালদো পর্তুগিজ ক্লাব স্পোর্টিং সিপিতে আসেন এবং সেখানে ২০০২ সালে তার প্রাপ্তবয়স্ক ক্লাব কর্মজীবন শুরু করেন। স্পোর্টিং সিপির হয়ে খেলার সময় রোনালদো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ম্যানেজার স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হন, যিনি তাকে ২০০৩ সালে £১২.২৪ মিলিয়নের (€১৫ মিলিয়ন) বিনিময়ে ইউনাইটেডে নিয়ে আসে। ২০০৪ সালে রোনালদো ইউনাইটেডের হয়ে প্রথম শিরোপা এফএ কাপ জেতেন এবং দলটিকে টানা তিনটি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা, একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জেতাতে সাহায্য করেন। ২৩ বছর বয়সে তিনি তার প্রথম ব্যালন ডি অর অর্জন করেন। রোনালদো ইংল্যান্ডে খেলা প্রথম খেলোয়াড় যিনি প্রধান ৪টি পিএফএ এবং এফডব্লিউএ পুরস্কার জিতেছেন, যা তিনি ২০০৭ সালে করেছেন। ২০০৮ সালে তিনি ৪টি প্রধান পিএফএ এবং এফডব্লিউএ ট্রফির মধ্যে ৩টি জেতেন এবং ফিফা ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার, ফিফপ্রো প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার, ওয়ার্ল্ড সকার প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার এবং ওনজে দ’অর অ্যাওয়ার্ড জেতেন।[৮][৯][১০] ২০০৭ ও ২০০৮ সালে রোনালদোকে এফডব্লিউএ প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। ২০০৯ সালে রিয়াল মাদ্রিদ তাকে £৮০ মিলিয়নের (€৯৪ মিলিয়ন/$১৩১.৬ মিলিয়ন) বিনিময়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে তাদের দলে নিয়ে আসে, যার ফলে রোনালদো সেইসময় ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে দামী খেলোয়াড়ের সম্মান পান। রোনালদো ২০০৯ সালে সেরা গোলের জন্য প্রথম পুস্কাস অ্যাওয়ার্ড জেতেন। তিনি ২০০৮ ও ২০১১ সালে ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু পুরস্কার লাভ করেন। মাদ্রিদে তিনি মোট ১৫টি শিরোপা জেতেন, তন্মধ্যে রয়েছে দুটি লা লিগা শিরোপা, দুটি কোপা দেল রে, ও চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা, এবং তিনি এই ক্লাবের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা। মাদ্রিদে যোগদানের পর তিনি বালোঁ দরের দৌড়ে তিনবার তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসির কাছে পরাজিত হয়ে রানার-আপ হন এবং ২০১৩-২০১৪ সালে টানা দুবার ও ২০১৬-২০১৭ সালে আবারও টানা দুবার ব্যালোন ডি'ওর অর্জন করেন। তিনিই একমাত্র পর্তুগিজ যিনি ৫ বার এই পুরস্কার জিতেছেন।[১১][১২] ২০১৮ সালের টানা তৃতীয় চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে তিনি প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ৫টি চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জয় করেন। ২০১৮ সালে তিনি প্রারম্ভিক €১১৭ মিলিয়নের (£৮৮ মিলিয়ন) ট্রান্সফার ফিতে ইয়ুভেন্তুসের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন, যা কোন ইতালীয় ক্লাবের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক এবং ত্রিশোর্ধ্ব কোন খেলোয়াড়ের জন্য সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক। ইয়ুভেন্তুসে তিনি প্রথম তিনি মৌসুমেই দুটি সেরিয়ে আ শিরোপা, দুটি সুপারকোপা ইতালিয়ানা, ও একটি কোপা ইতালিয়া জয় করেন।২০২১ সালে তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এ তিনি যোগ দেন।

রোনালদো শীর্ষ ইউরোপিয়ান লিগগুলোর মধ্যে প্রথম খেলোয়াড় যিনি পর পর দুই মৌসুমে ৪০ গোল করেছেন, রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে কম সময়ে ১০০ লিগ গোল করেছেন এবং তিনিই প্রথম খেলোয়াড় যিনি লা লিগায় প্রত্যেক দলের বিরুদ্ধে গোল করেছেন।[১৩] এছাড়াও তিনি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল ও লা লিগায় মিনিট প্রতি সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ডের অধিকারী। ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি তার ৩০০তম ক্লাব গোল পূর্ণ করেন।[১৪][১৫] ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি তার ক্যারিয়ারের ৪০০তম গোল করেন। এছাড়া তিনি ২০১৭ সালে ক্যারিয়ারের ৬০০ তম গোল করেন। রোনালদো বিশ্বের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১০০ গোল করার রেকর্ড গড়েন। তিনিই একমাত্র খেলোয়াড় যিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা ১১ ম্যাচে গোল করেন। এছাড়া তিনি এই আসরে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ১৫ গোলের রেকর্ড গড়েন এবং ২০১২ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন যা আরেকটি রেকর্ড।

রোনালদো পর্তুগাল জাতীয় দলের হয়ে খেলেন, যাদের হয়ে ২০০৩ সালের আগস্ট মাসে কাজাকিস্তানের বিরুদ্ধে তার অভিষেক ঘটে। তিনি জাতীয় দলের হয়ে ১০০ এর অধিক ম্যাচ খেলেছেন এবং তিনি পর্তুগালের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের অধিকারী। তিনি পর্তুগালের হয়ে প্রধান ৫টি টুর্নামেন্ট; ২০০৪ উয়েফা ইউরো, ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ, ২০০৮ উয়েফা ইউরো, ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপ এবং ২০১২ উয়েফা ইউরোতে অংশগ্রহণ করেছেন। ২০০৪ সালের উয়েফা ইউরোর প্রথম খেলায়, গ্রিসের বিরুদ্ধে তিনি তার প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করেন। ২০০৮ সালের জুলাই মাসে পর্তুগালের অধিনায়ক হন এবং ২০১২ সালের উয়েফা ইউরোতে অধিনায়ক হিসেবে দলকে সেমি-ফাইনালে নিয়ে যান এবং প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ গোল করেন।

রোনালদোর এক ম্যাচে ৪ বা এর বেশি গোল আছে ১১টি। এর মধ্যে ম্যাচে চার গোল ৯ বার, ৫ গোল দুবার। ৪ গোলের ম্যাচগুলো হচ্ছে যথাক্রমে সৌদি প্রো লিগে আল ওয়েহদা (২০২৩), ইউরো বাছাইয়ে লিথুয়ানিয়া (২০১৯), লা লিগায় জিরোনা (২০১৮), বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অ্যান্ডোরা (২০১৬), লা লিগায় সেল্তা ভিগো (২০১৬), চ্যাম্পিয়নস লিগে মালমো (২০১৫), লা লিগায় এলচে (২০১৪), সেভিয়া (২০১১) ও রেসিংয়ের (২০১০) বিপক্ষে। ম্যাচে ৫ গোল করেছেন দুবার। দুটিই লা লিগায় রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে। প্রথমটি ২০১৫ সালের মে মাসে গ্রানাদা, পরেরটি একই বছরের সেপ্টেম্বরে এসপানিওলের বিপক্ষে।

তিনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ঐতিহ্যবাহী ৭নং জার্সি পড়ে খেলতেন, যা পূর্বে জর্জ বেস্ট, এরিক কাঁতোয়াঁ এবং ডেভিড বেকহ্যামের মত তারকারা পড়তেন। রিয়াল মাদ্রিদে প্রথম বছর তিনি ৯ নং জার্সি নিয়ে খেলেন। রিয়াল মাদ্রিদ লিজেন্ড রাউলের ক্লাব ছাড়ার পর রোনালদো ৭ নং জার্সি লাভ করেন।

২০২৩ সালে তিনি সৌদি ক্লাব আল নাসরে যোগ দেন।

জীবনী

তিনি পর্তুগালের মাদেইরাতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জোসে দিনিস আভেইরো ও মা মারিয়া ডোলোরেস দস সান্তোস আভেইরো। বড় ভাই হুগো এবং বড় দুই বোন এলমা ও কাতিয়ার সাথে তিনি বেড়ে উঠেছেন। কাতিয়া পর্তুগালের একজন গায়িকা। মঞ্চে তিনি "পেনাল্ডো" নামে গান করেন। তার মার পরিবারের নাম দস্ সান্তোস এবং বাবার পরিবারের নাম আভেইরো।

রোনাল্ডো নামটি পর্তুগালে সচরাচর দেখা যায় না; তার বাবা-মা মার্কিন রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রেগানের সাথে মিলিয়ে এ নাম রাখেন।

প্রাথমিক ক্যারিয়ার

তিন বছর বয়স থেকে রোনালদো ফুটবলের সংস্পর্শে আসেন। তিনি ছয় বছর বয়স থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খেলতে শুরু করেন। কৈশোরে তার প্রিয় দল ছিল "বেনফিকা" যদিও তিনি তাদের প্রতিপক্ষ "স্পোর্টিং ক্লাবে দি পর্তুগালে" যোগদান করেন। তিনি মাত্র আট বছর বয়সে প্রথমে "আন্দোরিনহা" নামে একটি অপেশাদার দলে তার ক্রীড়াজীবন শুরু করেন, যেখানে তার বাবা কাজ করতেন। ১৯৯৫ সালে, দশ বছর বয়সের মধ্যেই পর্তুগালে তার সুনাম ছড়াতে থাকে। মাদিয়েরার শীর্ষ দুটি দল "সিএস মারিতিমো" ও "সিডি ন্যাশিওনাল" তাকে পেতে উম্মুখ ছিল। অপেক্ষাকৃত বড় দল মারিতিমো আন্দোরিনহার ব্যবস্থাপকের সাথে একটি মিটিং-এ অংশ নিতে পারেননি। ফলে সিডি ন্যাশিওনাল রোনালদোকে হস্তগত করে। ন্যাশিওনালের হয়ে সে মৌসুমে শিরোপা জেতার পর স্পোর্টিং দলের সাথে তিনি চুক্তিবদ্ধ হন।

স্পোর্টিং ক্লাবে দি পর্তুগাল

রোনালদো স্পোর্টিং এর অন্যান্য তরুণ খেলোয়াড়ের সাথে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দলে "ফুটবল কারখানা" হিসেবে পরিচিত আলকোচেতে। এখানে তিনি প্রথম-শ্রেণীর প্রশিক্ষণ পান। স্পোর্টিং বুঝতে পারে রোনালদোর আরো সমর্থন দরকার। তাই তারা রোনালদোর মাকে তার কাছে রাখার ব্যবস্থা নেয়। স্পোর্টিং-এর পক্ষে তার অভিষেক খেলায় তিনি দুই গোল করেন মোরেইরেন্সের বিপক্ষে। তিনি পর্তুগালের হয়ে উয়েফা অনূর্ধ্ব ১৭ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলেছেন।

উয়েফা অনূর্ধ্ব ১৭ চ্যাম্পিয়নশিপে তার কৃতিত্বের কারণে তিনি ফুটবল বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষনে সমর্থ হন। লিভারপুলের সাবেক ম্যানেজার জেরার্ড হুলিয়ার ১৬ বছর বয়সের রোনালদোর দিকে আকৃষ্ট হন। কিন্তু লিভারপুল তাকে দলে নিতে অস্বীকৃতি জানায় কারণ তিনি ছিলেন খুবই কম বয়সী ও শীর্ষ ফুটবলার হতে তার আরো সময় দরকার ছিল।[১৬] ২০০৩ সালের গ্রীষ্মে তিনি স্যার স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হন যখন লিসবনে স্তাদিও জোসে এলভালাদে স্টেডিয়াম উদ্বোধনের জন্য আয়োজিত খেলায় স্পোর্টিং ৩-১ গোলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে দেয়। রোনালদো দুই উইংয়েই খেলার দক্ষতা দেখান। এই খেলার পরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের খেলোয়াড়েরা তরুণ রোনালদোর প্রশংসা করেন ও বলেন ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে খেলার চেয়ে তাকে নিজেদের দলে খেলতে দেখতে চান।[১৬]

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

২০০৩–২০০৬

চেলসির বিরুদ্ধে খেলছেন রোনালদো, ২০০৬ সাল।

ডেভিড বেকহ্যাম রিয়াল মাদ্রিদে চলে যাওয়ার পর ফার্গুসন সিদ্ধান্ত নেন তিনি রোনালদকে দলে নেবেন। রোনালদো ১২.২৪ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগদান করেন।[১৭][১৮] রোনালদোকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ঐতিহ্যবাহী ৭নং জার্সি দেয়া হয়, যেটি পড়ে একসময় মাঠ কাঁপিয়েছেন জর্জ বেস্ট, ব্রায়ান রবসন, এরিক ক্যান্টোনাডেভিড বেকহ্যাম[১৯]

ওল্ড ট্রাফোর্ডে বোল্টন ওয়ান্ডারার্সের বিরুদ্ধে ৬০তম মিনিটের পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসেবে রোনালদোর ম্যানচেস্টারের পক্ষে অভিষেক হয়। তখন ইউনাইটেড ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল। তিনি একটি পেনাল্টি জিতেন, তবে রুড ভ্যান নিস্তেলরয় সেই পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন। তবে এ খেলার ফলাফলে সেটির কোন বিরুপ প্রতিক্রিয়া পড়েনি, ইউনাইটেড এতে ৪-০ গোলে জয়ী হয়। তিনি পোর্টসমাউথের বিপক্ষে ফ্রি-কিক থেকে ইউনাইটেডের হয়ে প্রথম গোল করেন যে খেলায় ইউনাইটেড ৩-০ গোলে জয়লাভ করে। রোনালদো ইউনাইটেডে তার প্রথম মৌসুম শেষ করেন মিলওয়ালির বিপক্ষে ২০০৪ এফএ কাপের ফাইনালে প্রথম গোল করার মাধ্যমে এবং ইউনাইটেড ৩-০ গোলে শিরোপা নিশ্চিত করে।[২০]

২৯ অক্টোবর ২০০৫ সালে রোনালদো প্রিমিয়ার লিগে ইউনাইটেডের ১০০০ তম গোল করেন যদিও মিডেলসবার্গের বিরুদ্ধে ওই খেলায় ইউনাইটেড ৪-১ গোলে পরাজয় বরণ করে।[২১] তিনি ২০০৫ সালে সকল প্রতিযোগিতায় ১০ গোল করেন এবং ভক্তরা তাকে ২০০৫ ফিফপ্রো স্পেশাল ইয়াং প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার অ্যাওয়ার্ডের জন্য নির্বাচিত করে।

১৪ জানুয়ারি ২০০৬ সালে সিটি অফ ম্যানচেস্টার স্টেডিয়ামে ম্যানচেস্টার ডার্বিতে (খেলায় ইউনাইটেড ৩-১ গোলে পরাজিত হয়) প্রাক্তন ইউনাইটেড খেলোয়াড় অ্যান্ড্রু কোলকে লাথি মারার জন্য লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন।[২২]

উইগান অ্যাথলেটিকের বিরুদ্ধে ২০০৫-০৬ মৌসুমের ফুটবল লিগ কাপের ফাইনাল ম্যাচে তিনি তিনি ৩য় গোলটি করে (ইউনাইটেড ৪-০ গোলে জয়লাভ করে) দলকে শিরোপা জেতাতে সাহায্য করেন যা ইংলিশ ফুটবলে তার ২য় শিরোপা ছিল।[২৩]

২০০৬–২০০৯

২০০৬-০৭ মৌসুমে রোনালদো

২০০৬-০৭ মৌসুম রোনালদোর জন্য অত্যন্ত সাফল্যমণ্ডিত বলে গণ্য করা হয়। এই মৌসুমে রোনালদো ২০এর অধিক গোল করেন যা ইউনাইটেডের প্রিমিয়ার লিগ জয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তার এই সাফল্যের অন্যতম কারণ ধরা হয় রেনে মিউলেনস্টিনের সাথে তার একান্ত প্রশিক্ষণ[২৪]

২০০৭ সালের জানুয়ারিতে রোনালদো পরপর দ্বিতীয় মাসের জন্য বার্কলে মাসের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত হন। প্রিমিয়ারশিপের ইতিহাসে এটি তৃতীয় ঘটনা। এর আগে আর্সেনালের ডেনিস বার্গক্যাম্প ১৯৯৭ ও রবি ফাউলার ১৯৯৬ সালে পরপর দুইমাস এ পুরস্কার জিতেছেন।[২৫][২৬] রোনালদো ইউনাইটেডের পক্ষে তার ৫০তম গোল করেন চির-প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে যেটি ৪ বছর পর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে লিগ শিরোপা জেতায়এবং তিনি বছরের শেষের দিকে টানা ২য় বারের মত ফিফপ্রো স্পেশাল ইয়াং প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার পুরস্কার জেতেন।

রিয়াল মাদ্রিদ ২০০৭ এর এপ্রিলে ৮০ মিলিয়ন ইউরোর (৫৪ মিলিয়ন পাউন্ড) বিনিময়ে রোনালদোকে কিনতে প্রস্তুত ছিল।[২৭] তবে ২০০৭ সালের মার্চ মাসের শুরুতে রোনালদো ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড নিশ্চিত করে যে তার বর্তমান চুক্তি নবায়নের জন্য আলোচনা শুরু করেছেন। ১৩ এপ্রিল ২০০৭ তারিখে রোনালদো প্রতি সপ্তাহে ১২০,০০০ পাউন্ডের বিনিময়ে ইউনাইটেডের সাথে পাঁচ বছর মেয়াদী চুক্তি করেন যা ইউনাইটেডের ইতিহাসে একটি রেকর্ড। [২৮] তিনি বলেন, "আমি দলে খুশি ও আমি ট্রফি জিততে চাই। আশাকরি এই মৌসুমেই আমরা সেটা করব।" [২৯]

রোনালদো এই মৌসুমে বেশ কয়েকটি ব্যক্তিগত পুরস্কার জেতেন যার পিএফএ প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার এবং পিএফএ ইয়াং প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার ছিল অন্যতম। অ্যান্ডি গ্রের পর তিনি একমাত্র ফুটবলার যিনি একই বছর এই দুই পুরস্কার লাভ করেছেন।[৩০] ওই বছরের ৩তয় পুরস্কার পিএফএ ফ্যানস্‌ প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার পুরস্কার জেতেন। তিনি ওই বছর এফডব্লিউ ফুটবলার অফ দ্যা ইয়ার পুরস্কার জেতেন যার ফলে তিনি প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে একই বছরে সকল প্রধান পিএফএ এবং এফডব্লিএ পুরস্কার জেতার কীর্তি অর্জন করেন। রোনালদো ২০০৬-০৭ মৌসুমের জন্য পিএফএ প্রিমিয়ার সেরা একাদশে অন্তর্ভুক্ত হন।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের একটি খেলার পূর্বে রোনালদো (বাম দিকে) এবং কার্লোস তেভেজ

২০০৭-০৮ মৌসুমের ২য় খেলায় পোর্টস্‌মাউথের খেলোয়াড় রিচার্ড হাজেসের মাথায় গুঁতো দেয়ার অভিযোগে তাকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠের বাইরে বের করে দেয়া হয় এবং পরবর্তীতে তাকে ৩ খেলার জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।[৩১] পরবর্তীতে রোনালদো বলেন তিনি এই ঘটনা থেকে অনেক শিক্ষা পেয়েছেন এবং অঙ্গীকার করেন যে ভবিষ্যতে কখনো খেলোয়াড়দের প্ররোচিত করবেন না।[৩২] চ্যাম্পিয়ন্স লিগে স্পোর্টিং লিসবনের বিরুদ্ধে খেলার প্রথম লেগে তার একমাত্র গোলে ইউনাইটেড জয়লাভ করে। ২য় লেগে ঘরের মাঠে ইনজুরি টাইমে তার গোলে ইউনাইটেড গ্রুপ পর্বে তাদের শীর্ষস্থান নিশ্চিত করে।[৩৩]

২০০৭ সালে বালোঁ দ’অরে তিনি ২য় স্থান ও ফিফা ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ারে তৃতীয় স্থান লাভ করেন।[৩৪][৩৫]

১২ জানুয়ারি ২০০৮ সালে, রোনালদো ইউনাইটেডের হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিক করেন নিউক্যাসেল ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে যা ইউনাইটেডকে প্রিমিয়ার লিগ পয়েন্টতালিকায় শীর্ষে তুলে আনে।[৩৬] রিডিং এর বিরুদ্ধে খেলায় তিনি ২৩ তম প্রিমিয়ার লিগ গোল করেন যা ২০০৬-০৭ মৌসুমে করা গোলের সমান ছিল।[৩৭] ২০ ফেব্রুয়ারিতে অলিম্পিক লিওর বিরুদ্ধে একজন অসনাক্ত লিও সমর্থক রোনালদো এবং ন্যানির চোখে লেজার মারে যা নিয়ে উয়েফা পরে তদন্ত করে।[৩৮] এই ঘটনার জন্য লিওকে ১ মাস পর ৫,০০০ ফ্রাঙ্ক (£২,৪২৭) জরিমানা করা হয়।[৩৯]

১৯ মার্চ ২০০৮ সালে, রোনালদো বোল্টনের বিরুদ্ধে প্রথম বারের মত ইউনাইটেডের অধিনায়কত্ব পালন করেন। ওই খেলায় তার জোড়া গোলের সুবাদে ইউনাইটেড ২-০ গোলে জয়লাভ করে।[৪০] ওই খেলার দ্বিতীয় গোলটি মৌসুমে তার ৩৩ তম গোল ছিল, যার মাধ্যমে তিনি ইউনাইটেডের পক্ষে ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে জর্জ বেস্টের এক মৌসুমে করা ৩২ গোলের রেকর্ড ভেঙ্গে দেন।[৪১] ২৯ মার্চ রোনালদো অ্যাস্টোন ভিলার বিরুদ্ধে আবারও জোড়া গোল করেন যা মৌসুমে তার গোলসংখ্যা ৩৫এ উন্নীত করে। রোনালদো তার টানা গোল করার পুরস্কার পান প্রথম উইঙ্গার হিসেবে ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু অ্যাওয়ার্ড লাভের মাধ্যমে।[৪২]

রোনালদো জর্জ বেস্টডেনিশ লয়ের তুলনায় ভাল খেলোয়াড় যারা ইউনাইটেডের ইতিহাসে অত্যন্ত দুর্দান্ত ২ জন খেলোয়াড় ছিলেন।

— ২৩ বছর বয়সী রোনালদো সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিন বারের বালোঁ দ’অর বিজয়ী জোহান ক্রুইফের উক্তি, এপ্রিল ২০০৮।[৪৩]

২১ মে ২০০৮ সালে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে প্রিমিয়ার লিগ প্রতিদ্বন্দ্বী চেলসির বিরুদ্ধে ২৬ মিনিটে ইউনাইটেডের প্রথম গোল করেন যদিও চেলসি খেলার ৪৫ মিনিটে সমতাসূচক গোল করে। অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত খেলা ১-১ গোলে অমীমাংসিত থাকে যার ফলে তা টাইব্রেকারে গড়ায়। পেনাল্টি শুটআউটে রোনালদো গোল করতে ব্যর্থ হন, যদিও জন টেরি বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হন যার ফলে ইউনাইটেড সাডেন ডেথে ৬-৫ গোলে বিজয়ী হয়। রোনালদো ভক্তদের ভোটে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন,[৪৪] এবং ৪২ গোল করার মাধ্যমে ওই মৌসুম শেষ করেন। ওই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তিনি সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে উয়েফা সেরা ফরওয়ার্ড এবং উয়েফা টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন।

আলবার্ট রিয়েরার বিপক্ষে রোনালদো, লিভারপুলের বিরুদ্ধে খেলায়।

৫ জুন ২০০৮ সালে স্কাই স্পোর্টস খবর প্রকাশ করে রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদে যেতে ইচ্ছুক, যদি তারা তাকে সেই পরিমাণ অর্থ প্রস্তাব করে যা তাকে বছরের শুরুতে করা হয়েছিল। [৪৫] ৯ জুন ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ মাদ্রিদের বিপক্ষে রোনালদোকে দলে নেয়ার তথাকথিত তৎপরতার ব্যপারে ফিফার কাছে অভিযোগ দাখিল করে, যদিও ফিফা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়।[৪৬][৪৭] তার ট্রান্সফারের পক্ষে জল্পনা-কল্পনা ৬ আগস্ট পর্যন্ত চলতে থাকে যখন রোনালদো নিশ্চিত করেন যে তিনি আর কমপক্ষে একবছর ওল্ড ট্রাফোর্ডে থাকবেন।[৪৮]

৭ই জুলাই গোড়ালিতে চোটের কারণে আমস্টারডামে তার অস্ত্রোপচার করা হয়।[৪৯] অস্ত্রোপচারের পর, ১৭ সেপ্টেম্বর ভিলারিয়ালের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেলায় পার্ক জি সুং বদলি হিসেবে তিনি পুনরায় মাঠে নামেন[৫০] এবং ২৪ সেপ্টেম্বর লিগ কাপের ৩য় রাউন্ডে মিডেলস্বার্গের বিরুদ্ধে ৩-১ গোলে জয়ের খেলায় তিনি মৌসুমের তার প্রথম গোল করেন।

১৫ নভেম্বর স্টোক সিটির বিরুদ্ধে ৫-০ গোলে জয়ের খেলায় রোনালদো ইউনাইটেডের হয়ে সকল প্রতিযোগিতায় ১০০ ও ১০১ তম গোল করেন, যার দুইটিই আবার ছিল ফ্রি-কিক থেকে।[৫১] এই গোলের মাধ্যমে রোনালদো প্রিমিয়ার ১৯ দলের সবার বিপক্ষে গোল করার কৃতিত্ব অর্জন করেন।[৫২] ২ ডিসেম্বরে, রোনালদো ১৯৬৮ সালে জর্জ বেস্টের প্রথম ইউনাইটেড খেলোয়াড় হিসেবে বালোঁ দ’অর জেতেন। এতে তিনি ৪৪৬ পয়েন্ট পান যা রানার-আপ মেসির চেয়ে ১৬৫ পয়েন্ট বেশি ছিল।[৫৩] ১৯ ডিসেম্বর ইউনাইটেড ২০০৮ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জেতার পর রোনালদো সিলভার বল পুরস্কার পান।[৫৪]

৮ জানুয়ারি ২০০৯ সালে, রোনালদো ম্যানচেস্টার এয়ারপোর্টের কাছে একটি রাস্তায় কার দুর্ঘটনায় অক্ষত থাকেন, যাতে তার ফেরারি দুমড়েমুচড়ে যায়।[৫৫] এই ঘটনার চার দিন পরে রোনালদো প্রথম প্রিমিয়ার লিগ খেলোয়াড় হিসেবে এবং লুইজ ফিগোর পর প্রথম পর্তুগিজ হিসেবে ফিফা ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার পুরস্কার জেতেন।[৫৬]

রোনালদো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মৌসুমে তার প্রথম ও চেলসির বিরুদ্ধে ফাইনালের পর তার প্রথম গোল করেন ইন্টার মিলানের বিরুদ্ধে ১১ মার্চ ২০০৯ সালে। খেলায় ইউনাইটেড ২-০ গোলে জয়লাভ করে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছায়।[৫৭] পোর্তোর বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালের ২য় লেগের ম্যাচে ৪০ গজ দূর থেকে আকর্ষণীয় জয়সূচক গোল করেন যা ইউনাইটেডকে সেমিফাইনালে নিয়ে যায়। বছরের সেরা গোল হিসেবে, ওই গোলের জন্য তিনি ২০০৯ সালে সদ্য চালুকৃত ফিফা পুস্কাস অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।[৫৮] পরে তিনি ওই গোলটিকে তার করা সেরা গোল হিসেবে অভিহিত করেন।[৫৯][৬০] রোনালদো ইউনাইটেডের হয়ে ২য় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল খেলেন ২০০৯ সালে যদিও ইউনাইটেড ফাইনালটি ২-০ গোলে হেরে যায়। ওই মৌসুমে তিনি ইউনাইটেডের হয়ে ৫৩ খেলায় মাঠে নামেন যা এর আগের মৌসুমের চেয়ে ৪টি বেশি ছিল, এতে তিনি ২৬ টি গোল করেন যা তার ক্যারিয়ার সেরা ৪২টি গোলের চেয়ে ১৬ গোল কম ছিল।

১১ জুন ইউনাইটেড, রোনালদোর ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছাজ্ঞাপনের পর রিয়াল মাদ্রিদ হতে শর্তবিহীন £৮০ মিলিয়ন এর প্রস্তাব গ্রহণ করে।[৬১] গ্লেজার পরিবারের (ইউনাইটেডের মালিকপক্ষ) প্রতিনিধি এটা নিশ্চিত করে যে এটা ইউনাইটেড ম্যানেজার ফার্গুসনের সম্মতিতেই করা হয়েছে।[৬২] যখন রিয়াল মাদ্রিদে রোনালদোর ট্রান্সফার নিশ্চিত হয় তখন রোনালদো,তাকে একজন খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ফার্গুসনকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, "ক্রীড়াক্ষেত্রে তিনি আমার পিতা, এবং আমার ক্যারিয়ারে একজন অন্যতম প্রধান ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।"[৬৩]

রিয়াল মাদ্রিদ

২০০৯-১০ মৌসুম

তার ব্যাপারে আমার প্রশংসা করা ছাড়া আর কিছু বলার নেই। খুব সহজেই এটা বলে দেয়া যায় যে সে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়। গোলমুখে তার অবদান বিস্ময়কর। তার পরিসংখ্যান অবিশ্বাস্য। তার গোলবারে বল মারা, গোলের সুযোগ সৃষ্টি করা, প্রতিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে হামলা করা, হেড দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে যা আপনাকে অভিভূত করে তুলবে।

স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন, রোনালদোর রিয়াল মাদ্রিদে চলে যাওয়ার পর।[৬৪]

২৬ জুন ২০০৯ সালে রিয়াল মাদ্রিদ নিশ্চিত করে যে রোনালদো পহেলা জুলাই ২০০৯ সাল থেকে তাদের দলে যোগ দেবে। তার ট্রান্সফার ফি ছিল £৮০ মিলিয়ন (€৯৪ মিলিয়ন) যা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে দামী খেলোয়াড় করে তোলে।[৬৫] রিয়াল মাদ্রিদের সাথে তার চুক্তির মেয়াদ ছিল ৬ বছর।[৬৬] চুক্তি অনুসারে তিনি প্রতি বছর €১১ মিলিয়ন বেতন পেতেন।[৬৭] তার বাইআউট ক্লসের মূল্য €১ বিলিয়ন।[৬৮] ৬ জুলাই রোনালদোকে রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্ব মিডিয়ার সামনে হাজির করা হয়,[৬৯] যেখানে তাকে ৯ নং জার্সি দেয়া হয়।[৭০] তাকে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি প্রদান করেন আলফ্রেদো দি স্তেফানো[৭১] রোনালদোকে রিয়াল মাদ্রিদে স্বাগত জানানোর জন্য ৮০,০০০ থেকে ৮৫,০০০ দর্শক স্যান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে জড় হয়, যা দিয়াগো মারাদোনার ৭৫,০০০ দর্শকের রেকর্ড যা ১৯৮৪ সালে বার্সেলোনা থেকে নাপোলিতে আসার পর হয়েছিল তা ভঙ্গ হয়।[৭২][৭৩] এই অনুষ্ঠানটি বিভিন্ন স্পেনীয় ও পর্তুগিজ টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।[৭৪][৭৫]

রোনালদো ও রিয়াল মাদ্রিদ যথাক্রমে দিয়াগো ফোরলান ও নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে

২১ জুলাই সামরক রোভার্সের বিরুদ্ধে ১-০ গোলে জয়লাভের খেলায় রোনালদোর রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে অভিষেক ঘটে। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তিনি তার প্রথম গোল করেন ১ সপ্তাহ পর পেনাল্টি কিক থেকে যেই খেলায় মাদ্রিদ ৪-২ গোলে এলডিইউ কুইটোকে পরাজিত করে।[৭৬] ২৯শে আগস্ট, রোনালদো লা লিগায় অভিষেক খেলায় পেনাল্টি থেকে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন এবং মাদ্রিদ ঘরের মাঠে ওই খেলায় দেপর্তিভো লা করুণাকে ৩-২ গোলে পরাজিত করে।[৭৭] ১৫ই সেপ্টেম্বর, রোনালদো এফসি জুরিখের বিরুদ্ধে দুইটি গোল করেন যার দুইটিই ছিল আবার ফ্রি-কিক থেকে; জুরিখের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ওই খেলায় রিয়াল ৫-২ গোলের বিশাল ব্যবধানে জুরিখকে পরাজিত করে।[৭৮] ২৩ সেপ্টেম্বর ভিলারিয়ালের বিপক্ষে গোল করেন এবং লা লিগার ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে প্রথম চার খেলার চারটিতেই গোল করার রেকর্ড করেন।[৭৯]

১০ই অক্টোবর, পর্তুগালের হয়ে খেলার সময় রোনালদো গোড়ালির ইনজুরিতে পড়েন যা তাকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত মাঠ বাইরে ছিটকে দেয়। এর ফলে তিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এসি মিলানের বিপক্ষে দুইটি ম্যাচ খেলতে পারেননি। ইনজুরি থেকে তার ফিরে আসার পর প্রথম খেলায়, রিয়াল বার্সেলোনার বিরুদ্ধে এল ক্লাসিকোতে ১-০ গোলে পরাজিত হয়। ৬ ডিসেম্বর, তিনি রিয়ালের হয়ে আলমেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। রিয়ালের ৪-২ গোলে জয়লাভের ওই খেলায় তিনি একটি পেনাল্টিও মিস করেন। তিনি প্রথম হলুদ কার্ডটি দেখেন গোল উৎযাপনের জন্য জার্সি খোলার দায়ে এবং এর ৩ মিনিট পর প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় কে লাথি দেয়ার জন্য তাকে ২য় হলুদ কার্ড দেখিয়ে মাঠের বাইরে বের করে দেয়া হয়।[৮০]

রোনালদো ২০০৯ ফিফা বিশ্বসেরা খেলোয়াড়ের তালিকায় ও ২০০৯ বালোঁ দ’অরে ২য় স্থান অধিকার করেন। ৫ মে ২০১০ সালে রোনালদো রিয়ালের হয়ে প্রথম হ্যাট্রিক করেন। রোনালদো এবং গঞ্জালো হিগুইন ওই মৌসুমে মিলিতভাবে ৫৩ লিগ গোল করেন যা তাদেরকে রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল করা যুগল বানায়।[৮১]

২০১০-১১ মৌসুম

রাউলের ২০১০ সালে ক্লাব ছাড়ার পর রোনালদোকে ক্লাবের ৭নং জার্সি প্রদান করা হয়।[৮২] ২৩শে অক্টোবর, রোনালদো রেসিং দে সান্তাদের এর বিপক্ষে ৪ গোল করেন,[৮৩] যা এক খেলায় তার সর্বোচ্চ গোল।[৮৪] এর ফলে তিনি টানা ৬ খেলায় (লা লিগায় তিনটি, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১টি, এবং পর্তুগালের হয়ে ২টি) ১১ গোল করেন যা এক মাসে তার সর্বোচ্চ। বার্সেলোনার বিরুদ্ধে ন্যু ক্যাম্পে ৫-০ গোলে পরাজিত হওয়ার আগের খেলায়, রোনালদো অ্যাতলেতিকো বিলবাওয়ের বিরুদ্ধে লা লিগায় তার ২য় হ্যাট্রিক করেন।[৮৫] ২০১০ সালের শেষ খেলায় কোপা দেল রেতে লেভান্তের বিরুদ্ধে, রিয়ালের ৮-০ গোলে জয়লাভের খেলায় রোনালদো আবারো হ্যাট্রিক করেন।[৮৬]

পেনারোলের বিরুদ্ধে প্রাকমৌসুম প্রীতি খেলায় রোনালদো

রোনালদো ২০১১ সাল খুব প্রতিশ্রুতিময় ভাবে শুরু করেন, বিশেষ করে তিনি রিয়াল মাদ্রিদের কয়েকটি রেকর্ড ভঙ্গ করেন যা পূর্বে আলফ্রেদো দি স্তেফানো, হুগো সানচেজ এবং ম্যানুয়েল আলদায়ের মত গ্রেট খেলোয়াড়দের অধিকারে ছিল।[৮৭][৮৮] গেতাফের বিরুদ্ধে রিয়ালের ৩-২ গোলে জয়লাভের খেলায় গুরুত্বপূর্ণ জোড়া গোল করে তিনি তার এই গোলবন্যা শুরু করেন।[৮৯] ৯ জানুয়ারি, তিনি ভিলারিয়ালের বিপক্ষে হ্যাট্রিক এবং সদ্য ইনজুরি ফেরত কাকা কে একটি একটি গোলে সহায়তা করার মাধ্যমে তিনি তার ভাল খেলার ধারা অব্যাহত রাখেন। ৩ মার্চ ২০১১ সালে, রিয়ালের মালাগাকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয়ার খেলায় রোনালদো হ্যাট্রিক করেন। যদিও খেলার শেষে তিনি মাসল ইনজুরিতে পড়েন যা তাকে ১০ দিন দলের বাইরে রাখে।

রোনালদো তার ভবিষৎ ক্লাবসঙ্গী টটেমহামের গ্যারেথ বেলের বিরুদ্ধে, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে.

এপ্রিল মাসে তিনি খুব ভালভাবে দলে প্রত্যাবর্তন করেন, টানা তিন খেলায় গোল করার মাধ্যমে (চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে টটেনহাম হটস্পারের বিরুদ্ধে ২ গোল সহ)।

বার্সেলোনার বিরুদ্ধে লা লিগার খেলায় রোনালদো পেনাল্টি কিক হতে গোল করেন এবং মৌসুমে তার গোলসংখ্যা ৪১ এ নিয়ে যান। ২০শে এপ্রিল, রোনালদো বার্সেলোনার বিরুদ্ধে ২০১১ কোপা দেল রের ফাইনালে ১০৩ মিনিটে জয়সূচক গোল করেন।[৯০] এই গোল পরবর্তীকালে বিভিন্ন দর্শক জরিপে রোনালদো ও রিয়াল মাদ্রিদের মৌসুমের সেরা গোল হিসেবে নির্বাচিত হয় যার মধ্যে মার্কা[৯১] ও রিয়াল মাদ্রিদের ওয়েবসাইট ছিল উল্লেখযোগ্য।[৯২] ৭ মে সেভিয়ার মাঠে রিয়ালের ৬-২ গোলে জয়লাভের খেলায় রোনালদো পুনরায় ৪ গোল করেন যার ফলে মৌসুমে তার গোলসংখ্যা দাড়ায় নিজের সর্বোচ্চ ৪৬ গোলে (এর আগে তিনি ইউনাইটেডের হয়ে এক মৌসুমে ৪২ গোল করেন)।[৯৩] এর তিনদিন পরে, গেতাফের বিরুদ্ধে একটি হ্যাট্রিকের মাধ্যমে তিনি তার গোলসংখ্যা ৪৯ গোলে উন্নীত করেন। ১৫ই মে ভিলারিয়ালের সাথে ৩-১ গোলে জয়লাভের খেলায় রোনালদো ফ্রি-কিক থেকে ২ গোল করেন। এর ফলে তিনি লা লিগায় ১ মৌসুমে টেলমো জারা ও হুগো সানচেসের ৩৮ গোলের রেকর্ডে ভাগ বসান।

২১শে মে, আলমেরিয়ার বিরুদ্ধে শেষ লিগ ম্যাচে তিনি জোড়া গোল করেন এর ফলে লা লিগার ইতিহাসে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ১ মৌসুমে ৪০ গোল করার কৃতিত্ব অর্জন করেন। এর ফলে তিনি পুনরায় ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু অ্যাওয়ার্ড জেতেন। তিনিই প্রথম খেলোয়াড় যিনি ২ টি ভিন্ন লিগে খেলে এই পুরস্কার ২ বার পান। তিনি এই মৌসুমে ৪০ গোল করার মাধ্যমে মার্কা কর্তৃক পিচিচি ট্রফি পান।[৯৪] রোনালদো প্রতি ৭০.৭ মিনিটে গোল করার মাধ্যমে জারার রেকর্ড ভাঙেন। এর ফলে তিনি স্পোর্টস ইলাস্ট্রেডের বিশ্ব একাদশে স্থান পান,[৯৫] যারা তাকে বিশ্বের সেরা ফুটবলার হিসেবে অভিহিত করে।

রোনালদো রিয়ালের হয়ে তার ২য় মৌসুমে ক্লাবের হয়ে প্রথম ট্রফি কোপা দেল রে জেতেন এবং ৫৩ টি গোল করেন যার মধ্যে ২৫টি করেন ডান পা থেকে (ফ্রি-কিক ও পেনাল্টি কিক থেকে গোল ব্যতীত) ও ৯টি বাম পা থেকে।[৯৬]

২০১১-১২ মৌসুম

রিয়াল মাদ্রিদ তাদের প্রাকমৌসুম সফর শুরু করে মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) দল এলএ গ্যালাক্সির বিরুদ্ধে ৪-১ গোলে জয়লাভের মাধ্যমে,[৯৭] যে খেলায় জোসে ক্যালেহোন, জোসেলু, রোনালদো, এবং বেনজামা প্রত্যেকে ১টি করে গোল করেন।[৯৮] এর চার দিন পরে রোনালদো মেক্সিকান ক্লাব গুয়াদালাহারার বিরুদ্ধে খেলার দ্বিতীয়ার্ধে হ্যাট্রিক করেন এবং রিয়াল খেলায় ৩-০ গোলে জয়ী হয়। রোনালদোর প্রাকমৌসুমে এহেন পারফর্মেন্স বিশ্ব মিডিয়ায় খুবই প্রশংসিত হয় যারা প্রীতি ম্যাচগুলোতেও রোনালদোর চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রেষণার প্রশংসা করে। ১৭ আগস্ট ২০১১ সালে, রোনালদো বার্সেলোনার বিরুদ্ধে ২০১১ স্প্যানিশ সুপার কাপের ২য় লেগের প্রথমার্ধে সমতাসূচক গোলটি করেন। ২৭ আগস্ট ২০১১ সালে, ২০১১-১২ মৌসুমের লা লিগার প্রথম খেলায় রিয়াল জারাগোজার বিরুদ্ধে হ্যাট্রিক করেন এবং দলের ৬-০ গোলে জয়ে বড় ভুমিকা রাখেন।

২৪শে সেপ্টেম্বর, রোনালদো রায়ো ভায়াকানোর বিরুদ্ধে ৬-২ গোলে জয়লাভের খেলায় রোনালদো হ্যাট্রিক (পেনাল্টি থেকে ২ গোল সহ) করেন। এটি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে রোনালদোর দশম হ্যাট্রিক লা লিগায় তার নবম হ্যাট্রিক ছিল।

২০১১-১২ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অ্যাজাক্সের বিরুদ্ধে খেলায় রোনালদো

২৭শে সেপ্টেম্বর, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে অ্যাজাক্সের বিরুদ্ধে ৩-০ গোলে জয়লাভের খেলায় রোনালদো প্রথম গোলটি করেন। ২২শে অক্টোবর, রোনালদো পূর্ববর্তী তিনটি খেলায় গোলশূন্য থাকার পর, মালাগার বিরুদ্ধে লা লিগায় নিজের ১০ম ও রিয়ালের হয়ে ১১তম হ্যাট্রিক করেন এবং রিয়াল ম্যাচটি ৪-০ গোলে জিতে। ৬ নভেম্বর রোনালদো ওসাসুনার বিরুদ্ধে নিজের ১২তম হ্যাট্রিক করেন যা রিয়ালের লা লিগায় প্রথম স্থান নিশ্চিত করে।[৯৯]

১৯ নভেম্বর ২০১১ সালে, রোনালদো ভালেনসিয়ার বিরুদ্ধে ২-৩ গোলে হেরে যাওয়ার খেলায় রোনালদো ২য় গোল করেন। ২৬শে নভেম্বর ২০১১ সালে, রোনালদো অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের বিরুদ্ধে ৪-১ গোলে জয়লাভের খেলায় পেনাল্টি থেকে ২ গোল করেন। ৩ ডিসেম্বর ২০১১ সালে, স্পোর্টিং দে গিজনের বিরুদ্ধে ৩-০ গোলে জয়ের খেলায় ২য় গোল করেন। রোনালদো ২০১১ ফিফা বালো দি’অরে তিনজন ফাইনালিস্টের মধ্যে একজন ছিলেন। ১৩ ডিসেম্বর ২০১১ সালে, রোনালদো পোনফেরদেনিয়ার বিরুদ্ধে কোপা দেল রের খেলার প্রথম লেগে ২য় গোলটি করেন যা রিয়াল ২-০ গোলে জেতে। রোনালদো সেভিয়ার বিরুদ্ধে লা লিগায় তার ১২তম ও সবমিলিয়ে ১৩তম হ্যাট্রিক করেন।

রোনালদো ২০১০-১১ মৌসুমে উয়েফা ইউরোপের সেরা খেলোয়াড় অ্যাওয়ার্ডে লিওনেল মেসি এবং জাভির পিছনে থেকে তৃতীয়, এবং ২০১১ ফিফা বালোঁ দি’অরে মেসির পিছনে থেকে ২য় হন। গ্রানাডার সাথে রিয়ালের পরের খেলায় যাতে রিয়াল ৫-১ গোলে জয়লাভ করে, রোনালদো ৫ম গোলটি করেন। ২২ জানুয়ারি ২০১২ সালে, অ্যাতলেতিকো বিলবাওএর সাথে ৪-১ গোলে জয়লাভের খেলায় ২টি পেনাল্টি থেকে গোল করেন এবং ২৮শে জানুয়ারি জারাগোজার বিরুদ্ধে ৩-১ গোলে জয়লাভের খেলায় শেষ ও জয়সূচক গোলটি করেন। রোনালদো বার্সেলোনার বিরুদ্ধে ২০১১-১২ কোপা দেল রের কোয়ার্টার ফাইনালে জোড়া গোল করেন, যদিও রোনালদো ২ লেগ মিলিয়ে ৪-৩ গোলে হেরে যায়। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১২ সালে, রোনালদোর লা লিগায় ১৩ তম ও সবমিলিয়ে ১৪ তম হ্যাট্রিকের ফলে রিয়াল ঘরের মাঠে লেভান্তেকে ৪-২ গোলে পরাজিত করে। এই জয়ের ফলে রোনালদো ২য় স্থানে থাকা বার্সেলোনার সাথে পয়েন্ট ব্যবধান ১০এ নিয়ে যায়।

২৪ মার্চ ২০১২ সালে, রোনালদো রিয়াল সোসিয়াদাদের বিরুদ্ধে ২ গোল করার মাধ্যমে মাত্র ৩ মৌসুমে ৯২ খেলায় ১০০তম লা লিগা গোল করেন যা লা লিগার ইতিহাসে ছিল ২য় দ্রুততম এবং রিয়াল ইতিহাসে দ্রুততম। [১০০] ২০১২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত রোনালদো প্রতি লা লিগা খেলায় গড়ে ১.০১ গোল করেন।

১১ই এপ্রিল, রোনালদো নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের সাথে ৪-১ গোলে জয়লাভের খেলায় হ্যাট্রিক ও শেষ গোলে সহায়তা করেন। এর ফলে লা লিগায় তার গোলসংখ্যা দাড়ায় ৪০ এ যা একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে যেকোন প্রধান ইউরোপিয়ান লিগে টানা ২ মৌসুমে ৪০ বা তার অধিক গোল করার কৃতিত্ব। ২৫শে এপ্রিল, বায়ার্ন মিউনিখের বিরুদ্ধে ২০১১-১২ উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে, রোনালদো পেনাল্টি থেকে প্রথম গোল ও মেসুত ওজিলের পাস থেকে ২য় গোল করেন। যদিও ২ লেগ মিলিয়ে খেলা ৩-৩ গোলে অমীমাংসিত থাকে ও পেনাল্টি শুট আউটে ম্যানুয়েল নায়ার রোনালদোর শট ঠেকিয়ে দিলে রিয়াল টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয়।[১০১]

১৩ মে ২০১২ সালে,মৌসুমের শেষ খেলায়, রোনালদো মালাকোরার বিরুদ্ধে গোল করেন যা তাকে লা লিগায় এক মৌসুমে প্রত্যক দলের বিরুদ্ধে গোল করা প্রথম খেলোয়াড় বানায়।[১৩] রোনালদো রিয়ালে তার তৃতীয় মৌসুম শেষ করেন ১০০ পয়েন্ট পেয়ে ২০১১-১২ লা লিগা শিরোপা জেতার মাধ্যমে। এই মৌসুমে রোনালদো লিগে ৪৬ গোল, সকল প্রতিযোগিতায় ৬০ গোল করেন যা তার আগের মৌসুমে করা রিয়াল মাদ্রিদের রেকর্ড ভেঙ্গে দেয়। মৌসুমের শেষে রোনালদো দাবি করেন যে, তিনি বিশ্বাস করেন যে তিনি ২০১১-১২ মৌসুমে মেসির চেয়ে ভাল খেলেছেন,[১০২] এবং মৌসুম শেষে তিনি লা লিগার মৌসুম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ট্রফেডো আলফ্রেদো দি স্তেফানো পুরস্কার জেতেন।

২০১২-১৩ মৌসুম

এসি মিলানের বিপক্ষে মৌসুমের শুরুর দিকে এক প্রীতি ম্যাচে রোনালদো

রোনালদো ২০১২-১৩ মৌসুম শুরু করেন রিয়াল মাদ্রিদকে সুপারকোপা দে স্পানা জেতানোর মাধ্যমে। বার্সেলোনার বিরুদ্ধে খেলার ২ লেগ মিলিয়ে ৪-৪ গোল থাকলেও রিয়াল অ্যাওয়ে গোলে এগিয়ে থাকায় প্রতিযোগিতাটি জিতে নেয়। রোনালদো ২ লেগ মিলে ২ গোল করেন যার মধ্যে প্রথম গোলটির মাধ্যমে তিনি রিয়ালের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ন্যু ক্যাম্পে পর পর ৪ ম্যাচে গোল করার রেকর্ড স্পর্শ করেন।[১০৩] ২য় লেগে তার গোলটি রিয়ালের জয় নির্ধারণ করে এবং এর মাধ্যমে তিনি রিয়াল মাদ্রিদের রেকর্ড টানা ৫ এল ক্লাসিকোতে গোল করা ইভান জামোরানোর রেকর্ডে ভাগ বসান।[১০৪] ৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ সালে, দিয়ারো এএস রিপোর্ট প্রকাশ করে যে ম্যানচেস্টার সিটি প্রেসিডেন্ট শেখ মনসুর রোনালদোর জন্য €২০০ মিলিয়ন অর্থ রিয়ালকে প্রস্তাব করেছে যদিও রিয়াল ওই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।[১০৫] ৩০শে আগস্ট রোনালদো ১৭ ভোট পেয়ে মেসির সাথে যৌথভাবে ২০১১ উয়েফা ইউরোপের সেরা খেলোয়াড় পুরস্কারে ২য় হন। ওই বছর ওই পুরস্কারটি জেতেন বার্সেলোনার ইনিয়েস্তা।[১০৬]

২রা সেপ্টেম্বর, রোনালদো গ্রানাডার বিপক্ষে এই মৌসুমের প্রথম লিগ গোল করেন যা ছিল আবার প্রিমিয়ার লিগলা লিগা এবং পর্তুগালের প্রিমেরা লিগা মিলিয়ে তার ২০০তম গোল। তিনি আরেকটি গোল করেন যা ছিল রিয়ালের হয়ে ১৪৯ খেলায় তার ১৫০তম গোল। ওই গোলের মাধ্যমে রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোল করা খেলোয়াড়দের তালিকায় ১০ম স্থানে উঠে আসেন। রোনালদো ওই খেলার ৬৩ মিনিটে উরুর ইনজুরির জন্য মাঠ ছাড়েন।[১০৭] পরবর্তীতে তার ১৪৯ ও ১৫০ তম গোলে উৎযাপন না করার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে রোনালদো দাবি করেন যে, তিনি রিয়াল মাদ্রিদে একটি "পেশাদারী বিষয়" নিয়ে সুখী নন।[১০৮] রোনালদোর এজেন্ট, জর্জ মেন্ডেস জানান তিনি এটা জানতেন যে রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদে তার জীবন নিয়ে অসুখী।[১০৯] রোনালদোর ক্লাবের সাথে একটি উন্নত চুক্তি না হওয়া এই সুখী না হওয়ার কারণ, এই ধারণা তিনি নাকচ করে দেন।[১১০] রিয়াল মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট, ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ, দাবি করেন যে রোনালদো ক্লাব ছাড়তে চান না এবং তিনি অন্য ব্যপার নিয়ে অখুশি।[১১১] যখন রোনালদো আন্তর্জাতিক খেলা শেষে রিয়ালে ফিরে আসেন তিনি জানান যে ক্লাবের হয়ে আরো সাফল্য বয়ে আনতে তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।[১১২] রিয়াল মাদ্রিদের কোচ জোসে মরিনহো বলেন যে তিনি মনে করেন ২০১১ উয়েফা সেরা খেলোয়াড় অ্যাওয়ার্ডে তার বদলে ইনিয়েস্তার পুরস্কার পাওয়ার ব্যাপারে তিনি অসুখী হতে পারেন।[১১৩][১১৪]

১৮ সেপ্টেম্বর, রিয়ালের ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে ৩-২ গোলে জয়লাভের খেলায় রোনালদো মৌসুমের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম গোল করেন।[১১৫] ৩০ সেপ্টেম্বর, রোনালদো দেপর্তিভো লা করুনার বিরুদ্ধে ৫-১ গোলে জয়লাভের খেলায় রোনালদো মৌসুমের প্রথম হ্যাটট্রিক করেন।[১১৬] ৪ অক্টোবর, রোনালদো অ্যাজাক্সের বিরুদ্ধে তার ক্যারিয়ারে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ হ্যাটট্রিক করেন; খেলায় রিয়াল ৪-১ গোলে জয়লাভ করে।[১১৭] তিনি তার ভাল ফর্ম পরবর্তীকালে ধরে রাখেন। বার্সেলোনার বিরুদ্ধে ২-২ গোলে ড্র হওয়ার খেলায় রোনালদো জোড়া গোল করেন যার ফলে তিনি প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টানা ৬ এল ক্লাসিকোতে গোল করার রেকর্ড করেন।[১১৮] তিনি পরবর্তী খেলায়, বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের সাথে ১ গোল ও মালাকোরার বিরুদ্ধে ৫-০ গোলে জয়লাভের খেলায় জোড়া গোল করেন।[১১৯][১২০]

১১ নভেম্বর, লেভান্তের বিরুদ্ধে ২-১ গোলে জয়লাভের খেলায়, রোনালদো কনুই দিয়ে চোখে আঘাত পান, যদিও দ্বিতীয়ার্ধে তাকে উঠিয়ে নেয়ার পূর্বে রোনালদো লা লিগায় এই মৌসুমে ১২ তম লা লিগা গোল করেন।[১২১][১২২] এর ফলে তিনি পর্তুগালের হয়ে গ্যাবনের বিরুদ্ধে প্রীতি খেলায় নামতে পারেননি।[১২৩] ২১শে নভেম্বর, ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেলায় ইতিহাদ স্টেডিয়ামে তিনি রিয়ালের বিরুদ্ধে তিনি মাঠে নামেন; খেলাটি ১-১ গোলে ড্র হয়। এই খেলার মাধ্যমে রোনালদো ২০০৯ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছাড়ার পর প্রথম কোন ম্যানচেস্টারের স্টেডিয়ামে খেলতে নামেন।[১২৪] পহেলা ডিসেম্বর, পরবর্তী তিন খেলায় গোলশূন্য থাকার পর, রোনালদো ফ্রি-কিক থেকে একটি গোল করেন এবং ওজিলের গোলে সহায়তা করেন; রিয়াল ওই খেলায় অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদকে ২-০ গোলে পরাজিত করে।[১২৫]

২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে, ফ্রেঞ্চ জায়ান্ট পিএসজি ঘোষণা করে যে তারা রোনালদোকে দলে নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহী।[১২৬] যদিও রিয়াল মাদ্রিদ জানায় যে তারা রোনালদোকে বিক্রি করবে না, এর বদলে তারা রোনালদোর সাথে নতুন একটি চুক্তি করতে যাচ্ছে যার ফলে রোনালদোকে তারা ২০১৮ সাল পর্যন্ত তাদের দলে রাখতে পারবে। [১২৭][১২৮] ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে, ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ নিশ্চিত করেন যে তারা রোনালদোর সাথে নতুন চুক্তি করতে যাচ্ছেন,[১২৯] অপরদিকে মরিনহো মত প্রকাশ করেন যে রোনালদো রিয়ালের জন্য অপরিহার্য।[১৩০] ২০১৩ সালের মে মাসে পেরেজ বলেন যে তাদের রোনালদোকে বিক্রি করার কোন পরিকল্পনা নেই।[১৩১][১৩২]

৬ই জানুয়ারি, ২০১৩ সালে রিয়ালের প্রথম খেলায় রোনালদো জোড়া গোল করেন এবং ১০ সদস্যের রিয়াল রিয়াল সোসিয়াদাদকে ৪-৩ গোলে হারায়।[১৩৩] ওই খেলায় রোনালদো প্রথমবারের মত রিয়ালের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন,[১৩৪][১৩৫] কিন্তু মৌসুমের ৫ম হলুদ কার্ড দেখার কারণে ওসাসুনার বিরুদ্ধে পরের খেলায় নিষিদ্ধ হন। এটা ছিল সরাসরি সেই লাল কার্ড খাওয়ার পর প্রথম খেলা যেখানে তিনি নিষিদ্ধ হন।[১৩৬] ৭ই জানুয়ারি, রোনালদো চতুর্থবারের মত মেসির পিছনে থেকে ২০১২ ফিফা বালোঁ দ’অর এ ২য় হন।[১৩৭] ৯ জানুয়ারি, রোনালদো কোপা দেল রের একটি খেলার ২য় লেগে সেল্টা ভিগোর সাথে হ্যাটট্রিক করেন।[১৩৮] ১৫ই জানুয়ারি, ভালেনসিয়ার সাথে কোপা দেল রেতে একটি খেলায় জয়ের পর রোনালদো, ম্যানেজার জোসে মরিনহোর সাথে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন।[১৩৯][১৪০]

২৭শে জানুয়ারি, রোনালদো, গেতাফের বিরুদ্ধে ৪-০ গোলে জয়লাভের খেলায় একটি হ্যাটট্রিক করেন যা ক্লাবে তার গোলসংখ্যা ৩০০ তে উন্নীত করে।[১৪১] ৩০শে জানুয়ারি, রোনালদো বার্সেলোনার বিরুদ্ধে কোপা দেল রেতে ক্লাবের হয়ে নিজের ৫০০ তম খেলায় মাঠে নামেন। ওই খেলায় তিনি সর্বশেষ ৬০ বছরের ইতিহাসে প্রথম কোন অ-স্পেনীয় খেলোয়াড় হিসেবে এল ক্লাসিকোতে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন।[১৪২] ২ ফেব্রুয়ারি, রোনালদোর ক্যারিয়ারের প্রথম আত্মঘাতী গোলের কারণে রিয়াল গ্রানাডার বিরুদ্ধে ১-০ গোলে পরাজয় বরণ করে।[১৪৩] রোনালদো এর পরের সপ্তাহে সেভিয়ার বিরুদ্ধে আরেকটি হ্যাটট্রিক করেন যা তার ক্যারিয়ারে ২১তম ও লা লিগায় ১৭তম হ্যাটট্রিক ছিল।[১৪৪]

১৩ই ফেব্রুয়ারি রোনালদো প্রথমবারের মত ক প্রাক্তন ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেলায় মাঠে নামেন। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে অনুষ্ঠিত ওই খেলায় রিয়াল ১-১ গোলে ড্র করে।[১৪৫] ২৬ ফেব্রুয়ারি, রোনালদো বার্সেলোনার বিরুদ্ধে কোপা দেল রের সেমিফাইনালে জোড়া গোল করেন, যা ন্যু ক্যাম্পে তার টানা ষষ্ঠ গোল ছিল।[১৪৬] রোনালদো এর পরে ৫ই মার্চ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ২-১ গোলে জয়লাভের খেলায় জয়সূচক গোলটি করেন। এই খেলায় রোনালদোর রেকর্ড £৮০ মিলিয়নে রিয়ালে যাওয়ার পর ওল্ড ট্রাফোর্ডে প্রথম খেলতে নামেন।[১৪৭] পরবর্তীতে রোনালদো বলেন তার গোলে ইউনাইটেড চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বের হয়ে যাওয়ার ঘটনায় তিনি বিমর্ষ এবং এটা তার জন্য একটা বিচিত্র অভিজ্ঞতা।[১৪৮][১৪৯]

১০ই মার্চ, রোনালদো সেল্টা ভিগোর বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে লা লিগায় রিয়াল কে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের উপরে ২য় স্থানে নিয়ে যান।[১৫০] তার ২য় গোলটি, লা লিগায় তার ১৩৮তম ছিল, যা তাকে লা লিগার ইতিহাসে সেরা ২৫ গোল করা খেলোয়াড়দের তালিকায় নিয়ে যায়। এটা অর্জন করতে রোনালদো মাত্র ১২৭টি ম্যাচ খেলেছিলেন এবং ম্যাচ প্রতি তার গোল গড় ছিল ১.০৮ যা বাকি ২৪ খেলোয়াড়য়ের চেয়ে বেশি ছিল।[১৫১] ১৬ই মার্চে, রোনালদোর মালাকোরার বিরুদ্ধে ৫-২ গোলে জয়লাভের খেলায় সমতাসূচক গোলটি তার ক্যারিয়ারের ৩৫০তম গোল ছিল।[১৫১][১৫২] ৩ এপ্রিল রোনালদো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে গ্যালেতেসারের বিরুদ্ধে খেলার প্রথম গোলটি করেন।[১৫৩] ৯ই এপ্রিল, ২য় লেগে, রোনালদোর জোড়া গোলে রিয়াল ২ লেগ মিলিয়ে ৫-৩ গোলে গ্যালেতেসারেকে হারিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছায়।[১৫৪]

২৪ এপ্রিল চ্যাম্পিয়ন্স লেগে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের সাথে সেমিফাইনালে খেলার পূর্বে রোনালদোর উরুর পেশিতে টান পড়ে। রোনালদো ওই ম্যাচে অংশগ্রহণ করেন এবং ১ গোল করেন, যদিও বরুসিয়ার ঘরের মাঠে ওই খেলায় রিয়াল ৪-১ গোলে পরাজিত হয়।[১৫৫] তিনি পরের ম্যাচে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের বিরুদ্ধে মাঠে নামেননি,[১৫৬] যদিও ৩০শে এপ্রিল বরুসিয়ার বিরুদ্ধে ২-০ গোলে জয়লাভের খেলায় তিনি মাঠে নামেন। রিয়াল দুই লেগ মিলিয়ে ৩-৪ গোলে হেরে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নেয়।[১৫৭] ৪ মে রোনালদোর হেড থেকে দুই গোলের সুবাদে রিয়াল ৪-৩ গোলে রিয়াল ভ্যালাদোলিদকে হারায়।[১৫৮] ব্রিটিশ মিডিয়া রিপোর্ট প্রকাশ করে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রধান নির্বাহী ডেভিড গিল রিয়াল মাদ্রিদে গিয়েছিলেন রোনালদোকে ওল্ড ট্রাফোর্ডে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে,[১৫৯] যদিও কিছু মিডিয়া জানায় যে ইউনাইটেডে ম্যানেজার স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের অবসরের পর রোনালদোকে ইউনাইটেডে নিয়ে আসা তাদের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন হবে।[১৬০][১৬১]

৮ই মে মালাগার বিরুদ্ধে গোলে জয়ের খেলায় রোনালদো রিয়ালের হয়ে তার ২০০তম গোলটি করেন, যা তাকে ক্লাবের সর্বনিম্ন ১৯৭ ম্যাচে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় ৬ষ্ঠ স্থানে নিয়ে যায়।[১৬২] ১৭ মে ২০১৩ কোপা দেল রের ফাইনালে রোনালদো ওজিলের নেয়া কর্নার কিক থেকে হেডের মাধ্যমে গোল করেন, যদিও অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ওই খেলায় রিয়াল ২-১ গোলে হেরে যায়।[১৬৩] ওই ম্যাচের ১১৪ মিনিটে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় গ্যাবির সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ায় রোনালদোকে সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠের বাইরে বের করে দেয়া হয়।[১৬৪] ওই ম্যাচ শেষে রয়াল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন কর্তৃক অতিরিক্ত হলুদ কার্ড খাওয়ার জন্য ও তার আচরণের জন্য তাকে কোপা দেল রের পরবর্তী ২ খেলায় নিষিদ্ধ করে।[১৬৫]

রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদে তার ৪র্থ মৌসুম শেষ করেন উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১২ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার মাধ্যমে। লা লিগায় রিয়াল তাদের শিরোপা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, বার্সেলোনার কাছে রানার্স আপ হওয়ার মাধ্যমে এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা ২য় বারের মত সেমিফাইনাল থেকে নেয়। সকল প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রোনালদো ৫৫ গোল করেন যার ৩০টি এসেছে ডান পা থেকে, ১৭টি বাম থেকে ও ৮টি হেড থেকে।[১৬৬]

২০১৩-১৪ মৌসুম

২০১৩-১৪ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে গ্যালেতেসারের বিরুদ্ধে রোনালদো

২০১২-১৩ মৌসুমে রিয়ালের কোন শিরোপা জিততে ব্যর্থতার ফলে রোনালদোর ক্লাব ছেড়ে যাওয়ার গুঞ্জন রটে।[১৬৭][১৬৮][১৬৯][১৭০] ৮ জানুয়ারি ২০১৩ সালে, রোনালদো সকল গুজবে পানি ঢেলে দেন এই জানিয়ে যে তিনি শীঘ্রই ক্লাবের সাথে চুক্তি নবায়ন করতে যাচ্ছেন।[১৭১] ৩রা জুলাই ২০১৩ সালে রোনালদো স্বীকার করেন যে তিনি প্রিমিয়ার লিগকে মিস করছেন, যদিও তিনি নিকট ভবিষ্যৎ এ ওল্ড ট্রাফোর্ডে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দেন।[১৭২]

১৮ই আগস্ট ২০১৩ সালে, রোনালদো রিয়াল বেতিসের বিরুদ্ধে রিয়ালের হয়ে নিজের ২০০ তম প্রতিযোগিতাপূর্ণ খেলায় মাঠে নামেন।[১৭৩] ২০১৩-১৪ মৌসুমের লা লিগার প্রথম দুই খেলায় রোনালদো গোল করতে ব্যর্থ হলেও তার ৩য় খেলায় অ্যাতলেতিকো বিলবাওয়ের বিরুদ্ধে প্রথম গোল করেন; ঘরের মাঠ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল ওই খেলা ৩-১ গোলে জেতে।[১৭৪]

১৫ই সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে, রোনালদো সকল জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে রিয়ালের সাথে নতুন চুক্তিতে উপনীত হন যার ফলে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তাকে রিয়ালের হয়ে খেলতে হবে।[১৭৫] এ চুক্তির ফলে তার বার্ষিক বেতন গিয়ে দাঁড়ায় €২১ মিলিয়নে (ট্যাক্স পরিশোধ করার পর), যা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বেতনভুক্ত ফুটবলার বানায়।[১৭৬] ১৭ সেপ্টেম্বর, গ্যালেতেসারের বিরুদ্ধে ২০১৩-১৪ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের প্রথম খেলায়, রোনালদো তার ক্যারিয়ারের ২য় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ হ্যাটট্রিক করেন এবং রিয়াল ম্যাচটি ৬-২ গোলে জিতে নেয়। [১৭৭] ২২ সেপ্টেম্বর, ঘরের মাঠে গেতাফের বিরুদ্ধে ৪-১ গোলে জয়লাভের খেলায় রোনালদো জোড়া গোল করেন। এই গোলের মাধ্যমে রিয়ালে রোনালদো ২০৫টি খেলায় ২০৯তম গোল করেন যা তাকে ক্লাবের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় ৫ম স্থানে নিয়ে যায়।[১৭৮]

২ অক্টোবর, রোনালদোর ১০০তম ইউরোপিয়ান লিগ খেলায়, এফসি কোপেনহেগেনের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করেন এবং রিয়াল খেলায় ৪-০ গোলে জয়ী হয়।[১৭৯] ৫ অক্টোবর লেভান্তের বিপক্ষে খেলার শেষমুহূর্তে রোনালদো জয়সূচক গোলটি করেন যার মাধ্যমে তিনি ২০১৩ সালে প্রধান ৫ ইউরোপিয়ান লিগগুলোর মধ্যে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ৫০তম গোলের কোটা পূর্ণ করেন।[১৮০] ২৩ অক্টোবর ২০১৩ সালে, ঘরের মাঠে ইয়ুভেন্তুস বিরুদ্ধে ২-১ গোলের জয়লাভের খেলায় রোনালদো একাই ২ গোল করেন যা তাকে ৫৭ গোলের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে ৩য় সর্বোচ্চ গোলপ্রদানকারী খেলোয়াড় বানায়।[১৮১][১৮২] ৩০ অক্টোবর ঘরের মাঠে সেভিয়ার বিরুদ্ধে ৭-৩ গোলে জয়লাভের খেলায় রোনালদো তার ১৮ তম লা লিগা হ্যাটট্রিক করেন, যা সকল প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তার ২৩তম ছিল।[১৮৩]

২০১৩ সালে অক্সফোর্ড ইউনিয়নে এক বিতর্কে, যখন ফিফা প্রেসিডেন্ট সেপ ব্লাটারকে প্রশ্ন তিনি মেসি ও রোনালদোর মধ্যে কাকে অধিক শ্রেয় মনে করেন, তিনি মেসির কাজের নীতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং রোনালদোর ব্যাপারে দাবি করেন যে সে তার চুলের যত্নের জন্য অন্যদের চেয়ে বেশি ব্যয় করেন। রিয়াল এই ঘটনার জন্যে পরবর্তীতে ব্লাটারের ক্ষমাপ্রার্থনার দাবি জানায় এবং ব্লাটার এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চান। যদিও ব্লাটার তাকে "কমান্ডার" বলে অভিহিত করায়, রোনালদো সেভিয়ার বিপক্ষে গোল করার পর ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে স্যালুট জানিয়ে এর প্রত্যুত্তর দেন।[১৮৪][১৮৫]

২ নভেম্বর ২০১৩ সালে, রোনালদো, বিপক্ষের মাঠে রিয়ালের হয়ে ১০৬ তম খেলায় তিনি তার ১০০তম অ্যাওয়ে গোল পূর্ণ করেন যার ম্যাচপ্রতি গড় ছিল ০.৯৪।[১৮৬] ৫ নভেম্বর, ইয়ুভেন্তুসের বিরুদ্ধে ২-২ গোলে ড্র হওয়ার খেলায় রোনালদো সমতাসূচক গোলটি করেন, যার ফলে তিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে ১ বছরে সবচেয়ে বেশি ১৪ গোলের রেকর্ড গড়েন।[১৮৭] ৯ নভেম্বর, রিয়াল সোসিয়াদাদের বিরুদ্ধে ৫-১ গোলে জয়লাভের খেলায় রোনালদো লা লিগায় সর্বোচ্চ ১৯তম হ্যাটট্রিক করেন। ওই খেলায় রোনালদো রিয়ালের হয়ে ফ্রি-কিক থেকে নিজের ২০ তম গোল করেন যা বার্সেলোনার ফ্রি-কিক স্পেশালিস্ট রোনালদিনহোর চেয়ে ১টি বেশি ছিল।[১৮৮]

২০১৩-১৪ মৌসুমে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ক্লাব ও আন্তর্জাতিক খেলা মিলিয়ে ২২ খেলায় ৫ হ্যাটট্রিক সহ ৩২ গোল করের পর রোনালদো জানান যে তিনি হয়ত তার জীবনে "জীবনের সেরা ফর্মে" রয়েছেন।[১৮৯] ২৩ নভেম্বর আলমেরিয়ার বিরুদ্ধে খেলায় পেশিতে টান পড়অর কারণে রোনালদোকে ৫২তম মিনিটে মাঠ থেকে উঠিয়ে নেয়া হয়।[১৯০][১৯১] রোনালদো ১০ ডিসেম্বর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কোপেনহেগেনের বিরুদ্ধে ২-০ গোলে জয়লাভের খেলায় ইনজুরি কাটিয়ে পুনরায় মাঠে নামেন এবং মোট ৯ গোল করার সুবাদে গ্রুপ পর্বে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড অর্জন করেন।[১৯২] ভালেনসিয়ার বিরুদ্ধে বছরের শেষ খেলায় রোনালদো হেডের মাধ্যমে ১টি গোল করেন এবং ২০১৩ সালে ৫৯ খেলায় ৬৯ গোল করেন, যা তার নিজের সর্বোচ্চ।[১৯৩][১৯৪] ওই গোলের মাধ্যমে রোনালদো ১৬৪ লিগ গোলের মাধ্যমে রিয়ালের সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় ৪র্থ স্থানে উঠে আসেন। এছাড়া অ্যাওয়ে গোলের তালিকায় তিনি ৭২ গোলের মাধ্যমে ২য় স্থানে উঠে আসেন, যা সর্বোচ্চ রাউলের চেয়ে ১৫টি কম।[১৯৫]

রোনালদো তার প্রতিভা ও পেশাদারিত্বের জন্য একজন অনন্য খেলোয়াড়। সে অত্যন্ত ধারাবাহিক।

— কার্লো আনচেলত্তি[১৯৬]

২০১৪ সালের প্রথম খেলায় রোনালদো সেল্টা ভিগোর বিরুদ্ধে জোড়া গোল করেন এর মধ্যে ক্লাব এবং দেশের হয়ে ৬৫৩ খেলায় তার ৪০০ তম গোলও অন্তর্ভুক্ত। তিনি ওই গোল দুইটিকে ইউসেবিয়োর নামে উৎসর্গ করেন যিনি মাত্র ২ দিন আগে মারা যান।[১৯৭][১৯৮]

১৩ই জানুয়ারি ২০১৪ সালে আগের ৪ বছরে বিজয়ী মেসিকে হারিয়ে রোনালদো ফিফা বালোঁ দ’অর জেতেন।[১৯৯] এটা ২০০৮ সালের পর তার দ্বিতীয় বালোঁ দ’অর ছিল যার ফলে তিনি ১০ম খেলোয়াড় হিসেবে ২ বা ততোধিকবার এই পুরস্কার জেতার কৃতিত্ব অর্জন করেন।[২০০] তিনি দলের হয়ে কোন ট্রফি না জিতেও পুরস্কার জেতা ৬ষ্ঠ খেলোয়াড় [২০১] এছাড়া তিনি রিয়াল মাদ্রিদের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে এই পুরস্কার জেতেন ।[২০২] রোনালদো ২০০৭, ২০০৯, ২০১১, ২০১২ সালে রানার্সআপ হন।[২০৩] অশ্রুসিক্ত রোনালদো পুরস্কারটি নিতে গিয়ে বলেন "তার ওই মুহূর্তটিকে ব্যাখ্যা করার মত ভাষা নেই" এবং "পুরস্কারটি জেতা অনেক শক্ত"।[২০৪] এই সম্মননার ফলে অনেক মিডিয়া তাকে সর্বকালের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে অভিহিত করে।[২০৫][২০৬][২০৭]

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার

রোনালদো ব্রাজিল জাতীয় দলের বিপক্ষে খেলছে

২০০৩ সালের আগস্টে কাজাখস্তানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোনালদোর অভিষেক হয়। ইউরো ২০০৪ এর উদ্বোধনী যে খেলায় গ্রিসের বিরুদ্ধে পর্তুগাল ২-১ গোলে হেরে যায়, তাতে তিনি ছিলেন পর্তুগালের একমাত্র গোলদাতা। সেমি-ফাইনালে পর্তুগাল নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২-১ গোলে জয়ী হয় এবং সেটির প্রথম গোল তিনিই করেন। ফাইনালে উদ্বোধনী খেলার পুণরাবৃত্তি ঘটে এবং গ্রিস পর্তুগালকে হারিয়ে ইউরো ২০০৪ চ্যাম্পিয়ন হয়।

২০০৪ গ্রীষ্ম অলিম্পিকে তিনি পর্তুগালের প্রতিনিধিত্ব করেন। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে তিনি ৭ গোল করে ইউরোপীয় অঞ্চলের দ্বিতীয় সেরা গোলদাতা হয়েছিলেন। ১৭ জুন, ২০০৫ পর্যন্ত পর্তুগালের পক্ষে ২৫ খেলায় তিনি ১১ গোল করেন।

ইরানের বিরুদ্ধে পেনাল্টি কিক থেকে রোনালদো বিশ্বকাপে তার প্রথম গোল করেন।

বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে পর্তুগালের সাথে নেদারল্যান্ডের খেলায় খালিদ বোলারুজের সাথে সংঘর্ষে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাঠ ছাড়েন। এ খেলায় পর্তুগাল ১-০ গোলে জয়ী হয়।

২০০৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ব্রাজিলের বিপক্ষে একটি প্রীতি খেলায় রোনালদো প্রথমবারের মত জাতীয় দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন। পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশন চেয়ারম্যান কার্লোস সিলভার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার জন্য, যিনি খেলার দুই দিন আগে মারা যান, রোনালদোকে অধিনায়ক করা হয়। পর্তুগালের কোচ ফিলিপ স্কলারি ব্যাখ্যা করেন, "মি. সিলভা আমাকে তাকে (রোনালদোকে) অধিনায়ক করতে বলেন। তিনি মনে করেছিলেন ইংরেজ দর্শক তাকে অনেক কষ্ট দেবে এবং এটা সেটার জবাব। সে দলনায়ক হওয়ার জন্য খুবই কম বয়সী, কিন্তু মি. সিলভা আমাকে বলেছিলেন, এবং আজ তিনি আমাদের মাঝে আর নেই।"[২০৮]

ইউরো কাপ

  • ইউরো ২০১৬ তে তিনি প্রায় একক প্রচেষ্টায় দলকে ফাইনালে তুলে প্রথমবারের মত কোন আন্তর্জাতিক শিরোপা জয়ের স্বাদ গ্রহণ করেন৷ ফাইনালে নেবার পথে তিনি ডু অর ডাই ম্যাচে হাঙ্গেরীর বিপক্ষে জোরা গোল এবং একটি এসিস্ট করেন৷ দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে তিনি মাত্র ৮ সেকেন্ডে ৬৮ মিটার দৌরিয়ে অতিরিক্ত সময়ের শেষ মুহূর্তে গোলে এসিস্ট করেন এবং কোয়ার্টার ফাইনালে পোল্যান্ডের বিপক্ষে টাইব্রেকারে নিখুঁত পেনাল্টিতে গোল করে দলকে সেমিতে নিয়ে যান৷ সেমি ফাইনালে ক্লাব সতীর্থ গ্যারেথ বেলের ওয়েলসের বিপক্ষে তিনি দলের দুটি গোলেই অবদান রাখেন৷ কিন্তুু ফাইনালে ফরাসী মিডফিল্ডার পায়েটের ইচ্ছাকৃত ফাউলে তিনি ভয়াবহ ইঞ্জুরিতে পরে ২৫ মিনিটে মাঠ ছারতে বাধ্য হন ,যদিও তিনি দলের প্রয়োজনে পেইন কিলার নিয়ে তার আগে দুইবার মাঠে আসেন কিন্তুু আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে তিনি খেলা চালিয়ে যেতে পারেননি,মাঠ ছারলেও তিনি ডাগআউটে সতীর্থদের প্রেরনা যোগান এবং খেলা পরিচালনায় নির্দেশনা দিয়ে দলের প্রতি নিজের অসামান্য আন্তরিকতার প্রমাণ রাখেন৷
  • পুরো টুর্নামেন্টে পর্তুগালের করা ৯ গোলের ৬টিতেই ছিল তার অবদান৷

বিশ্বকাপের ঘটনা

২০০৬ সালের ৮ জুলাই অনুষ্ঠিত ২০০৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড ও পর্তুগালের একটি খেলায় ইউনাইটেড সহযোগী ওয়েইন রুনিকে লাল কার্ড দেয়ার ব্যাপারে রোনালদোর ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। ইংরেজ গণমাধ্যম এই লাল কার্ড দেয়ার পিছনে রোনালদোর ভূমিকা আছে বলে সরব হয়। রোনালদো তখন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তার কাছে মনে হয় তার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে যাওয়া উচিত, কেননা তখনকার অবস্থা সেখানে খেলার উপযুক্ত ছিলনা।[২০৯]

স্প্যানিশ দৈনিক মার্সাকে দৃঢ় কন্ঠে রোনালদো বলেন, “আমি আমার এজেন্টকে বলেছি আমি ছেড়ে যেতে প্রস্তুত। আমি এটা যতটা সম্ভব ভালভাবে করতে চাই। আমি রিয়াল মাদ্রিদে খেলতে চাই এবং এটা আমার একটি স্বপ্ন।”[২১০]৯ জুলাই তিনি একটি পর্তুগিজ চ্যানেল এসআইসিকে বলেন, তার বিরুদ্ধে চলমান বাকযুদ্ধ ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জল্পনা-কল্পনার কোন অর্থ খুজে পান না। রোনালদো বলেন পর্তুগাল ইংল্যান্ডকে যে খেলায় হারিয়ে দিয়েছে সেখানে তিনি কোন খারাপ আচরণ করেননি এবং তাকে পর্তুগালের সম্মান রক্ষা করার জন্য দোষারোপ করাও উচিত নয়। তিনি আরো বলেন, যেখানে লোকজন তাকে পছন্দ করে না সেখানে তিনি বসবাস কিংবা কাজ করতে পারবেন না, তাই তিনি ইংল্যান্ড ছেড়ে গেলেই খুশি হবেন।

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয়ার পর রোনালদো ইংরেজ ট্যাবলয়েড পত্রিকাগুলির রোষানলে পড়েন। দি সান তার চোখ টেপার ছবি দিয়ে একটি ডার্ট বোর্ড তৈরি করে যেরকম বোর্ড দি ডেইলি মিরর ১৯৯৮ বিশ্বকাপে বেকহ্যামের জন্য বানিয়েছিল।[২১১][২১২][২১৩]

রোনালদো বলেছেন রুনি তার বন্ধু এবং তিনি রুনিকে লাল কার্ড পেতে সাহায্য করেননি।[২১৪] রুনি বলেন, "ক্রিস্তিয়ানোর প্রতি আমার কোন খারাপ মনোভাব নেই তবে এই ঘটনায় তার জড়ানোয় আমি দুঃখ পেয়েছি।"[২১৫]

ফিফা শৃংখলা কমিটি লাল কার্ড পাওয়ার ঘটনা তদন্ত করে রুনিকে দুটি খেলাতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং ৫,০০০ সুইস ফ্রাঁ (২,২০৭ পাউন্ড) জরিমানা করে।

খেলার পর রোনালদো স্বীকার করেন রিয়াল মাদ্রিদ তাকে পেতে আগ্রহী এবং তিনি নিজেও গ্রীষ্মের দলবদলের মৌসুমে দলত্যাগ করে রিয়ালে বা অন্য কোন দলে যেতে আগ্রহী।[২১৬]

৫ জুলাই ফ্রান্সের কাছে পর্তুগাল সেমি-ফাইনালে ১-০ ব্যবধানে হেরে যায়। এ খেলায় যখনই রোনালদোর কাছে বল যায় তখনই ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের সমর্থকেরা রোনালদোর উদ্দেশ্যে উচ্চস্বরে দুয়ো ধ্বনি দিতে থাকে। রোনালদো ও তার সতীর্থদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে পড়ে গিয়ে রেফারির ওপর চাপ প্রয়োগের অভিযোগ উত্থাপিত হয়।[২১৭][২১৮][২১৯][২২০][২২১] এই অভিযোগ রোনালদোর বিরুদ্ধে আগেও ছিল এবং একারণে প্রিমিয়ারশিপে তাকে একাধিকবার হলুদ কার্ড পেতে হয়েছে।[২২২][২২৩][২২৪] অনলাইনে ভোটের মাধ্যমে ফিফা শ্রেষ্ঠ তরুণ খেলোয়াড় নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয় অবস্থানে নেমে যাওয়ার পর বিবিসি স্পোর্ট প্রকাশ করে যে, ইংল্যান্ডের সমর্থকেরা তার বিরুদ্ধে ই-মেইল প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা রোনালদোকে পুরস্কার বঞ্চিত করার জন্য লুইস ভালেনসিয়াকে ভোট দেয়ার প্রচারণা চালায় যিনি রোনালদোর পর দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন।[২২৫] যদিও অনলাইন ভোট কেবল মনোনয়ন কাজকেই প্রভাবিত করেছে, ফিফা টেকনিক্যাল স্টাডি গ্রুপ জার্মানির লুকাস পোদোলস্কিকে শ্রেষ্ঠ তরুণ খেলোয়াড় নির্বাচন করে এবং রোনালদোর আচরণকে এই পুরস্কার না জেতার একটি নিয়ামক হিসেবে উল্লেখ করে।[২২৬]

১২ জুলাই ইউনাইটেড একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলে, "দল নিশ্চিত করছে যে রোনালদোকে বিক্রির কোন সম্ভাবনা নেই। ক্রিস্তিয়ানো সাম্প্রতিক সময়ে একটি নতুন চুক্তি করেছে যা ২০১০ সাল পর্যন্ত স্থায়ী এবং দল প্রত্যাশা করে তিনি চুক্তির মর্যাদা রাখবেন। দল ক্রিস্তিয়ানোর জন্য কোন প্রস্তাব বিবেচনা করবে না," এবং ১৭ জুলাই স্যার এলেক্স ফার্গুসন বলেন, "ক্রিস্তিয়ানো ফেরত আসবে।" চেলসি ম্যানেজার জোসে মরিনহো বলেন, "সে যদি ইংল্যান্ডে থাকে, তবে সব পরিবর্তন করবে।"[২২৭][২২৮] স্যার এলেক্স ফার্গুসন সহকারী বস কার্লোস কুইরোজ|কার্লোস কুইরোজকে পর্তুগালে পাঠান যাতে রোনালদোর মতের পরিবর্তন হয়[২২৯] এবং রুনি রোনালদোকে দল না ছাড়তে অনুরোধ করেন ও তাদের মতপার্থক্য ভুলে যেতে বলেন।[২৩০] শেষপর্যন্ত, রোনালদো ২০০৬-০৭ মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেই থেকে যান।

ব্যক্তিগত জীবন

ব্যক্তিগত জীবনে রোনালদো বিশ্বের সবচেয়ে ধনী খেলোয়াড়। তিনি তার দানশীলতা এবং বিশ্বব্যাপী অসহায় মুসলমানদের সাহায্য করার জন্য বহুল প্রশংসিত। সম্প্রতি এক জরিপে তাকে বিশ্বের সবচেয়ে দানশীল খেলোয়াড় হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ফিলিস্তিনের একটি সংস্থা তাকে পার্সন অফ দ্য ইয়ার ২০১৬ প্রদান করে।

  • তিনি ২০১১ সালে জয় করা সোনার বুট ফিলিস্তিনের দরিদ্র শিশুদের জন্য নিলামে বিক্রি করে দিয়েছিলেন।
  • তিনি সিরিয়াতে শরণার্থীদের ৫০০০ ঘর বানিয়ে দিয়েছিলেন।
  • তিনি ইসরায়েলি ফুটবলারদের সাথে জার্সি বদল এবং করমর্দন করেননি কারণ তিনি অত্যাচারীদের অপছন্দ করেন৷
  • নেপালে ভূমিকম্পে তিনি নেপালকে অর্থ প্রদান করতে চাইলে নেপালি সরকার তা সরাসরি নিতে অনিচ্ছা পোষণ করলে তিনি সেফ দ্যা চিলড্রেন নামক সংস্থার মাধ্যমে নেপালি শিশুদের স্বাস্থ্য সহায়তায় অনুদান প্রদান করেন৷
  • রোনালদো বিশ্বের অসংখ্য ক্যান্সার নিরাময় কেন্দ্র তথা হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করেন৷

২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি রাশিয়ান সুপারমডেল ইরিনা শায়ক এর সাথে ডেট করেন। [২৩১]

রোনালদো অনেক দাতব্য কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত থেকেছেন। ২০০৫ সালের জুনে তিনি মার্তুনিস নামে এক ১১ বছর বয়সী সুনামি থেকে বেঁচে যাওয়া ইন্দোনেশিয়ান ও তার বাবাকে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব দেখার সুযোগ করে দেন, যার সম্পূর্ণ খরচ তিনি নিজে বহন করেন। পরে সব খেলোয়াড়েরা মিলে তার জন্য ইন্দোনেশিয়ায় একটি বাড়ি কিনতে সাহায্য করেন।[২৩২][২৩৩]

২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্রিস্তিয়ানো তার নিজ শহরে "সিআর৭" নামে একটি ফ্যাশন স্টোর স্থাপন করেন। তার বোনেরা এটির দেখাশোনা করেন।

দুটি বিশ্বকাপ বাছাই খেলার পর রোনালদো ইন্দোনেশিয়ায় যান। তিনি সেখানকার সুনামিদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং অর্থ-সাহায্য তুলতে অংশ নেন। তিনি ইন্দোনেশিয়ার উপ-রাষ্ট্রপতি জুসুফ কাল্লাপূর্ব টিমোরের রাষ্ট্রপতি জানানা গুসমাওর সাথে দেখা করেন এবং তার নিজস্ব খেলার সরঞ্জামাদির নিলাম করে ৬৬,০০০ পাউন্ড সংগ্রহ করেন।[২৩৪]

সম্মাননা

পর্তুগাল এবং আর্জেন্টিনার প্রীতি ম্যাচে রোনালদো ও লিওনেল মেসি, জেনেভা সুইজারল্যান্ড, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১।

ক্লাব

স্পোর্টিং
  • Supertaça Cândido de Oliveira: ২০০২
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
রিয়াল মাদ্রিদ

আন্তর্জাতিক

পর্তুগাল
চতুর্থ স্থান (১): ২০০৬
  • উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ:
রানার-আপ (১): ২০০৪
ব্রোঞ্জ (১): ২০১২
চ্যাম্পিয়ন : ২০১৬

ব্যক্তিগত

  • উয়েফা চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টের সেরা দল (২): ২০০৪, ২০১২
  • ব্রাভো অ্যাওয়ার্ড (১): ২০০৪
  • উয়েফা বর্ষসেরা দল (৮): ২০০৪, ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৩,২০১৪,২০১৫,২০১৬
  • স্যার ম্যাট বাসবি বর্ষসেরা খেলোয়াড় (৩): ২০০৩-০৪, ২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮
  • ফিফপ্রো সেরা তরুণ খেলোয়াড়( দর্শক ভোটে) (২): ২০০৫,[২৩৫] ২০০৬[২৩৬]
  • পিএফএ প্রিমিয়ার লিগ সেরা একাদশ (৪): ২০০৫-০৬, ২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮, ২০০৮-০৯
  • পিএফএ বর্ষসেরা তরুণ খেলোয়াড় (১): ২০০৬-০৭
  • পিএফএ বর্ষসেরা খেলোয়াড়( খেলোয়াড়দের ভোটে) (২): ২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮
  • পিএফএ বর্ষসেরা খেলোয়াড়( দর্শকদের ভোটে) (২): ২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮
  • এফডব্লিউএ বর্ষসেরা খেলোয়াড় (২): ২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮
  • বার্কলেস বর্ষসেরা খেলোয়াড় (২): ২০০৬-০৭, ২০০৭-০৮
  • প্রিমিয়ার লিগ মাসের সেরা খেলোয়াড় (৪): নভেম্বর ২০০৬, ডিসেম্বর ২০০৬, জানুয়ারি ২০০৮, মার্চ ২০০৮
  • পর্তুগিজ ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব: ২০০৬
  • পর্তুগিজ বর্ষসেরা ফুটবলার: ২০০৭,০৮,০৯,১০,১১,১২,১৩,১৪,১৫,১৬
  • ইএসএম বর্ষসেরা একাদশ (৮): ২০০৬-০৭, ২০০৭–০৮, ২০১০–১১, ২০১১–১২,২০১২-১৩,২০১৩-১৪,২০১৪-১৫,২০১৫-১৬
  • প্রিমিয়ার লিগ গোল্ডেন বুট (১): ২০০৭-০৮
  • ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু (৪): ২০০৭-০৮, ২০১০-১১,২০১৩-১৪,২০১৪-১৫
  • ফিফাপ্রো বিশ্ব একাদশ (১০): ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৩ ,২০১৪,২০১৫,২০১৬
  • উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সর্বোচ্চ গোলদাতা (৫): ২০০৭-০৮, ২০১২-১৩,২০১৩-১৪,২০১৪-১৫,২০১৫-১৬
  • উয়েফা ক্লাব সেরা ফরওয়ার্ড (৪): ২০০৭–০৮,২০১২-১৩,২০১৪-১৫,২০১৪-১৫
  • উয়েফা ক্লাব বিশ্বসেরা খেলোয়াড় (২): ২০০৭-০৮,২০১৬-১৭
  • ফিফা বিশ্বকাপ সিলভার বল (১): ২০০৮
  • বালোঁ দ’অর (১): ২০০৮
  • ফিফা বিশ্বসেরা খেলোয়াড় (১): ২০০৮,২০১৬
  • ফিফপ্রো বিশ্বসেরা খেলোয়াড় (১): ২০০৮,২০১৬
  • ওনজে দ’অর (১): ২০০৮,২০১৬
  • ওয়ার্ল্ড সকার ম্যাগাজিন বিশ্বসেরা খেলোয়াড় (২): ২০০৮, ২০১৩,২০১৪,২০১৬
  • ফিফা পুস্কাস অ্যাওয়ার্ড (১): ২০০৯
  • লা লিগা সর্বোচ্চ গোলদাতা (১): ২০১০-১১,২০১৩-১৪,২০১৪-১৫
  • কোপা দেল রে সর্বোচ্চ গোলদাতা (১): ২০১০-১১
  • গ্লোব সেরা খেলোয়াড় (২): ২০১১, ২০১৩,২০১৪,২০১৬
  • ট্রফেও আলফেদ্রো দে স্তেফানো (২): ২০১০-১১,২০১১-১২, ২০১২-১৩,২০১৩-১৪,২০১৪-১৫,২০১৫-১৬
  • এলএফপি মূল্যবান খেলোয়াড় (১): ২০১২–১৩,২০১৫
  • আইএফএফএইসএস বিশ্বসেরা সর্বোচ্চ গোলদাতা : ২০১৩[২৩৭]
  • ফিফা বালোঁ দ’অর (১): ২০১৩
  • ফিফা বালোঁ দ’অর (১): ২০১৪,২০১৬,২০১৭

ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান

ক্লাব

ক্লাবমৌসুমলিগ1ঘরোয়া কাপঘরোয়া লিগইউরোপঅন্যান্য2সর্বমোট
বিভাগউপস্থিতিগোলউপস্থিতিগোলউপস্থিতিগোলউপস্থিতিগোলউপস্থিতিগোলউপস্থিতিগোল
স্পোর্টিং ক্লাবে ডি পর্তুগাল২০০২-০৩প্রিমেইরা লিগা২৫৩১
মোট২৫৩১
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড২০০৩-০৪প্রিমিয়ার লিগ২৯৪০
২০০৪-০৫৩৩0৫০
২০০৫-০৬৩৩৪৭১২
২০০৬-০৭৩৪১৭১১৫৩২৩
২০০৭-০৮৩৪৩১১১৪৯৪২
২০০৮-০৯৩৩১৮১২৫৩২৬
মোট১৯৬৮৪২৬১৩১২৫৫১৬২৯২১১৮
রিয়াল মাদ্রিদ২০০৯-১০লা লিগা২৯২৬৩৫৩৩
২০১০-১১৩৪৪০১২৫৪৫৩
২০১১-১২৩৮৪৬১০১০৫৫৬০
২০১২-১৩৩৪৩৪১২১২৫৫৫৫
২০১৩-১৪৩০৩১১১১৭৪৭৫১
২০১৪-১৫৩৫৪৮১২১০৫৪৬১
২০১৫-১৬৩৬৩৫১২১৬৪৮৫১
২০১৬-১৭২৯২৫১৩১২৪৬৪২
২০১৭-১৮২৭২৬১৩১৫৪৪৪৪
মোট২৯২৩১১৩০২২১০১১০৫১৫১২৪৩৮৪৫০
জুভেন্টাস২০১৮-১৯সেরিয়ে আ৩১২১৪৩২৮
২০১৯-২০৩৩৩১৪৬৩৭
২০২০-২১৩৩২৯৪৪৩৬
২০২১-২২
মোট৯৮৮১১০২৩১৪১৩৪১০১
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড২০২১-২২প্রিমিয়ার লিগ
ক্যারিয়ার সর্বমোট৬১৩৪৭৯৬৯৪১১২১৮২১৩৫২১১৫৮৯৭৬৭৪

আন্তর্জাতিক

আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের বিরুদ্ধে খেলছেন রোনালদো ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে।
  • ২৭ জুন ২০২১ পর্যন্ত
জাতীয় দলসালউপস্থিতিগোল
পর্তুগাল২০০৩
২০০৪১৬
২০০৫১০
২০০৬১৪
২০০৭১০
২০০৮
২০০৯
২০১০১১
২০১১
২০১২১৩
২০১৩১০
২০১৪
২০১৫
২০১৬১৩১৩
২০১৭১১১১
২০১৮
২০১৯১০১৪
২০২০
২০২১
সর্বমোট১৭৯১০৯

আন্তর্জাতিক গোল

গোলসময়স্থানপ্রতিপক্ষস্কোরফলাফলপ্রতিযোগিতা
১২ জুন ২০০৪এস্তাদিও দো দ্রাগো, পোর্তো, পর্তুগাল গ্রিস–২১–২উয়েফা ইউরো ২০০৪
৩০ জুন ২০০৪এস্তাদিও জোসে আলভালদে, লিসবন, পর্তুগাল নেদারল্যান্ডস–০২–১উয়েফা ইউরো ২০০৪
৪ সেপ্টেম্বর ২০০৪স্কোন্টো স্টেডিয়াম, রিগা, লাটভিয়া লাতভিয়া–০২–০২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
৮ সেপ্টেম্বর ২০০৪এস্তাদিও ডঃ মেগালহ্যায়েস পেসোয়া, লিয়েরা, পর্তুগাল এস্তোনিয়া–০৪–০২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
১৩ অক্টোবর ২০০৪এস্তাদিও জোসে আলভালদে, লিসবন, পর্তুগাল রাশিয়া–০৭–১২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
–০
১৭ নভেম্বর ২০০৪স্টেড জোসি বার্থেল, লুক্সেমবার্গ, লুক্সেমবার্গ লুক্সেমবুর্গ–০৫–০২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
৪ জুন ২০০৫এস্তাদিও জোসে আলভালদে, লিসবন, পর্তুগাল স্লোভাকিয়া–০২–০২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
৮ জুন ২০০৫এ. লে কগ অ্যারেনা, তালিন, এস্তোনিয়া এস্তোনিয়া–০১–০২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
১০১ মার্চ ২০০৬এলটিইউ অ্যারেনা, ডুসেলডর্ফ, জার্মানি সৌদি আরব–০৩–০প্রীতি ম্যাচ
১১–০
১২১৭ জুন ২০০৬কমার্জব্যাক অ্যারেনা, ফ্রাঙ্কফুর্ট, জার্মানি ইরান–০২–০২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপ
১৩৭ অক্টোবর ২০০৬এস্তাদিও দো বেসা, পোর্তো, পর্তুগাল আজারবাইজান–০৩–০উয়েফা ইউরো ২০০৮ বাছাইপর্ব
১৪–০
১৫১৫ নভেম্বর ২০০৬এস্তাদিও সিদাদে দে কোইমব্রা, কোইমব্রা, পর্তুগাল কাজাখস্তান–০৩–০উয়েফা ইউরো ২০০৮ বাছাইপর্ব
১৬২৪ মার্চ ২০০৭এস্তাদিও জোসে আলভালদে, লিসবন, পর্তুগাল বেলজিয়াম–০৪–০উয়েফা ইউরো ২০০৮ বাছাইপর্ব
১৭–০
১৮২২ আগস্ট ২০০৭রিপাবলিকান স্টেডিয়াম, ইয়েরেভ্যান, আর্মেনিয়া আর্মেনিয়া–১১–১উয়েফা ইউরো ২০০৮ বাছাইপর্ব
১৯৮ সেপ্টেম্বর ২০০৭এস্তাদিও জোসে আলভালদে, লিসবন, পর্তুগাল পোল্যান্ড–১২–২উয়েফা ইউরো ২০০৮ বাছাইপর্ব
২০১৭ অক্টোবর ২০০৭আলমাতি সেন্ট্রাল স্টেডিয়াম, আলমাতি, কাজাখিস্তান কাজাখস্তান–০২–১উয়েফা ইউরো ২০০৮ বাছাইপর্ব
২১১১ জুন ২০০৮স্টেড দে জেনেভে, জেনেভা, সুইজারল্যান্ড চেক প্রজাতন্ত্র–১৩–১উয়েফা ইউরো ২০০৮
২২১১ ফেব্রুয়ারি ২০০৯এস্তাদিও আলগার্ভে, ফারো, পর্তুগাল ফিনল্যান্ড–০১–০প্রীতি ম্যাচ
২৩২১ জুন ২০১০কেপ টাউন স্টেডিয়াম, কেপ টাউন, দক্ষিণ আফ্রিকা উত্তর কোরিয়া–০৭–০২০১০ ফিফা বিশ্বকাপ
২৪৮ অক্টোবর ২০১০এস্তাদিও দো দ্রাগো, পোর্তো, পর্তুগাল ডেনমার্ক–১৩–১উয়েফা ইউরো ২০১২ বাছাইপর্ব
২৫১২ অক্টোবর ২০১০লওগার্ডারসভলুর, রেকজাভিক, আইসল্যান্ড আইসল্যান্ড–০৩–১উয়েফা ইউরো ২০১২ বাছাইপর্ব
২৬৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১স্টেড দে জেনেভে, জেনেভা, সুইজারল্যান্ড আর্জেন্টিনা–১১–২প্রীতি ম্যাচ
২৭১০ আগস্ট ২০১১এস্তাদিও আলগার্ভে, ফারো, পর্তুগাল লুক্সেমবুর্গ–০৫–০প্রীতি ম্যাচ
২৮২ সেপ্টেম্বর ২০১১জিএসপি স্টেডিয়াম, নিকোসিয়া, সাইপ্রাস সাইপ্রাস–০৪–০উয়েফা ইউরো ২০১২ বাছাইপর্ব
২৯–০
৩০১১ অক্টোবর ২০১১পার্কেন স্টেডিয়াম, কোপেনহেগেন, ডেনমার্ক ডেনমার্ক–২১–২উয়েফা ইউরো ২০১২ বাছাইপর্ব
৩১১৫ নভেম্বর ২০১১এস্তাদিও দা লুজ, লিসবন, পর্তুগাল বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা–০৬–২উয়েফা ইউরো ২০১২ বাছাইপর্ব
৩২–১
৩৩১৭ জুন ২০১২মেটালিস্ট স্টেডিয়াম, খারখিভ, ইউক্রেইন নেদারল্যান্ডস–১২–১উয়েফা ইউরো ২০১২
৩৪–১
৩৫২১ জুন ২০১২ন্যাশনাল স্টেডিয়াম, ওয়ারশ, পোল্যান্ড চেক প্রজাতন্ত্র–০১–০উয়েফা ইউরো ২০১২
৩৬১৫ আগস্ট ২০১২এস্তাদিও আলগার্ভে, ফারো, পর্তুগাল পানামা–০২–০প্রীতি ম্যাচ
৩৭৭ সেপ্টেম্বর ২০১২স্টেড জোসি বার্থেল, লুক্সেমবার্গ, লুক্সেমবার্গ লুক্সেমবুর্গ–১২–১২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
৩৮৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩এস্তাদিও ডঃ আফোন্সো হেনরিকজ, গুইমারিয়েজ, পর্তুগাল ইকুয়েডর–১২–৩প্রীতি ম্যাচ
৩৯১০ জুন ২০১৩স্টেড দে জেনেভে, জেনেভা, সুইজারল্যান্ড ক্রোয়েশিয়া–০১–০প্রীতি ম্যাচ
৪০১৪ আগস্ট ২০১৩এস্তাদিও আলগার্ভে, ফারো, পর্তুগাল নেদারল্যান্ডস–১১–১প্রীতি ম্যাচ
৪১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩উইন্ডসোর পার্ক, বেলফাস্ট, নর্দান আয়ারল্যান্ড উত্তর আয়ারল্যান্ড–২৪–২২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
৪২–২
৪৩–২
৪৪১৫ নভেম্বর ২০১৩এস্তাদিও দা লুজ, লিসবন, পর্তুগাল সুইডেন–০১–০২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
৪৫১৯ নভেম্বর ২০১৩ফ্রেন্ডস অ্যারেনা, সোলনা, সুইডেন সুইডেন–০৩–২২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব
৪৬–২
৪৭–২
৪৮৫ মার্চ ২০১৪এস্তাদিও ডঃ মেগালহ্যায়েস পেসোয়া, লিয়েরা, পর্তুগাল ক্যামেরুন–০৫–১প্রীতি ম্যাচ
৪৯–১
৫০২৬ জুন ২০১৪এস্তাদিও ন্যাশিওন্যাল মানে গ্যারিঞ্চা, ব্রাসিলিয়া ঘানা–১২–১২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপ
৫১১৪ অক্টোবর ২০১৪পারকেন, কোপেনহেগেন, ডেনমার্ক ডেনমার্ক–০১–০উয়েফা ইউরো ২০১৬ বাছাইপর্ব
৫২১৪ নভেম্বর ২০১৪এস্তাদিও আ'গার্ভে, ফারো, পর্তুগাল আর্মেনিয়া–০১–০উয়েফা ইউরো ২০১৬ বাছাইপর্ব

রেকর্ডসমূহ

১২ জুলাই ২০১৪ পর্যন্ত

বিশ্ব

  • সর্বাধিক ১৩টি ফিফা অ্যাওয়ার্ড৷
  • আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীতামূলক ম্যাচে সর্বোচ্চ গোল ৫০টি৷
  • বিশ্বের সবচেয়ে ভ্যালুয়েবল ফুটবলার৷
  • ৯০ মিনিটের প্রতি মিনিটে গোলের রেকর্ড৷
  • বিশ্বের সবচেয়ে দামী খেলোয়াড়[২৪০]
  • এক বছরে আন্তর্জাতিক আসরে সর্বোচ্চ ২৫টি গোল করেছেন • ২০১৩ • লিওনেল মেসি ও ভিভিয়ান উডওয়ার্ডের সাথে যৌথভাবে।
  • প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিটি মিনিটেই গোল করেছেন অফিসিয়াল ফুটবল খেলায়।
  • ইতিহাসে সর্বোচ্চবার ধনী ফুটবলার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন • ২০০৯-২০১৬।
  • ফেসবুকে সর্বাধিক পছন্দনীয় ব্যক্তি হিসেবে গিনেস বিশ্ব রেকর্ডে স্থান পেয়েছেন • ২০১৫ ও ২০১৬ সালে।
  • প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেছেন।
  • ক্লাব বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা • ৫টি • লিওনেল মেসি,লুইস সুয়ারেজ এবং ডেলগাদোর সাথে যৌথভাবে।
  • প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ক্লাব বিশ্বকাপে একের অধিক সিলভার বল জিতেছেন।
  • ফিফপ্রো বিশ্ব একাদশে সর্বোচ্চ ১০ বার স্থান পেয়েছেন • (২০০৭-২০১৬) • লিওনেল মেসির সাথে যৌথভাবে।
  • প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ২টি ভিন্ন ক্লাবের হয়ে ফিফপ্রো বিশ্ব একাদশে স্থান পেয়েছেন • ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে।
  • প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ভিন্ন ২টি ক্লাবের হয়ে ঘরোয়া লিগ,ঘরোয়া কাপ,উয়েফা সুপার কাপ,উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ,ক্লাব বিশ্বকাপ,গোল্ডেন বুট,লিগের সেরা খেলোয়াড় ও বালোঁ দর জিতেছেন • ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে।
  • প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে টানা ৪টি ইউরো কাপে গোল করেছেন • ২০০৪,২০০৮,২০১২,২০১৬।
  • প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে টানা ৩টি বিশ্বকাপে গোল করেছেন • ২০০৬,২০১০,২০১৪।
  • প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে পেশাদার লিগে টানা ২ মৌসুম ৪০+ গোল করেছেন।
  • প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে টানা ৪ বছর ৬০+ গোল করেছেন • ২০১১-২০১৪।
  • প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে টানা ৬ বছর ৫০+ গোল করেছেন • ২০১১-২০১৬।
  • প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টানা ৪ মৌসুম ৫০+ গোল করেছেন।
  • প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে টানা ৫ মৌসুম ৫০+ গোল করেছেন।
  • প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে টানা ৬ মৌসুম ৫০+ গোল করেছেন।
  • প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ভিন্ন ৬ মৌসুমে ৫০+ গোল করেছেন।

ইউরোপ

  • ইউয়েফা ইউরোতে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা ৯ গোল৷
  • ইউরোর বাছাইপর্ব এবং মূল পর্ব মিলিয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা ২৯
  • সর্বাধিক টানা ৬ মৌসুমে ৫০ গোল করার রেকর্ড৷
  • চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১ মৌসুমে সর্বোচ্চ ১৭ গোলের রেকর্ড৷
  • সর্বাধিক ৫ বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা৷
  • ইউরোপের সর্বকালের সর্বোচ্চ ফ্রি কিক গোলস্কোরার 59 গোল৷
  • চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বকালের সর্বোচ্চ ফ্রি কি গোলস্কোরার 12 গোল৷
  • একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ২টি ভিন্ন লিগে খেলে ইউরোপিয়ান ইবনি শু পুরস্কার অর্জন(ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও স্প্যানিশ লা লিগা)
  • ইউরোপিয়ান ক্লাবভিত্তিক প্রতিযোগীতার সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা ৯৮টি
  • চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোল ৯৬* এবং এসিস্ট ৩১*
  • সর্বাধিক ইউরোপিয়ান ৪ টি গোল্ডেন শ্যু৷
  • প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে প্রধান ইউরোপিয়ান লিগগুলোতে এক মৌসুমে ৪০ বা তার অধিক গোল করা।
  • উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সবচেয়ে বেশি টানা ম্যাচে গোল করা: ৬ ম্যাচ (মারুয়ান চামাক ও বুরাক ইয়ালমাজ এর সাথে মিলিতভাবে)
  • উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে সবচেয়ে বেশি গোল: ৯ গোল
  • উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ১ বছরে সবচেয়ে বেশি গোল: ১৫ গোল, ২০১৩ সালে[২৪১]

ইংল্যান্ড

  • ১ মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের জন্য প্রিমিয়ার লিগ গোল্ডেন বুট অর্জন (৩৮ খেলায়): ৩১ গোল ( অ্যালান শিয়ারারের সাথে যৌথভাবে)
  • বিশেষজ্ঞদের ভোটে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বকালের সেরা ফুটবলার৷
  • বিশেষজ্ঞদের ভোটে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বকালের সেরা বিদেশী ফুটবলার

স্পেন

  • লা লিগা ২০ দলে সম্প্রসারণের পর একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে সব দলের বিরুদ্ধে গোল করা[২৪২]
  • প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টানা ৬ এল ক্লাসিকোতে গোল[২৪৩]
  • লা লিগায় প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ১ মৌসুমে বিপক্ষের মাঠে ২০ গোল করা।[২৪৪]
  • লা লিগায় ১৫০ গোল করা দ্রুততম খেলোয়াড়।[২৪৫]
  • লা লিগায় সর্বকালের সেরা গোল রেশিও৷
  • লা লিগায় সর্বকালের সর্বোচ্চ ফ্রি কিক গোল ১৯টি৷
  • লা লিগায় সর্বকালের সর্বোচ্চ পেনাল্টি গোল 57 টি৷
  • লা লিগার দ্রুততম ৫০,১৫০,২০০,২৫০ গোল করা ফুটবলার৷

পর্তুগাল

  • পর্তুগালের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করা খেলোয়াড়: ৬৮ গোল
  • উয়েফা ইউরোতে সবচেয়ে বেশি গোল করা খেলোয়াড়: ৯ গোল
  • ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্সশীপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা পর্তুগিজ খেলোয়াড়
  • বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা পর্তুগিজ খেলোয়াড়: ১১ ম্যাচ (সিমো সাবরোসার সাথে যৌথভাবে)
  • সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড় হিসেবে ১০০ ম্যাচ খেলা পর্তুগিজ: ২৭ বছর ৮ মাস ১১ দিন

রিয়াল মাদ্রিদ

  • রিয়াল মাদ্রিদের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা৷
  • লা লিগায় সর্বোচ্চ ফ্রি কিক গোল 19 টি৷
  • লা লিগায় সর্বোচ্চ পেনাল্টি গোল 57 টি৷
  • রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে সর্বোচ্চবার ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ৷
  • ১ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোল: ৬০ গোল
  • লা লিগার ১ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোল: ৪৬ গোল
  • উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ১ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোল: ১৭ গোল
  • ১ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি হ্যাট্রিক: ৭টি
  • দ্রুততম সময়ে ৫০ লিগ গোল অর্জন[২৪৬]
  • দ্রুততম সময়ে ১০০ লিগ গোল অর্জন[২৪৭]
  • দ্রুততম সময়ে ১৫০ লিগ গোল অর্জন
  • দ্রুততম সময়ে ২০০ গোল অর্জন[২৪৮]

জীবনের প্রথমার্ধ

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ডস সান্তোস আভেইরো পর্তুগিজ দ্বীপ মাদেইরার রাজধানী ফুঞ্চালের সাও পেদ্রো প্যারিশে ১৯৮৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী জন্মগ্রহণ করেন এবং সান্তো আন্তোনিওর নিকটবর্তী প্যারিশে বেড়ে ওঠেন। [২৪৯] তিনি মারিয়া ডোলোরেস ডস সান্তোস ভিভেইরোস দা আভেইরো, একজন বাবুর্চি এবং জোসে ডিনিস অ্যাভেইরো, একজন পৌর মালী এবং খণ্ডকালীন কিট ম্যান এর চতুর্থ এবং কনিষ্ঠ সন্তান। [২৫০] তার পিতার পাশে তার প্রপিতামহ, ইসাবেল দা পিয়েদাদে , কেপ ভার্দে সাও ভিসেন্টে দ্বীপ থেকে ছিলেন। তার এক বড় ভাই, হুগো এবং দুই বড় বোন, এলমা এবং লিলিয়ানা ক্যাটিয়া "কাতিয়া" । তার মা প্রকাশ করেছেন যে তিনি দারিদ্র্য, তার বাবার মদ্যপান এবং ইতিমধ্যে অনেক সন্তান থাকার কারণে তাকে গর্ভপাত করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তার ডাক্তার প্রক্রিয়াটি করতে অস্বীকার করেছিলেন। [২৫১] রোনালদো একটি দরিদ্র ক্যাথলিক খ্রিস্টান বাড়িতে বড় হয়েছেন, তার সব ভাইবোনের সাথে একটি রুম ভাগ করে নিয়েছেন।

শৈশবে, রোনালদো ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত আন্দোরিনহার হয়ে খেলেন, যেখানে তার বাবা কিট ম্যান ছিলেন, [২৫০] এবং পরে দুই বছর ন্যাসিওনালের সাথে কাটিয়েছেন। 1997 সালে, ১২ বছর বয়সে, তিনি স্পোর্টিং সিপি -র সাথে তিন দিনের ট্রায়ালে যান, যিনি তাকে £1,500 ফি দিয়ে স্বাক্ষর করেছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি স্পোর্টিং এর যুব একাডেমীতে যোগদানের জন্য মাদেইরা থেকে লিসবনের কাছে আলকোচেতে চলে যান। [২৫২] ১৪ বছর বয়সে, রোনালদো বিশ্বাস করতেন যে তিনি আধা-পেশাদারভাবে খেলার ক্ষমতা রাখেন এবং তার মায়ের সাথে সম্পূর্ণরূপে ফুটবলে মনোনিবেশ করার জন্য তার শিক্ষা বন্ধ করতে সম্মত হন। [২৫৩] একটি ছাত্র হিসাবে একটি ঝামেলাপূর্ণ জীবন এবং তার [২৫৪] পরিবার থেকে দূরে লিসবন এলাকায় বসবাসের কারণে, তিনি ৩ তম গ্রেডের পরে স্কুলে পড়া শেষ করেননি। [২৫৫] [২৫৬] স্কুলে অন্যান্য ছাত্রদের কাছে জনপ্রিয় থাকাকালীন, তাকে তার শিক্ষকের দিকে একটি চেয়ার ছুড়ে মারার পরে বহিষ্কার করা হয়েছিল, যিনি তাকে "অসম্মান" করেছিলেন বলে তিনি বলেছিলেন। [২৫৩] এক বছর পরে, তার টাকাইকার্ডিয়া ধরা পড়ে, এমন একটি অবস্থা যা তাকে ফুটবল খেলা ছেড়ে দিতে বাধ্য করতে পারে। [২৫৭] রোনালদোর হার্ট সার্জারি করা হয়েছিল যেখানে একটি লেজার ব্যবহার করে একাধিক কার্ডিয়াক পাথওয়েকে একটিতে পরিষ্কার করা হয়েছিল, তার বিশ্রামরত হৃদস্পন্দন পরিবর্তন করে। পদ্ধতির কয়েক ঘন্টা পরে তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল এবং কয়েক দিন পরে আবার প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছিল।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

পুরস্কার
পূর্বসূরী
নেই
ফিফপ্রো বিশেষ বর্ষসেরা তরুণ খেলোয়াড়
২০০৫, ২০০৬
উত্তরসূরী
নেই
পূর্বসূরী
ওয়েইন রুনি
পিএফএ বর্ষসেরা তরুণ খেলোয়াড়
২০০৭
উত্তরসূরী
নেই
পূর্বসূরী
স্টিভেন জেরার্ড
পিএফএ বর্ষসেরা খেলোয়াড়
২০০৭
উত্তরসূরী
নেই
পূর্বসূরী
ওয়েইন রুনি
পিএফএ সমর্থক রায়ে বর্ষসেরা খেলোয়াড়
২০০৭
উত্তরসূরী
নেই
পূর্বসূরী
রিকার্দো কোয়ারেজমা
পর্তুগিজ বর্ষসেরা ফুটবলার
২০০৭
উত্তরসূরী
নেই
পূর্বসূরী
থিয়েরি অঁরি
ফুটবল লেখক সংস্থা পুরস্কার
২০০৭
উত্তরসূরী
নেই
🔥 Top keywords: প্রধান পাতাবিশেষ:অনুসন্ধানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপকাজী নজরুল ইসলামবাংলাদেশ ডাক বিভাগশেখ মুজিবুর রহমানএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশছয় দফা আন্দোলনক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪আবহাওয়ামুহাম্মাদব্লু হোয়েল (খেলা)বাংলা ভাষাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারতভূমি পরিমাপবাংলা ভাষা আন্দোলনমহাত্মা গান্ধীমিয়া খলিফামৌলিক পদার্থের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপহেলা বৈশাখপদ্মা সেতুলোকসভা কেন্দ্রের তালিকামাইকেল মধুসূদন দত্তসুনীল ছেত্রীবাংলাদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তালিকাবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহআসসালামু আলাইকুমপশ্চিমবঙ্গবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহশেখ হাসিনাবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীজয়নুল আবেদিন